পশ্চিমবঙ্গের অঙ্গনওয়াড়ি বা ‘আইসিডিএস’(ইনটিগ্রেটেড্ চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট সারভিসেস) কেন্দ্রগুলির অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। এই ছবিই বিশদ ভাবে উঠে এসেছে প্রতীচী ট্রাস্টের সাম্প্রতিক প্রকাশিত চাইল্ড রিপোর্টে। অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন এই রিপোর্টটি সম্প্রতি উদ্বোধন করলেন কলকাতায়। প্রতীচী রাজ্যের মোট ছ’টি জেলার ২২টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সমীক্ষা চালায় গত বছর। সেই জেলাগুলি হল দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি এবং দক্ষিণ দিনাজপুর। উল্লেখযোগ্য, এই একই বিষয়ে এই ছয়টি জেলাতেই প্রতীচী প্রথম বার সমীক্ষা চালায় ২০০৮ সালে। সাম্প্রতিক সমীক্ষাটি ছয় বছর পর একটি পুনর্মূল্যায়ন।
সারা রাজ্য জুড়ে মোট ১ লক্ষ ১৬ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। প্রতীচীর রিপোর্ট অনুযায়ী এই কেন্দ্রগুলির মধ্যে ৭১.৫ শতাংশে কোনও শৌচাগার নেই। বস্তুত সব ধরনের পরিকাঠামোরই বিরাট অভাব রয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে। মোট যে ২২টি কেন্দ্রে সমীক্ষা চালানো হয় তার কোনওটিতেই কোনও বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। পানীয় জলের ব্যবস্থা একই রকম ভাবে অবহেলিত এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার বিষয়টিও একই রকম ভাবে নিরাশাজনক। পঞ্চাশ শতাংশ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এখনও নিরাপদ পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থাই নেই। ২২টির মধ্যে ১৯টি কেন্দ্রে কোনও প্রাথমিক চিকিৎসারও ব্যবস্থা নেই। শিশুদের হঠাৎ কিছু হলে কিছু করার নেই। বহু কেন্দ্রে সময়মতো চাল সরবরাহ করা হয় না এবং শিশুদের খাবারের জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ অর্থ এতই কম যে একটা ডিম দিলে আর সবজি দেওয়া যায় না। এর উপর রয়েছে পরিদর্শকের অভাব। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে কী রকম কাজকর্ম চলছে তা দেখার মতো কেউ নেই আমাদের রাজ্যে।
অবশ্য শুধু আমাদের রাজ্যেই নয়, জাতীয় পর্যায়েও অবস্থা বিশেষ খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। দৄষ্টান্ত হিসাবে শৌচালয়ের কথাই ধরা যাক। সারা দেশে ৫০ শতাংশ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শৌচালয়ের কোনও রকম সুবিধা নেই। রিপোর্ট অনুযায়ী যে রাজ্যগুলির অবস্থা এই নিরিখে সব চেয়ে খারাপ তার মধ্যে পড়ে বিহার, ওড়িশা আর উত্তরপ্রদেশ। পশ্চিমবঙ্গ এদের খুব কাছাকাছিই আছে।
সুত্রঃ প্রতীচী রিপোর্ট
সর্বশেষ সংশোধন করা : 12/21/2019