সম্প্রদায়ের সকলকেই মশার কামড় থেকে সুরক্ষিত থাকতে হবে, বিশেষতঃ ছোটো শিশু ও গর্ভবতী নারীদের, এবং বিশেষ করে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের মধ্যবর্তী সময়ে, যখন মশারা সবথেকে সক্রিয় থাকে৷
অনুমোদিত কীটনাশকে ডোবানো মশারি, পর্দা বা চাটাইযে মশা বসলেই মরে যায়৷ বিশেষ, স্থায়ীভাবে প্রক্রিয়াকৃত চাটাই ব্যবহার করা উচিত, অথবা এমন জাল, পর্দা বা চাটাই ব্যবহার করা উচিত যা নিয়মিত কীটনাশকে ডোবানো হয়৷ সাধারণতঃ, বর্ষা শুরু হলে জালগুলিতে আবার প্রক্রিয়া করতে হয়, অন্ততঃ প্রত্যেক ছ মাস অন্তর এবং প্রতি তৃতীয় ধোলাইয়ের পরে৷ প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্য স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরাপদ কীটনাশক ও পুনঃপ্রক্রিয়ার সময়সূচী সম্বন্ধে পরামর্শ দিতে পারবেন৷
ছোটো বাচ্চা ও অন্যান্য ছোটো শিশুদের প্রক্রিয়াকৃত মশারির ভেতরে ঘুমোনো উচিত৷ মশারিগুলি বেশি দামি হলে প্রতিটি পরিবারের অন্তঃএকটি বড় মশারি কেনা উচিত, যার ভেতরে ছোটো বাচ্চারা ঘুমোতে পারে৷ বুকের দুধ খাওয়া বাচ্চাদের তাদের মায়ের সঙ্গে এক মশারিতে ঘুমোতে হবে৷
প্রক্রিয়াকৃত মশারি সারা বছর ধরেই ব্যবহার করতে হবে, এমন কি মশা কম থাকার সময়েও৷
মশারি ব্যবহার করা না গেলে, অন্যান্য উপায় সাহায্য করতে পারে :
পরিবারের কারো জ্বর হলে ম্যালেরিয়া সন্দেহ করা যেতে পারে, বা যদি ছোটো শিশুরা খেতে না চায়, বমি করে বা খিঁচুনি হয়৷
ম্যালেরিয়ার দরুণ জ্বরাক্রান্ত শিশুকে সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মী অনুমোদিত ম্যালেরিয়া রোধক চিকিত্সা করা প্রয়োজন৷ ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত শিশুকে একদিনের মধ্যে চিকিত্সা করা না হলে তার মৃত্যু হতে পারে৷
কী ধরণের চিকিত্সা সবথেকে ভালো ও কতদিন ধরে তা চালাতে হবে সে সম্বন্ধে একজন স্বাস্থ্যকর্মী পরামর্শ দিতে পারবেন৷ ম্যালেরিয়া আক্রান্ত শিশুর সম্পূর্ণ চিকিত্সা করা উচিত, জ্বর দ্রুত সেরে গেলেও৷ চিকিত্সা পূর্ণ না হলে ম্যালেরিয়া আরো তীব্র হতে পারে ও তা সারানো আরো কঠিন হয়ে উঠতে পারে৷
যদি চিকিত্সার পরেও ম্যালেরিয়ার লক্ষণগুলি বিদ্যমান থাকে, তবে শিশুটিকে সহায়তার জন্য কোনে স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে নিয়েযেতে হবে ৷ সমস্যার সম্ভাব্য কারণ:
জ্বর না ছাড়া পর্যন্ত জ্বরাক্রান্ত শিশুকে শীতল রাখতে হবে:
অন্য মহিলাদের তুলনায় গর্ভবতী নারীদের ম্যালেরিয়ায় ভোগার সম্ভাবনা বেশি৷ রোগটি গর্ভাবস্থায় বেশি বিপজ্জনক, বিশেষ করে প্রথম গর্ভাবস্থায়৷ এর ফলে তীব্র রক্তশূন্যতা(পাতলা রক্ত), গর্ভপাত, অকালপ্রসব বা মৃতশিশু প্রসব হতে পারে৷ গর্ভাবস্থায় ম্যালেরিয়া আক্রান্ত মায়েদের সন্তানদের কম ওজন হবার সম্ভাবনা বেশি এবং তাদের জীবনের প্রথম বছরে সংক্রমণ ও মৃত্যুর আশঙ্কা বেশি৷
পরামর্শ দেওয়া হলে গর্ভবতী নারীদের গর্ভাবস্থায় ম্যালেরিয়া রোধক বড়ি খেতে হবে৷
গর্ভাবস্থায় সব ম্যালেরিয়াl রোধক বড়ি নিরাপদ নয়৷ স্বাস্থ্যকর্মী বলতে পারবেন কোন ম্যালেরিয়া রোধক বড়ি সব থেকে ভালো হবে৷
মশার কামড় থেকে বাঁচতে গর্ভবতী নারীর নিয়মিত কীটনাশকে ডোবানো হয় এমন মশারির ভেতরে ঘুমোনো উচিত৷
ম্যালেরিয়ার চিহ্ন ও লক্ষণযুক্ত গর্ভবতী নারীর মৃত্যু রুখতে তাত্ক্ষণিক ও যথাযথ চিকিত্সা প্রয়োজন৷
ম্যালেরিয়া আক্রান্ত গর্ভবতী নারীর স্বাস্থ্যকর্মীর কাছ থেকে লোহা ও ভিটামিন এ পরিপূরক সম্বন্ধে জানতে চাওয়া উচিত৷
স্থির জল থাকলেই মশা বংশ বিস্তার করে — যেমন, পুকুর, জলা, ডোবা, গর্ত, নর্দমা এবং লম্বা ঘাস ও ঝোপে জমা জলে৷ তারা বহতা জলের স্রোতের ধারে এবং জলপাত্র, চৌবাচ্চা ও ধান ক্ষেতেও বংশ বিস্তার করতে পারে৷
মশার সংখ্যা কমানো যায় :
ম্যালেরিয়া সম্পূর্ণ সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করে৷ মশার বংশবৃদ্ধির জায়গা কম করার জন্য ও মশারিতে নিয়মিত কীটনাশক দেবার ব্যবস্থা করার জন্য প্রত্যেকেই একযোগে কাজ করতে পারেন৷ সম্প্রদায়গুলির উচিত তাদের এলাকার সকল স্বাস্থ্যকর্মী ও রাজনৈতিক নেতার কাছে ম্যালেরিয়া রোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করা৷
সুত্রঃ UNICEF
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/22/2020
এই রোগ কী ভাবে ঠেকানো যায়, বোঝার উপায় কী, চিকিৎসা ...