বহু আলোচিত এবং বিতর্কমূলক স্কিজোফ্রেনিয়া (schizopherenia) রোগের প্যাথোফিজিওলজি নিয়ে আলোচনায় আসছি। পাঠ্যপুস্তকে স্কিজোফ্রেনিয়া রোগের মধ্যে অনেক ধরনের রোগীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং তাদের বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে; যথা প্যারানয়েড স্কিজোফ্রেনিয়া, ক্যাটাটনিক স্কিজোফ্রেনিয়া, সিম্পল স্কিজোফ্রেনিয়া ইত্যাদি। এই রোগীরা সকলেই প্রায় বাস্তববিমুখ অথবা বাস্তবজগত থেকে বিচ্ছিন্ন। কারও কারও কথাবার্তায় প্রথম থেকেই স্বাভাবিকতা ও বাস্তববিমুখীনতার পরিচয় পাওয়া যায়। হ্যালুসিনেশন এবং ডিলিউশান যাদের থাকে তাদের সাধারণ মানুষই অস্বাভাবিক এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে উন্মাদ বলে বুঝতে পারে। আবার এখানে নিজ নিজ বুদ্ধি, বিশ্বাস এবং সংস্কৃতি অনুযায়ী তাঁরা বিশেষ করে বাড়ির লোকেরা, এই অস্বাভাবিকতাকে এক ধরনের বৈশিষ্ট্য বলে ভাবতে পারেন। আমাকে রোগী যদি বলে ‘আমাকে আমার বন্ধু, এক গুনিনের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। সেই গুনিন আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বিড় বিড় করে কী যেন বলল! তার পর থেকে তার কণ্ঠস্বর আমি সব সময় শুনতে পাচ্ছি’, এই রকম অস্বাভাবিক কথাবার্তাও রোগীর আত্মীয়-স্বজন কোনও কোনও সময় স্বাভাবিক বলে মনে করেন। কারণ তাঁরা তুকতাক, মারণ উচাটন বশীকরণ ইত্যাদির ক্রিয়াকলাপে বিশ্বাসী। আবার দু-এক ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনও এক দিকে রোগীর অসাধারণ ব্যুত্পত্তি অথবা জ্ঞান বাড়ির লোকেদের বিস্মিত করে; তাঁরা রোগীকে জিনিয়াস মনে করে গর্বিত রোধ করেন। খুব অপ্রাসঙ্গিক হবে না যদি এখানে বলি যে বেশ কিছু পণ্ডিতের ধারণা যে জিনিয়াস (genius) এবং উন্মত্ততার মধ্যে বিশেষ সম্পর্ক আছে। এ আলোচনার মধ্যে আমরা বর্তমানে যাচ্ছি না। তবে স্কিজোফ্রেনিক রোগীদের মধ্যে বুদ্ধিমান এবং অতি সংবেদনশীলদের সংখ্যা বেশি — এ কথা বললে বোধহয় খুব ভুল বলা হবে না।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/12/2020