সাম্প্রতিককালে ভারতে ১১২টি জেলায় Nandi Foundation-এর অপুষ্টি সংক্রান্ত Hunger and malnutrition report,december,2011) (হাঙ্গামা রিপোর্ট) সমীক্ষার প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে, শতকরা ৪২.৫টি পাঁচ বছরের কমবয়সি শিশুর ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় কম। ওই একই বয়সের ৫৯টি শিশুর উচ্চতা বয়সের তুলনায় বেশ কম এবং ১০০টির মধ্যে ১১.৪টি শিশু বয়স অনুযায়ী খুবই রোগা। এই সমীক্ষার ফলাফলে এটাই দেখা যাচ্ছে যে, ভারতে পাঁচ বছরের কমবয়সি শিশুদের অর্ধেকই অপুষ্টিতে আক্রান্ত। ইউনিসেফের হিসাব অনুসারে প্রতিবেশি রাষ্ট্র এমনকী আফ্রিকা মহাদেশের শিশুদের সঙ্গে তুলনা করলে ভারতীয় শিশুরা ওজন ও উচ্চতায় বেশ পিছিয়ে আছে। কম উচ্চতা সাধারণত ক্রনিক বা দীর্ঘস্থায়ী অপুষ্টিকে নির্দেশ করে থাকে। অর্থাৎ ভারতীয় শিশুরা অ্যাকিউট ও ক্রনিক -- দু’রকম অপুষ্টিতেই আক্রান্ত। ভারতে প্রায় ৬.৫ কোটি পাঁচ বছরের কমবয়সি শিশু বয়স অনুযায়ী উচ্চতা-র সমস্যায় আক্রান্ত। ‘হাঙ্গামা’ রিপোর্টে এটাও প্রতিফলিত যে, কম ওজন ও উচ্চতার সমস্যা শুরু হচ্ছে শিশুদের ২ বছর বয়সের মধ্যেই। অর্থনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে দেখতে গেলে এটা সত্যি যে, আফ্রিকার দেশগুলির তুলনায় আমাদের দেশ বা এশিয়ার অনেক দেশই উন্নত, কিন্তু মুষ্টির মানের ক্ষেত্রে সে উন্নতি সঠিক ভাবে প্রতিফলিত হয়নি। বিজ্ঞানীরা একে ‘এশিয়ান এনিগমা’ হিসাবে অভিহিত করেছেন।
সব থেকে অবাক করা তথ্য হচ্ছে, ভারতে প্রতি তিনটি কম উচ্চতার শিশুর মধ্যে একটি উচ্চবিত্ত পরিবারভুক্ত। এ ক্ষেত্রে এটা ধরে নেওয়া যায়, উচ্চবিত্ত পরিবারের খাদ্য সুরক্ষা, ‘জোগান’ এবং ‘খাদ্য’ তাদের ‘আয়ত্তের মধ্যে’ থাকার মতো বিষয়গুলি নিশ্চিত। সুতরাং এই সমস্ত পরিবারের শিশুদের যথাযথ যত্ন করার মতো বিষয়গুলিও সুনিশ্চিত থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু অপুষ্টির কবল থেকে শিশুরা মুক্তি পাচ্ছে না। রাষ্ট্রসঙ্ঘের হিসাব মতো ভারতে প্রতি বছর ২১ লক্ষ শিশু তাদের পাঁচ বছর বয়সের আগেই মারা যায়। এবং সংক্রমণ ও অপুষ্টি এই সব শিশুর মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ।
সূত্র : যোজনা, জানুয়ারি ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/1/2020