‘নির্মল ভারত অভিযান’ হল কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যতম এক প্রকাশ, যার মূল উদ্দেশ্য হল মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন করে জল ও মলবাহিত রোগমুক্ত এক জীবনযাত্রার পথে উন্নীতকরণ। এই কর্মসূচিতে প্রতিটি বাড়িতে ও সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং জনবহুল স্থানে শৌচাগার নির্মল রাখা, পানীয় জলের গুণগত মান রক্ষা করা ছাড়াও বিজ্ঞানসম্মত ভাবে কঠিন ও তরল বর্জ্য পদার্থের নিরাপদ নিষ্কাশন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। পূর্বের সার্বিক স্বাস্থ্যবিধান অভিযানের নাম পরিবর্তিত হয়ে ২০১২-১৩ আর্থিক বছর থেকে ‘নির্মল ভারত’ অভিযান শুরু হয়। মহাত্মা গান্ধীর নামাঙ্কিত ১০০ দিনের কর্মপ্রকল্পকেও নির্মল ভারত অভিযানের অঙ্গীভূত করা হয়েছে।
এ কথা অনস্বীকার্য যে, ভারতের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গ্রাম ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। গ্রামীণ উন্নয়নের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, গ্রামের এক বিশাল সংখ্যক মানুষ আর্থিক ও সামাজিক অবস্থানে ভারতের বাকি অংশের থেকে ব্যাপক পিছিয়ে রয়েছে। তাদের না আছে পোশাক পরিচছদ না আছে ঘরবাড়ি, এমনকী পানীয় জল শৌচাগারের মৌলিক অধিকার থেকেও তারা বঞ্চিত। এ ছাড়া দেখা গিয়েছে, যে গ্রামের মধ্যে জলাশয়, পুকুর বা ইঁদারাকে সবাই পানীয় জলের উৎস হিসাবে ব্যবহার করে। অথচ তার বিজ্ঞানসম্মত রক্ষণাবেক্ষণে সবাই উদাসীন। বহু ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতকে এই কাজে এগিয়ে আসতে হয়। অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, যদি কোনও প্রকল্পে জনসাধারণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়, তাঁদের মতামত ও চাঁদা নিয়ে যদি প্রকল্প রূপায়ণ করা হয় তবে গ্রামবাসীরা সেই প্রকল্পকে নিজের বলে ভাবতে শেখে।
ড. উদয়ভানু ভট্টাচার্য
অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, গ্রামোন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভূতপূর্ব অধ্যাপক, এনআইআরডি, হায়দরাবাদ
E mail- uday.rdmku@gmail.com
সূত্র : যোজনা, জানুয়ারি, ২০১৫।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/28/2020