আবিষ্কার : ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দ
বিজ্ঞানী : আইনস্টাইন
‘সাধারণ আপেক্ষিতাবাদ তত্ত্ব’ হল ‘বিশেষ আপক্ষিতাবাদ তত্ত্বের’ এক প্রকার সাধারণীকরণ, যা মাধ্যাকর্ষণ-কে অন্তর্ভুক্ত করে। সাধারণ আপেক্ষিতাবাদে ‘নন-ইউক্লিডিয়ান জ্যামিতি’ ব্যবহার করে আইনস্টাইন দেখিয়েছেন কী ভাবে দেশ-কালের বক্রতাকে তত্ত্বে প্রকাশ করা সম্ভব। অন্য দিকে বিশেষ আপেক্ষিকতায় বক্রকে উপেক্ষা করা হয়েছে। প্রতি দিনের কাজকর্মে পৃথিবীর তলের বক্রতা সব সময়ে নজরে আসে না (ছোট পরীক্ষাগারে মাধ্যাকর্ষণের প্রভাব খুবই সামান্য)। সে ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র প্রশ্নে দেশ-কালের বক্রতাকে উপেক্ষা করা যায় অর্থাৎ ক্ষুদ্র ক্ষেত্রে বিশেষ আপেক্ষিকতা হল সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্বের সমর্থনীয় উপযোজন।
পরস্পরের সাপেক্ষে তড়িত্গতি সম্পন্ন দু’টি তন্ত্র কখনও সমতুল নয় - একটিতে জাড্যিক বলের সৃষ্টি হয়, অপরটিতে নয়। উদাহরণস্বরূপ, পৃথিবীর ত্বকের দিকে মুক্ত ভাবে পতনশীল একটি উত্তোলকের কথা ধরা যেতে পারে। উত্তোলকের ভিতরে অবস্থিত কোনও দর্শকের কাছে মাধ্যাকর্ষণ অন্তর্হিত হবে। আবার পৃথিবীর সাপেক্ষে স্থির সেই উত্তোলকের অবস্থার সমতুল নয়, এখানে মাধ্যাকর্ষণ অবশ্যই আছে। আইনস্টাইন লক্ষ করলেন যে উপযুক্ত মাধ্যাকর্ষণ ক্ষেত্র ঢুকিয়ে দু’টি তড়িত্গতি বিশিষ্ট তন্ত্রকে সমতুল করে দেওয়া সম্ভব। প্রয়োজন হল, F = m a সমীকরণে যে জাড্যিক আত্মপ্রকাশ করে, তা F = k mn' / r² সমীকরণে যে মাধ্যাকর্ষণ ভর তার সমান হতে হবে।
এই চমকপ্রদ বিষয়টি প্রকাশ করার জন্য বলা হয়ে থাকে যে মাধ্যাকর্ষণের ভর ও জাড্যিক ভর এক। পিসার বিখ্যাত স্তম্ভ থেকে বিখ্যাত পরীক্ষাটি করে গ্যালিলিও এই তথ্য প্রথম আবিষ্কার করেন। পরবর্তীকালে, ১৯৬৩ সালে এর সূক্ষ্মতর পরিমাপ করেন তিন বিজ্ঞানী।
সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্ব আবিস্কার উনবিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞানে একটি যুগান্তকারী বিষয়। এই আবিস্কার একটি স্বতন্ত্র আবিস্কার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই। কিন্তু তার পাশাপাশি বিজ্ঞান, সমাজ ওচিন্তনের নানা ক্ষেত্রে এই তত্ত্ব অত্যন্ত প্রভাবশালী ভূমিকা রেখেছে।
সূত্র : বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিদ্যা ও ব্যাক্তিত্ব : ডঃ শঙ্কর সেনগুপ্ত, বেস্টবুকস
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/17/2020