দল, উপদল, গোষ্ঠী ইত্যাদির সঙ্গে একাত্মীভূত হয়ে থাকার ফলেই আমরা সাধারণত ভয় থেকে অনেকখানি মুক্ত থাকি। ফোবিয়ার রোগীরা দলছুট, বন্ধুহীন এবং তাই নিরাশ্রয় ও নিরাপত্তার অভাবে পীড়িত। সমাজে সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের ভয়ে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর পৈতৃক বাসভূমি ত্যাগ করে যাওয়ার যে হিড়িক পড়ে, সেই ভয়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত কারণে উদ্ভুত ভয়ের বিশেষ কোনও সম্পর্ক নেই। সংখ্যালঘুদের ওই ভয় সাময়িক। তাদের কোনও চিকিৎসার দরকার হয় না। তবে তারা যদি স্থানান্তরিতের সুযোগ না পায় এবং ওই ভয়ের পরিবেশে বসবাস করতে বাধ্য হয় তা হলে তাদের ভয় অবসেশনে পরিণত হতে পারে। কোনও গোষ্ঠী, সম্প্রদায়, রাজনৈতিক দল ইত্যাদির সঙ্গে নিজেদের সংযুক্ত করতে না পারলে আমরা স্বভাবতই নিরাপত্তার অভাব বোধ করব এবং আতঙ্কর সামান্যতম কোনও কারণ ঘটলেই হয়তো রোগী হয়ে পড়ব। সমাজবদ্ধ প্রতিটি ব্যক্তির তাই এই সমাজকে সুস্থ এবং যতটা সম্ভব প্রতিযোগিতা, দ্বন্দ্ব, রেষারেষি এবং দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা করা উচিত। অবশ্য ব্যক্তিপ্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িকতার ধর্মভিত্তিক, ভাষাভিত্তিক, জাতিভিত্তিক ইত্যাদি সব রকমের ও দেশের আর্থ-সামাজিক তথা রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। এর জন্য পরিবর্তন প্রয়াসী ব্যক্তিদের সংগঠিত করা দরকার। মনের রোগের উৎস অনুসন্ধান ও মনের রোগের ব্যাপারে আমাদের কর্তব্য কী — এই আলোচনায় আমরা হয়তো অনেক কিছু বলছি, যার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে মনের রোগের কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু মনের রোগকে বোঝার জন্য শুধু আমাদের দেশের নয়, গোটা পৃথিবীর রাজনৈতিক, সমাজনৈতিক অবস্থার জ্ঞান ও বিশ্লেষণ প্রয়োজন। তাই আমাদের এই আলোচনা অপ্রাসঙ্গিক বলে আমরা মনে করি না।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019