কেন্দ্র সরকারের ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’-এর আওতায় ‘নির্মল বাংলা অভিযান’ কর্মসূচিতে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে বীরভূম জেলার ২১টি পঞ্চায়েত এলাকা চিহ্নিত করে সেগুলিকে ‘নির্মল গ্রাম পঞ্চায়েত’ ঘোষণা করার কথা। সেই জন্য প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার বানানোর দিকে যেমন জোর দেওয়া হচ্ছে, তেমনই শৌচাগার ব্যবহারের সুবিধা এবং শৌচাগার ব্যবহার না করার কুফল কী কী, তা নিয়ে প্রচারও চলছে। খয়রাশোল ব্লকের খয়রাশোল পঞ্চায়েতও ওই ২১টি পঞ্চায়েতের অন্যতম।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন পর্যন্ত খয়রাশোলে মাত্র ৪৬টি পরিবার ছাড়া সব বাড়িতেই শৌচাগার রয়েছে। ওই ৪৬টি পরিবারেও শীঘ্রই শৌচাগার নির্মাণে হাত পড়বে, এ বিষয়ে নিশ্চিত যুগ্ম বিডিও অভিষেক মিশ্র। অভিষেকবাবুই ব্লকে কেন্দ্রীয় ওই প্রকল্পের নোডাল অফিসার। তিনি জানান, গত কয়েক মাসে এই গ্রাম পঞায়েত এলাকায় সাড়ে সাতশোটি শৌচাগার তৈরি হয়েছে। অভিষেকবাবুর কথায়, “কিন্তু শুধু শৌচাগার থাকলেই তো হবে না। সেটা ব্যবহার করা প্রয়োজন। তাই সকালবেলায় পুকুর পাহারা দেওয়া হচ্ছে।” বিডিও তারকনাথ চন্দ্র এবং খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসীমা ধীবরও বলছেন, সরকারি এই প্রকল্প এখন কার্যত আন্দোলনের চেহারা নিয়েছে। গত এক মাস ধরে এই অভিযান চলছে।
অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) বিধান রায় এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেছেন, “এত দিন লক্ষ্য ছিল শৌচাগার বানানো। এ বার লক্ষ্য তা ব্যবহার করানো।” বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বনির্ভর দলের মহিলা সদস্যরাও বোঝাচ্ছেন। তবে দু’একটি বাস্তব সমস্যার সম্মুখীনও হতে হচ্ছে তাঁদের। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য পুষ্প ঘোষ, পারুলা বাদ্যকর, সীমা বাগদিরা বলছেন, “শৌচাগার তৈরি হলেও অনেকে অনভ্যাসবশত তা ব্যবহার করছেন না। তাঁদের বুঝিয়ে বলছি। আবার অনেকে জলের অভাবের কথাও বলছেন।” বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, উভয়েই এই খরাপ্রবণ এলাকায় জলের সমস্যার কথা মানছেন। তাঁদের কথায়, “জলের অভাব দূর করতে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের একটি প্রকল্প শেষ হয়ে গিয়েছে। কিছু সমস্যার জন্য সেটা চালু করা যায়নি। দ্রুত যাতে এর সমাধান হয়, সেটা আমরা দেখছি।”
আর যাঁরা সাতসকালে তাড়া খেলেন ? তাঁরা বলছেন, “অভ্যাস হয়ে গিয়েছে তো, বিডিরা যা বললেন, তার পরে খোলা মাঠে গেলে নিজেদেরই ভুগতে হবে, দেখছি !”
সূত্র : দয়াল সেনগুপ্ত, আনন্দবাজার পত্রিকা, ২১ মার্চ ২০১৫
ছবি : আনন্দবাজার পত্রিকা
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020