সিডিএমএ আরেকটু গোলমেলে। সেখানে একটা চ্যানেল ব্যবহার করা হয় না - সবগুলি চ্যানেলের সম্মিলিত ফ্রিকোয়েন্সিই একসঙ্গে ব্যবহার করা হয়। প্রত্যেকের কথাই একই সঙ্গে রেকর্ড করা হয় কিন্তু রেকর্ডিং-এর সময়ে প্রত্যেকটি কথাবার্তার সঙ্গে একটি কোড যোগ করা হয় এবং পরে অন্য প্রান্তে সেটিকে ডিকোড করা হয়। এই কোডিং ডিকোডিং-এর ব্যাপারটা গোলমেলে। একটা উদাহরণ অবশ্য দেওয়া যেতে পারে। যদি আমরা ভাবি যে, একই ঘরে বহু লোক এক সঙ্গে কথা বলছে ঠিকই, কিন্তু তারা প্রত্যেকেই নিজেদের মধ্যে কথা বলছে এমন একটা ভাষায়, যে ভাষা তারা ছাড়া উপস্থিত অন্য কেউ জানে না। সে ক্ষেত্রে লোকেরা নিজেদের ভাষাটাই শুনতে ও বুঝতে পারবে, অন্যদের ভাষা সব সময়েই গোলমাল বলে মনে হবে। এই উদাহরণে ভাষা কোড-এর কাজ করছে। এই ব্যাখ্যাটা নিঃসন্দেহে বাড়াবাড়ি রকমের সরল, কিন্তু তবুও কোডিং-এর ব্যাপারটা কিছুটা বোধহয় বোঝা যাবে।
টিডিএমএ বা সিডিএমএ যে শুধু ফ্রিকোয়েন্সিগুচ্ছকে ভালো ভাবে সদ্ব্যবহার করছে তা নয়, এটি ব্যবহার করার আরও সুবিধা আছে। এর আগে ফোনের কথাবার্তা বাইরের লোক চেষ্টা করলে শুনতে পারত। টিডিএমএ ও সিডিএমএ প্রযুক্তি সে তুলনায় খুবই নিরাপদ। টিডিএমএ ভালো না সিডিএমএ ভালো - সে নিয়ে বহু বিতর্ক ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে। ফ্রিকোয়েন্সি স্পেকট্রামের সদ্ব্যবহারের দিক থেকে বিচার করলে সিডিএমএ নিঃসন্দেহে শ্রেষ্ঠতর, সে বিষয়ে এখন দ্বিমত নেই। তবে যখন কেউ সেলুলার প্রযুক্তি বাছতে চায়, তখন অন্যান্য অনেক কিছুই বিচার করতে হয়। ভারতবর্ষে মোবাইল পরিষেবা টিডিএমএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুরু হয় - এটি ছিল ইউরোপের জিএসএম প্রযুক্তি। পরে সিডিএমএ প্রযুক্তিকেও ভারত গ্রহণ করেছে। রিলায়েন্স সিডিএমএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল ও ডাবলু এল এল (ওয়্যারলেস ইন লোকাল লুপ) পরিষেবা শুরু করে। আমরা সাধারণ লোকেরা যখন মোবাইল ফোন ব্যবহার করি, এই প্রযুক্তি দু’টির মধ্যে কোনও তফাতই আমরা ধরতে পারব না ।
সূত্র : মোবাইল ফোন খুঁটিনাটি, মোজাহিদুল ইসলাম ঢেউ, সিসটেক পাবলিকেশন্স, ঢাকা
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/25/2020