খুব কম মাত্রার ডিডিটি-ও জীবাণুদের ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, বিশেষত যেগুলি জলে থাকে (যেমন শেওলা, প্ল্যাঙ্কটন)। কারণ হল, জলীয় পরিবেশের কারণে এই জীবাণুগুলি অনেক বেশি পরিমাণে ডিডিটি-র সংষ্পর্শে আসে। এর তীব্র প্রভাবের উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যে জলে ১ লিটারে মাত্র ০.১ গ্রাম ডিডিটি থাকে, সেখানেও সবুজ শেওলার বৃদ্ধি ও সালোক সংশ্লেষের হার কমে যায়। এই জলীয় দ্রবণ কতটা লঘু চরিত্রের তা বুঝতে হলে একটি কাগজের টুকরোর কথা ভাবো, যার ওজন মাত্র ১ গ্রাম। তাকে এক কোটি ভাগে ভাগ কর। সেই পরিমাণ ডিডিটি সিকি গ্যালন জলে দ্রবীভূত হয়।
আশ্চর্য ব্যাপার হল, এতেও জীবাণুদের বৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তা হলে ঠিক কতটা ডিডিটি আমাদের শরীর সহ্য করতে পারবে, যার বেশি হলে আমাদের দুশ্চিন্তা শুরু করা উচিত? এটা নির্ভর করে আমাদের শরীরের ওজনের ওপর। প্রতি কিলো ওজনে যদি ২৩৬ মিলিগ্রামের বেশি ডিডিটি জমে যায়, তা হলে তোমার মৃত্যু হবে। প্রতি কিলোয় ৬-১০ মিলিগ্রাম ডিডিটি জমে গেলে মাথা ব্যথা, বমি ভাব, বমি, বিভ্রান্তি, কাঁপুনি শুরু হবে। একটু মজা করা যাক। হিসেব করে বলো তো মরতে হলে কতটা ডিডিটি দরকার।
বর্তমানে পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশেই ডিডিটি নিষিদ্ধ। তোমাদের নিশ্চয় অবাক লাগছে, তা হলে কেন আমাদের দেশে ডিডিটি পাওয়া যায় এবং ব্যাপক ভাবে ব্যবহার করা হয়। যে অল্প কিছু দেশে এখনও ডিডিটি উৎপন্ন ও ব্যবহৃত হয় তার মধ্যে ভারত ও চিন অন্যতম। যদিও এটি ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য পতঙ্গবাহিত জ্বর ঠেকাতে মশা ও অন্যান্য পতঙ্গ মারতে ব্যবহার করার কথা। কিন্তু এটি ঘরের ভিতর, খাবারের দোকান, মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর শরীরে বাছবিচার না করেই ব্যবহার করা হয়। কৃষি ক্ষেত্রে এর ব্যবহার থেকেই সব চেয়ে বেশি বিপদের সম্ভাবনা। সেখানে এটি উপকারী ও অপকারী সব রকমের পতঙ্গ মারতেই ব্যবহার করা হয়। যে সব পাখি এ সব পতঙ্গ খায়, তারাও এর ফলে মাটিতে পড়ে থাকা প্রচুর ডিডিটি খেয়ে ফেলে।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 10/5/2019