পারসি সমাজে বছরের ছয়টি ঋতুতে ছয়টি গহমবর উত্সব পালিত হয়। এই উত্সবের উদ্দেশ্য বিশ্বসৃষ্টির উপাদানগুলি যথা আকাশ, জল, মাটি, উদ্ভিদজগত, প্রাণীজগত ও মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। এক জন প্রকৃত পারসির কিছু অবশ্য পালনীয় কর্তব্য আছে। এই কর্তব্যগুলি হল — দয়ালু হওয়া, সৎ হওয়া, গহমবর পালন করা, মৃত্যুর পর তিন দিনের অনুষ্ঠান করা, ভগবানের পূজা করা, গরিবদের জন্য ঘর তৈরি করে দওয়া, সকলের ভালো/শুভ কামনা করা। গহমবর উপলক্ষে পারসিরা এই কর্তব্যপালনের প্রতি গুরুত্ব দেন।
পারসি ক্যালেন্ডারের দশম মাসের একাদশতম দিনটিতে (খোরশেদ রোজ দে মাহ) জরথুস্ট্রের নির্বাণের দিন। এই দিনটি পারসিরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পালন করেন। বিশেষ প্রার্থনাসংগীত গাওয়া হয়। আগুনের পূজক পারসিরা মন্দিরে গিয়ে এই দিন বিশেষ প্রার্থনায় যোগ দেন।
জরথুস্ট্রের জন্মদিনটি পারসি ক্যালেন্ডারের ফরবরদিন মাসের ষষ্ঠ দিনে পালিত হয়। প্রাচীন পারসি গ্রন্থে এই দিনটিকে ‘নভরোজ ই খাস’ বা বিশেষ নববর্ষ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই দিনটিতে বিশেষ প্রার্থনা এবং খাওয়াদাওয়ার (জশন) ব্যবস্থা করা হয়।
বসন্তকালের আগমনে মহাবিষুব-এর দিনে পালিত হয় পারসি নববর্ষ ‘জামশেদ ই নভরোজ’। কথিত আছে পারস্যের পৌরাণিক রাজা জামশেদ এই উত্সবের সূত্রপাত করেন। ফেরদৌসি রচিত ‘শাহনামা’ থেকে জানা যায় পারস্যের রাজা সাইরাজ ও দারিয়াস ধুমধামের সঙ্গে এই দিনটি পালন করতেন। ‘নভরোজ’-এর সময় একটি সাদা কাপড়ের ওপর সাতটি শুভ বস্তু রাখা হয়। একটি মাটির পাত্রে গমের দানা রেখে তাতে জল ছিটিয়ে অঙ্কুরোদ্গম ঘটানো হয়। সবুজ কচি গমের চারা জীবের প্রতীক হিসেব গণ্য হয়।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/3/2020