প্রশ্ন : শিশুদের কি সূর্যের আলোয় রাখা উচিত?
উ: দীর্ঘ সময় ধরে শিশুদের সূর্যের আলোয় রাখা উচিত নয়। কারণ, বাতাসে দুষণের কারণে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি শিশুদের ত্বকের পক্ষে ক্ষতিকর। তবে সকাল ৭-৩০ থেকে ৯টার মধ্যে মাত্র পনেরো মিনিট সূর্যের আলোয় শিশুকে রাখা যেতে পারে।
প্র: শিশুর স্বাভাবিক বিকাশের জন্য কী ধরনের খাওয়া-দাওয়া করানো যেতে পারে ?
উ: ছ-সাত মাস বয়সের পর থেকে মায়ের বুকের দুধের সঙ্গে সঙ্গে ডালিয়ার খিচুড়ি, সুজি খাওয়ানো যেতে পারে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার খাদ্য তালিকায় পাঁচটি ফল এবং পাঁচটি সবজি রাখা যেতে পারে। মাঝে মাঝে শিশুদের খাবার মেনু পরিবর্তন করতে হবে। তবে বাচ্চাকে জোর করে খাওয়ানো একেবারেই উচিত নয়। তার চাহিদা অনুযায়ী শিশুকে খাওয়াতে হবে। ডিম দুধ আটা বাদাম জাতীয় খাবার এক বছর পর থেকে খাওয়ানো শুরু করতে পারলে ভালো হয়।
প্র: শিশুর নাভিতে সেঁক দিয়েও কমছে না, সেটি ফুলে আছে? এ ক্ষেত্রে কী করা যেতে পারে?
উ: স্বাভাবিক ভাবে নাভির ফোলা কমে যায়। তবে কোনও কারণে নাভি পেকে গেলে অবশ্যই চিকিৎসককে দেখাতে হবে। অনেকে আঙুলের চাপ দিয়ে ফুলে থাকা নাভিকে বসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ ভাবে চাপ দেওয়া খুব একটা কাজের কাজ কিছু হয় না। তবে কেউ যদি একান্তই হাত দেন তবে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে। বাইরের কাপড়ে এসে বাচ্চাকে ধরা একেবারে উচিত নয়।
প্রঃ শিশুর মাথার তালু শক্ত করার জন্য কী করা প্রয়োজন?
উঃ শিশুর মাথার তালুর শক্ত করার জন্য অনেকে সরষের তেলে ভেজানো কাপড় চাপিয়ে রাখেন। তালু শক্ত করার জন্য নিয়মিত তেলে ভেজানো কাপড় চাপা দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। এটি একটি ভুল ধারণা। কারণ তালু আপনা-আপনিই শক্ত হয়ে যায়। আসলে শিশুদের মাথার মাঝখানে কিছুটা ফাঁক থাকে। সে কারণে ওই জায়গাটা নরম লাগে। বিষয়টি কতকটা রেল লাইনের জোড়ায় কিছুটা ফাঁক থাকার মতো। ট্রেন চলাচলের ফলে উত্তপ্ত হয়ে গেলে ধাতব রেল লাইন কিছুটা বেড়ে যায়। তাই জোড়ার মাঝে ফাঁক রাখা হয়। ঠিক একই ভাবে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে খুলির হাড় বাড়ে। আর সে কারণেই ওই ফাঁক থাকে। দেড় থেকে দু’বছরের মধ্যে মাথার তালু শক্ত হয়ে যায়।
প্র: প্রতিষেধক টিকা নেওয়ার পর অনেক সময় বাচ্চাদের জ্বর আসা কি ক্ষতিকর?
উ: প্রতিষেধক টিকা নেওয়ার পর জ্বর আসলে বুঝতে হবে টিকা কাজ করছে। এ নিয়ে চিন্তা কোনও কারণ নেই। যদি জ্বর বেশি দিন থাকে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। জ্বরের ভয়ে যে সমস্ত টিকা দেওয়া হয় তা কখনওই এড়ানো উচিত নয়। হাসপাতাল বা চিকিৎসকের করে দেওয়া চার্ট মেনে টিকা নিতে হবে। তবে যাঁরা টিকা দেন তাঁরা অবশ্যই হাত ধুয়ে টিকা দেবেন।
প্র: সাদাস্রাব হলে কি কোমরে ব্যাথা হয়?
উ: সাদাস্রাবের সঙ্গে কোমরে ব্যাথার কোনও সম্পর্ক নেই। সাধারণত কোমরে ব্যাথা পাঁচটি কারণে হতে পারে।
বাচ্চার স্বাভাবিক প্রসব হলে অনেক সময় জরায়ু নীচের দিকে নেমে যায়। সে কারণে মাঝে মাঝে কোমরে ব্যাথা হয়। কাজ করতে করতে হঠাৎ নীচের দিকে কিছু নেমে যাচ্ছে মনে হলে বুঝতে হবে এ কারণেই ব্যাথা হচ্ছে। এ ধরনের ব্যথার ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারকে দেখাতে হবে।
প্র: স্তন ক্যানসারের পরীক্ষা কি ভাবে করব?
উ: অনেক আঙুল দিয়ে স্তন ক্যানসারের পরীক্ষা করে থাকেন। এটি ভুল পদ্ধতি। হাতের তালু দিয়ে প্রতিটা স্তন পরীক্ষা করতে হবে। পিরিয়ডের সাত দিন বাদে নিজের স্তন নিজে পরীক্ষা করতে হবে। পরীক্ষার সময় যদি কোথাও ফুলে আছে মনে হয় তবে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে। নিয়মিত পিল খেলেও স্তন পরীক্ষা করতে হবে। তবে ফোলা কিছু পাওয়া গেলেই যে ক্যানসার হয়েছে এমনটা ধরে নেওয়া ঠিক নয়। এ ক্ষেত্রে ১০০ জনের মধ্যে পাঁচ জনের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
প্র: স্তন ক্যানসার কি সারে ?
উ: জরায়ু মুখ, স্তন এবং মুখের ক্যানসার তাড়াতাড়ি ধরা গেলে সারিয়ে তোলা সম্ভব। জরায়ু মুখের ক্যানসার স্ক্রিনিং-এর জন্য দু’বছর অন্তর প্যাপস্মিয়ার টেস্ট করাতে হবে। এই আলোচনা শিবিরে উপস্থিত ছিলেন ডাঃ রত্নাবলী চক্রবর্তী, ডাঃ মধুছন্দা কর এবং ডাঃ তমাল লাহা।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/15/2020