শৌচাগার সম্পর্কে স্থান ও অবস্থানগত সমীক্ষার যে সমস্ত ফলাফল বা বিশ্লেষণ পাওয়া গিয়েছে, তা মূলত গ্রাম বা সন্নিহিত অঞ্চলের ব্যবস্থা-অব্যবস্থার ওপরই আলোকপাত করেছে। কখনও বা রাজ্যের বা তার বাইরের পরিধিকেও সমীক্ষায় স্থান দিয়ে ব্যাখ্যা বা বিশ্লষণের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে ক্ষুদ্রাকারে হোক বা বৃহদাকারে, সাম্প্রতিককালে জেলা পর্যায়ে স্যানিটেশন (যার মধ্যে শৌচাগারের বিষয়টি অঙ্গাঙ্গি ভাবে থাকে) সম্পর্কে কিছু বই বা তথ্য পুস্তিকা বেরোতে আরম্ভ করেছে। ভারত সরকার দেশের ৯৫ শতাংশ জেলাতেই পূর্ণ স্বাস্থ্যব্যবস্থা অভিযান (টিএসসি) চালিয়ে আসছে। এর আওতায় প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ মঞ্জুর করা হয় রাজ্যের অনুকূলে। এই অভিযানের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে পরে এই বরাদ্দের অর্থ পৌঁছে যায় জেলা ও গ্রাম পর্যায়ে, যাতে দেশের সমস্ত গ্রামে উন্মুক্ত স্থানে প্রাকৃতিক কাজকর্ম অর্থাৎ মলমূত্র ত্যাগের ঘটনা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। তবে এই কাজের মূল রাশ বা নিয়ন্ত্রণ থাকে জেলা কর্তৃপক্ষের হাতেই।
ইউনিসেফের ২০০৮ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে শৌচাগারের অভাব বা তা ব্যবহারজনিত অপ্রতুলতার ঘটনা খতিয়ে দেখার ঘটনা ছিল খুবই কম। জেলাভিত্তিক বা জেলা অনুযায়ী টিসিএস বরাদ্দের (২০১২) ফলে শিশুর উচ্চতাবৃদ্ধি ও শিশুমৃত্যুর হার সম্পর্কে পরিসংখ্যান দিয়ে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে। অন্য মত হল, ২০০৮ সাল অবধি ভারতের জেলাগুলিতে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য শৌচাগার নির্মাণের সংখ্যা সে রকম ভাবে বৃদ্ধি পায়নি। আবার, শৌচাগার নির্মাণে উৎসাহ দিতে এই অভিযানে (২০১৩) সমস্ত রকম প্রচেষ্টা সত্ত্বেও অন্য ভাবে বিষয়টি সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করে দ্বিধার ভাব পোষণ করেছেন গবেষকদের একাংশ। ২০০১ এবং ২০১১ জনসংখ্যা গণনার পরিসংখ্যানগত তথ্য তুলে ধরে এঁরা এই মত পোষণ করেছেন যে, রাজ্য ও জেলাস্তরে শৌচাগার ব্যবহারের বিষয়টি বিশেষভাবে সমর্থিত ও প্রভাবিত হয় নারী সাক্ষরতা এবং নগরায়নকে দ্রুত সম্ভব হয়ে ওঠার উপর। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে শৌচাগার নির্মাণের ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে জেলা পর্যায়ে স্থান ও অবস্থানগত ফারাক বা তারতম্য রয়েছে। সে সম্বন্ধে এ পর্যন্ত প্রকাশিত সবকটি তথ্য পুস্তক বা তথ্যপঞ্জির একটি পরিপূরক হিসাবে এই নিবন্ধটি দেখতে হবে।
সুত্রঃ যোজনা জানুয়ারী ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 12/21/2019