অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

খাদ্য-বিষক্রিয়া

খাদ্য-বিষক্রিয়া

খাদ্য-বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর খবর মাঝেমধ্যে পত্রিকায় দেখতে পাওয়া যায়। খাদ্য-বিষক্রিয়ার মূলে থাকে অনিষ্টকারী কোনো ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস বা প্যারাসাইট। নানান কারণে এগুলি খাবারের মধ্যে থাকতে পারে; সেই খাবার খেলে এই জীবানুগুলো শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে মানুষকে অসুস্থ করে। অনেক সময়েই খাদ্য-বিষক্রিয়া মারাত্বক নয় - কয়েক দিনের মধ্যেই শরীর ঠিক হয়ে যায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।


খাদ্য-বিষক্রিয়ার লক্ষণ কি ?

সাধারণভাবে প্রথম লক্ষণ হল বমি বমি ভাব, বমি করা এবং পেট খারাপ হওয়া। ঠিক কখন এই লক্ষণ দেখা দেবে, বা কতটা ভয়াবহ আকারে দেখা দেবে - সেটা নির্ভর করে খাদ্যে কি ছিলো তার উপরে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির স্বাস্থ্যের উপরে। খাদ্য-বিষক্রিয়ার অন্যান্য লক্ষণও আছে।


অনিষ্টকারী ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস বা প্যারাসাইটগুলি কি ?

যেগুলি ভয়াবহ, সেগুলি হল: সাল্মোনেল্লা, ই-কোলাই, ক্লোস্ট্রিডিয়াম বচুলিনাম ও টক্সোপ্লাজমা গণ্ডাই। এগুলিকে বাদ দিলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কেন খাদ্য-বিষক্রিয়া হল তা ধরা পরে না।

.

কোত্থেকে এরা আসে এবং শরীরের কী ক্ষতি করতে পারে ?

সাল্মোনেল্লা এক ধরণের ব্যাক্টেরিয়া যেটি সাধারণতঃ পাখী, সরীসৃপ ও স্তন্যপায়ী জন্তুর অন্ত্রের (intestine) মধ্যে থাকে। ভালো করে মাংস রান্না না করলে এই ব্যাক্টেরিয়া নষ্ট হয় না - খাবারের মধ্যে থেকে যায়। এছাড়া অন্য ভাবেও (যেমন, পশু-পাখীর নোংরায় হাত দিয়ে - হাত ভালোভাবে পরিষ্কার না করে সেই হাতে খাবার ধরলে) এটি খাদ্যকে দূষিত করতে পারে। সাল্মোনেল্লা শরীরে প্রবেশ করলে জ্বর, পেটে খিল ধরা, পেট খারাপ ইত্যাদি দেখা দেয়। এটি যথেষ্ট ভয়াবহ - বিষক্রিয়া থেকে সুস্থ হতে এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগে। হাসপাতালে না গেলে বা সতর্কতা না নিলে এর থেকে মৃত্যুও ঘটতে পারে।

সাধারণভাবে ই-কোলাই (Escherichia coli) ব্যাক্টেরিয়া মানুষ ও জন্তু-জানোয়ারের মধ্যে থাকে। এর কতগুলি প্রজাতি (strain) এক ধরণের বিষ বা টক্সিন তৈরি করে যা শরীরের অন্ত্র, মুত্রগ্রন্থি, রক্ত ইত্যাদি আক্রান্ত করে। এই প্রজাতীর ব্যাক্টেরিয়া দেহে ঢুকলে রক্ত পায়খানা হয়। এটি হলে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।


ক্লাস্ট্রিডিয়াম বচুলিনাম (Clostridium botulinum) ব্যাক্টেরিয়া মাটিতে পাওয়া যায়। এই ব্যাক্টেরিয়ার টক্সিনে যে খাদ্য-বিষক্রিয়া হয়, তাকে বচুলিজ্ম বলা হয়। স্বাস্থ্যসন্মত ভাবে বোতলে বা কৌটোয় খাবার সংরক্ষণ না করলে এটিতে লোকে আক্রান্ত হয়। যেমন, ঠিকমতো পাস্তুরাইজ্ড না করা মধু থেকে অনেক সময়ে খুব ছোট বাচ্চাদের বচুলিজ্ম হতে পারে। বচুলিজ্ম-এর লক্ষণ হল, পেশীর ক্ষমতা হ্রাস, মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা, ডাব্ল ভিশন। এছাড়া বমি, পেট খারাপও থাকতে পারে। বচুলিজ্ম-এ স্নায়ু অসার হয়ে মৃত্যু ঘটতে পারে।এটি হলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে যাওয়া প্রয়োজন।

টক্সোপ্লাজমা গণ্ডাই (Toxoplasma gondii) বলে এক ধরণের এককোষী জীবানুর জন্য টক্সিপ্লাজমোসিস হয়। সাধারণতঃ ভালোভাবে রান্না না করা মাংস থেকে (এটি বহু পাখী ও জন্তুর মধ্যেই থাকে) এটি শরীরে প্রবেশ করে। অনেক সময়ে পশুপাখীর সংস্পর্শে এলে (বিশেষ করে জীবানু বহনকারী বেড়াল) এটি শরীরে প্রবেশ করতে পারে। মুশকিল হল টক্সিপ্লাজমোসিস-এর লক্ষণ বিশেষ কিছুই নেই। অনেক সময় অল্প ফ্লু-র মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। মোটামুটিভাবে প্রায় সবাই এতে আক্রান্ত হলে শরীরে প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তুলতে পারে। কিন্তু গর্ভবতী নারী ও যাদের শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের ক্ষেত্রে এটি ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। ঠিকমত সময়ে অ্যাণ্টিবায়টিক না দেওয়া হলে এই রোগের সংক্রমণের ফলে, ভ্রুণনষ্ট হওয়া, মৃতশিশু প্রসব, শিশু জীবিত অবস্থায় জন্মালেও - তার মস্তিষ্ক, চোখ ইত্যাদি স্বাভাবিক না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এইডস রোগী বা যারা ক্যানসারের জন্য কিমোথেরাপি নিচ্ছে তাদের পক্ষেও এই জীবানু শরীরে প্রবেশ করা মারাত্বক।


কিভাবে খাদ্য দূষিত হতে পারে ?

ব্যাক্টেরিয়া জন্তুদের অন্ত্রের মধ্যে থাকে। মাংস কাটার সময় এগুলি তার মধ্যে চলে আসে;

  • চাষের সময় ফল-মূলেও এগুলো চলে আসতে পারে, যদি সেগুলো ব্যাক্টেরিয়া দূষিত জলে ধোয়া হয়, বা গোবর কিংবা অনান্য জন্তুর বিষ্ঠার সংস্পর্শে আসে।
  • মাংস কাটার সময় যে ছুরি বা বটি ব্যবহার করা হচ্ছে - সেই একই ছুরিতে সব্জি কাটলে সব্জিতে ব্যাক্টেরিয়া এসে যেতে পারে।
  • নানান ব্যাক্টেরিয়া জন্তুজানোয়ারের শরীরে, মাটিতে, জলে, ধুলোতে রয়েছে। এগুলোর সংস্পর্শে এসে হাত ব্যাক্টেরিয়া-নাশক সাবান দিয়ে পরিষ্কার জলে না ধুয়ে খাবারে হাত দিলে, ব্যাক্টেরিয়া খাবারে এসে যেতে পারে।


কি ভাবে খাদ্য-দুষণ বন্ধ করা যায় ?

খাবার প্রস্তুত করা বা সংরক্ষণ করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা। হাত ভালো করে সাবান দিয়ে ধোয়া, যেখানে কুটনো কোটা হচ্ছে - সে জায়গাটা পরিস্কার রাখা, ভালো করে উত্তমরূপে ভেজে বা সিদ্ধ করে রান্না করা - যাতে ব্যাক্টেরিয়াগুলো ধবংস হয়। সংরক্ষণের জন্য খাবার রেফ্রিজারেটরে রাখা এবং খাবার আগে সেটি আবার খুব ভালো ভাবে গরম করা। ডিম, মাংস, মাচ, দুধ, ইত্যাদি - যেগুলি সহজেই নষ্ট হয়। সেগুলোর ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা।


খাদ্য-বিষক্রিয়ার চিকিৎসা কি ?

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চিকিৎসা হল কষ্টকে লাঘব করা। ক্ষেত্রবিশেষে অ্যাণ্টিবায়োটিকের প্রয়োগ। বমি বা পেট খারাপ হলে প্রচুর জল ও ইলেক্টরোলাইটস খাওয়া যাতে ডিহাইড্রেশন না হয়। সেইজন্য অনেক সময়ে হাসপাতালে যাওয়াটা প্রয়োজনীয়। পায়খানা কমাবার ওষুধ না খাওয়াটাই বাঞ্ছনীয় - কারণ তাতে ফল উল্টো হতে পারে। বচুলিজ্ম বা ই-কোলাইয়ের ক্ষেত্রে আশু হাসপাতালে যাওয়া প্রয়োজন।

তথ্য সংকলন: বিকাসপিডিয়া টীম

সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate