অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

প্রশ্নোত্তরে বয়স্কা মহিলাদের শারীরিক সমস্য‌া

প্রশ্নোত্তরে বয়স্কা মহিলাদের শারীরিক সমস্য‌া

ইন্ডিয়ান মেনপজ সোসাইটির কলকাতা চ্য‌াপ্টারের বার্ষিক সচেতনতা অনুষ্ঠানের সূচনা হল ১৮ অক্টোবর। মেনপজ ও তার জটিলতা সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তরের আসরে অংশ নেন ইন্ডিয়ান মেনপজ সোসাইটির সর্বভারতীয় সভাপতি ডাঃ এইচপি পট্টনায়ক, কলকাতা চ্য‌াপ্টারের সভাপতি ডাঃ কালিদাস বক্সী ও প্রখ্য‌াত গায়নোকোলজিস্ট ডাঃ শক্তিরূপা চক্রবর্তী। এই অনুষ্ঠানের পাশাপাশি চলতে থাকে চল্লিশোর্ধ মহিলাদের স্বাস্থ্য‌ পরীক্ষা শিবির।

একেবারে শুরুতে ডাঃ কালিদাস বক্সী বলেন, চল্লিশ বছর পেরিয়ে গেলে মহিলাদের নানা ধরনের শারীরবৃত্তীয় সমস্য‌া দেখা দেয়। কিন্তু অনেক সময় তাঁরা লজ্জায় বা ভয়ে সে সব কথা গোপন করে যান। এই গোপন করাটাই একটা বড় সমস্য‌া। এর থেকে রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়।

শ্রোতাদের মধ্য‌ থেকে এক মহিলা জানতে চান, তাঁর এক পরিচিত মহিলার মেনপজ হওয়ার ২৮ বছর বাদে ফের ঋতু শুরু হয়ে যায়। কিছু দিন অন্তর তাঁর ঋতু হতেই থাকে। এটা কেন হয়?

ডাঃ শক্তিরূপা চক্রবর্তী বলেন, এই সব ক্ষেত্রে এক্সক্লুডিং পরীক্ষার মাধ্য‌মে দেখতে হবে ওই মহিলার সত্য‌িই জটিল কোনও রোগ হয়েছে কি না। অর্থাৎ আগে দেখতে হবে কোনও ক্য‌ান্সার গ্রোথ হয়েছে কিনা। তার পর হরমোনাল ডেফিসিয়েন্সি, হাইপারটেনশন ইত্য‌াদি সব রকম জিনিসই দেখতে হবে। অনেক সময় সহবাসজনিত ট্রমা থেকেও রক্তপাত হতে পারে। চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে এ ব্য‌াপারে নিশ্চিত হতে হবে।

ডাঃ কালিদাস বক্সী : কোনও রকম চুলকানি বা রক্তপাত হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিন। একেবারে ফেলে রাখবেন না।

ডাঃ রত্নাবলী চক্রবর্তী : পশ্চিমবঙ্গে এখন ইউটেরাস লাইনিংয়ের ক্য‌ান্সার অনেক বেড়ে গিয়েছে। আগে সারভাইকাল ক্য‌ান্সারের সংখ্য‌াই ছিল বেশি। এখন সেটা তুলনামূলক ভাবে কম। তার কারণ, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ এক সঙ্গে থাকলে এই ধরনের লাইনিংয়ের ক্য‌ান্সার হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। পশ্চিমবঙ্গে এই দু’টোয় এক সঙ্গে আক্রান্ত হওয়া রোগীর সংখ্য‌া বাড়ছে। ফ্য‌াট জমা জনিত কারণে অতিরিক্ত হরমোন নিঃসরণ থেকেও লাইনিংয়ের ক্য‌ান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে কয়েক ধরনের ক্য‌ান্সারে কিন্তু কেবলমাত্র সার্জিকাল অপারেশন করলেই কাজ হয়।

ডাঃ এইচপি পট্টনায়ক : ওড়িশায় এখনও এক নম্বর জায়গায় রয়েছে সারভাইকাল ক্য‌ান্সার। তার কারণ বেশির ভাগ আক্রান্ত রোগীই আসেন গ্রাম থেকে। তাঁরা অজ্ঞতাজনিত কারণে চিকিৎসা করান না। শারীরিক অসুবিধার কথা চেপে যান। শেষে নিরুপায় হয়ে যখন চিকিৎসকের কাছে আসেন তখন রোগ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।

