২০০৬ সালের ৫ নভেম্বর মার্স গ্লোবাল সার্ভেয়র পৃথিবীর সঙ্গে সম্পর্ক হারিয়ে ফেলে, নাসা ২০০৭ সালের ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সম্পর্ক পুনরায় স্থাপন করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।
২০০১ সালে নাসার মার্স ওডিসি অরবিটার মঙ্গলে নামে। এর লক্ষ্য ছিল স্পেকট্রোমিটার ও ইমেজার ব্যবহার করে মঙ্গলে বর্তমান ও অতীতে জল ও অগ্ন্যুৎপাত সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা। ২০০২ সালে জানা যায়, গামা রশ্মি স্পেকট্রোমিটার ও নিউট্রন স্পেকট্রোমিটার ব্যবহার করে সেখানে প্রচুর হাইড্রোজেনের খোঁজ মিলেছে, যার থেকে বোঝা যায় মঙ্গলের দক্ষিণ মেরু থেকে ৬০ ডিগ্রি অক্ষাংশে মাটির ৩ মিটার উপর পর্যন্ত জলীয় বরফ রয়েছে।
২০০৩ সালের ২ জুন ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির মার্স এক্সপ্রেস বইকানুর কসমোড্রোম থেকে মঙ্গলের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। এতে ছিল মার্স এক্সপ্রেস অরবিটার ও মাটিতে নামার জন্য বিগল টু। যেটির মাটিতে নামার কথা ছিল, তার সেখানে চলাচল করার ব্যবস্থা ছিল না। ছিল মাটি খোঁড়ার যন্ত্র এবং তার সঙ্গে অতিক্ষুদ্র রোবট, যা ধুলোময় তলের নীচের মাটিকে নিখুঁত ভাবে বিশ্লেষণ করতে পারে।
অরবিটার এবং বিগল টু দুই-ই ২০০৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর মঙ্গলের কক্ষপথে প্রবেশ করে। কিন্তু বিগল টু-র সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। অরবিটার গ্রহের দক্ষিণ মেরুতে জলীয় বরফ এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের উপস্থিতি নিশ্চিত করে। নাসা এর আগেই উত্তর মেরুতে এর উপস্থিতি নিশ্চিত করেছিল।
নাসার মার্স এক্সপ্লোরেশন রোভার মিশন (এমইআর) একটি চলমান রোবট চালিত মহাকাশ অভিযান। এতে দু’টি যান আছে, ১) স্পিরিট ও ২) অপরচুনিটি। এদের কাজ মঙ্গল সম্পর্কে জানা। এটি ২০০৩ সালে শুরু হয়, লক্ষ্য ছিল মঙ্গলের মাটি ও ভূতত্ত্ব সম্পর্কে জানা।
ফিনিক্স-এর পাঠানো ছবি
এই অভিযানের বৈজ্ঞানিক লক্ষ্য, মঙ্গলের পাথর ও মাটির বিশ্লেষণ করে অতীতে সেখানে জল ছিল কি না, তা দেখা।
এটি একটি বহুমুখী মহাকাশ যান। এর লক্ষ্য কক্ষপথ থেকে মঙ্গলকে পর্যবেক্ষণ করা। এই যানটি তৈরি করতে ৭২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়। ২০০৫ সালের ১২ আগস্ট এটি রওনা দিয়েছিল এবং ২০০৬ সালের ১০ মার্চ মঙ্গলের কক্ষপথে পৌঁছয়। এর আগে মঙ্গলে পাঠানো যানগুলির তুলনায় এটা অনেক উন্নত। এর সঙ্গে তথ্য আদানপ্রদান অনেক সহজ ও দ্রুতগতির। এমআরও আগামী দিনের যানগুলি কী ভাবে নিয়মিত মঙ্গল থেকে মাটি ও আবহাওয়া দিতে পারবে, সে বিষয়ে পথপ্রদর্শক।
ইএসএ রজেটা মহাকাশ অভিযানটি ছিল একটি ধূমকেতুতে। ২০০৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, সেটি মঙ্গলের ২৫০ কিলোমিটারের মধ্যে ওড়ে। এটির ব্যবস্থা এমন ছিল যাতে এর গতি কমানো এবং অভিমুখ পাল্টানো যায়।
নাসার ডন মহাকাশযানটি গতি ও অভিমুখ পাল্টাতে মঙ্গলের মাধ্যাকর্ষণকে ব্যবহার করে। তবে তথ্য আনার ক্ষেত্রে এর খুব একটা ভূমিকা ছিল না।
নাসার মঙ্গল বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র কিউরিওসিটি নামে এই যানটি পাঠায় ২০১১ সালের ২৬ নভেম্বর। এতে যে যন্ত্রগুলি ছিল, তার লক্ষ্য ছিল মঙ্গলের আদি ও বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে খতিয়ে দেখে সেগুলি বসবাসের উপযুক্ত কি না, তা যাচাই করা। এটি ২০১২ সালের ৬ আগস্ট মঙ্গলের পিস ভ্যালি ও মাউন্ট শার্প-এর মাঝে নামে।
মাউন্ট শার্প। কিউরিওসিটির চোখে।
নাসার মাভেন একটি কক্ষপথ অভিযান, এর লক্ষ্য মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ। এটি আগামী দিনে যে সব যান মঙ্গলে নামবে তাদের জন্য যোগাযোগের রিলে উপগ্রহ হিসেবেও কাজ করবে। মাভেন ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর যাত্রা শুরু করে এবং ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পৌঁছয়।
সূত্র : উইকিপিডিয়া
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/1/2020