পাখিমানব হিসেবে খ্যাত সলিম আলির জন্ম ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দের ১২ নভেম্বর মুম্বইয়ে। ভারতে তিনিই প্রথম পাখির ওপর নিয়মতান্ত্রিক জরিপ পরিচালনা করেন। তাঁর রচিত বইগুলো পরবর্তী সময়ে পক্ষিবিজ্ঞানের উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখে। বোম্বে ন্যাচারাল হিস্টরি সোসাইটির গুরুত্বপূর্ণ আসন তিনি অলঙ্কৃত করেন এবং এর উন্নয়নে সরকারি সাহায্যের সংস্থান করে দেন। ভরতপুর পক্ষী অভয়ারণ্য তাঁর প্রতিষ্ঠিত। ভারত সরকার ১৯৫৮ সালে তাকে পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৫৮ সালে রাজ্যসভায় সদস্য মনোনীত হন। পাখি বিষয়ে অবদানের জন্য তিনি বার্ডম্যান অব ইন্ডিয়া নামে খ্যাত। তিন বছর বয়সেই সলিম আলি বাবা-মা হারিয়ে অনাথ হয়ে পড়েন। এ সময় মামা আমিরুদ্দিন তৈয়বজি অন্যান্য ভাইবোনসহ সলিমের দায়িত্ব নেন। ব্রিটিশ উদ্যোক্তা ও প্রকৃতিবিদ ডব্লিউএস মিলার্ডের সান্নিধ্যে পাখি নিয়ে গবেষণার বিষয়টি সলিম আলি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেন। খেলার ছলে সলিম একবার একটি চড়ুই শিকার করেন। এটি ছিল হলুদ কণ্ঠের। আত্মজীবনী ‘দ্য ফল অব অ্যা স্প্যারো’তে উল্লেখ করেন এই হলুদ কণ্ঠ চড়ুই শিকারই তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। গিরগামের জনানা বাইবেল মেডিকেল মিশন গার্লস হাইস্কুলে সলিমের প্রাথমিক পড়াশোনা। পরবর্তীকালে বোম্বের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হন তিনি। ১৯১৩ সালে বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কলেজে পড়েছেন মাত্র ১ বছর। এ সময় বার্মা চলে আসেন পারিবারিক ওলফার্ম (এক ধরনের ধাতু) খনি দেখাশোনার জন্য। এর আশপাশের বনভূমি তার সহজাত শিকার ক্ষমতার জন্য বেশ সহায়ক হয়ে ওঠে। ভারতে ফিরে আসার পর তিনি প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনায় আবার মন দেন। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের ফাদার তাকে প্রাণিবিদ্যা নিয়ে পড়তে উত্সাহিত করেন। ১৯১৮ সালে তাহমিনা নামে এক দূরবর্তী আত্মীয়াকে বিয়ে করেন সলিম আলি। ১৯৮৭ সালের ২৭ জুলাই মুম্বইয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।
সূত্র : বিশ্বের সেরা ১০১ বিজ্ঞানীর জীবনী, আ. ন. ম. মিজানুর রহমান পাটওয়ারি, মিজান পাবলিশার্স, ঢাকা
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019