আমাদের চোখের সামনের দিকে একটা স্বচ্ছ লেন্স থাকে–যার মধ্যে দিয়ে আলোর রশ্মি গিয়ে চোখের পেছনে রেটিনার ওপর গিয়ে পড়ে। ফলে আমরা দেখতে পাই। এই লেন্স যখন অস্বচ্ছ হতে থাকে, তখন ক্যাটারাক্ট শুরু হয়েছে বলা হয়।
লেন্স কতটা অস্বচ্ছ হচ্ছে বা অস্বচ্ছতা কোন জায়গাতে বেশী, তার ওপর নির্ভর করছে আমার দেখার ক্ষমতা কতটা কমছে। যদি এই অস্বচ্ছতা লেন্সের বাইরের দিকে সীমাবদ্ধ থাকে – মধ্যের দিকটা স্বচ্ছ থাকে, তাহলে ক্যাটারাক্ট হয়েছে কিনা – সেটা আমরা নাও বুঝতে পারি।
ক্যাটারাক্ট সম্পর্কে অনেক ধারণা চালু আছে। যেমন,
এগুলোর কোনটাই সত্যি নয়।
সাধারণত বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এটা শুরু হয়। এছাড়া এটা নির্ভর করে –
বলা শক্ত। নির্ভর করে ব্যক্তিবিশেষের উপর। এমন কি একই লোকের দুটো চোখে বিভিন্ন হারে এটা বৃদ্ধি পেতে পারে। যেসব ক্যাটারাক্ট বয়সের সঙ্গে শুরু হয়, সেগুলো খুবই ধীরে ধীরে বাড়ে। কমবয়সীদের ক্যাটারাক্ট স্বাস্থ্যসংক্রান্ত কারণে হলে (যেমন, ডায়াবেটিস) এটি দ্রুত হারে বাড়তে পারে। এ ব্যাপারে ভবিষ্যৎবাণী করা শক্ত।
সার্জারি একমাত্র পথ। তবে ক্যাটারাক্ট যদি কাউকে তেমন সমস্যা না দেয়, তাহলে সার্জারির কোনও প্রয়োজন নেই। অনেক সময় চশমার পাওয়ারের পরিবর্তন করে কিছুটা উপকার পাওয়া যায়। তবে ওষুধ বা ভিটামিন খেয়ে কিংবা ব্যায়াম করে এটি কামানো সম্ভব নয়। রবে প্রখর সূর্যের আলো থেকে চোখকে রক্ষা করলে, এটির গতি কিছুটা রুদ্ধ করা যায়। তারজন্যে সানগ্লাস যাতে আলট্রা-ভায়োলেট রশ্মি আটকায় কিংবা এমনি চশমা যার লেন্সে অ্যান্টি-আলট্রা ভায়োলেট কোটিং আছে ব্যবহার করা প্রয়োজন।
চোখের ডাক্তার পরীক্ষা করে এটা বোঝেন। ঝাপসা দেখা বা চোখের সমস্যা অনেক কারণেই হতে পারে (যেমন, কর্নিয়া, রেটিনা, অপটিক নার্ভ ইত্যাদির সমস্যা)। ডাক্তাররা পরীক্ষা করে এটা স্থির করবেন।
ক্যাটারাক্ট না ‘পাকলে’ করা যায় না, এটা ভুল। এটাও ভুল যে ক্যাটারাক্ট হলেই সার্জারি করতে হবে। যখন ক্যাটারাক্টের ফলে দৈনন্দিন কাজে অসুবিধা শুরু হয়েছে, তখনই এটা করার কথা ভাবা উচিত। এ ব্যাপারে চোখের ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে দিনক্ষণ স্থির করতে হবে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্যাটারাক্ট সার্জারিতে (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে) কোনও সমস্যা হয় না। সাধারণত এর জন্যে হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন হয় না। লোকাল অ্যানেস্থশিয়া দিয়ে চোখের অস্বচ্ছ লেন্সকে তুলে ফেলে সেখানে একটি স্থায়ী কৃত্রিম লেন্স বসিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ডাক্তারের নির্দেশমতো কিছুদিন নিয়মিত চোখে ওষুধ দিতে হয়। ডাক্তার মাঝে মাঝে পরীক্ষা করে দেখেন চোখের সার্জারি-জনিত ক্ষত ঠিকমত সেরে উঠছে কিনা। তবে মনে রাখতে হবে এটা একটা সার্জারি, সুতরাং সব সময়েই যে এটা সফল হবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই।
সূত্র: বিকাশপিডিয়া টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020