বাণিজ্যিক চাষ-আবাদের মধ্যে পড়ে ভেষজ উদ্ভিদ চাষ। আমাদের রাজ্যে ভেষজ উদ্ভিদের চাষের যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। কিন্তু অধিকাংশ সময়, ভেষজ উদ্ভিদ চাষ করে কী লাভ হবে তা ভেবে অনেকে এই উদ্ভিদ চাষ থেকে বিরত থাকে। বাণিজ্যিক গুরুত্ব আছে এমন ভেষজ উদ্ভিদগুলোকে চিহ্নিত করে আধুনিক পদ্ধতিতে তার চাষ-আবাদ যথেষ্ট সম্ভাবনাময়। এই ধরণের ভেষজ উদ্ভিদ চাষ আর্থিকভাবে লাভজনকও বটে। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করে জৈব সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করে ভেষজ উদ্ভিদের চাষ করলে উদ্ভিদজাত রাসায়নিকের গুনগত মান ভালো হয়। পরিবেশের ভারসাম্যও বজায় থাকে। ভেষজ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদে যে সব রাসায়নিক দ্রব্যাদি পাওয়া যায় সেগুলো বহুল পরিমাণে পরিবেশের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। কোনও স্থানের জলবায়ু, আবহাওয়া ও মাটির বৈশিষ্ট্য এই সব রাসায়নিক দ্রব্যাদির পরিমাণগত ও গুণগত মান নির্ণয়ে একটি বড় ভূমিকা পালন করে। ভেষজ উদ্ভিদের রাসায়নিক যৌগগুলোর সংশ্লেষণে জলের ভূমিকা সম্পর্কে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে যে গাছের বৃদ্ধির ব্যাপারে খরা একটি প্রতিবন্ধক হলেও যৌগ উপাদান সংশ্লেষণ কিন্তু সেচের অভাবে বা খরা জলবায়ুতে ভালো ভাবেই সম্পন্ন হয়। উদ্বায়ী তেলের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে যে উৎপাদনের পরিমাণ খরা আবহাওয়াতেই বেশি হয়। সে জন্য মাটি ও জলবায়ুর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে উপযুক্ত প্রজাতি চিহ্নিত করে চাষ করা বাঞ্ছনীয়। এই ভেষজ উদ্ভিদের চাহিদা বাড়ুক, চাষের মাত্রা বাড়ুক। এর সংগ্রহের মাত্রা কমুক আমরা চাইব না। কিন্তু বন থেকে নয়, আবাদ থেকে সংগ্রহ করা হোক। প্রকৃতিতে যারা যে ভাবে আছে তারা সেই ভাবে থাকুক। এতে বাস্তুতন্ত্র বজায় থাকবে। বস্তুতন্ত্র নষ্ট হয়ে গেলেও বিপদ। পরিবেশের ভারসম্য নষ্ট হবে। তাই ওদের আমরা চিহ্নিত করে সংরক্ষণ করি। এতে আখেরে উপকার আমাদের। সহজে ভেষজ ওষুধ মেলে। বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে এই সমস্ত ভেষজ গাছপাতা ব্যবহার করে উপকার পাওয়া যেতে পারে।
সূত্র : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংসদ ও দফতর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019