মকর সংক্রান্তি উৎসব সর্বভারতীয়। দেশের সব জায়গায় প্রবল আগ্রহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে এই উৎসব পালিত হয়, তবে ভিন্ন ভিন্ন নামে। যেমন পশ্চিমবঙ্গে এর নাম পৌষপার্বণ অথবা নবান্ন। তেমনই বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নাম --- তামিলনাড়ু আর কর্ণাটকে একে ‘পোঙ্গাল’ বলা হয়। কর্ণাটকে এর আরও দু’টি নাম আছে – ইল্লু বিল্লা এবং মকর সংক্রমনা। উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের কিছু অংশে এই উৎসব ‘খিচড়ি’ নামে পরিচিত। গুজরাতে এই উৎসবের নাম ‘উত্তরায়ণ’।
হরিয়ানা, পঞ্জাব ও হিমাচল প্রদেশে এই দিনটিতে পালিত হয় মাঘী উৎসব। পঞ্জাবে মকর সংক্রান্তির আগের দিন পালিত হয় ‘লহরি’। অসমে মকর সংক্রান্তির দিন পালিত হয় ভোগালি বিহু। কাশ্মীর উপত্যকায় এই উৎসবের নাম শিশুর সায়েনক্রাত। মহারাষ্ট্রে এই উৎসবের নাম ‘তিলগুল’। আর দেশের বাদ বাকি জায়গায় এর পরিচিতি মকর সংক্রান্তি হিসাবেই। নাম যা-ই হোক, প্রথা মূলত এক। এই দিনে সাগরে-নদীতে চলবে পুণ্যস্নান, তৈরি হবে নানা খাবারদাবার, কোথাও কোথাও নতুন পোশাক পরিধান। প্রাচীন মহাকাব্য মহাভারতেও এই দিনের তাৎপর্য সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে। তাই সামাজিক এবং ভৌগোলিক গুরুত্ব ছাড়াও এই দিনটি ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় গুরুত্ব বহন করে।
গুজরাতে উৎসবটি আরও অনেক বড় আকারে উদযাপিত হয়। মানুষ সূর্যদেবতার কাছে নিজেদের ইচ্ছা বা আকুতিকে সুন্দর সুন্দর ঘুড়ির মাধ্যমে প্রকাশ করতে পালন করে ঘুড়ি উৎসব, যা মূলত প্রিয় দেবতার কাছে পৌঁছনোর জন্য একটি রূপক বা প্রতীক হিসেবে কাজ করে। গ্রামগঞ্জে এবং উপকূলীয় অঞ্চলে অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ হিসেবে মোরগ লড়াই অনুষ্ঠিত হয়। মকরসংক্রান্তি সম্মান, অভিলাষ এবং জ্ঞানের দেবী সরস্বতীকে সম্মান প্রদানের মাধ্যমেও প্রকাশিত হয়। যে হেতু উৎসবটি শীতের মাঝামাঝি সময়ে উদযাপিত হয়, সে হেতু এই উৎসবে এমন ধরনের খাবার তৈরি করা হয়, যা শরীরকে উষ্ণ রাখে এবং বেশ শক্তি জোগায়। গুড় দিয়ে তৈরি তিলের লাড্ডু এই উৎসবের অন্যতম উপাদেয় খাবার। তাই মহারাষ্ট্রে একে বলা হয় 'তিলগুল'। অন্য কিছু প্রদেশে গবাদিপশুকে নানা রঙে সজ্জিত করা হয় এবং আগুনের ওপর দিয়ে ঝাঁপ দেওয়ানো হয়।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 9/20/2019