মেঘালয়ের গারো সম্প্রদায়ের উত্সব ওয়াংলা। উর্বরতা প্রধান দেবতা ‘সালজং’-কে তুষ্ট করার জন্য এই উত্সব। উত্সবের প্রথম দিনের অনুষ্ঠান গ্রাম প্রধানের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয়। এর নাম ‘রাগুলা’। দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান ‘কাক্কাট’। মহিলা ও পুরুষেররা রঙবেরঙের পোশাক পরেন, মাথায় থাকে পালকের মুকুট — ডিম্বাকৃতি ড্রামের তালে তালে চলতে থাকে নাচ। ড্রামের আওয়াজ পাহাড় উপত্যকায় যেন প্রতিধ্বিনত হয়ে ফেরে। এই উত্সবকে তাই ‘হান্ড্রেড ড্রামস ফেস্টিভ্যাল’-ও বলা হয়। অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে মোষের শিং দিয়ে তৈরি বাঁশিও বাজানো হয়।
খাসি সম্প্রদায় শরত্কালে এই উত্সব পালন করেন। উপচে পড়া ফসল আর সকলের সমৃদ্ধি কামনায় এই উত্সব। উত্সবের প্রধান পুরোহিত ‘লেই শিলং’ বা শিলং পাহাড়ের দেবতার উদ্দেশে একটি মোরগ উত্সর্গ করেন। এ ছাড়া পূর্বপুরুষদের উদ্দেশেও মোরগ ও ছাগল উত্সর্গ করা হয়। এই অনুষ্ঠানকে বলা হয় ‘পেমব্ল্যাং’। এর পরেই ড্রাম এবং ‘তাংমুরি’ বা বাঁশির সঙ্গে নাচ শুরু হয়। পুরুষেরা নাচের সময় ডান হাতে খাসি তরোয়াল আর বাম হাতে ইয়াকের লোমে তৈরি ঝাঙ্কন বা চামর ধারণ করেন।
মেঘালয়ের জয়ন্তিয়া গোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য উত্সব ‘বেদিয়েনখলাম’ জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত হয়। গ্রামের প্রধান (দালোই) দেবতাকে তুষ্ট করার জন্য এবং রোগব্যাধি থেকে মুক্তির জন্য নানা রকমের লৌকিক আচার পালন করেন। যুবকেরা অশুভ আত্মা ও রোগব্যাধি তাড়ানোর জন্য একটি বাঁশের লাঠি নিয়ে প্রত্যেক বাড়ির চালে আঘাত করেন। তিন দিন ধরে নানা রকম আচার ও অনুষ্ঠান পালিত হয়। বাঁশি ও ড্রাম সহযোগে পুরুষেরা নাচে মত্ত হয়ে ওঠেন। মনে করা হয় উত্সবের সময় বৃষ্টি হওয়া শুভ লক্ষণ। শেষ দিনে সবাই ট্র্যাডিশনাল সাজে সেজে ‘মিনথং’ নামে এক জায়গায় জড়ো হন। সেখানে কাঠের বল নিয়ে অনেকটা ফুটবলের মতো ‘দাদলাওয়াকোর’ নামে এক রকম খেলা হয়। খেলায় ‘উত্তরের দল’ ও ‘দক্ষিণের দল’ — এই দু’টি দল থাকে। মনে করা হয় যে দল জিতবে দেশের সেই অংশে খুব ভালো ফসল ফলবে।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/11/2020