প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে মাঠে ঘাটে বসলেই এ বার ছবি উঠে যাবে দেওয়ালে! নাম, ধাম সমেত। কী লজ্জা!
সেই লজ্জার ভয়েই পাঁচ পুরুষের স্বভাব বদলে শৌচালয়ে যাওয়ার কথা ভাবতে শুরু করেছেন নদিয়ার অভিজিত্ মণ্ডল। বয়স ৫২। চাষবাস করেই পেট চলে। খোলা আকাশের নীচে শৌচকাজ করলে যে রোগ ছড়ায় সে সব তিনি সরকারি প্রচারের দৌলতে জানেন। তবে কি না, পাঁচ পুরুষ ধরে যা চলছে, তাই কি ছাড়া যায়? তাই সব জেনেও এত দিন মাঠেই যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু অভিজিৎ মণ্ডলের মতো এমন অনেক গ্রামবাসীকে শৌচালয়মুখী করতে এ বার নতুন উপায় ভেবেছেন নদিয়ার জেলাশাসক পি বি সেলিম। আর তা ফলপ্রসূ হবেই বলে আশাবাদী জেলা প্রশাসন।
কী এই উপায় ? গ্রামের বেশ কয়েক জনকে নিয়ে তৈরি হবে গ্রাম কমিটি। সেই কমিটির সদস্যরা মাঠে ঘাটে নজরদারি চালাবেন। মাঠে ঘাটে কেউ শৌচকাজ করতে বসছে কি না। কোনও ঝগড়াঝাটি, বাধা দেওয়া নয়। এমন কাউকে দেখতে পেলেই হল। কমিটি কাজ সারবে গোপনে। খোলা মাঠে বসার ছবি তুলে, তার নাম ধাম-সহ টাঙিয়ে দেওয়া হবে দেওয়ালে। মুখে বলে, বুঝিয়ে যে কাজ হয়নি এমন লজ্জায় পড়লে সেই কাজ হবেই বলে আশা প্রশাসনের।
স্বচ্ছছ ভারত মিশন সফল করতে শুধু এমন কারও ছবি টাঙিয়ে দেওয়া নয়, একটু কড়াও হবে প্রশাসন। কেউ খোলা মাঠে মল ত্যাগ করলে সরকারি প্রকল্প যেমন একশো দিনের কাজ সহ একাধিক সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন তিনি। তবে শৌচালয়মুখী হলেই আবার মিলবে সব সুযোগসুবিধা। জেলাশসক পি বি সেলিম জানান, নদিয়ায় প্রায় ৫৬ লক্ষ মানুষের বাস। ২০১৯-এর মধ্যে ১০০ শতাংশ জেলাবাসীকে শৌচালয়মুখী করতে চান তিনি।
চাষি অভিজিৎ মণ্ডলের কথায়, "পাঁচ পুরুষ ধরে নিজের পরিবার দূরে থাক, কোনও প্রতিবেশীকে কখনও শৌচালয়ে যেতে দেখিনি। কিন্তু যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে অভ্যাস বদলাতেই হবে। একটু সময় লাগবে এই যা! খানিকটা সময় লাগলেও নতুন দাওয়াই-এ স্বচ্ছ ভারত অভিজান যে সফল হবে সে বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী প্রশাসন।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন, ১০ মার্চ ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020