গ্রামীণ শক্তি আহরণের ক্ষেত্রে মহিলারা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। পরিশুদ্ধ, পরিমাণমতো জল সংগ্রহ, পশুখাদ্য জোগানো,খামারের কাজ করা মূলত মহিলাদেরই দায়িত্ব। মহিলাদের সঙ্গে শক্তির নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। তার কারণ শক্তির উৎস জোগাড় করা এবং তা ব্যবহার করা মূলত তাদেরই কাজ এবং তারাই গৃহে শক্তি ব্যবহার করে। তবে শক্তির উৎসের অপ্রতুলতা তাদের সামনে অপরিমিত সমস্যার জন্ম দেয়, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়। প্রায়শই দেখা যায়, মহিলাদের প্রচুর সময় খরচ করে বাড়ির কাজের জন্য জ্বালানি জোগাড় করতে হচ্ছে। এর জন্য তাদের অসম্ভব শারীরিক পরিশ্রম করতে হচ্ছে। বহু দূর থেকে নিজেদের মাথায় করে জ্বালানি সংগ্রহ করে তাদের বাড়ি নিয়ে আসতে হয়। বোঝাই যায় এই খাটুনি তাদের শরীর-স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখার অন্তরায়। স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়েই তারা বছরের পর বছর এই কাজ করে যাচ্ছে। যেখানে জ্বালানিকাঠের লভ্যতা কম সেখানে গোটা পরিবারের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তিত হয়ে যেতে বাধ্য, ফলে তাদের পুষ্টিতেও ঘাটতি দেখা যায়। মহিলারাই যে হেতু রান্নাবান্নার কাজ করে তাদের স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে অন্য রকম ঝুঁকির পরিমাণও বেড়ে যায়। এই মহিলারা এবং তাদের বাচ্চারা বাড়িতে রান্নার সময় প্রচুর ধোঁয়ার সম্মুখীন হতে বাধ্য হয় যে কারণে নানা ধরনের শ্বাসকষ্টজনিত রোগ হওয়াটা স্বাভাবিক। নিয়মিত শক্তির অর্থাৎ জ্বালানির জোগান না থাকলে দারিদ্রের নানা রকম লক্ষ্মণ দেখা যায়। যেমন অপ্রতুল স্বাস্থ্যরক্ষার ব্যবস্থা, শিক্ষার নিম্নস্তর ও জীবিকার অভাব।
মহিলারা আট ঘণ্টা বাড়ির কাজে ব্যস্ত থাকে এবং তাদের সঙ্গে থাকে বাচ্চারাও। চিরাচরিত উনুনে জৈবভরের অবৈজ্ঞানিক ব্যবহারের ফলে এবং যথাযথ বায়ু নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকার ফলে মহিলাদের এবং বাচ্চাদের, বিশেষ করে শিশুকন্যাদের ভিতর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা ধরনের অসুবিধা দেখা যায়।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/16/2020