সুদূরবর্তী দুর্গম গ্রাম যেখানে গ্রিডের সাহায্যে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব নয় বা সম্ভব হলেও তা খুবই ব্যয়বহুল বা বিদ্যুদয়িত গ্রামের কোনও পাড়া যেখানে বিদ্যুদয়নের কাজ হয়নি অর্থাৎ যে সব গ্রাম রাজীব গান্ধী গ্রামীণ বিদ্যুতিকরণ যোজনার অন্তর্গত হয়নি সেখানে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার জন্য ভারত সরকারের নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্যশক্তি মন্ত্রক এই কর্মসূচির আওতায় আর্থিক সহায়তা দেয়। এই ধরনের গ্রাম বা পাড়াকে বিভিন্ন ধরনের পুনর্নবীকরণযোগ্যশক্তি উৎসের সাহায্যে আলোকায়িত/বিদ্যুদয়িত করার জন্যএই কর্মসূচির আওতায় প্রাথমিক সহায়ক বন্দোবস্ত করা হয়। অপ্রচলিত উৎসগুলির মধ্যে রয়েছে জৈবভর নির্ভর গ্যাস উৎপাদনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সৃষ্টি, ছোট জল বিদ্যুৎ প্রকল্প, সৌর ফোটোভোলটাইক পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণ প্রভৃতি। প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ওই এলাকায় কী ধরনের সম্পদ লভ্য, তার উপর নির্ভর করে ডিপিজি (ডিসেন্ট্রালাইজড ডিস্ট্রিবিউটেড জেনারেশন) পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ বণ্টনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
দুর্গম গ্রামে গ্রিড সংযুক্ত বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়াটা সত্যই খুবই অসুবিধার। পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপে বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়ার উদাহরণ দিলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়।দুটি বিশাল নদী পেরিয়ে এখানে বিদ্যুৎ আনার খরচ কুলোতে পারাটা রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির কাছে খুবই খরচ সাপেক্ষ ছিল। যে কারণে গঙ্গাসাগর মেলার মতো বড় কর্মকাণ্ড এই দ্বীপে অনুষ্ঠিত হলেও জেনারেটর দিয়ে কাজ চালাতে হত। সরকার গ্রিড সংযুক্ত ব্যয়ভার নিতে রাজি ছিল না। পরবতর্তীকালে অপ্রচলিত শক্তি উন্নয়ন নিগম বা ওয়েবরেডা গোটা দ্বীপটিতে সৌর বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। আগে প্রতি ঘরে আলাদা করে পিভি কোষ বসিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হত। পরে স্থানীয় গ্রিড তৈরি করে তার মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হত।ডঃ শান্তিপদ গণচৌধুরির নেতৃত্বে ওয়েবরেডার বিজ্ঞানীদের এই চেষ্টা গোটা দেশের মধ্যে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় গ্রিড করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ায় এক একটি বাড়ি চার-পাঁচ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারত। পরে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয় ওই দ্বীপে প্রচলিত বিদ্যুৎই নিয়ে যাওয়া হবে। এর জন্য সরকার প্রয়োজনীয় ভরতুকি প্রদান করবে। এখন এই দ্বীপটি প্রচলিত বিদ্যুৎ দ্বারাই আলোকিত।
সূত্র : MNRE
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/26/2020