ডাঃ রত্নাবলী চক্রবর্তী : মেয়েদের এক ধরনের ক্য‌ান্সারের মূল কারণ হল হিউম্য‌ান প্য‌াপিলোমা ভাইরাস। দেহ মিলনের মাধ্য‌মে এই ভাইরাস মহিলাদের শরীরে প্রবেশ করে। অনেক সময় তা ইউটেরাসের মুখে দীর্ঘদিন বাসা বেঁধে থাকে। দীর্ঘদিন পর তা থেকে ক্য‌ান্সার আরম্ভ হয়। হয়তো সমস্য‌ার সূত্রপাত হল ভাইরাস ঢোকার ১৫ বছর পর। এখন হিউম্য‌ান প্য‌াপিলোমা ভাইরাসের প্রতিষেধক এসে গিয়েছে। ৯ থেকে ৪৬ বছর বয়সী মহিলাদের এই ভ্য‌াকসিন দেওয়া যায়। বিদেশে পুরুষদেরও এই ভ্য‌াকসিন দেওয়া হচ্ছে কারণ তারাই এই ভাইরাসের বাহক। এ ছাড়া নিয়মিত প্য‌াপ্সমিয়ার পরীক্ষার মাধ্য‌মে ক্য‌ান্সারের আক্রমণ হয়েছে কিনা তা বোঝা যায়। এর জন্য‌ সাদা স্রাব নিয়ে পরীক্ষা করতে হয়। ধরা পড়লে এবং ঠিক মতো চিকিৎসা করালে সারভাইকাল ক্য‌ান্সার নিরাময় করা যায়। আমাদের ভাইরাস ভ্য‌াকসিন নিতে উদ্বুদ্ধ করাটাও হবে মানবিক কর্তব্য‌।

ডাঃ কালিদাস বক্সী ঠিকই। গোড়ায় ধরা পড়লে ক্য‌ান্সার সারানো যায়। সেই জন্য‌ চুলকানি অনুভব, বেশি পরিমাণ স্রাব, অতিরিক্ত রক্তপাত বা অন্য‌ কোনও উপসর্গ থাকলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিt। সারভাইকাল ক্য‌ান্সার জরায়ুর মুখে হলে তা চোখে দেখে বোঝা যায়। তার পর পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব।

শ্রোতাদের মধ্য‌ থেকে এক জন জিজ্ঞাসা করেন, টিউমার এক বার অপারেশনের পর আবার একই ধরনের উপসর্গ দেখা যেতে পারে কি?

ডাঃ কালিদাস বক্সী : বিভিন্ন জায়গায় টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিছু টিউমার ছোট থেকে বড় হয়। তবে ছোট অবস্থাতেই অপারেশন করিয়ে নেওয়া ভাল। কারণ বড় হলে নিয়মিত রক্তপাত ঘটে অ্য‌ানিমিয়া বা অন্য‌ সমস্য‌া হতে পারে। কিছু টিউমার বাইরে থেকে দেখা যায়। যেগুলি ভিতরের দিকে থাকে তা চট করে বোঝা যায় না। পরীক্ষা করে দেখতে হয়।

শ্রোতারা প্রশ্ন করেন মেনপজ পরবর্তীকালে জীবনযাপনকে স্বতঃস্ফূর্ত রাখতে হরমোন ট্রিটমেন্ট কতটা জরুরি?

ডাঃ কালিদাস বক্সী : লাইফস্টাইল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য‌ কেবলমাত্র হরমোন থেরাপি করালেই হয় না। খাদ্য‌াভ্য‌াস নিয়ন্ত্রণ করা, নিয়মিত ব্য‌ায়াম করা, কাজে লিপ্ত থাকা প্রভৃতি স্বাভাবিক উপায়ের মাধ্য‌মেও জীবনযাত্রার মানকে অনেকটা উঁচুতে ধরে রাখা সম্ভব। আমাদের দেশে মহিলাদের চল্লিশ বছর বয়সের পর থেকে হরমোন নিঃসরণ কমতে থাকে। বিশেষ করে ইস্ট্রোজেন হরমোনের পরিমাণ ক্রমশ কমে। মেনপজের পর কতকগুলি লক্ষ্মণ প্রবল হয়ে ওঠে যেমন খিটখিটে স্বভাব, খাবার সম্পর্কে উদাসীনতা, গাঁটে ব্য‌থ্য‌া, শারীরিক অস্বস্তি হওয়া ইত্য‌াদি। এই সময় মহিলাদের প্রচুর ক্য‌ালসিয়াম ঘাটতি হয়। ভিটামিন –ডি এর অভাবও দেখা দেয়। এ সব ক্ষেত্রে চিকিৎসা করাতে হবে।

শ্রোতাদের মধ্য‌ থেকে প্রশ্ন ওঠে, হরমোন থেরাপি বা এইচআরটি/ইআরটি থেরাপি থেকে অসুবিধা হতে পারে কি?

ডাঃ কালিদাস বক্সী : আসলে দু’টো হরমোন নিয়ে থেরাপি দেওয়া হয়। দেখতে হবে কাকে কোন ধরনের থেরাপি দিতে হবে। তার কারণ এর মধ্য‌ে একটা হরমোন থেকে ক্য‌ান্সার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। একটা বেছে নিয়ে করলে জীবনযাত্রার গুণমান বাড়ে। আমাদের মাদার অর্গানাইজেশন ফিগের বক্তব্য‌ হল, মেনপজের পর পাঁচ বছর এই ধরনের থেরাপি দেওয়া যেতে পারে। আমরা কয়েকটি ক্ষেত্রে লো ডোজে হরমোন দিতে পারি। দেখতে হবে অন্য‌ জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে কিনা। অনেক সময় নাড়ির ভিতরের দেওয়াল পুরু হয়ে যায়।

শ্রোতাদের বক্তব্য‌, তা হলে এই ধরনের চিকিৎসায় সাইড এফেক্ট থাকে বলছেন?

ডাঃ এইচপি পট্টনায়ক : সাইড এফেক্ট কোন চিকিৎসায় নেই? হরমোন থেরাপিতে ক্য‌ান্সারের সম্ভাবনা হল ৩০ হাজার মহিলা পিছু মাত্র ৮ জনের। আমেরিকায় এই বিষয়টা নিয়েই হইচই বেঁধে যায়। আপনি যদি চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করেন, হরমোন থেরাপি নিলে আমার ক্য‌ান্সার হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি? চিকিৎসক হ্য‌াঁ বলবেন। কিন্তু আপনাকে যখন বলা হবে ৩০ হাজারে মাত্র ৮ জনের সম্ভাবনা রয়েছে, তখন আপনি বলবেন আমিও তো ৮ জনের মধ্য‌ে পড়তে পারি। কিছু বলার নেই। এখন সেই কারণে অনেকে বিকল্প ফাইটো ইস্ট্রোজেন নিয়ে কাজ করছেন। এটা গাছপালার মধ্য‌েও পাওয়া যায়। সোয়াবিনের মধ্য‌ে ফাইটো ইস্ট্রোজেন প্রচুর থাকে। ডালেও থাকে। জাপানিরা প্রচুর সোয়া খান যে কারণে তাঁদের লাইফ এক্সপেনটেন্সি বেড়ে গিয়েছে বলা হয়। মনে রাখবেন ইস্ট্রোজেন কমে গেলে অ্য‌ালঝাইমারের মতো মারাত্মক রোগও হতে পারে। সেই জন্য‌ খাদ্য‌দ্রব্য‌ের ভিতর দিয়ে ফাইটো ইস্ট্রোজেন শরীরে প্রবেশ করাতে হয়। এ ছাড়া অ্য‌ান্টি অক্সিড্য‌ান্ট নেওয়ার মাধ্য‌মেও অনেক রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এতে ফ্রি রাডিকালগুলি শরীর থেকে বের করে দেওয়া সম্ভব হয়।

ডাঃ শক্তিরূপা চক্রবর্তী : আসলে আমরা যে ভূমিকাতেই থাকি আমাদের কাজ করে যেতে হবে। কাজের মধ্য‌ে ডুবে থাকলে শারীরবৃত্তীয় সমস্য‌া থেকে সহজে মুক্তি মেলে।

ডাঃ কালিদাস বক্সী : মনে রাখবেন মেনপজটা অসুখ নয়। এটা স্বাভাবিক শারীরিক ব্য‌াপার। এক বছর ঋতু না হলে বুঝতে হবে আপনার মেনপজ হয়েছে। আমাদের দেশে সচরাচর ৪৭.৫ বছর বয়স থেকে মহিলাদের মেনপোজ শুরু হয়।

শ্রোতাদের এক জন জিঞ্জাসা করেন, ব্রেস্ট ক্য‌ান্সার বোঝার কি কোনও উপায় আছে?

ডাঃ কালিদাস বক্সী : চারটি পরীক্ষার মাধ্য‌মে মহিলারা নিজেরাই নিজেদের ব্রেস্ট পরীক্ষা করতে পারেন। যে কোনও গাইনির কাছে গেলে তিনি পদ্ধতিগুলি দেখিয়ে দিতে পারবেন। দেখতে হবে ব্রেস্টের দু’দিকের মাপ সমান রয়েছে কিনা। অর্থাৎ দু’টি ব্রেস্টের মাপ এক রয়েছে কিনা। দ্বিতীয়ত, ব্রেস্টে কোনও ব্য‌থা অনুভব করছেন কিনা। তৃতীয়ত, সারফেস বা ভিতরে কোনও লাম্প রয়েছে কিনা। চতুর্থত দেখতে হবে নিপল ডিসচার্জে কোনও অস্বাভিকতা রয়েছে কিনা। নিজেরা পরীক্ষা করে অস্বাভাবিকতা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিন।

সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/25/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate