অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

পশ্চিমবঙ্গ নগর জীবিকা মিশন- পরিচিতি

যে কোন দেশের উন্নয়নের এক বড় স্তম্ভ সেই দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বিকাশ। তাই এ কথা বলাই যায় যে অর্থনৈতিক বিকাশ এবং নগরোন্নয়ন পরস্পর একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত। আমাদের দেশের সমস্ত শহর এই অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রধান স্তম্ভ বলা যেতে পারে। দেশের মোট জাতীয় উৎপাদনের ৬০ শতাংশের বেশি আসে এই শহরগুলি থেকে। ২০১১ - এর জনগণনা অনুযায়ী শহরগুলির মোট জনসংখ্যা ৩৭ কোটির বেশি, যা ২০০১ এর থেকে ৩১ শতাংশ বেশি। ২০০৭ সালের আগস্ট মাসে জাতীয় কমিশন, অসংগঠিত ক্ষেত্রে নিয়োজিত ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ওপর একটি রিপোট প্রকাশ করেন। সেই রিপোট অনুযায়ী ভারতে ২০০৪-২০০৫ এ সব ধরনের কমীর ৯০ শতাংশের বেশি অপ্রচলিত অর্থনীতির সাথে যুক্ত ছিল।

পরিচিত নিয়ম নীতির বাইরে অনেক পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকেন দারিদ্রের একটা বড় অংশ। আর এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির অনেকেই সমাজের সামাজিক সুরক্ষার আওতার বাইরে থাকেন এবং তারা নানা রকম সামাজিক সমস্যার সনুখীন হন প্রতিনিয়ত। অনেক ক্ষেত্রেই তাদের চিরকালের জন্য চলে যেতে বাধ্য করা হয়। উচ্ছেদ, অপসারণ, সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করণের মত সামাজিক সমস্যার শিকার হতে হয়। এমনকি যারা রোজগারের ভিত্তিতে দারিদ্র নয়, তারাও স্বাভাবিক জীবনযাপন থেকে বঞ্চিত হয়; সামাজিক বৈষম্য, বহিষ্কার, বাসস্থানের অনিশ্চয়তা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের শিকার হওয়ার মত নানারকম সমস্যার সনুখীন হয়। সুষ্ঠু সমাজ গঠনে তাদের ভূমিকা থাকে না বললেই চলে।

যার ফলে আমাদের দেশে দারিদ্রের মাত্রা অনুযায়ী মুলত তিন ধরণের দারিদ্র চোখে পড়ে।

  • (ক) বাসস্থানের সুরক্ষাহীনতা (বাসযোগ্য জমি, আশ্রয়, নূনতম পরিষেবা ইত্যাদির অভাব),
  • (খ) সামাজিক সুরক্ষাহীনতা (লিঙ্গ বৈষম্য, শ্রেনি বৈষম্য, মত প্রকাশের অপর্যাপ্ত স্বাধীনতা, সুষ্ঠু পরিচালনায় প্রবেশাধিকারের অভাব ইত্যাদি সামাজিক বৈষম্য) এবং
  • (গ) কমসংস্থানের সুরক্ষাহীনতা (অনিশ্চিত জীবিকা, কাজের সুযোগ ও রোজগারের জন্য অপ্রচলিত ক্ষেত্রে নির্ভরতা, কম সুরক্ষার অভাব, কাজের নিম্নমানের পরিবেশ ইত্যদি)।

এই সুরক্ষাহীনতাগুলি একে অপরের উপর নির্ভরশীল। যদি সত্যিই আমাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন করতেই হয় তাহলে এই সুরক্ষাহীনতার মাত্রানুসারে শহরের দরিদ্রদের মধ্যে যারা পিছিয়ে পড়া - তথা মহিলা, শিশু, প্রবীণ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, ভিন্ন ধারার সক্ষম ইত্যাদি শ্রেনির মানুষদের প্রতি সহায়তার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাওয়া দরকার।

