অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

আইজাক নিউটন

নিউটনের গতিসূত্র

  • ক) বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার বস্তুটির উপর প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যে দিকে প্রযুক্ত হয় ভরবেগের পরিবর্তনও সে দিকে ঘটে।
  • খ) বাইরে থেকে প্রযুক্ত বল দ্বারা অবস্থার পরিবর্তন করতে বাধ্য না করলে অচল বস্তু চিরকাল অচল অবস্থাতেই থাকবে এবং সচল বস্তু চিরকাল সমবেগে সরলরেখা ধরে চলতে থাকবে।
  • গ) প্রতিটি ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

নিউটনের অভিকর্ষ তত্ত্ব

বিশ্বজগতে সমস্ত বস্তুই বল দ্বারা পরস্পরকে আকর্ষণ করে। এই আকর্ষণ বল বস্তু দু'টোর ভরের সমানুপাতিক এবং বস্তুদ্বয়ের মধ্যে দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক।

বিজ্ঞানের প্রায় প্রতিটি শাখায় তিনি গবেষণা করে গেছেন। বলা যায়, তিনি যেখানে হাত দিয়েছেন সেখানেই যেন রত্ন ফলেছে। অংকশাস্ত্র, জ্যোতির্বিদ্যা এবং পদার্থবিদ্যায় তাঁর গবেষণাকে কেন্দ্র করে এক কালে সারা বিশ্বে সৃষ্টি হয়েছিল বিরাট আলোড়ন। প্রকৃতপক্ষে ঐ তিন শাস্ত্রের ভিত্তি স্থাপন করে গেছেন নিউটন।

বিজ্ঞানী নিউটন জন্মগ্রহণ করেন ১৬৪২ সালে ইংল্যান্ডের লিঙ্কনশায়ারের গ্রানথামের নিকটবর্তী উল্‌স্‌থর্প নামক গ্রামে। তাঁর পিতার নামও ছিল আইজাক নিউটন। নিউটনের জন্মের কয়েক মাস আগেই পিতার মৃত্যু হয়। তাঁর মা হ্যানা নিউটন, স্বামীর স্মৃতি হিসেবে পুত্রের নাম রেখেছিলেন আইজাক নিউটন। ছাত্রাবস্থা থেকেই নিউটন বিজ্ঞান ও অঙ্কে তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। ১৬৬৫ সালে নিউটন স্নাতক ডিগ্রি লাভ করলেন। কলেজে ছাত্র থাকাকালীন অবস্থায় তিনি কিছু জটিল তথ্যের আবিষ্কার করেন - বাইনমিয়াল থিওরেম, ফ্লাক্সসনস যা বর্তমানে ইন্টিগ্রাল ক্যালকুলাস নামে পরিচিত। এ ছাড়াও তিনি আবিষ্কার করেন কঠিন পদার্থের ঘনত্ব| ১৬৬৬ সালে ফ্লাক্সসনস পদ্ধতি উদ্ভাবনের সঙ্গে সঙ্গেই মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করতে শুরু করেছেন। অবাক করা বিষয়, এ সময় নিউটনের বয়স তখন মাত্র ২৪ বছর।

মধ্যাকর্ষণ তত্ত্বের একটি ঘটনা। কলেজ ছুটিতে মায়ের কাছে গিয়েছেন। প্রকৃতির পরিবেশে প্রেমিকাকে নিয়ে বসে আছেন বাগানে। সেই মুহূর্তে হঠাৎ খসে পড়ল একটা আপেল। মগ্ন হয়ে পড়লেন অন্য চিন্তায়। ঠোঁটের কোণায় অজান্তে জলন্ত সিগারেট ধরলেন প্রেমিকার হাতে। ফলে প্রেমিকা দৌড়ে পালালেন। এ দিকে বিজ্ঞানী নিউটনের মাথায় খুরপাক খেলো, কেন আপেলটি আকাশে না উঠে মাটিতে এসে পড়ল? এই জিজ্ঞাসাই মানুষের চিন্তার জগতে এক যুগান্তর নিয়ে এল। এ ভাবে মাধ্যাকর্ষণ তত্ত্বের সৃষ্টি হল। যদিও এই চিন্তার সূত্রপাত হয়েছিল বহু পূর্বেই। নিউটন গবেষণা প্রকাশ করলেন তাঁর কালজয়ী গ্রন্থ 'ম্যাথামেটিক্যাল প্রিন্সিপলস অফ নেচার ফিলোজফি'| তখন তিনি ২৫ বছরের এক তরুণ। এ সময় তিনি চাঁদ ও অন্য গ্রহ-নক্ষত্রের গতি নির্ণয় করতে সচেষ্ট হলেন। কিন্তু তাঁর উদ্ভাবিত তত্ত্বের মধ্যে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকা সত্ত্বেও তাঁর কৃতিত্বের অবদানস্বরূপ ট্রিনিটি কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁকে ফেলো হিসেবে নির্বাচিত করলেন। এ যেন এক দুর্লভ পাওয়া।

এ বার তিনি আলোর প্রকৃতি ও তাঁর গতিপথ নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন। আর এই কাজের প্রয়োজনেই তিনি তৈরি করলেন প্রতিফলক টেলিস্কোপ| পরবর্তীকালে মহাকাশ সংক্রান্ত গবেষণার কাজে যে উন্নত ধরনের টেলিস্কোপ আবিষ্কৃত হয়, তিনিই তাঁর অগ্রগামী পথিক।

নিউটন ট্রিনিটি কলেজের গণিতের অধ্যাপক হিসেবে নির্বাচিত হলেন। এ সময় তিনি আলোর বর্ণচ্ছটা নিয়ে গবেষণার কাজে আত্মমগ্ন হলেন। ইংল্যান্ডের রয়্যাল সোসাইটিও নিউটনের বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজ শুরু হলে তাঁকে সোসাইটির সদস্য নির্বাচিত করলেন। তখন তাঁর বয়স ২৯ বছর মাত্র। ইংল্যান্ডের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীদের পাশে তাঁর স্থান হল।

নিউটন তাঁর নিরলস গবেষণার মধ্য দিয়েই প্রমাণ করলেন, If the varied as the inverse square, the orbit would be an elipse with the center of the force in one focus- এই আবিষ্কারের মাধ্যমে মাধ্যার্কষণ তত্ত্ব প্রতিষ্ঠার কাজ সহজসাধ্য হল। এত দিন মানুষের জানা ছিল না চন্দ্র-সূর্যের সঠিক আয়তন। নিউটন তা নির্ণয় করলেন। প্রতিষ্ঠা হল মাধ্যাকর্ষণ তত্ত্ব। আর এই তত্ত্বের যাবতীয় বিবরণ লিখলেন তাঁর 'প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা' গ্রন্থে। এই বই প্রকাশের ফলে অধিকাংশ মানুষের কাছেই মনে হল এই বই জটিল দুর্বোধ্য। এ জন্য নিউটনের এক দার্শনিক বন্ধু এক দিন জিজ্ঞাসা করলেন, কী ভাবে তোমার লেখার অর্থ বোঝা সম্ভব। নিউটন তাঁকে একটি বইয়ের তালিকা দিয়ে বললেন, এই বইগুলো আগে পড়ুন তা হলে আমার তত্ত্ব বোঝা সম্ভব।

১৬৪৭ সালে 'ফিলোসোফিয়াক ন্যাচুর‍্যালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা' প্রকাশিত হয়। এই বইয়ের প্রথম খণ্ডে নিউটন গতিসূত্র সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।

নিউটনের তত্ত্বের সমালোচনা করে বলা হল, তিনি তাঁর তত্ত্বে বিশ্বপ্রকৃতিকে যে ভাবে বিবেচনা করেছেন তা থেকে মনে হয় এ সমস্তই যেন এক বিশৃঙ্খল মনের প্রাণহীন সৃষ্টির কাহিনি। এর জবাবে নিউটন বললেন, প্রকৃতপক্ষে এই বিশ্বপ্রকৃতি এমন সুশৃঙ্খল সুসামঞ্জস্য ভাবে সৃষ্টি হয়েছে মনে হয় এর পশ্চাতে কোনও ঐশ্বরিক স্রষ্টা রয়েছেন।

নিজেই নিজের বিরাট তত্ত্বকে সঠিক ভাবে চিনতে পারেননি বিজ্ঞানী নিউটন। তাঁর ভাষায় তিনি বলেন, "আমি এত দিন কেবল নুড়িপাথর কুড়িয়েছি"। এই মহান বিজ্ঞানী মৃত্যুবরণ করেন ১৭২৭ সালের ২০ মার্চ।

সূত্র : বিশ্বের সেরা ১০১ বিজ্ঞানীর জীবনী, আ. ন. ম. মিজানুর রহমান পাটওয়ারি, মিজান পাবলিশার্স, ঢাকা

সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate