আবিষ্কার : ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দ
বিজ্ঞানী : চালর্স এফ রিখটার
ভূকম্পীয় ঢেউ হল ভূমিকম্প থেকে নির্গত কম্পন যা পৃথিবীর ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এক ধরনের গ্রাহকযন্ত্রে এই ঢেউ নিবেশিত হয় যার নাম সিসমোগ্রাফ। সিসমোগ্রাফ আঁকাবাকা নিদর্শন লিপিবদ্ধ করে যার থেকে যন্ত্রের নীচের ভূকম্পনের পরিধি মাপা সম্ভব হয়। সূক্ষ্ম সিসমোগ্রাফ ভূকম্পনের গতি বিবর্ধিত করতে সক্ষম যার ফলে পৃথিবীর যে কোনও স্থানের ভূকম্পন ধরতে পারে। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির চালর্স এফ রিখটার সিসমোগ্রাফ আবিষ্কার করেন একটি আঙ্কিক যন্ত্র হিসাবে ভূকম্পনের মাত্রা তুলনা করার জন্য। ভূকম্পনের মাত্রা নির্ধারিত হয় লগ স্কেলে (লগারিদম স্কেল); বিভিন্ন সিসমোগ্রাফ যন্ত্র এবং ভূকম্পনের উপকেন্দ্রের দূরত্বের ব্যতিক্রম নিয়মিত করা যায় এই যন্ত্রে।
রিখটার -স্কেলে মাত্রা দেখানো হয় পূর্ণ সংখ্যা ও ভগ্নাংশ দ্বারা। উদাহণস্বরূপ ৫.৩ মাত্রা বোঝাবে সাধারণ ভূকম্পন, যখন ৬.৩ বলতে বোঝাবে ভারী ভূকম্পন। যে হেতু লগ স্কেল ব্যবহৃত হচ্ছে, পূর্ণসংখ্যার ১ বৃদ্ধি নিরুপণ করে মাত্রার দশগুণ বৃদ্ধি। অন্য দিকে শক্তির হিসাবে প্রতিটি পূর্ণসংখ্যার বৃদ্ধি দেখাবে ৩১ গুণ শক্তি-বৃদ্ধি।
প্রায় ২.০ বা তার নীচের মাত্রার ভূকম্পনকে বলা হয় মাইক্রো-ভূকম্পন। এটি সাধারণত মানুষ বুঝতে পারে না, তবে স্থানীয় সিসমোগ্রাফ যন্ত্রে ধরা পড়ে। প্রতি বছরেই ৪.৫ বা তার বেশি মাত্রার ভূকম্পের ঘটনা ঘটে থাকে কয়েক হাজারের মতো, যা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের সূক্ষ্ণ যন্ত্রে ধরা পড়ে। বড় ভূকম্পন হয়েছিল ১৯৬৪ সালে, আলাস্কার গুড ফ্রাইডে ভূকম্পন, যার মাত্রা ছিল ৮.০ ও তার বেশি। রিখটার স্কেলের কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই।
ভূকম্পনের ক্ষতি রিখটার স্কেলে মাপা যায় না। একই মাত্রার ভূকম্পন জনবহুল স্থানে অনেক ক্ষতি করতে পারে, আবার জনহীন স্থানে তা কেবল পশুপাখির ভীতির সঞ্চার করে। সমুদ্রের তলায় ভূকম্পন মানুষের গোচরে আসে না বললেই চলে।
সূত্র : বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিদ্যা ও ব্যাক্তিত্ব : ডঃ শঙ্কর সেনগুপ্ত, বেস্টবুকস
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/27/2020