হোমো সাপিয়েন্স নিয়ানডারথালেনসিস (Homo Sapiens neanderthalensis)— এদের প্রধানত ইউরোপ ও মধ্যপূর্ব এশিয়ার ১.৫ লক্ষ ৩৫ হাজার বছর আগে পাওয়া যেত। এদের শারীরিক গঠন অত্যন্ত উন্নত ছিল এবং মজবুত মাংশপেশির অধিকারী ছিল। ১৮৫৬ সালে এদের জীবাশ্ম জার্মানির নিয়ান্ডার উপত্যকায় প্রথম আবিষ্কৃত হয়।
এদের হাড় থেকে পাওয়া mtDNA মানুষের mtDNA থেকে স্বতন্ত্র।
আজ থেকে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে নিয়ানডারথাল গোষ্ঠী অবলুপ্ত হয়।
হোমো ফ্লোরেসিয়েন্সিস (Homo floresiensis)— ২০০৩ সালে ইন্দোনেশিয়ায় এই প্রজাতির আবিষ্কার হয়। পরে অস্ট্রেলিয়ায় এদের পাওয়া যায়। ১৮ হাজার বছর আগে এরা পৃথিবীতে বাস করত। এদের দেহ এবং মস্তিষ্ক আজকের মানুষের তুলনায় এক তৃতীয়াংশ ছিল। এরা অদ্ভুত ভাবে আধুনিক মানুষের থেকে আলাদা ভাবে বাস করত।
হোমো সাপিয়েন্স সাপিয়েন্স (Homo Sapiens Sapiens)—আধুনিক মানুষ বলে যা বুঝি তারা হোমো সাপিয়েন্স সাপিয়েন্স-এর মধ্যে পড়ে। উল্লেখযোগ্য ভাবে নিয়ানডারথালেনসিসদের থেকে বিবর্ধিত হয়নি। বরঞ্চ তাদের সমসাময়িক ছিল।
ক্রোম্যাগনোনম্যান (Cromagnonman)— আশ্চর্যজনক ভাবে নিয়ানডারথালেনসিসরা পৃথিবীর বুক থেকে উধাও হয়ে যায় এবং তারা ক্রোম্যাগনোনম্যান দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। কিছু বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব অনুযায়ী তারা একই সঙ্গে অনেক বছর ধরে বিভিন্ন জায়গায় আলাদা ভাবে বাস করে। কিন্তু তাদের অবলুপ্তির কারণ এখনও অজানা। ক্রোম্যাগনোনদের সুষ্ঠু সমাজব্যবস্থা ছিল এবং তারা ভাষার ব্যবহার জানত। তারা শিকার করে খাবার সংগ্রহ করত। তাদের শিকারের চিত্রগুলি ইউরোপের বিভিন্ন গুহায় আজও বর্তমান।
বিভিন্ন সময়ে মানুষের চেহারার বিবর্তনের ছবি একটা আঁকার চেষ্টা হয়েছে এতক্ষণ। এ নিয়ে গবেষণা চলছে অবিরত। বিজ্ঞান গবেষণার নিয়ম মেনে পুরোনো সিদ্ধান্তের কিছু রদবদল হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু কোনও ফলাফলই বিজ্ঞানকে উল্টো দিকে চালিত করছে না বা বিবর্তনের মূল সূত্রের বিরুদ্ধে যাচ্ছে না, বরঞ্চ বস্তুজগৎ থেকে প্রাণের উদ্ভব ও বিকাশের সম্পর্কে যুক্তিগুলি আরও শক্তিশালী হচ্ছে। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে ডারউইনের মতবাদ কিংবা বিবর্তন সংক্রান্ত যুক্তিসিদ্ধ বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বহু দেশের পাঠ্যপুস্তকে হয় এখনও অন্তর্ভুক্ত হয়নি কিংবা সম্প্রতি বাদ পড়েছে। এমনকী উন্নত দেশেও বিজ্ঞানের যুক্তিসিদ্ধ ব্যাখ্যার বিরুদ্ধে জনমত সংগঠনের চেষ্টা চলছে। এটা বিজ্ঞানভাবনা প্রসারের ক্ষেত্রে আজও আমাদের বিরাট ঘাটতির কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়।
সূত্র : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংসদ ও দফতর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020