সোলার পাম্পিং ব্যবস্থায় ফোটোভোলটাইক প্যানেল ব্যবহার করা হয় যেটি একটি নির্মাণ করা কাঠামোর উপর স্থায়ী ভাবে লাগানো থাকে। এটি হয় এসি নয় ডিসি কারেন্টের মোটরের সঙ্গে যুক্ত থাকে। থাকে ইলেকট্রিক সুইচ গিয়ার ও একটি ডেলিভারি পাইপ। একটি ডিসি পাম্প ব্রাশযুক্ত বা ব্রাশবিহীন স্থায়ী চুম্বকযুক্ত ডিসি মোটর দ্বারা চালিত হয়। এসি মোটরের ক্ষেত্রে সৌর প্যানেল থেকে লভ্য ডিসি বিদ্যুৎকে এসি বিদ্যুতে রূপান্তরিত করার জন্য একটি ইনভার্টার বা ভ্যারিয়েবল ফ্রিকোয়েন্সি ড্রাইভ যুক্ত করা হয়।
যেখানে পাম্পগুলি বিদ্যুতের গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত সেখানেও সৌর পাম্প বসানো যায়। দেখতে হবে এখানে সেচের জন্য ২০০ থেকে ২৫০ দিন জল দরকার কিনা। এত দিন জলের প্রয়োজনীয়তার জন্য অতিরিক্ত বিদ্যুতের প্রয়োজন হতেই পারে। এ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় ব্যবস্থাপনার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সোলার পাম্প ব্যবহার করে অতিরিক্ত বিদ্যুতের চাহিদা কমানো যায় এবং সৌরপদ্ধতিতে তৈরি বিদ্যুৎ গ্রিডে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়।
গ্রামীণ বিদ্যুৎ গ্রিডের বর্তমান প্রবণতা হল সেচের জন্য প্রযোজনীয় বিদ্যুৎকে বাড়িতে পাঠানো বিদ্যুতের সঙ্গে ভিন্ন করা। একটি নির্দিষ্ট ট্রান্সফরমারকে এ ধরনের পাম্পের গুচ্ছের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। এবং নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এই পাম্পগুলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এর ফলে এখন এই ধরনের উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন পাম্পগুলির সঙ্গে ট্রান্সফরমার ভিত্তিক সোলার পিভি প্লান্টের যোগসূত্র নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে। প্রতিটি ট্রান্সফরমার ২৫ কিলোওয়াট থেকে ৫০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি পিভি প্লান্টের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে পারে। এই প্লান্টগুলি জনসাধারণ ও বেসরকারি উদ্যগের সঙ্গে যৌথ ভাবে পরিচালিত হতে পারে। এই পিভি প্লান্ট থেকে বেশ কয়েকটি পাম্প নিয়ে তৈরি গুচ্ছে বিদ্যুৎ যায়। যদি অতিরিক্ত বিদ্যুৎ তৈরি করা সম্ভব হয় তা হলে সেই বিদ্যুৎ গ্রিডে সরবরাহ করা হয়। পাম্পগুলি গ্রিড বিচ্ছিন্ন বা মিনিগ্রিড থেকে প্রাপ্ত বিদ্যুৎ থেকেও কাজ চালাতে সক্ষম হয়।
যদি কোথাও বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা না থাকে বা সরবরাহ নির্ভরযোগ্য না হয় তা হলে কৃষকরা প্রচুর দাম দিয়ে ডিজেল পাম্প কিনতে বাধ্য হয়। বারেবারে ডিজেল কেনার জন্য প্রচুর টাকা খরচও হয়। যে কারণে এই সব অঞ্চলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকদের কাছে চাষাবাদ তেমন লাভজনক হয় না। মনে রাখতে হবে এই ধরনের ডিজেল পাম্পগুলি চূড়ান্ত অদক্ষ। ডিজেল পাম্পগুলির বদলে সৌর পিভি পাম্প বসানোর ব্যবস্থা হলে পরিবেশ দূষণের হাত থেকেও মুক্তি মেলে। কম খরচ এবং দূষণমুক্তি, দুই কারণেই কৃষকরা এ ধরনের পাম্প থেকে প্রভূত উপকৃত হয়।
কোনও কোনও রাজ্যে কৃষকরা ডিজেল বা বিদ্যুৎ চালিত পাম্প থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ অন্য কৃষকদের সঙ্গে ভাগ করে নেন কারণ তাঁদের হয়তো নিজস্ব পাম্প নেই। এই সব ক্ষেত্রে সৌর প্যানেল সহ সৌর পাম্প পরিবহণযোগ্য হতে হবে অথবা জলকেণ পরিষেবা হিসাবে গ্রহণ করার বিষয়টিকে উৎসাহিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বড় কৃষক বা গোষ্ঠী পাম্পের মালিক হবে। কিন্তু জলের পরিষেবা পাবে সমস্ত কৃষক। এ ভাবে স্থানীয় উদ্যোগকেও উৎসাহিত করা সম্ভব যার মাধ্যমে স্থানীয় স্তরে জীবিকার সংস্থান করা যায়।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে কৃষকরা খুবই ছোট প্লটে সবজির চাষ করে থাকেন। এই সব ক্ষেত্রে তাঁরা বালতির দোলনা জাতীয় পাম্প, হস্তচালিত পাম্প বা ট্রেডল পাম্প ব্যবহার করেন। এ ক্ষেত্রে ০.১ অশ্বশক্তি থেকে ০.৫ অশ্বশক্তিসম্পন্ন ৭৫ ওয়াট থেকে ৫০০ ওয়াট বিদ্যুৎ দ্বারা চালিত সৌর পাম্প তাদের হস্তচালিত পাম্পের সমান কাজ করতে পারে। এই ধরনের কৃষকদের বেশির ভাগই বিদ্যুৎ সংযোগ পান না। এ ছাড়া গ্রামীণ স্কুল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পেও এ ধরনের সোলার পাম্প ব্যবহার করা হয়।
আরও তথ্যের জন্য : MNRE
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/26/2020