জাতীয় শহর আবাসন ও বাসস্থান নীতি’, ২০০৭ - এর লক্ষ্য ছিল দেশে বাসস্থানের সুষ্ঠু উন্নয়ন ও সমাজের সব শ্রেনির জন্য ন্যায়সঙ্গত ভাবে জমি ও আশ্রয় সুনিশ্চত করা এবং ন্যায্য মূল্যে পরিষেবা প্রদান নিশ্চিত করা। এদের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপত্তাহীন হলেন সেই সব মানুষ যারা শহরের গৃহহীন এবং যাদের কোন সুনশ্চত আশ্রয় বা সামাজিক সুরক্ষা নেই। ভারতীয় সংবিধানের ২১ নং ধারায় সমস্ত মানুষের আশ্রয়ের অধিকারকে সুনিশ্চত করা রাষ্ট্রের একটি অন্যতম প্রধান দায়িত্ব বলা হয়েছে। সুপ্রীম কোর্টের বর্তমান নির্দেশ অনুযায়ী, “মর্যাদাপূর্ণ আশ্রয় - এর অধিকারকে সুনিশ্চিত করণ করতে বলা হয়েছে। আর সেই আদেশকে কার্যকরী করতে ভারত সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নীতি ও পরিকল্পনা ও কার্যক্রম প্রনয়ণ করেছেন। শহরের আশ্রয়হীনদের জন্য সুষ্ঠু নীতি ও কার্যক্রম প্রনয়ণ করা অত্যন্ত জরুরী।

আগেই বলা হয়েছে, আমাদের দেশে অনেক ধরণের দারিদ্র চোখে পড়ে। আর যারা দরিদ্র, তারা পিছিয়ে পড়া হিসাবে চিহ্নিত হন। এই সমস্ত দরিদ্র, পিছিয়ে পড়া অসহায় পরিবার প্রতিনিয়ত নানা রকম সামাজিক নিরাপত্তাহীনতার শিকার হন। সুরক্ষাহীন জীবন যাপন করেন তারা। তাই এই সমস্ত অসুরক্ষিত জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য তাদের পেশা, বাসস্থান, প্রতিদিনের চাহিদাগুলো সবদিক দিয়ে পূরণ করা সম্ভব হলে তবেই সমাজের সব স্তরে উন্নয়ন প্রতিফলিত হবে। ভারত সরকার-এর ‘অটল মিশন ফর আরবান রেজুভিনেশন এ্যন্ড ট্রান্সফরমেশন (আয়ুত)’, ‘হাউসিং ফর অল প্রকল্পের মাধ্যমে বাসস্থানগত সুরক্ষাহীনতা নিরসনের চেষ্টা চলছে। আর বাজার উপযোগী কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে শহরের মানুষের দক্ষতা বিকাশ ও স্ব-নিযুক্তির লক্ষ্যে তাদের সহায়তার মাধ্যমে পেশাগত এবং সামাজিক সুরক্ষাহীনতা নিরসনের উদ্দেশ্য পূরণ হতে পারে। শহরের দরিদ্র দুরিকরণ প্রকল্প দক্ষতা বৃদ্ধি ও সহজ ঋণ নির্ভর হওয়া দরকার। এই প্রসঙ্গে নির্দিষ্ট মিশনের মাধ্যমে শহরের জীবন ও জীবিকা উন্নয়নই পশ্চিমবঙ্গ নগর জীবিকা মিশন (ডাবলু বিএস ইউ এল এম) - এর প্রধান লক্ষ্য।

পশ্চিমবঙ্গ নগর জীবিকা মিশন এর নীতি, আদর্শ, লক্ষ্য ও পদ্ধতি

‘পশ্চিমবঙ্গ নগর জীবিকা মিশন’ – এর উদ্দেশ্য হল শহরের পিছিয়ে পড়া দরিদ্র পরিবারগুলোকে মুনাফা ভিত্তিক কাজের সঙ্গে যুক্ত করা। আর সেই কাজের / স্ব-নিযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করার উপযুক্ত হিসাবে গড়ে তুলতে তাদের দক্ষতা বাড়ানো এবং মজুরি ভিত্তিক কাজের উপযুক্ত হিসাবে গড়ে তোলা এই কার্যক্রমের উদ্দেশ্য। যার মাধ্যমে সেই সমস্ত পিছিয়ে পড়া, অসহায়, দারিদ্র পরিবারগুলোর সুরক্ষাহীনতা ও দারিদ্র হ্রাস করা যায়। আর যার ফল স্বরূপ সমাজের একেবারে নীচের স্তর পর্যন্ত এই সমস্ত দরিদ্র পরিবার তাদের নিজস্ব একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে সক্ষম হন এবং সেই সঙ্গে এইসব পরিবার গুলোর জীবিকার উল্লেখযোগ্য ও স্থায়ী উন্নতি ঘটে। শুধুমাত্র শহরের দরিদ্ররা যে এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত হবেন তা নয়। এই মিশনের আওতাভুক্ত হবেন সেই সমস্ত মানুষ যারা গৃহহীন, যাদের কোন নিরাপদ আশ্ৰয়স্থল নেই তাদেরও। তাদের জন্য ধাপে ধাপে নূণ্যতম পরিষেবা যুক্ত আশ্রয় প্রদান করা এই মিশনের আর একটি উল্লেখযোগ্য লক্ষ্য। এছাড়াও শহরাঞ্চলের ‘হকারদের (স্ট্রট ভেন্ডর) উপযুক্ত স্থান, প্রতিষ্ঠানিক ঋণ, সামাজিক সুরক্ষা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আধুনিক বাজার ব্যবস্থার সুযোগ গ্রহণে সক্ষম করে তোলাও এই মিশনের লক্ষ্য।

