অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

প্রশান্তচন্দ্র মহালানবীশ

প্রশান্তচন্দ্র মহালানবীশ

বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু ও বিজ্ঞানী প্রফুল্লচন্দ্রের সার্থক উত্তরসূরি প্রখ্যাত বাঙালি বিজ্ঞানী প্রশান্তচন্দ্র মহালনবীশ। পরিসংখ্যান বিজ্ঞানের স্থপতি প্রশান্তচন্দ্র মহালনবীশ নিজেই একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিলেন। বিশ্বনন্দিত সংখ্যায়নবিদ বিজ্ঞানী প্রশান্তচন্দ্র মহালনবীশকে পৃথিবীতে স্ট্যাটিসকস-এর স্যাম্পলিং সার্ভে বা পরিসংখ্যান নমুনা পদ্ধতি উদ্ভাবনের জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। প্রশান্তচন্দ্র মহালনবীশ ১৮৯৩ সালের ২৯ জুন কলিকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।

প্রশান্তচন্দ্র কলিকাতা ব্রাহ্ম বয়েজ হাইস্কুল থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। এখান থেকে আই.এস.সি ও বি.এস.সি অনার্স পদার্থবিদ্যায় পাশ করেন। এই কলেজে সত্যেন্দ্রনাথ বসু, মেঘনাদ সাহা ও জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ তাঁর এক বছরের জুনিয়র ছিলেন।

১৯১২ সালে বি.এস.সি পাশ করার পর সরকারি বৃত্তি নিয়ে তিনি ইংল্যান্ড যান এবং কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯১৫ সালে প্রকৃতি বিজ্ঞান ও অঙ্কশাস্ত্রে ট্রাইপস লাভ করেন। ১৯১৭ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর অধ্যাপনা জীবন শুরু। এর পর প্রেসিডেন্সি কলেজ। ১৯২১ সালে বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি এর অবৈতনিক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

প্রশান্তচন্দ্র প্রথমে পদার্থবিদ্যা নিয়ে কাজ করেন। এক সময় প্রখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী উইলসনের সঙ্গে তিনি কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি সংখ্যায়নে আগ্রহী হন। সংখ্যায়ন বিদ্যায় তাঁর আনুষ্ঠানিক পাঠ ছিল না। স্বীয় প্রয়াসে তিনি সংখ্যায়ন বিশেষজ্ঞ হওয়ার অনন্য নজির স্থাপন করেছিলেন। তাত্ত্বিক অর্থনীতির ক্ষেত্রেও তিনি কয়েকটি ইকোনোমেট্রিক মডেল বা অর্থনৈতিক মডেল তৈরি করেন। এর সাহায্যে জাতীয় অর্থনীতিতে কী পরিমাণ বিনিয়োগ যুক্তিসঙ্গত, তা পরিমাণ করা সহজ হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত জওহরলাল নেহরুর আমন্ত্রণে এই তত্ত্বকে ভিত্তি করে তিনি ভারতের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা তৈরি করেন।

বিজ্ঞানী প্রশান্তচন্দ্র মহালনবীশের অনন্য ও অমর কীর্তি ‘ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিক্যাল ইনস্টিটিউট’-এর প্রতিষ্ঠা। ১৯৩২ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারতীয়রা বিশেষ করে বাঙালিরা এই প্রতিষ্ঠানের আনুকূল্যে পরিসংখ্যানশাস্ত্রে বিশ্বে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে। এই প্রতিষ্ঠান গড়ার জন্য প্রশান্তচন্দ্র ব্যাপক পরিশ্রম করেছিলেন। ক্রমে প্রতিষ্ঠানটি জগদ্বিখ্যাত হয়ে ওঠে। সংখ্যায়নের গুরুত্ব উপলব্ধি করে প্রশান্তচন্দ্র বলেছিলেন, “বস্তুত বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির যে কোনও সাফল্যের যে কোনও মূল্যায়ন নির্ভর করে সঠিক সংখ্যায়নের উপর তা সে পদার্থবিদ্যাই হোক অথবা জ্যোর্বিজ্ঞানের দুর্ভেদ্য কোনও রহস্যই হোক। সমাজবিজ্ঞান অথবা কৃষিবিজ্ঞানের উৎপাদন, আবহাওয়া বিজ্ঞান, শরীরবৃত্তীয় জ্ঞান, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, সংখ্যায়নের প্রবেশ সর্বত্রই। পৃথিবীতে দৈনন্দিন বিজ্ঞান প্রযুক্তি অথবা প্রকৃতি জগতে নিয়ত যে সমস্ত ঘটনা ঘটে চলছে তাদের কার্যকারণ ও অভিমুখ, তাদের প্রকৃতি এবং পারস্পরিক সম্পর্ক এদের যথাযথ অস্তিত্ব সম্ভাব্যতা যাচাই করার অন্যতম অবলম্বন যে পরিসংখ্যান এ কথা সবাই আজ স্বীকার করেন। এ পরিসংখ্যানের উপর নির্ভর করছে মানব সভ্যতার ভারসাম্য”।

স্যাম্পল সার্ভে বা নমুনা সমীক্ষা ছাড়াও তাঁর অসাধারণ অবদানের আরেকটি হলো ‘ফ্র্যাকটাইল গ্রাফিক অ্যানালিসিস’। পৃথিবীর নানা দেশ থেকে নানান পুরস্কার ও সম্মাননা তিনি লাভ করেছেন। এ সবের মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য হল লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটির সদস্যপদ (এফআরএস) ও সোভিয়েত ইউনিয়ন অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স-এর সদস্য পদ। শেষোক্ত সম্মান ভারতীয় বিজ্ঞানীদের মধ্যে তিনিই প্রথম পেয়েছিলেন। ১৯৫৭-৫৯ সালে বিশ্ববিশ্রুত সংখ্যায়নবিদ নোনাল্ড ফিচার ও মহলানবীশ যুগ্ম ভাবে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব স্ট্যাটিসকস’-এর যুগ্ম সভাপতি নির্বাচিত হন।

১৯৭২ সালের ২৮শে জুন  অধ্যাপক মহলানবীশ প্রয়াত হন।

সূত্র : বিশ্বের সেরা ১০১ বিজ্ঞানীর জীবনী, আ. ন. ম. মিজানুর রহমান পাটওয়ারি, মিজান পাবলিশার্স, ঢাকা

সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate