১৯২৫ সালের জুন মাসে এক বিজ্ঞানী অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বাস্থ্য উদ্ধারের জন্য উত্তর সাগরের হেলগোল্যান্ড দ্বীপে চলে গিয়েছিলেন। এই দ্বীপে বসে তিনি শুধু তার স্বাস্থ্য উদ্ধারই করলেন না, পারমাণবিক বিজ্ঞানে নতুন প্রাণের সঞ্চার করলেন। আর এক বিজ্ঞানী ডিরাক বলেছেন, “আমরা দুজনই তখন তরুণ ছিলাম এবং একই সমস্যা নিয়ে কাজ করছিলাম। তিনি সার্থক হয়েছিলেন, কিন্তু আমি ব্যর্থ হয়েছিলাম।”
উক্ত দ্বীপের এই বিজ্ঞানী দুটি সমস্যার সমাধান করেছিলেন। প্রথম বোরের কোয়ান্টাম শর্ত নতুন গণিতে কী ভাবে লিখতে হবে, তা তিনি আবিষ্কার করেছিলেন এবং দ্বিতীয়ত নতুন পদ্ধতিতে শক্তি সংরক্ষণের নীতি যে বজায় থাকে, তা প্রমাণ করতে সক্ষম হলেন। ইনিই নোবেল বিজয়ী জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী ভার্নার কার্ল হাইজেনবার্গ । তিনি ১৯০১ সালের ৫ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি এর্ভিন শ্র্যোডিঙ্গারের সমসাময়িক কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান উদ্ভাবন করেন। অনিশ্চয়তা নীতি আবিষ্কারের জন্য তিনি বিখ্যাত।
হাইজেনবার্গ মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্নল্ড সমারফেল্ড ও ভিলহেল্ম ভিনের কাছে পদার্থবিজ্ঞান অধ্যয়ন করেন। এরপর তিনি গ্যোটিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেভিড হিলবার্ট ও মাক্স বর্নের তত্ত্বাবধানে পড়াশোনা করেন।
১৯২৫ সালে মাক্স বর্ন ও পাসকুয়াল জর্ডানের সঙ্গে মিলে হাইজেনবার্গ কোয়ান্টাম বলবিদ্যার ম্যাট্রিক্স ভিত্তিক ব্যাখ্যা প্রদান করেন। কোয়ান্টাম বলবিদ্যার আবিষ্কারক হিসাবে এবং এর ব্যবহারিক প্রয়োগ হিসাবে হাইড্রোজেনের বহুরূপতা আবিষ্কারে অবদান রাখার জন্য হাইজেনবার্গকে ১৯৩২ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়।
হাইজেনবার্গ মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্নল্ড সমারফেল্ড ও ভিলহেল্ম ভিনের কাছে পদার্থবিজ্ঞান অধ্যয়ন করেন। এর পর তিনি গ্যোটিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেভিড হিলবার্ট ও মাক্স বর্নের তত্ত্বাবধানে পড়াশোনা করেন।
১৯২৪ সালে নিলস বোরের সঙ্গে তিনি কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের উপর কাজ শুরু করেন। এই কাজ শেষ হয় ১৯২৬ সালে দুর্বোধ্য 'ম্যাট্রিক্স বলবিজ্ঞান'-এর প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। পরবর্তীতে বিশেষত পল ডিরাক, ভোলফ গাং পাউলি, প্রমুখের প্রচেষ্টায় কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের স্পষ্টতর ব্যাখ্যা প্রতিষ্ঠিত হয়, যদিও তাত্ত্বিক ভাবে নতুন এই বলবিজ্ঞান হাইজেনবার্গের ম্যাট্রিক্স উপায়ের সমার্থক। অবশ্য হাইজেনবার্গ তাঁর নিজস্ব তাত্ত্বিক কাঠামোর মধ্যেই অনিশ্চয়তা সূত্রটি প্রমাণ করেন।
সূত্র : বিশ্বের সেরা ১০১ বিজ্ঞানীর জীবনী, আ. ন. ম. মিজানুর রহমান পাটওয়ারি, মিজান পাবলিশার্স, ঢাকা
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019