পথ নির্দেশক নীতি

২২ ‘পশ্চিমবঙ্গ নগর জীবিকা মিশন’- এর আর এক মূল উদ্দেশ্য হল আমাদের সমাজে দরিদ্র, অসহায়সহায় সম্বলহীন তথা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে স্ব উদ্যোগী হবার এবং নিজেদের দরিদ্রতা দূর করবার বা সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার ইচ্ছা তৈরি করা। আর সেটা করতে তাদের যোগ্যতা ও সামর্থের বিকাশ ঘটিয়ে একটি সামঞ্জস্য ও সুসংহত জীবিকার ক্ষেত্র তৈরি করা। সেই লক্ষ্যে পৌছনোর উদ্দেশ্যে এই মিশনের কয়েকটি পদক্ষেপ ঠিক করা হয়েছে। প্রথম পদক্ষেপ হল, শহরের দরিদ্রদের নিজেদের প্রতিষ্ঠান/সংগঠণ তৈরির জন্য উৎসাহ দেওয়া। দ্বিতীয় পদক্ষেপ হল, এই পিছিয়ে পড়া ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী এবং তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে উপযুক্ত সহায়তা প্রদান করা, যাতে তারা বাইরের পরিবেশ, দক্ষতা বৃদ্ধি, কমোদ্যোগ, সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারে। তৃতীয় পদক্ষেপ হল, আর এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য জাতীয় স্তর, রাজ্য স্তর, শহর স্তর এবং গোষ্ঠী স্তর পর্যন্ত নিরবিছিন্ন ও সংবেদনশীল সহযোগী ব্যবস্থাপনা তৈরি করা এবং সেই ব্যবস্থাপনা রূপায়ণের মাধ্যমে সামাজিক একতা, প্রতিষ্ঠান গঠণ এবং জীবিকার উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় উৎসাহ বাড়িয়ে তোলা দরকার।

‘পশ্চিমবঙ্গ নগর জীবিকা মিশন’- এই মতে বিশ্বাসী যে, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে জীবিকা উন্নয়ন কর্মসূচি তখনই সফল হতে পারে, যখন দরিদ্র মানুষেরা তাদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান নিজেদের মাধ্যমেই পরিচালিত করে। দরিদ্র মানুষদের নিজেদের এই মজবুত প্রতিষ্ঠানিক সংগঠণ তাদের মানসিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও অন্যান্য বিষয়ে শক্তিশালী করে তোলে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের সার্বজনীন ও ব্যক্তিগত অধিকার, পাওনা, সুযোগ, পরিষেবা আদায়ে উপযুক্ত করে আর এরই ফলস্বরূপ তার তাদের পারস্পরিক নির্ভরতা, দাবি ও প্রাপ্য আদায় করার ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।

ভারতীয় সংবিধান (৭৪তম সংশোধন) আইন, ১৯৯২ অনুযায়ী শহর দারিদ্র দূরীকরণ করা হল, স্থানীয় পৌরসভার বিধিবদ্ধ দায়িত্ব। সুতরাং নিজ-নিজ শহরে দারিদ্র দূরীকরণ, দক্ষতা বৃদ্ধি ও জীবিকা উন্নয়নের কর্মসূচির ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা গ্রহন করে, এই প্রকল্প রূপায়ণের সার্বিক দায়িত্ব স্থানীয় পৌরসভাকেই নিতে হবে।

পশ্চিমবঙ্গ নগর জীবিকা মিশন - এর লক্ষ্য হবে শহরের সমস্ত দরিদ্রদের বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা বাড়ানো এবং ঋণের সুযোগ করে দেওয়া। এই প্রকল্প সার্বিকভাবে শহরে বসবাসকারী দরিদ্রদের বর্তমান বাজার উপযোগী কাজের জন্য দক্ষতা বাড়ানোর উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, স্ব-নিযুক্তি ও ঋণের সুযোগের ব্যবস্থা করে দিতে সাহায্য করবে।

শহরের জনসংখ্যা পিরামিডের’-এর একদম তৃণমূল স্তরে বসবাস করেন হকাররা। এই হকাররা স্বনিযুক্তি ও স্ব-রোজগারের মাধ্যমে যাতে, সরকারি সাহায্য ছাড়াই নিজ নিজ দারিদ্র নিরসনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে সে ব্যাপারে উদ্দোগী হওয়া। এটি শহরের যোগান ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক বিকাশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। পশ্চিমবঙ্গ নগর জীবিকা মিশন প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে হকারদের জন্য উপযুক্ত স্থান চিহ্নিত করা ও স্থান নির্ধারণ করা এবং প্রতিষ্ঠানিক ঋণের ক্ষেত্রে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহন করা, সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতাভুক্ত করা এবং তাদের দক্ষতার বিকাশ ঘটিয়ে বর্তমান বাজারের সুযোগ গ্রহণে সহযোগিতা করা। একথা সত্যি যে শহরের সুসংহত যোগান ব্যবস্থা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক।

আমরা জানি, গৃহহীন মানুষেরা শহর দারিদ্রদের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বলতম । তারা কোন আশ্ৰয় বা সামাজিক সুরক্ষার আওতাভুক্ত হতে পারে না, কিন্তু তাদের সস্তা শ্রম শহরের উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে সাহায্য করে। রাস্তায় বা ফুটপাথে বসবাস করা এইসব আশ্রয়হীন মানুষেরা প্রতিনিয়ত নানা রকম নির্মম অত্যাচারের শিকার হন। এই সমস্ত প্রান্তিক দারিদ্র মানুষেরা প্রতিমুহুর্তে জীবনের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকেন বা থাকতে বাধ্য হন। তাই এদের সুঠু আশ্রয় ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য দরকার সুনির্দিষ্ট নীতি। এই প্রকল্প বিভিন্ন ধাপে সমস্ত শহরের সমস্ত গৃহহীন মানুষদের নূনতম পরিষেবাযুক্ত আশ্রয় পরিষেবা প্রদানের মাধ্যমে তাদের সুনিশ্চিত জীবন প্রদান করতে আগ্রহী। পশ্চিমবঙ্গ নগর জীবিকা মিশন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সাথে সমন্বয় সাধন করে চলবে। বিশেষ করে সেই সমস্ত দপ্তর যারা দক্ষতার বিকাশ ঘটিয়ে এবং জীবিকার উন্নয়ন ঘটিয়ে জীবনের মনোন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হবে। স্বাস্থ্য, শিক্ষাও যাতে সেই সব মানুষের কাছে সমানভাবে পৌছে যায় তার জন্য শিক্ষা দপ্তর ও স্বাস্থ্য দপ্তরের সাথেও সমন্বয় সাধন করবে। এই সমস্ত পিছিয়ে পড়া দুর্বল মানুষ যাতে সামাজিক সহায়তা ও বীমা পরিষেবার আওতাভুক্ত হয় তাও দেখা হবে। এক কথায় বলা যেতে পারে যে, এই প্রকল্প সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলির সাথে সমন্বয় সাধন করে গ্রাম ও শহরের মানুষের সার্বিক জীবিকা উন্নয়নে প্রধান ভূমিকা নেবে।

পশ্চিমবঙ্গ নগর জীবিকা মিশন এর লক্ষ্য, বেসরকারি উদ্যোগের সাথে যৌথভাবে দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, কর্মনিযুক্তির ব্যবস্থা করা ও গৃহহীনদের বাসস্থান নির্মাণ করা। এই প্রকল্প যৌথভাবে বিভিন্ন বেসরকারি উদ্যোগ ও সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শহরের গৃহহীনদের আশ্ৰয়স্থল নির্মাণ, দরিদ্রদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কর্মনিযুক্তির ব্যবস্থা করবে। এছাড়াও সম্মিলিত ভাবে প্রযুক্তিগত, উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাত করার প্রক্রিয়াও উদ্যোগ গ্রহনের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষদের স্ব-নিযুক্তি ও ছোট কারখানা বা লাভজনক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান তৈরি করার কাজ করবে।

আদর্শ

পশ্চিমবঙ্গ নগর জীবিকা মিশন - যে আদর্শগুলি গ্রহণ করেছে :

  • ক) শহরের সব কর্ম প্রক্রিয়ার মধ্যে দরিদ্রদের এবং তাদের প্রতিষ্ঠানের মালিকানা ভিত্তিক ও কার্যকরি অংশগ্রহণ সুনিশ্চিতকরণ।
  • খ) প্রতিষ্ঠান গঠণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কর্মসূচি পরিকল্পনা ও রূপায়ণে স্বচ্ছতা
  • গ) সরকারি ও সামাজিক কাৰ্যনির্বাহকদের দায়িত্বশীলতা বাড়ানো।
  • ঘ) শিল্পক্ষেত্র ও অন্যান্য সহযোগীদের যৌথ অংশিদারীত্ব।
  • ঙ) সামাজিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক বিশ্বাস, স্বনির্ভরতা, স্বনিযুক্তি ও পারস্পরিক সহযোগিতা।

পদ্ধতি

পশ্চিমবঙ্গ নগর জীবিকা মিশন প্রকল্পটি রূপায়নের জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতি গ্রহন করেছে:

  • ক) শহরের দরিদ্রদের এবং তাদের প্রতিষ্ঠানগুলির জীবিকা উন্নয়ন ও রূপায়ণের সামৰ্থ্য বাড়ানো এবং দরিদ্র দূরীকরণ কর্মসূচি সার্বিক ও কার্যকরি সহযোগিতা।
  • খ) শহরের দরিদ্রদের জীবিকার পথ ও বিকল্প আরো সুযোগের সম্ভাবনা বাড়ানো।
  • গ) ক্রমবর্ধমান শহুরে অর্থনীতি ও বর্তমান বাজারের উপযোগী কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতার বিকাশ করা।
  • ঘ) শহরের দরিদ্রদের ব্যক্তিগত ও গোষ্ঠীগত ভাবে ক্ষুদ্র ব্যবসা গঠনের জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও তা রূপায়ণে সাহায্য করা।
  • ঙ) শহরের গৃহহীন মানুষের জন্য জল সরবরাহ, শৌচালয়, সুরক্ষা ও নিরাপত্তার সুবিধা সহ ২৪ ঘন্টার স্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা।
  • চ) নির্ভরশীল শিশু, বৃদ্ধ অক্ষম, মানসিকভাবে অসুস্থ রুগ্ন ইত্যাদি অতি দুর্বল শ্রেণীর শহরের গৃহহীনদের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের জন্য স্থায়ী আশ্রয়ের বিশেষ ব্যবস্থা ও পরিষেবার ব্যবস্থা করা।
  • ছ) শহরের গৃহহীন মানুষদের অধিকার রক্ষায় বিভিন্ন প্রকল্পের সাথে সুষ্ঠু সংযোগ স্থাপন করা যাতে তারা খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ইত্যাদি পরিষেবার অধিকার ও সুরক্ষাজনিত পেনশন, রেশন, সুসংহত
  • শিশু উন্নয়ন, পানীয় জল, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, সঠিক পরিচয়পত্র, আর্থিক সহযোগিতা, স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা এবং কম টাকায় বাসস্থান ইত্যাদি নূনতম সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আসে।

  • জ) শহরের হকারদের জন্য উপযুক্ত জায়গা, প্রতিষ্ঠানিক ঋণ, সামাজিক সুরক্ষা ও প্রয়োজনীয় দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের বর্তমান বাজার অর্থনীতির সুযোগ গ্রহণে সহযোগিতা করা।

দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১১ সালের জনগণনা

পশ্চিমবঙ্গ নগর জীবিকা মিশন শহর ও উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর ভিত্তিতে যে সমস্ত শহরে ১ লক্ষের বেশি জনসংখ্যা আছে এবং যেগুলি জেলার সদর শহর সেইরকম ৫৮টি পৌরসভায় পশ্চিমবঙ্গ নগর জীবিকা মিশন প্রকল্প প্রথমপর্বে রূপায়িত হচ্ছে। বাকি ৬৭টি শহরও থেকে এই প্রকল্পের আওতায় এসেছে।

২০ ১৬-২০ ১৭ আর্থিক বর্ষ শহরের দারিদ্র পরিবার ও শহরের গৃহহীন নাগরিকরা পশ্চিমবঙ্গ নগর জীবিকা মিশন প্রকলে্পর প্রাথমিক উপভোক্তা শহরে বসবাসকারী দারিদ্র পরিবারগুলি সনাক্তকরণের জন্য আর্থ-সামাজিক কাষ্ট্রসেনসাস, ২০১১ এর কাজ শেষ হয়েছে। এই অবস্থায়, অন্তর্বতী ব্যবস্থা হিসাবে রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের চিহ্নিত শহরের বিপিএল তালিকাভুক্ত জনগোষ্ঠী এই প্রকল্পের আওতায় আসবে। এছাড়াও জনগোষ্ঠীর সর্বাধিক ৩০% পর্যন্ত, তফশিলী জাতি, তফশিলী উপজাতি, মহিলা, ইত্যাদি পিছিয়ে পড়া শহর নাগরিককে এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত করা যেতে সংখ্যালঘু প্রতিবন্ধ পারে।

সূত্র: পশ্চিমবঙ্গ মিউনিসিপাল অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট

সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate