অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

ইবোলা ভাইরাস ডিজিজ (ই.ভি.ডি)

ইতিহাস

এই রোগটির জন্মস্থান হল সুদান ও ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো। রোগটি প্রথম মহামারীর আকার ধারণ করে  মূলত উপসাহারান আফ্রিকার ক্রান্তীয় অঞ্চলে। ১৯৭৬ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ১০০০-র কম মানুষ প্রতি বছর ইবোলায় আক্রান্ত হতেন। মহামারীর আকারে ইবোলা রক্তক্ষরা জ্বর দেখা দেওয়ার পর এই ইবোলা ভাইরাসটি প্রথম ধরা পড়ে ১৯৭৬ সালে। ১৯৭৬ সালে প্রথম মহামারীর আকারে  দেখা দিয়েছিল ইবোলা নদীর কূলবর্তী  ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোতে  (জায়ারে), সেখান থেকেই এই ''ইবোলা'' নামকরণ।

  1. ইবোলা ভাইরাস ডিজিজ (ই ভি ডি) ইবোলা হেমারেজিক ফিভার (এ এইচ এফ) নামেও পরিচিত। এটি ভাইরাস ঘটিত রক্তক্ষরা জ্বরের মধ্যে এমন একটি যা কোনো ব্যক্তির রক্তের প্রক্রিয়াকে অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করে।
  2. এটি মানুষ ও বাঁদর, গরিলা, শিম্পাঞ্জির মতো অন্য স্তন্যপায়ী প্রানীদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
  3. বন্য জন্তুদের থেকে এই রোগের ভাইরাস মানুষের দেহে ছড়ায়।
  4. ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে ই.ভি.ডি মারাত্মক।
  5. গ্রীষ্মমন্ডলীয় রেনফরেস্ট পশিম আফ্রিকার কেন্দ্রস্থলের কয়েকটি গ্রামে ই.ভি.ডি মহামারীর আকারে প্রথম ছড়িয়ে পড়ে। সবচেয়ে বড় মহামারীর আকার নেয় ২০১৪ সালে পশ্চিম আফ্রিকায়, যার ফলে গিনিয়া, লিবেরিয়া, সিরিয়া লিওন ও নাইজেরিয়া প্রচন্ডভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
  6. ২০১৪ সালের অগাস্ট মাসে ১,৭৫০ মানুষের মধ্যে এই রোগটির উপস্থিতি আশংকা করা হয়েছিল।
  7. গুরুতরভাবে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য প্রয়োজন যথাযথ যত্ন।  তবে এই রোগের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা বা টিকার ব্যবস্থা নেই।

ইবোলার উপসর্গ:

১. জ্বর

২. মাথা ব্যাথা

৩. দুর্বলতা

৪.গাঁটের ও পেশীর ব্যথা

৫. ডায়রিয়া

৬. বমি

৭. পেট ব্যথা

৮. ক্ষুধামান্দ্য

এই রোগের পরবর্তী পর্যায় হল রক্তপাত।  এই পর্যায়ে চোখ, নাক, কান দিয়ে এমন কি শরীরের অভ্যন্তরে রক্তপাত হতে থাকে।

এই রোগের ভাইরাসটি শরীরে ঢোকার ২ থেকে ২১ দিনের মধ্যে প্রকাশিত হতে পারে, যদিও এই প্রকাশ সাধারণত ৮-১০ দিনে দেখা দেয়।

মূল কারণ


ইভিডি ''ইবোলা ভাইরাস'' গোত্রের ''ফিলোভিরেড'' পরিবারের ''মোননেগাভিরিল'' প্রজাতির ৫ টি ভাইরাসের মধ্যে ৪টির কারণে ঘটে থাকে। মানব দেহে রোগ সৃষ্টিকারী এই চারটি ভাইরাসের মধ্যে পড়ে :

১. বুন্দিবুগীয় ইবোলা ভাইরাস (বিডিবিভি)

২. জাইর ইবোলা ভাইরাস/ইবোলা ভাইরাস (ইবিওভি)

৩. সুদান ইবোলা ভাইরাস (এস ইউ ডি ভি)

৪. তাই ফরেস্ট  ইবোলা ভাইরাস (টি এ এফ ভি)

বিডিবিভি,ইবিওভি,এস ইউ ডি ভি,টি এ এফ ভি হল সবচেয়ে মারাত্মক ভাইরাস এবং এগুলি দক্ষিন আফ্রিকায় বহু সংখ্যক মহামারীর কারণ।

ইবোলার পঞ্চম ভাইরাসটি হল ''রেস্টন ইবোলা ভাইরাস (আর ই এস টি ভি)'' এবং এই ''রেস্টন ইবোলা ভাইরাস (আর ই এস টি ভি)''-টি  বাঁদর, গোরিলা ও শিম্পাঞ্জি জাতীয় প্রানীদের মধ্যে দেখা দিতে পারে।

প্রবাহ

১. সংক্রমণের প্রাথমিক উৎস-

এই ভাইরাসটি  সাধারণত পশু থেকে মানুষের দেহে সঞ্চারিত হয়।  জুনটিক (প্রাণী বাহিত) ভাইরাস সংক্রমণের আধার হল বাদুড়।

২. সংক্রমণের দ্বিতীয় উৎস-

মানুষ থেকে মানুষে ভাইরাসের সংক্রমণ হল সংক্রমণের দ্বিতীয় উৎস।

(ক).মানুষের দেহ থেকে রক্ত, ঘাম, লালা, বীর্য বা অন্যান্য নিঃসরণ অন্য কোনো মানুষের শরীরে সরাসরি মিশলে সংক্রমণ ঘটতে পারে।

(খ). সংক্রমিত ব্যক্তির গায়ে ফোটানো সুচ অন্যের গায়ে ফোটানো হলে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।

(গ).সংক্রমিত ব্যক্তির মৃত দেহ থেকে এই সংক্রমণ ছড়াতে পারে।

প্রবাহ সম্পর্কে তথ্য

  1. ইবোলা বাতাসের মাধ্যমে  সঞ্চালিত হতে পারে না
  2. ইবোলা জলের মাধ্যমে  সঞ্চালিত হতে পারে না
  3. ইবোলা খাবারের মাধ্যমে  সঞ্চালিত হতে পারে না

        পরিষ্কার করে বলতে গেলে, ''ইবোলা'' খাদ্য, জল ও বায়ু বাহিত কোন রোগ নয়।

প্রকাশের ঝুঁকি

মহামারীর সময় যেখানে সংক্রমণের ঝুঁকিগুলো রয়েছে-

১. স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে

২. কারুর মধ্যে ইবোলা দেখা দিলে তাঁর নিকটবর্তী মানুষজনের মধ্যে সংক্রমণ ছাড়ানোর ঝুঁকি

৩. শোকার্ত ব্যক্তির সঙ্গে সংক্রমিত মৃত দেহের সরাসরি সংযোগ

৪. সংক্রমণপ্রবণ এলাকায় পর্যটকদের যাতায়াত

রোগ নির্ণয়

শুরুর দিকে ইবোলা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা খুব কঠিন। ল্যাবরেটরিতে অনেকগুলো পরীক্ষার পর এই রোগের জীবানু ধরা পড়ে।  এই পরীক্ষগুলোর মধ্যে পড়ে:

      অ্যান্টিবডি-ক্যাপচার এনজাইম লিঙ্কড ইমিউনসর্বেন্ট আসে (এলিসা/ই.এল.আই.এস.এ)

      এন্টিজেন নির্ণায়ক পরীক্ষা

      পলিমারেজ চেইন রিয়াকশন (পি সি আর)
      সেল (কোষ) কালচার দ্বারা ভাইরাস বিচ্ছিন্নকরণ
      ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কপি

করনীয় কাজ

ইবোলা রোগের কোনো টিকা পাওয়া যায় না।  বর্তমানে  ইবোলা রোগের টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে। এই রোগের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। এই মুহুর্তে এই রোগের একমাত্র চিকিৎসা হল ''নিবিড় সহায়ক থেরাপি (ইনটেনসিভ কেয়ার থেরাপি)''।   এই থেরাপির মধ্যে পড়ে :

  • রোগীর শরীরের অভ্যন্তরীণ তরল ও ইলেক্ট্রোসাইটসসের মধ্যে সমতা বিধান।
  • অক্সিজেনের অবস্থা ও রক্তচাপ বজায় রাখা
  • অন্য কোনো সংক্রমণ থাকলে তাদের চিকিৎসা করা

সংক্রমণের শুরুতেই ইবোলা রক্তক্ষরা রোগের ইনটেনসিভ কেয়ার থেরাপি অত্যন্ত জরুরী। শুরুর দিকে মাথাব্যথা বা অল্পস্বল্প জ্বরের উপসর্গগুলো দেখে অন্য কোনো রোগ মনে হতেই পারে। তাছাড়া, যেহেতু একজন ব্যক্তি কীভাবে ই.এইচ.এফ দ্বারা সংক্রমিত হবে সে বিষয়টি নিশ্চিত নয়, তাই এই রোগ প্রতিরোধ করা এক প্রকার চ্যালেঞ্জের ব্যাপার।

ভারতে আপদকালীন তত্ত্বাবধানের ব্যবস্থা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষণা করেছে যে পশ্চিম আফ্রিকার ইভিডি মহামারী হল ''সবচেয়ে জটিল এক প্রকোপ যা জনস্বাস্থ্যে আপদকালীন অবস্থার সৃষ্টি করেছে''। ভারতবর্ষে ২৪ ঘন্টার 'জরুরী হেল্পলাইন অপারেশন সেন্টার' খোলা হয়েছে যা সবচেয়ে উন্নত ট্র্যাকিং এবং নজরদারি সিস্টেম প্রদান করতে সক্ষম। নিউ দিল্লীর রামমোহন লোহিয়া হাসপাতাল ও অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস ইভিডির পরিষেবা ও পরিচালনার কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।  হেল্প লাইন নম্বরগুলো হল (০১১)-২৩০৬১৪৬৯, ৩২০৫ ও ১৩০২।

ইবোলা প্রতিরোধের একটি পথ হল বিচ্ছিন্নকরণ- অর্থাৎ ইবোলা আক্রান্ত ব্যক্তিকে ইবোলা রোগে আক্রান্ত নয় এমন ব্যক্তি থেকে আলাদা রাখা। ‘’সঙ্গরোধ’’ বলপূর্বক বিচ্ছিন্নতার এক অবস্থা এবং সংক্রমক রোগ প্রতিরোধের এটি একটি ব্যবস্থা।  এই ''সঙ্গরোধ'' পন্থার সমসীমা নির্ভর করে ঐ রোগটির ইনকিউবেশন পিরিয়ডের(সংক্রমণ ও সংক্রমণ প্রকাশিত হওয়ার মধ্যবর্তী সময়সীমা)উপর। ইবোলা রোগের ইনকিউবেশন পিরিয়ড হল 2-21 দিন।

বেরিয়ার নার্সিং প্রযুক্তির মধ্যে পড়ে :

  • প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরা (এদের মধ্যে পড়ে মাস্ক, গ্লাভস, গাউন ও গগলস)
  • সংক্রমণ-নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার প্রয়োগ  (সম্পূর্ণভাবে  সরঞ্জামের নির্বীজকরণ এবং জীবানুনাশকের  নিয়মিত ব্যবহার)।
  • সম্পূর্ন পরিবেশ জীবানুমুক্ত রাখা প্রয়োজন। জীবানুনাশক পদার্থ, উত্তাপ, সূর্যকিরণ, ডিটারজেন্টস ও সাবানে ভাইরাস বেঁচে থাকতে পারে না।
  • মৃতদেহ ইবোলার সংক্রমণ ঘটাতে পারে। তাই, ইবোলা সংক্রমিত মৃতদেহ এড়িয়ে চলুন বা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিন।  ভাল করে সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার রাখুন ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।

 

ইবোলা প্রতিরোধ ও বিমানযাত্রার নির্দেশিকা পেতে নিচের লিংকগুলো ক্লিক করুন :

http://www.cdc.gov

http://www.who.int

তথ্যসূত্র : জাতীয় স্বাস্থ্য প্রবেশদ্বার, ভারত

সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/19/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate