অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

যক্ষ্মা বা টিবি

যক্ষ্মা বিভিন্ন প্রকারের 'মাইকোব্যাকটেরিয়া' সম্পর্কিত একটি রোগ যা 'মাইক্রো ব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলেসিস' দ্বারা ঘটে থাকে। যক্ষ্মা সাধারণত: ফুসফুসে ছড়ায়, তবে এটি শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রতঙ্গকেও  ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। যক্ষ্মা-আক্রান্ত ব্যক্তির কফ, হাঁচি বা থুতু থেকে বাতাসের মধ্যে দিয়ে সহজে এই রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। যক্ষ্মা একটি গুরুতর অসুখ হলেও সঠিক চিকিৎসার দ্বারা এর নিরাময় সম্ভব। ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’ (‘ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানিজেশন’)-র তথ্য অনুয়ায়ী ২০১১সালে সারা বিশ্বে সর্বমোট ৮.৭ লক্ষ যক্ষ্মা রোগীর মধ্যে ভারতবর্ষেই  ছিল  মোট ২.৩ লক্ষ যক্ষ্মা রোগী এবং সে হিসেবে ভারতবর্ষেই সবচেয়ে বেশী সংখ্যায় যক্ষ্মা আক্রান্ত মানুষের বাস।

যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসায় পুষ্টি-পরিপূরক


যক্ষ্মা ও অপুষ্টির মধ্যে সম্পর্ক সন্ধানের সমীক্ষায় জানা গেছে যে 'উচ্চ বিপাকীয় চাহিদা' ও 'কম পরিমাণে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ বা ক্ষুধামান্দ্য' এই দুইয়ের অসামঞ্জস্যে যক্ষ্মা ঘটার সম্ভাবনা থাকে।

এই অনুসন্ধানটিতে নিযুক্ত ছিল 'পর্যালোচনা কেন্দ্র (রিভিউইং সেন্ট্রাল) [দ্য কোহেরেন্স লাইব্রেরী]', মেডলাইন, এম্বেস , লিলাক্স , এম আর সি টি এবং ইন্ডিয়ান জার্নাল অব টিউবারকিউলিসিস (জুলাই ২০১১)।

যক্ষ্মা নিরাময়ের জন্য লাগাতার নিয়ন্ত্রিত-পরীক্ষা অনুযায়ী যক্ষ্মা-আক্রান্ত ব্যক্তিকে কেবলমাত্র পুষ্টি পরিপূরক দেওয়া হয়। ৬৮৪২ জন যক্ষ্মা রোগীর উপর এই পরীক্ষা করা হয়েছে।

লেখকের বক্তব্য অনুযায়ী ক্রমন্নোত জীবনের গুণগত মাণের জন্য অথবা যক্ষ্মা চিকিৎসার আরও ভালো ফল পেতে খাদ্য বা শক্তি পরিপূরক কতটা কার্যকর তার পর্যাপ্ত গবেষণা এখনো পর্যন্ত হয়নি। এর জন্য প্রয়াজন আরো বেশী পরিমাণ সমীক্ষা ও পরীক্ষা।

কারণ

যক্ষ্মার মূল কারণ 'মাইক্রো ব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলেসিস' নামক অতি ক্ষুদ্র বায়ুজীবী, স্থবির ও নলাকার জীবাণুবিশেষ। টিবি বা যক্ষ্মা তখনই ছড়াতে পারে যখন একজন  যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তির কাশি বা হাঁচির বহিষ্কৃত ফোঁটায়  আগত টিবির জীবানু অন্য একজন সুস্থ ব্যক্তি প্রশ্বাসের মধ্যে দিয়ে গ্রহণ করে।

ঝুঁকির বিষয় : বিশ্ব জুড়ে  সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক ঝুঁকির বিষয় হল যক্ষ্মা বা টিবি'-র সঙ্গে এইচ আই ভি (এইডস)-র মিলিত সম্পর্ক।

অন্যান্য বিষয়গুলোর অন্তর্ভূক্ত হল :

  • হজকিন্ লিম্ফোমা
  • শেষ-পর্যায়ের বৃক্ক বা মূত্রাশয় সম্পর্কীয় রোগ
  • দীর্ঘ দিনের ফুসফুসের রোগ
  • অপুষ্টি
  • মদ্যপান
  •  

    ক্ষণ ভিত্তিক রোগ নির্ণয় : দু সপ্তাহের বেশী কাশি, ওজন হ্রাস, ক্ষুধমান্দ্য, জ্বর ও রাতে ঘেমে যাওয়া, ক্লান্তি- এসব যক্ষ্মার সাধারণ লক্ষণ।  যদি কারুর মধ্যে এই লক্ষণগুলো দেখা দেয় তবে আর দেরী না করে তাঁর ডাক্তারী পরামর্শ নেওয়া উচিত ও পরীক্ষা করে নেওয়া দরকার যক্ষ্মা হয়েছে কিনা।

    বুকের এক্স-রে : ফুসফুসের ছবি নিতে এক্ষেত্রে এক প্রকার বিকিরণ ব্যবহার করা হয়। যদি কারুর টিবি বা যক্ষ্মা হয়ে থাকে তবে ছবিতে ক্ষত চিন্হিত অংশ ধরা পড়বে।

    ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পরীক্ষা করতে শ্লেষ্মা ও থুতুর নমূনা নেওয়া।

    ফুসফুস ছাড়া শরীরের অন্যান্য স্থান যক্ষ্মা-আক্রান্ত হলে :

    কম্পিউটার ভিত্তিক টমোগ্রাফি (সি টি) স্ক্যান : বিভিন্ন কোণ/দিক থেকে শরীরের ভিতর পরপর অনেকগুলো এক্স-রে করানো হয় ও সবগুলো মিলিয়ে কম্পিউটার একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ ছবি তৈরি করে।

    চুম্বকীয় অনুরণন প্রতিবিম্ব (এম আর এই/ ম্যাগনেটিক রেজোরেন্স ইমেজেস) : চৌম্বক ক্ষেত্র ও তাড়িৎ-চৌম্বক তরঙ্গের দ্বারা শরীরের ভিতরের অঙ্গ-প্রতঙ্গের  পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রতিবিম্ব।

    আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যান :এক্ষেত্রে উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দ তরঙ্গ শরীরের অভ্যন্তরীন অঙ্গ-প্রতঙ্গের এক ধরণের প্রতিবিম্ব তৈরি করতে পারে।

    রক্ত পরীক্ষা

    মূত্র পরীক্ষা

    বায়োপসি (রোগনির্ণয়ের বা পরীক্ষার জন্য জীবদেহ থেকে কোষ-কলা কেটে বা চেঁচে নেওয়া): রোগের উপস্থিতি নির্দ্ধারণের জন্য আক্রান্ত অংশ থেকে অল্প একটু কলা বা টিস্যু নমূনা হিসেবে নেওয়া হয়।

    ঔষধের প্রয়োগ

    যক্ষ্মা প্রতিরোধে যদিও দীর্ঘ দিন ধরে বহু জীবাণু-প্রতিরোধী অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হয়, তবুও 'কী ধরণের যক্ষ্মা' তার উপর নির্ভর করছে 'কী ধরণের চিকিৎসা পদ্ধতি' গ্রহণ করা হবে।

    ডটস (ডিরেক্টলি অবজার্ভড ট্রিটমেন্ট, শর্ট কোর্স /সরাসরি পর্যবেক্ষিত চিকিৎসা পদ্ধতির সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ-ধারা )

    এক্ষেত্রে ঠিক মতো ওষুধপত্র খাওয়ানো ও স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া হচ্ছে কিনা তা দেখাশোনা করা হয়।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ( ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানায়জেশন / ডব্লু এইচ ও) চেষ্টা করছে সঠিকভাবে অ্যান্টিবায়োটিক নেয় না এমন যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তির  সংখ্যা কমাতে। ২০১০ সালে প্রস্তাবিত চিকিৎসা পদ্ধতি অনুযায়ী সদ্য ফুসফুসে যক্ষ্মা-আক্রান্ত ব্যক্তিকে ৬ মাস  অ্যান্টিবায়োটিক নিতে হবে যার প্রথম ২ মাস রিফামপিসিন (rifampicin), আইসোনিয়াজিড (isoniazid), পাইরাজিনামাইড (pyrazinamide) ও ইথামবুটল (ethambutol) এবং শেষ চার মাস থাকবে কেবলমাত্র রিফামপিসিন (rifampicin) ও আইসোনিয়াজিড (isoniazid) সংবলিত ওষুধ। আইসোনিয়াজিড (isoniazid) ওষুধে ঠিক মতো কাজ না হলে  বিগত চার মাস আইসোনিয়াজিড (isoniazid)-র সংগে  ইথামবুটল (ethambutol) নেওয়া যেতে পারে। যদি 'বহু ঔষধ-প্রতিরোধী যক্ষ্মা' (মাল্টিপল ড্রাগ-রেজিস্টেন্স টি বি/ এম ডি আর-টিবি) নির্দ্ধারিত হয়, তবে কম করে চারটি ফলপ্রসূ অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ ১৮ থেকে ২৪ মাস নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

    প্রতিরোধ

    টিকা বা ভ্যাকসিনেশন-র মধ্যে দিয়ে যক্ষ্মা প্রতিরোধ করা যায়। এখন (২০১১ সাল থেকে) একমাত্র ব্যাসিলাস ক্যালমেট-গুয়েরিন (বি সি জি) পাওয়া যায়। এটি  শৈশবে প্রচারিত রোগ ঠেকাতে কার্যকরী, তবে  'ফুসফুসে যক্ষ্মা' (পালমোনারি টিবি)-র বিরুদ্ধে অসঙ্গত সুরক্ষা প্রদান করে।

    তথ্যসূত্র : জাতীয় স্বাস্থ্য প্রবেশদ্বার, ভারত থেকে সংকলিত

    সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/26/2020



    © C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
    English to Hindi Transliterate