অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

গ্যালিলিও গ্যালিলাই

গ্যালিলিও গ্যালিলাই

গ্যালিলিও গ্যালিলাই-এর জন্ম ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দ, মৃত্যু ৮ জানুয়ারি ১৬৪২ খ্রিস্টাব্দ। এই তারিখের উল্লেখ রয়েছে 'দি নিউ এনসাইক্লোপেডিয়া ব্রিটানিকা'য়। তবে এই তারিখ নিয়ে মতবিভেদ রয়েছে। জন্ম তারিখ বিভিন্ন বইয়ে বিভিন্ন রকম থাকলেও মৃত্যু তারিখ নিয়ে তেমন মতভেদ নেই। তার বাসস্থান ছিল, ইতালির তুসকানের গ্র্যান্ডডাচিতে।

আধুনিক বিজ্ঞানের জন্মের জন্য যে কোনও একক ব্যক্তির চেয়ে গ্যালিলিওর অবদান সব চেয়ে বেশি। তিনি চিরায়ত পদার্থবিদ্যার প্রধান প্রতিষ্ঠাতা। গ্যালিলিও প্রথম বিপ্লব আনেন বলবিদ্যায়। গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটলের (খ্রিস্টপূর্ব ৩৮৪-- খ্রিস্টপূর্ব ৩২২) শিক্ষা ছিল, হালকা বস্তুর চেয়ে ভারী বস্তু দ্রুতগতিতে নিপতিত হয়। পরবর্তী প্রজন্মসমূহের পণ্ডিতরা এই মতবাদকে মেনে নিয়েছিলেন। গ্যালিলিও এ মতবাদকে যাচাই করতে মনস্থ করেন। তিনি পর পর অনেকগুলো পরীক্ষণকাজ পরিচালনা করেন। তিনি দেখতে পান, অ্যারিস্টটলের মতবাদ সঠিক নয়। আসল ঘটনা হল, ভারী ও হালকা বস্তু একই বেগে পতিত হয়। বেগমাত্রার তারতম্য সৃষ্টি হয় বায়ুর সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে। টোলেমি (খ্রিস্টীয় ২য় শতাব্দী) বলেছিলেন, পৃথিবী স্থির রয়েছে। সূর্যসহ সব গ্রহ তাকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে। অ্যারিস্টটলও তা-ই বলে গেছেন। এই মতবাদ চলে আসছিল দু' হাজার বছর ধরে। কিন্তু গ্যালিলিও এই মতবাদে বিশ্বাসী ছিলেন না। তিনি নিকোলাস কোপারনিকাসের (১৪৭৩-১৫৪৩) মতে বিশ্বাসী। অর্থাৎ পৃথিবীসহ সব গ্রহ সূর্যকেই প্রদক্ষিণ করছে। কিন্তু এ চিন্তাধারার সমর্থনে প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়ার পরই তিনি জনসাধারণের সম্মুখে এ চিন্তাধারা সমর্থন করা শুরু করেন। এর ফলে অ্যারিস্টটলবাদী পণ্ডিতরা বিরক্ত হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হন এবং কোপারনিকাসবাদ নিষিদ্ধ করার জন্য ক্যাথলিক চার্চকে প্ররোচিত করতে থাকেন। গ্যালিলিও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে রোমের ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর যুক্তি ছিল বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব সম্পর্কে কিছু বলার উদ্দেশ্য বাইবেলের ছিল না। যেখানে বাইবেলের সঙ্গে সাধারণ বুদ্ধির দ্বন্দ্ব বাইবেল সেখানে রূপক।

কিন্তু চার্চের ভয় ছিল এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে প্রোটেস্ট্যান্টদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে ক্ষতি হবে। সুতরাং তাঁরা দমননীতি গ্রহণ করেন। তাঁরা আদেশ জারি করেন যে, গ্যালিলিও কখনও এ মতবাদ মেনে চলতে কিংবা এর স্বপক্ষে প্রচার করতে পারবেন না। বৃদ্ধ বয়সেও গ্যালিলিওকে দিয়ে ঘোষণা করতে বাধ্য করান যে,"আমি ফ্লোরেন্সের পরলোকগত ভিনসেনজিও গ্যালিলির পুত্র ৭০ বছর বয়স্ক গ্যালিলিও গ্যালিলাই আদালতের কাঠগড়ায় হাজির... সূর্যই মহাবিশ্বের কেন্দ্রস্থল এবং গতিহীন স্থির ...এই ভ্রান্ত ধারণা আমি ত্যাগ করছি, আমি কোনও প্রকারেই আর উক্ত ভ্রান্ত তথ্য সমর্থন, প্রচার বা ঘোষণা করব না।"

যা হোক, ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ শিক্ষকতা এবং গ্রন্থ প্রকাশের ব্যাপারেও গ্যালিলিওর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। কিন্তু তাঁর চিন্তা করার ক্ষমতা এবং গ্রন্থ রচনা করার কাজ বন্ধ করতে পারেননি। অন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে বন্দিদশাকালে তিনি গতির নিয়ামক সম্পর্কিত সূত্রাবলী শীর্ষক গ্রন্থ রচনা করেন। নানা দুঃখ কষ্ট আর অভাব অনটনে এই মহান বিজ্ঞানী ও মহামানব জ্বরে ধুঁকে ধুঁকে গৃহবন্দিত্বের নয় বছরের মাথায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর ৩২৬ বছর পর ১৯৬৮ সালে ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ গ্যালিলিওকে বিনা শর্তে ক্ষমা প্রদর্শন এবং তাঁর দণ্ডের আদেশ নাকচ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

সূত্র : বিশ্বের সেরা ১০১ বিজ্ঞানীর জীবনী, আ. ন. ম. মিজানুর রহমান পাটওয়ারি, মিজান পাবলিশার্স, ঢাকা

সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/28/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate