অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

পঞ্চায়েত স্তরের বিভিন্ন সুরক্ষা প্রকল্প ও কর্মসূচি

পঞ্চায়েত স্তরের বিভিন্ন সুরক্ষা প্রকল্প ও কর্মসূচি

  1. খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্প
    1. পঞ্চায়েত স্তরে খাদ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা কেন
    2. গণ বণ্টন ব্যবস্থা
    3. অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা
    4. প্রশ্নোত্তরে
    5. অন্নপূর্ণা প্রকল্প
    6. প্রশ্নোত্তরে
    7. নানা খয়রাতি সাহায্য
    8. রেশন কার্ড পাওয়ার পদ্ধতি
    9. ডিলার নিয়োগ
    10. ডিলারের করণীয়, দায়িত্ব ও কর্তব্য
    11. ডিস্ট্রিবউটর নিয়োগ এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য
    12. পরিদর্শন ও তদারকি
    13. গণ বণ্টন ব্যবস্থার সমস্যা ও প্রতিকারে বিভিন্ন কমিটির ভূমিকা
    14. রাজ্য স্তরের তদারকি ও নজরদারি কমিটি
    15. জেলা ও মহকুমা স্তরের তদারকি ও নজরদারি কমিটি
    16. ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের তদারকি ও নজরদারি কমিটি
    17. খাদ্যশস্য সংগ্রহ
    18. ক্রেতা সুরক্ষা আইন
  2. সামাজিক সহায়তামূলক প্রকল্পসমূহ
    1. জাতীয় সামাজিক সহায়তা প্রকল্প
    2. পেনশন প্রকল্প
    3. বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সহায়তা
    4. ভবিষ্যনিধি প্রকল্প
    5. বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা
    6. আম আদমি বিমা যোজনা
  3. গৃহ সুরক্ষা
    1. তিন আবাস প্রকল্প
    2. ইন্দিরা আবাস যোজনা (আইএওয়াই)
    3. আমার ঠিকানা
    4. আমার বাড়ি/ গীতাঞ্জলী
  4. জনস্বাস্থ্য
    1. স্বাস্থ্যের অর্থ
    2. জনস্বাস্থ্য‌ সংক্রান্ত তথ্য‌
    3. গ্রামস্তরের স্বাস্থ্যব্য‌বস্থা
    4. বহুমুখী স্বাস্থ্য কর্মসূচি
    5. প্রজনন ও শিশু স্বাস্থ্য‌ কর্মসূচি
    6. জাতীয় টিকাকরণ কর্মসূচি
    7. জননী ও শিশু সুরক্ষা যোজনা
    8. রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য‌বিমা যোজনা
    9. ডায়েরিয়া ও যক্ষ্মা সংক্রান্ত কর্মসূচি
    10. এইডস ও কুষ্ঠ সংক্রান্ত কর্মসূচি
    11. ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি
    12. অন্ধত্ব নিবারণ ও আয়োডিনের অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ কর্মসূচি
  5. স্বাস্থ্যবিধান ও নির্মল ভারত অভিযান
    1. স্বাস্থ্যবিধান কর্মসূচিতে পঞ্চায়েতের ভূমিকা
    2. জলে আর্সেনিক দূষণ রোধে পঞ্চায়েতের ভূমিকা
    3. স্বাস্থ্য‌বিধান অভিযান
    4. নির্মল ভারত অভিযানের উদ্দেশ্য ও বৈশিষ্ট্য
    5. নির্মল ভারত অভিযানের অধীন ব্যবস্থা
  6. শিক্ষা সুরক্ষা
    1. শিশুসন্তানের জন্য শিক্ষা কর্মসূচি
    2. গ্রাম শিক্ষা কমিটি (ভিলেজ এডুকেশন কমিটি)
    3. মিড ডে মিল
    4. অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
  7. জীবিকা সুরক্ষা
    1. গ্রামীণ জীবিকার সমস্যা
    2. উপভোক্তাদের দায়িত্ব
    3. তাঁত বিষয়ক প্রকল্প
    4. মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান গ্য‌ারান্টি আইন ২০০৫
    5. কৃষি উন্নয়নমূলক কর্মসূচি
    6. মৎস্য‌চাষ বিষয়ক প্রকল্প
    7. পশুপালন বিষয়ক প্রকল্প
    8. ক্ষুদ্র শিল্প সুরক্ষা

খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্প

পঞ্চায়েত স্তরে খাদ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা কেন

মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সব চেয়ে প্রথমে দরকার ‘খাদ্য’। আজকের পৃথিবীতে আর পাঁচটা জিনিসের মতো খাদ্যও একটি ‘পণ্য’। তাই ভয়। তাই আশঙ্কা। আশঙ্কা এই যে, অর্থ যেখানে সেখানেই না তার একছত্র অবস্থা হয়ে যায়! খাদ্য কেবল-ই ধনীর ‘ধন’ যেন না হয়ে যায়! এই ভয়, এই আশঙ্কা যে মিথ্যে নয় তার প্রমাণ ইতিহাসে বার বার আছে। পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা যায় বার বার দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে মানুষ। কিন্তু যাদের টাকা ছিল তারা বাজারে টাকা নিয়ে গেলে খাদ্যের অভাব ঘটেনি। যাদের অতিরিক্ত অর্থের জোগান ছিল না খেতে পেয়ে মারা গিয়ে ছিল। কালোবাজারির অতিরিক্ত মুনাফার লালসার নিয়ন্ত্রণ করা হয়নি বা যায়নি। ফলে গরিবের না খেতে পাওয়া অনিবার্য হয়ে উঠেছিল।

চাল উত্পাদন

( মিলিয়ন টন )

১৯৩৮

৮ . ৪৭৮

১৯৩৯

৭ . ৯২২

১৯৪০

৮ . ২২৩

১৯৪১

৬ . ৭৬৮

১৯৪২

৯ . ২৯৬

১৯৪৩

৭ . ৬২৮

১৯৪৩ সালে বাংলায় (অবিভক্ত) যে ভয়ংকর দুর্ভিক্ষ (যা পঞ্চাশের মন্বন্তর নামে পরিচিত) দেখা দিয়েছিল তাতে কম বেশি ৩০ লাখ লোক মারা যায়। যারা মারা গেল তারা ছোট চাষি, ভাগচাষি, ক্ষেতমজুর, জেলে, ঠিকামজুর ইত্যাদি কম রোজগারের মানুষ। পরবর্তীকালে পঞ্চাশের মন্বন্তরের কারণ অনুসন্ধানে দেখা গেল বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী পরিস্থিতি, প্রশাসনিক ব্যর্থতা, যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতা, ইত্যাদি এই দুর্ভিক্ষের কারণ। উত্পাদনের ঘাটতির কথা বললেও তা মূল কারণ ছিল না। উপরের সারণি থেকেই তা বোঝা যাবে।

দুর্ভিক্ষ, অনাহার, অপুষ্টি, বেরোজগার ইত্যাদির সঙ্গে দীর্ঘ দীনের লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সব মঙ্গলকামী রাষ্ট্রকেই খাদ্য উত্পাদন ও সরবরাহ বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নিতে হয়েছে। আমাদের দেশ ভারতও সেই দায়িত্ব পালন করে চলেছে। স্বাধীনতার পরে পরেই পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে সেই প্রচেষ্টা নিরন্তর চলছে। ১৯৯২ সালের ৭৩ তম সংবিধান সংশোধনের মধ্য দিয়ে সারা ভারতবর্ষের সমস্ত রাজ্যয় পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সক্ষম ও শক্তিসালী পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ২৯টি বিষয়ে পরিকল্পনা, দেখভাল ও রূপায়ণ করার দায়িত্ব পঞ্চায়েতকে দেওয়া হল। পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত আইন ১৯৭৩-এর ১২৪ ধারা ও ১৭১ ধারাতে পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের মধ্যে খাদ্য ও সরবরাহ স্থায়ী সমিতিকে যুক্ত করা হয়।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

গণ বণ্টন ব্যবস্থা

আজকের পৃথিবীতে খাদ্য উত্পাদনের বৃদ্ধি জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে ছাড়িয়ে গেছে। মাথাপিছু গড়ে যে খাদ্য উত্পাদন হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি। যোগাযোগ ব্যবস্থাও যথেষ্ট শক্তিশালী, তার ফলে খাদ্যের আদান প্রদান ও আজ আর কোনও বাধা নয়। তা সত্ত্বেও অনাহার, অর্ধাহার, অপুষ্টি তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর নিত্য অভিজ্ঞতা। আমাদের দেশের ৫০% শিশু ও ৪০% নারী-পুরুষ অপুষ্টির শিকার।

তা হলে বলা যায় সুষ্ঠু বণ্টন না হওয়ার জন্যই এই অনাহার, অর্ধাহার, অপুষ্টি – যা গ্রাস করেছে গরিব মানুষের শ্রেণিকে। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হলে দরকার একটি দায়বদ্ধ ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার নাম গণ বণ্টন ব্যবস্থা। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মিলিত দায়িত্ব এই গণ বণ্টন ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করা। ১২০ কোটি মানুষের এই সুবিশাল দেশে প্রতিনিয়ত এই পরিষেবা দেওয়া অত্যন্ত কঠিন। এই কঠিন কাজ করা একমাত্র সম্ভব যদি সর্বস্তরের দায়িত্বশীল সহযোগিতা পাওয়া যায়। সেই কারণে এই ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে ত্রি-স্তরীয় পঞ্চায়েত ও পৌর সংস্থাগুলোকে। এই ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল অঙ্গ হল জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য ও সরবরাহ স্থায়ী সমিতি। আর এই দায়িত্বের কারণে এই স্থায়ী সমিতিগুলোর সুদক্ষ পরিচালনা অত্যন্ত জরুরি, যেখানে সভাধিপতি, সভাপতি ও দুই স্তরের কর্মাধ্যক্ষদের সুযোগ্য নেতৃত্ব একান্ত ভাবে দরকার।

গণবণ্টন ব্য‌বস্থার বহু পুরনো ইতিহাস রয়েছে। আমাদের দেশে স্বাধীনতার আগে এবং পরে বেশ কয়েকটি দুর্ভিক্ষ হয়। তাতে বহু মানুষ প্রাণ হারান। সরকারের তরফে প্রমাণ করার চেষ্টা হয় উৎপাদন কম হওয়ার ফলে দুর্ভিক্ষ হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীকালে অমর্ত্য‌ সেন প্রমুখের গবেষণায় প্রমাণিত হয় খাদ্য‌সামগ্রী বণ্টন ব্য‌বস্থা মুষ্টিমেয় ব্য‌ক্তির কুক্ষিগত হয়ে পড়ায় কৃত্রিম খাদ্য‌ সঙ্কট তৈরি হয়েছে। সরকারি বণ্টন ব্য‌বস্থা থাকলে একচেটিয়া ব্য‌বস্থার উপর হস্তক্ষেপ করা সম্ভব হত। এতে বহুলোকের প্রাণ বাঁচত।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা

উদ্দেশ্য ও

সুবিধা

  • দারিদ্রসীমার নীচে থাকা দরিদ্রতম পরিবারগুলোকে মাসে পরিবার পিছু ( সর্বোচ্চ ৫ জন পর্যন্ত ) ৩৫ কেজি খাদ্যশস্য দেওয়া।

  • খাদ্যশস্যের চালু মূল্য হল চাল ও গম প্রতি কেজি ২ টাকা।

  • পরিবারগুলোকে দেওয়া হয় বিশেষ ধরনের অন্ত্যোদয় রেশন কার্ড।

উপভোক্তা

বাছাই পদ্ধতি

  • বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারগুলোর মধ্যে দরিদ্রতম পরিবারগুলো অগ্রাধিকার পাবে।

  • পরিবারের প্রধান যদি বিধবা, অসুস্থ বা অক্ষম, অক্ষম কোনও একক মানুষ, যাঁর বয়স ৬০ বা তার বেশি এবং যদি কোনও সামাজিক সুনিশ্চিত আয়ের বা জীবিকানির্বাহের ব্যবস্থা না থাকে বা কোনও সামাজিক সহায়তা না পেয়ে থাকেন,তবে সেই পরিবারকে এই যোজনার আওতায় আনা যেতে পারে।

  • আদিবাসী ও জনজাতি ভুক্ত পরিবারগুলো এই যোজনার সুযোগ পাবেন।

তালিকা

অনুমোদন

উপভোক্তা বাছাই - এর নীতি মেনে প্রস্তুত গ্রাম পঞ্চায়েতভিত্তিক তালিকা ব্লকে একত্রিত করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জেলা শাসকের দফতরে পাঠাতে হবে। দারিদ্রসীমার বাইরে বসবাসকারী অতিরিক্ত পরিবার থাকলে, সে ক্ষেত্রে গ্রাম সংসদ সভার সুপারিশ - সহ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরকে অবহিত করতে হবে।

তদারকি

শপ লেভেল মনিটরিং কমিট, ব্লক লেভেল মনিটরিং কমিটি তদারকি করবেন।

অভিযোগ

উপভোক্তার যদি কোনও অভিযোগ থাকে তবে তা গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লক ইনস্পেক্টর (খাদ্য ও সরবরাহ), পঞ্চায়েত সমিতি বা বিডিও- র কাছে জানাতে পারেন।

টোল ফ্রি নং – ১৮০০৩৪৫৫৫০৫ তে সরাসরি অভিযোগ করা যাবে।

প্রশ্নোত্তরে

কারা এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে পারেন?

উত্তরঃ যে সকল পরিবারের গ্রামীণ পারিবারিক সমীক্ষায় মোট প্রাপ্ত নম্বর ২৮-এর কম।

এই প্রকল্প থেকে কী সুবিধা পাওয়া যায়?

উঃ পরিবারের সদস্য‌ সংখ্য‌া অনুযায়ী চাল, গম ও চিনি পাওয়া যাবে (চালের দাম ২টাকা/কেজি, গম ২ টাকা/কেজি)

রেশন কার্ডে মাসে সর্বাধিক ৩৫ কেজি চাল/গম বরাদ্দ (যদি পরিবারে পাঁচ জন প্রাপ্তবয়স্ক সদস্য‌ থাকে তবে মাথাপিছু সাত কেজি করে চাল দেওয়া হয়, পরিবারের সদস্য‌সংখ্য‌া যদি পাঁচের বেশি হয় তা হলে ৩৫ কেজির বেশি চাল দেওয়া হবে না।)

এই প্রকল্পে পঞ্চায়েত ভিত্তিক কোটা নির্দিষ্ট করা আছে।

অন্নপূর্ণা প্রকল্প

উদ্দেশ্য

  • দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করেন এবং বয়স ৬৫ - এর বেশি, জাতীয় সামাজিক সহায়তা প্রকল্পে পেনশন পাওয়ার যোগ্য কিন্তু কোনও কারণে পেনশন প্রাপকের তালিকায় যুক্ত করা যায়নি, সেই সব নাগরিকদের এই প্রকল্পে আনা হয়।

বৈশিষ্ট্য ও

সুবিধা

  • দারিদ্রসীমার নীচে থাকা ৬৫ বছরের বশি বয়স্ক মানুষদের সনাক্ত করা।

  • ব্যক্তি পিছু ১০ কেজি খাদ্যশস্য বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয় ডিলারের মাধ্যমে।

  • খাদ্যশস্যের জন্য কোনও মূল্য নেওয়া যাবে না।

  • উপভোক্তাকে দেওয়া হয় বিশেষ ধরনের ‘অন্নপূর্ণা’ রেশন কার্ড।

উপভোক্তা

বাছাই এর

পদ্ধতি

  • সাধারণত রাজ্য ও জেলাস্তর থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতভিত্তিক উপভোক্তা সংখ্যা ঠিক করে দেওয়া হয়।
  • প্রাথমিক ভাবে গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজ হল শর্ত অনুযায়ী একটি তালিকা প্রস্তুত করে তা গ্রাম সংসদ সভায় পেশ করা। গ্রাম সংসদ সভা থেকে যে তালিকা অনুমোদিত হবে তা একত্রিত করে পঞ্চায়েতভিত্তিক তালিকা সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের কাছে পাঠাতে হবে।
  • সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সকল গ্রাম পঞ্চায়েতের তালিকা একত্রিত করে জেলাশাসকের কাছে পাঠাবেন।
  • সারা জেলার তালিকা জেলাশাসক পাঠান জেলা খাদ্য নিয়ামকের দফতরে।
  • জেলা খাদ্য নিয়ামক ওই তালিকা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এম আর ডিলারের কাছে খাদ্যসামগ্রী বরাদ্দের ব্যবস্থা করেন এবং ব্লক খাদ্য পরিদর্শকের মাধ্যমে চিহ্নিত উপভোক্তাদের কাছে বিশেষ অন্নপূর্ণা রেশন কার্ড বিলির ব্যবস্থা করবেন।

তদারকি

শপ লেভেল মনিটরিং কমিট, ব্লক লেভেল মনিটরিং কমিটি তদারকি করবেন।

অভিযোগ

উপভোক্তার যদি কোন অভিযোগ থাকে তবে তা গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লক ইনস্পেক্টর (খাদ্য ও সরবরাহ), পঞ্চায়েত সমিতি বা বিডিও - র কাছে জানাতে পারেন।

টোল ফ্রিন নং – ১৮০০৩৪৫৫৫০৫ - তে সরাসরি অভিযোগ করা যাবে।

প্রশ্নোত্তরে

এটি পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের জাতীয় সামাজিক সহায়তা কর্মসূচির অন্তর্গত একটি প্রকল্প। রূপায়ণকারী দফতর হল খাদ্য‌ দফতর।

এই প্রকল্পের সাহায্য‌ কারা পেতে পারেন?

উঃ-দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী পরিবারগুলির মধ্য‌ে ৬৫ বছরের বেশি বয়সের সহায় সম্বলহীন বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা, যাঁরা বার্ধক্য‌ভাতা পাওয়ার যোগ্য‌ কিন্তু পাচ্ছেন না।

এই প্রকল্প থেকে বাড়তি কী সুবিধা পাওয়া যায়?

বিনামূল্য‌ে প্রতি মাসে ১০ কেজি খাদ্য‌শস্য (চাল বা গম) পাওয়া যায়।

নতুন করে অন্নপূর্ণা যোজনার উপভোক্তা নির্বাচন করা যাবে?

উঃ-না। আদেশনামা অনুযায়ী বর্তমানে যাঁরা জাতীয় বার্ধক্য‌ভাতা পাচ্ছেন তাঁদের নাম এই তালিকা থেকে বাদ যাবে। লক্ষ্য‌ হল প্রতিটি যোগ্য‌ ব্য‌ক্তিকে বার্ধক্য‌ভাতা প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা। গ্রাম পঞ্চায়েতের যে কোটাটি আছে তা এক সময়ে শেষ হয়ে যাবে অর্থাৎ সবাই বার্ধক্য‌ভাতার আওতাভুক্ত হয়ে গেলে এই প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাবে।

এই প্রকল্পে কি কোনও নির্দিষ্ট সংখ্য‌া বা কোটা আছে?

উঃ হ্য‌াঁ। জেলাভিত্তিক নির্দিষ্ট কোটা থাকে। জেলা থেকে ব্লক এবং গ্রাম পঞ্চায়েতভিত্তিক কোটা নির্দিষ্ট করা আছে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

নানা খয়রাতি সাহায্য

ভারতের সংবিধানের নির্দেশাত্মক নীতিতে রাষ্ট্রকে নানা ধরনের কল্য‌াণমূলক কাজ করার জন্য‌ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনুচ্ছেদ ৪১ অনুযায়ী কাজ করতে অক্ষম, বয়স্ক ব্য‌ক্তি, অসুস্থ এবং প্রতিবন্ধী ব্য‌ক্তিদের রাষ্ট্র সহায়তা প্রদান করবে। এ ছাড়াও বিধবা মহিলাদের বা হঠাৎ কোনও পরিবারের কর্তার মৃত্য‌ু হয়ে আয় বন্ধ হয়ে গেলে সহায়তা দরকার হয়।

স্বাভাবিক ভাবেই এই সহায়তা পাবে বিপিএলভুক্ত পরিবার।

সকলেই জানেন বিপিএল তালিকায় থাকা উচিত নয় এমন পরিবারের নাম আছে এবং থাকা উচিত ছিল এমন অনেক পরিবারের নাম বাদ গিয়েছে। এই তালিকাকে সঠিক করার দায়িত্ব সরকারি কর্মচারীর, জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ প্রত্য‌েকের। এটি সঠিক না হলে অনেক চরম অসহায় পরিবার সরকারের সাহায্য‌ থেকে বঞ্চিত হন। অনেক পরিবারের সহায়তার প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও ভুল ভাবে অন্য‌ায় ভাবে সাহায্য‌ পান। যাঁদের নাম থাকা উচিত নয় তাঁদের নিজেদেরই এগিয়ে এসে নাম বাদ দেওয়ার জন্য‌ আবেদন করা উচিত।

জি.আর (খয়রাতি সাহায্য)

যাঁর কোনও সক্ষম আত্মীয় নেই সহায়তা করার জন্য‌ তাঁকে- ১) জরদগব ও পাগল ২) প্রতিবন্ধী ৩) অন্ধ ৪) শারীরিক অক্ষমতার কারণে উপার্জন করতে পারে না ৬)উচ্চবংশীয় মহিলা যাঁর খাদ্য‌াভাব কিন্তু জনসমক্ষে যেতে পারেন না বা চাইতে পারেন না বা কাজ করতে পারেন না ৭) যে কাজ করতে পারে না বা কাজ দেওয়া যায় না।

চাল ১২ কেজি। শিশুদের অর্ধেক। এককালীন।

প্রাপকদের একটি তালিকা তৈরি করে গ্রাম পঞ্চায়েত;নারী শিশু জনকল্য‌াণ স্থায়ী সমিতি অনুমোদন করে; চাল নির্দিষ্ট ডিলারের মাধ্য‌মে বিলি করা হয়।

স্পেশাল জি আর (বিশেষ খয়রাতি সাহায্য)

কুষ্ঠ বা এইডস বা যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্য‌ক্তিদের বা বন্য‌ায় আক্রান্ত ব্য‌ক্তিদের বা ঘর পুড়ে গেলে বা যে কোনও বিপদে ১২ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। বিডিও-র কাছে আবেদন করলে পাওয়া যায়।

ক্য‌াশ জি আর (নগদ খয়রাতি সাহায্য)

ভীষণ বিপদে পড়লে এককালীন ৬০ টাকা পাওয়া যায়। বিডিও বা এসডিও-র কাছে আবেদন করতে হয়।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

রেশন কার্ড পাওয়ার পদ্ধতি

গণ বণ্টন ব্যবস্থার সুফল পেতে গেলে সব চেয়ে প্রয়োজনীয় নথিটির নাম — সংভরণ পত্র বা ‘রেশন কার্ড’। পশ্চিমবঙ্গ গণ বণ্টন ব্যবস্থা (রক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ) আদেশ ২০০৩-এর অনুচ্ছেদ ৩ থেকে অনুচ্ছেদ ১৩ এবং খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগের ৭৮ এফ এস তাং ০৫/০১/২০০৭ আদেশনামাতে রেশন কার্ড কী ভাবে, কী পদ্ধতিতে দেওয়া হবে তা সবিস্তার বলা হয়েছে। এখানে সেই আদেশনামার প্রেক্ষিতে কী ভাবে, কী পদ্ধতিতে রেশন কার্ড দেওয়া হয় বা পাওয়া যায় তা সংক্ষেপে দেওয়া হল :

নতুন রেশন কার্ড

কে পাবেন

ভারতীয় সকল নাগরিক যাঁদের রেশন কার্ড নেই তাঁরা পাবেন।

কী ভাবে পাওয়া যাবে

রাজ্য সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের অধিকারপ্রাপ্ত আধিকারিকের কাছে লিখিত নির্দিষ্ট আর – ১ / আর ও - ১ নিদর্শে আবেদনের মাধ্যমে। বিনামূল্যে এই আবেদনপত্র ব্লক খাদ্য ও সরবরাহ পরিদর্শকের কার্যালয়ে পাওয়া যাবে।

আবেদনপত্রের সাথে কী কী নথি দিতে হবে

সাধারণ ভাবে চার প্রকারের নথি জমা দিতে হবে :

১) বাসস্থানের প্রমাণ ২) বয়সের প্রমাণ, ৩) নাগরিকত্বের প্রমাণ, ৪)রেশন কার্ড থাকা না থাকা সম্পর্কিত প্রমাণ।

বাসস্থানের প্রমাণ স্বরূপ গ্রহণযোগ্য নথি

কোনও পরিবারের সমস্ত সদস্যের রেশন কার্ডের প্রয়োজন থাকলে আবেদনকারীকে পঞ্চায়েত ট্যাক্স / বাড়ি ভাড়া রসিদ / বিদ্যুৎ বিল / টেলিফোন বিল, যে কোনও একটির প্রতিলিপি জমা দিতে হবে।

বয়সের প্রমাণে গ্রহণযোগ্য নথি

জন্ম নিবন্ধীকরণ শংসাপত্র / সরকার অনুমোদিত বিদ্যালয়ের দেওয়া বয়স সংক্রান্ত শংসাপত্র গ্রহ্য হবে।

রেশন কার্ড থাকা না থাকা সম্পর্কিত প্রমাণ

পূর্ববর্তী বাসস্থানের কোনও রেশন কার্ড থেকে থাকলে, খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ স্বাক্ষরিত রেশন কার্ড সমর্পণ সংক্রান্ত শংসাপত্র দাখিল করতে হবে।

যদি ওই ব্যক্তর কখনও কোনও রেশন কার্ড না থাকে তবে তাঁর পূর্ববর্তী বাসস্থান যেখানে ছিল , সেখানকার স্থানীয় নির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রতিনিধির দেওয়া শংসাপত্র প্রয়োজন। এই শংসাপত্রে থাকবে ব্যক্তির নাম, ঠিকানা, জাতিগত পরিচয়, ওই স্থানে তাঁর অবস্থিতিকাল এবং রেশন কার্ড না থাকার কারণ। বর্তমান বাসস্থানের ঠিকানার জন্যও ওই রূপ শংসাপত্র দাখিল করতে হবে।

নাগরিকত্বের প্রমাণ

সাধারণ ভাবে আবেদনকারীর বা তাঁর বাবা / মা / পিতামহ /পিতামহীর সচিত্র নির্বাচনী পরিচয়পত্র (ভোটার কার্ড) ভারতীয় নাগরিকত্বের পরিচায়ক।

এমন পরিচয়পত্র না থাকলে সংশ্লিষ্ট ভোটার তালিকা সমেত আবেদনকারীর পরিচয় বহনকারী কোনও নথি যেমন — ড্রাইভিং লাইসেন্স / এল আই সি বা মেডিক্লেম পলিসি / পেনসন নথি / প্রতিবন্ধী হওয়া সংক্রান্ত শংসাপত্র ইত্যাদি নথি নাগরিকত্ব যাচাইয়ের জন্য দাখিল করা যেতে পারে।

নাম / পদবি / পরিবারের প্রধান / বয়স ইত্যাদি পরিবর্তন বা সংশোধনের উপায়

  • এই সব ক্ষেত্রে ২ নং ফর্মে আবেদন করতে হবে।

  • এই ফর্মের নমুনা ১ নং ফর্মের মতো নির্দিষ্ট কার্যালয় থেকে পাওয়া যাবে। এই ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হবে স্থানীয় খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের পরিদর্শকের কাছে।

  • আবেদনকারী যে পরিবর্তন বা সংশোধন চান তার উপযুক্ত প্রমাণস্বরূপ নথি অবশ্যই জমা দিতে হবে।

কার্ড নষ্ট হয়ে গেলে / হারিয়ে গেলে নতুন কার্ড পাওয়ার পদ্ধতি

  • নতুন ‘ডুপ্লিকেট’ কার্ড পাওয়া যাবে।
  • এ ক্ষেত্রে ৩ নং ফর্মে আবেদন করতে হবে।
  • হারিয়ে যাওয়া কার্ডের ক্ষেত্রে স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি করে, সেই নম্বর উল্লেখ করে আবেদন করতে হবে এবং শেষ কবে রেশন থেকে মালপত্র নেওয়া হয়েছে, সেই মর্মে একটি শংসাপত্র সংগ্রহ করে আবেদন পত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
  • নষ্ট হয়ে যাওয়া কার্ডের ক্ষেত্রে, শেষ কবে রেশন থেকে মালপত্র নেওয়া হয়েছে সেই রসিদ বা ক্যাশ মেমো দিয়ে আবেদন করতে হবে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

ডিলার নিয়োগ

খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের সব প্রত্যক্ষ পরিষেবা নাগরিকদের পৌঁছে দেওয়া হয় এম আর ডিলারের মাধ্যমে। আর এম আর ডিলারদের ‘ন্যায্য মূল্যের দোকান’ (ফেয়ার প্রাইস সপ) অর্থাৎ ‘রেশন’ দোকানে মাল পৌঁছয় এম আর ডিস্ট্রিবউটারের মাধ্যমে।

অত্যাবশকীয় পণ্য আইন ১৯৫৫-এর ৩ নং ধারা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগীয় ২০০৩ সালে ‘পশ্চিমবঙ্গ গণ বণ্টন ব্যবস্থা (রক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ) আদেশ -২০০৩’ জারি ও চালু করে। খাদ্য দফতরের এই আদেশকে সাধারণ ভাবে ‘কন্ট্রোল অর্ডার – ২০০৩’ বলা হয়। এই আদেশ অনুযায়ী সাধারণ ভাবে গণ বণ্টন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত হয়।

ডিলার এর নিয়োগ পদ্ধতি

এম আর ডিলার (মডিফায়েড রেশন ডিলার) দু’ ধরনের। সাধারণ এম আর ডিলার এবং এম আর ডিলার (কেরোসিন)। দু’ ধরনেরডিলারের নিয়োগ পদ্ধতি একই। প্রশ্নোত্তরে বিষয়টি দেওয়া হল।

বিষয় বা প্রশ্ন

নিয়ম বা পদ্ধতি

ন্যায্য মূল্যের দোকান / রেশন দোকান বলতে কি বুঝি ?

যে দোকান সরকারের লাইসেন্স প্রাপ্ত এবং সরকারের দেওয়া রেশন কার্ড / রেশন পারমিট প্রাপকদের মধ্যে সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বন্টন করতে বাধ্য থাকে সেই দোকানকেই ন্যায্য মূল্যের দোকান বা রেশন দোকান বলা হবে। দোকানের মালিককে ডিলার বলা হয়।

কখন ডিলার নিয়োগ হয়?

কোনও ডিলারের পদত্যাগ বা মৃত্যুজনিত কারণে শূন্যতা তৈরি হলে সেখানে ডিলার নিয়োগ করা হয়।

কে ডিলার নিয়োগ করতে পারেন?

রাজ্য সরকারের অনুমোদন ক্রমে অধিকর্তা – জেলা বণ্টন, সংগ্রহ ও সরবরাহ বা অধিকর্তা দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনও আধিকারিক ডিলার নিয়োগ করতে পারেন।

নিয়োগকর্তা কে?

উভয় ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা হলেন অধিকর্তা জেলা বণ্টন, সংগ্রহ ও সরবরাহ বা অধিকর্তা দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনও আধিকারিক।

কে আবেদন করতে পারবেন?

পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী যে কোনও ভারতীয় নাগরিক আবেদন করতে পারেন। নির্ধারিত ফর্ম - A তে আবেদন করতে হয়।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

ডিলারের করণীয়, দায়িত্ব ও কর্তব্য

বিষয় বা প্রশ্ন

নিয়ম বা পদ্ধতি

ডিলারের মূল করণীয়

ডিলারের মূল দায়িত্বগুলো হল —

  • সময়মতো মালের চাহিদা পত্র (ইনডেন্ট) খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগের পরিদর্শকের কাছে আর -১ নিদর্শে পাঠানো।
  • যে সব পণ্য দেওয়া হয় তা ডিস্ট্রিবিউটরের কাছ থেকে সংগ্রহ করা।
  • রেশন কার্ড গ্রাহকদের মধ্যে দফতরের দেওয়া পণ্য বিতরণ করা।

রেশন কার্ড গ্রাহকদের মধ্যে পণ্য বিতরণ করার নিয়ম

প্রত্যেক ডিলার সপ্তাহে মঙ্গল থেকে রবিবার সকাল ৭ . ৩০ মি থেকে ১১ . ৩০ মি পর্যন্ত এবং সপ্তাহে মঙ্গল থেকে শনিবার বিকাল ৪ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখবেন এবং এই সময়ের মধ্যে সমস্ত রেশন কার্ড গ্রাহকদের রেশন দিতে হবে। ১ম সপ্তাহের মাল দ্বিতীয় সপ্তাহে এবং তৃতীয় সপ্তাহের মাল চতুর্থ সপ্তাহে গ্রাহকরা সংগ্রহ করতে পারবেন।

ডিলারের অবশ্য পালনীয় দায়িত্বগুলো

ডিলারের অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব হল —

  • ডিস্ট্রিবউটারের কাছ থেকে সঠিক গুণগত মান অনুযায়ী মাল বুঝে নেওয়া।
  • ডিলার নির্ধারিত মূল্যে মাল বিক্রি করবেন এবং অতি অবশ্যই ক্যাশ মেমো দেবেন।
  • হিসাবপত্তর ঠিক রাখার জন্য সমস্ত নথি যথা রেশন কার্ড রেজিস্টার, স্টক রেজিস্টার, দৈনিক বিক্রয় রেজিস্টার ইত্যাদি যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। খাদ্য দফতরের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের এস সি এফ এস) অনুমোদিত ব্যক্তিদের পরিদর্শনের সময়ে ওই সব নথি দেখাবেন।
  • প্রতি দিন দোকানের সামনে নোটিশ বোর্ড ঝোলাবেন, যাতে নীচের তথ্যগুলি থাকবে :
  • বি পি এল, অন্ত্যোদয় উপভোক্তাদের নামের তালিকা
  • কার্ড পিছু বরাদ্দের পরিমাণ
  • বিভিন্ন জিনিসের দাম
  • দোকান খোলা ও বন্ধের সময়
  • সেই মাসে বিভিন্ন জিনিস কত পাওয়া গেছে তার হিসাব
  • সেই দিনের মজুত দ্রব্যের পরিমাণ
  • পণ্যের গুণগত মান, পরিমাণ ইত্যাদি বিষয়ে কোথায় অভিযোগ করা যাবে তার বিশদ বিবরণ
  • প্রত্যেক ডিলারকে ফর্ম আর -১-এর সঙ্গে পরবর্তী চাহিদা পত্র (ইনডেন্ট)জমা দিতে হবে। আর সাপ্তাহিক রিটার্ন-এর সঙ্গে মাসে একবার নথিভুক্ত রেশন কার্ড গ্রাহকের তালিকা পরিদর্শকের নিকট জমা দিতে হবে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

ডিস্ট্রিবউটর নিয়োগ এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য

ডিস্ট্রিবউটর নিয়োগ

বিষয় বা প্রশ্ন

নিয়ম বা পদ্ধতি

ডিস্ট্রিবিউটর কে বা কারা?

ডিস্ট্রিবউটর বলতে সেই ব্যক্তিকে বোঝাবে যাঁর নামে রাজ্য সরকার গণ বণ্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রদেয় পণ্য ডিলারদের বণ্টন করার লাইসেন্স (অনুজ্ঞাপত্র) প্রদান করেছেন।

কখন ডিস্ট্রিবউটর নিয়োগ হয় ?

পদত্যাগ বা মৃত্যুজনিত কারণে শূন্যতা তৈরি হলে সেখানে ডিস্ট্রিবউটর নিয়োগ করা হয়। পদত্যাগ বা মৃত্যুজনিত কারণে শূন্যতা তৈরি ছাড়াও কোথাও প্রয়োজন থাকলে বা প্রয়োজন আছে বিবেচিত হলে সেখানেও নিয়োগ হতে পারে।

ডিস্ট্রিবউটার কে নিয়োগ করতে পারেন ?

রাজ্য সরকারের অনুমোদন ক্রমে অধিকর্তা — জেলা বণ্টন , সংগ্রহ ও সরবরাহ বা অধিকর্তা দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনও আধিকারিক ডিস্ট্রিবউটর নিয়োগ করতে পারেন।

ডিস্ট্রিবউটরের করণীয়, দায়িত্ব ও কর্তব্য

বিষয় বা প্রশ্ন

নিয়ম বা পদ্ধতি

একজন ডিস্ট্রিবউটারের মূল করণীয়

ডিস্ট্রিবউটরের মূল দায়িত্ব গুলো হল —

  • সময়মতো মালের চাহিদা পত্র (ইনডেন্ট) খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগের মহকুমা নিয়ামকের কাছে আর - ১ নিদর্শে পাঠানো। পাঠানো।
  • গণ বণ্টন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যে সব পণ্য দেওয়া হয় তা নির্দিষ্ট খাদ্য ভাণ্ডার থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে সংগ্রহ করা।
  • আওতাধীন ডিলারদের মধ্যে দফতরের দেওয়া পণ্য বিতরণ করা।

ডিলারদের মধ্যে পণ্য বিতরণ করার নিয়ম কী ?

প্রত্যেক ডিলারকে যে বরাদ্দ আদেশ উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ দেবেন সেই আদেশ দেখালে সেই অনুযায়ী তিনি মাল পাবেন ডিস্ট্রিবিউটরের কাছ থেকে। বর্তমানে ডিলারের দোকান পর্যন্ত মাল পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ডিস্ট্রিবউটরের।

এক জন ডিস্ট্রিবউটরের অবশ্য পালনীয় দায়িত্বগুলো কী ?

ডিস্ট্রিবউটরের অবশ্য পালনীয় দায়িত্বগুলো হল —

  • খাদ্য ভাণ্ডার থেকে সঠিক গুণগন মান অনুযায়ী মাল বুঝে নেওয়া।

  • পর্যাপ্ত পরিমাণে মাল সংগ্রহ ও মজুত রাখা।

  • নির্ধারিত মুল্যে মাল বিক্রি করা এবং অবশ্য ক্যাশ মেমো দেবেন। প্রতি দিন ডিস্ট্রিবউটর তাঁর মজুত ভাণ্ডারের সামনে নোটিশ বোর্ড ঝোলাবেন , যাতে নীচের তথ্যগুলো থাকবে :
  • বিভিন্ন জিনিসের দাম
  • সেই দিনের মজুত দ্রব্যের পরিমাণ

প্রত্যেক ডিস্ট্রিবিউটরকে সমস্ত পণ্য স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে মজুত রাখতে হবে এবং পচন প্রতিরোধক ব্যবস্থা রাখতে হবে, যাতে গুণগত মান বজায় থাকে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

পরিদর্শন ও তদারকি

বিষয় বা প্রশ্ন

নিয়ম বা পদ্ধতি

ডিস্ট্রিবিউটারের গোডাউন পরিদর্শন ও তদারকি কে করতে পারেন?

ন্যূনতম খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের পরিদর্শক পদমর্যাদার আধিকারিক যিনি এসসিএফএস দ্বারা প্রাধিকৃত(অথরাইজড) হয়েছন, ডিসিএফএস, আঞ্চলিক উপ অধিকর্তা প্রমুখ অঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত রেশন দোকানগুলো পরিদর্শন করতে পারেন।

কী কী বিষয় পরিদর্শন বা তদারকি করা যাবে?

ডিস্ট্রিবিউটরের দকান / অফিস / গোডাউন, মজুত - ঘর, মজুত - পণ্য, সমস্ত ধরনের খাতা - পত্তর, রেজিস্টার, ওজনের যন্ত্রপাতি - সহ পি ডি এস ব্যবস্থার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক সমস্ত কিছু দেখতে পারেন।

পরিদর্শন কালে ত্রুটি থাকলে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় ?

অসঙ্গতি আছে এবং তার সত্যতা যাচাই করা দরকার আছে এমন করলে পরিদর্শন আধিকারিক খাতাপত্র, যন্ত্রপাতি বাজেয়াপ্ত করতে পারেন। এই বাজেয়াপ্ত করার বিষয়টি পরিদর্শন আধিকারিক ফৌজদারি কার্যবিধির ১০০ ধারা অনুযায়ী করবেন। এ ছাড়া ১৯৫৫ - এর অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনের ৭ (১), ৭ (২)অনুযায়ী দোষীর বিরুদ্ধে ডিসিএফএস বা মহকুমা খাদ্য ও সরবরাহ নিয়ামক বা ঊর্ধ্বতন আধিকারিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারেন।

পঞ্চায়েত স্তরে কোন পর্যায়ে পরিদর্শন করা প্রয়োজন?

পঞ্চায়েত স্তরে আগে কোনও পরিদর্শনই হত না। পরে দুর্নীতি সংক্রান্ত নানা খবর প্রকাশ হয়ে পড়ায় পরিদর্শন ব্য‌বস্থা চালু হয়। কম্পট্রোলার আন্ড অডিটর জেনারেলকে দিয়ে একেবারে গ্রাম পঞ্চায়েত পর্যায়ে অডিট করার প্রথা এখন প্রচলিত আছে।এর ফলে পঞ্চায়েতের কার্যপ্রণালীরও ব্য‌াপক উন্নতি হয়েছে। দুর্নীতিমু্ত প্রশাসন গড়ার ক্ষেত্রে পরিদর্শন ও তদারকি বিশেষ ভূমিকা রাখে।

তদারকির অধিকার কি সংবিধানসম্মত ?

সরকারি বা জনপ্রশাসনের যে কোনও কাজে তদারকি প্রয়োজন। এর জন্য‌ আলাদা বিধি ও আইন নির্মাণ করতে পারে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য‌ সরকার। বিচারব্য‌বস্থাও তদারকির সংক্রান্ত সরকারি নীতি ও পদ্ধতিকে মান্য‌তা দেয়। এই জন্য‌ গোটা দেশজুড়ে তদারকি ব্য‌বস্থার প্রচলন হয়েছে। আগামী দিনে এই ব্য‌বস্থা আরও বাড়বে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

গণ বণ্টন ব্যবস্থার সমস্যা ও প্রতিকারে বিভিন্ন কমিটির ভূমিকা

খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের প্রধান কাজ এবং একই সঙ্গে চ্যালেঞ্জ, এর গণ বণ্টন ব্যবস্থার সুফল সব নাগরিক যাতে পান তা সুনিশ্চিত করা। এই ব্যবস্থায় যে সব সমস্যা আছে সেগুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার যথেষ্ট সুযোগ এখানে নেই। নীচের সারণি থেকে আমরা সমস্যাগুলোর ইঙ্গিত পেতে পারি।

সমস্যার মূল বিষয়

সমস্যার মূল বিষয়

১)অনিয়মিত সরবরাহ

৫) ভুয়া রেশন কার্ড সমস্যা

২)বাজারের দামের সঙ্গে ব্যবধান

৬) দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী পরিবার চিহ্নিতকরণে ত্রুটি

৩) খাদ্যশস্যের খারাপ মান

৭)আর্থিক কারণে সাপ্তাহিক বরাদ্দ তুলতে না পারা।

৪)রেশন দোকান নিয়মিত না খোলা

৮) ওজনে এবং দামে ঠকানো

সমস্যাগুলোর প্রতিকার করতে হলে সমস্ত স্তরে তদারকি ব্যবস্থা থাকা দরকার। কিন্তু দেশের চার লক্ষের বেশি রেশন দোকানের প্রায় প্রতি দিনের কাজকর্ম তদারকি করা কার্যত সরকারি ভাবে প্রায় সম্ভব নয়। সেই কারণে সাধারণ উপভোক্তা, পঞ্চায়েতি প্রতিষ্ঠান, সাধারণ প্রশাসন ও খাদ্য ও সরবরাহ দফতর, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের আধিকারিক, সাংসদ, বিধায়কদের সম্বন্বয়ে বিভিন্ন স্তরে তদারকি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রতিটি কমিটির কাজ

  • সেই স্তরের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করে, তার সমাধানের পথ বের করে নেওয়া।
  • প্রয়োজনভিত্তিক উপরের স্তরের পরামর্শ বা সহায়তা নেওয়া এবং নীচের স্তরকে পরামর্শ দেওয়া বা সহায়তা করা।

যে হেতু এই পরিষেবা একটি নিরবচ্ছিন্ন ধারাবাহিক প্রক্রিয়া সেই জন্য সব স্তরের কমিটিগুলিকে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে।

কমিটির দায়িত্ব

গণবণ্টন ব্য‌বস্থার মূল সমস্য‌া দুর্নীতি সংক্রান্ত। অনেক সময় খোলা বাজারে গণবণ্টনে সরবরাহিত চাল ডাল বিক্রি হয়। এর প্রতিকার করতে নজরদারি কমিটি থাকা প্রয়োজন। বিভিন্ন্ ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতও সেই দায়িত্ব পালনে ব্রতী হয়। এ ছাড়া সরকারি কমিটিরও নানা ব্য‌াপারে ভূমিকা থাকে। খাদ্য‌ দপ্তরের পরিদর্শনকারী দল এই কাজে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

রাজ্য স্তরের তদারকি ও নজরদারি কমিটি

ভূমিকা

রাজ্য‌ স্তরে তদারকি করার ক্ষেত্রে একটি কমিটি তৈরি করা হয় সচরাচর রাজ্য‌ সরকার নিজেরাই এই কমিটি তৈরি করে দেয়। কমিটিতে সরকারি লোকজন ছাড়াও বেসরকারি লোকজনও থাকেন। কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধকেও কমিটিতে নেওয়া হয়। কমিটিতে বিশেষজ্ঞ নেওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ে নজর রাখা প্রয়োজন। সেই ব্য‌ক্তি কোওযনও সংস্থার সঙ্গে যুক্ত তাকলে সংস্থার কার্যপ্রণালী ও মত কমিটিতে প্রতিফলিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞর মতামত নেওয়া এবং তাঁকে কমিটিতে স্থান করে দেওয়া অনেক বেশি লাভজনক এবং সুবিবেচকের কাজ। সম্প্রতি রাজ্য‌ সরকারগুলি রাজ্য‌স্তরের কমিটি গড়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আগাম পরামর্শ করে রাখছে। এর মূল কারণ হল পরে যাতে কোনওভাবেই বিতর্ক দানা বাঁধতে না পারে। তদারকি ও নজরদারির জন্য‌ আলাদা কমিটি গড়ার অবশ্য‌ কোনও প্রয়োজন নেই। তার কারণ দুটি কাজের মূল উদ্দেশ্য‌ কিন্তু একই। সরকারি বিশেষজ্ঞরা একটিই কমিটি গঠন করার উপর জোর দেন।

কাদের নিয়ে গঠিত

পদাধিকার

ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী

সভাপতি

কমিশনার, খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগ

সহ - সভাপিত

অধিকর্তা, জেলা সরবরাহ সংগ্রহ অধিকর্তা, খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগ

আহ্বায়ক সদস্য

সাধারণ অধিকর্তা (ডাইরেক্টর জেনারেল)- খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগ

সদস্য

সচিব, অর্থ বিভাগ

সদস্য

সচিব, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগ

সদস্য

সচিব, পৌর বিষয়ক বিভাগ

সদস্য

সচিব, বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগ

সদস্য

সচিব, নারী ও শিশু উন্নয়ন ও সমাজ কল্যাণ বিভাগ

সদস্য

১০

পরিচালন অধিকর্তা(ম্যানেজিং ডিরেক্টর), ডব্লউ বি ই সি এস সি লিমিটেড

সদস্য

১১

রেশন অধিকর্তা, খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগ

সদস্য

১২

ভোগ্যপণ্য অধিকর্তা, খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগ

সদস্য

১৩

অর্থ অধিকর্তা, খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগ

সদস্য

১৪

জেনারেল ম্যানেজার, ভারতীয় খাদ্য নিগম

 

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

জেলা ও মহকুমা স্তরের তদারকি ও নজরদারি কমিটি

ভূমিকা

জেলা স্তরে তদারকি করার ক্ষেত্রে একটি কমিটি তৈরি করা হয় সচরাচর রাজ্য‌ সরকার নিজেরাই এই কমিটি তৈরি করে দেয়। কমিটিতে সরকারি লোকজন ছাড়াও বেসরকারি লোকজনও থাকেন। কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিকেও কমিটিতে নেওয়া হয়। কমিটিতে বিশেষজ্ঞ নেওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ে নজর রাখা প্রয়োজন। সেই ব্য‌ক্তি কোনও সংস্থার সঙ্গে যুক্ত তাকলে সংস্থার কার্যপ্রণালী ও মত কমিটিতে প্রতিফলিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞর মতামত নেওয়া এবং তাঁকে কমিটিতে স্থান করে দেওয়া অনেক বেশি লাভজনক এবং সুবিবেচকের কাজ। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনগুলি জেলাস্তরের কমিটি গড়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আগাম পরামর্শ করে রাখছে। এর মূল কারণ হল পরে যাতে কোনওভাবেই বিতর্ক দানা বাঁধতে না পারে। তদারকি ও নজরদারির জন্য‌ আলাদা কমিটি গড়ার অবশ্য‌ কোনও প্রয়োজন নেই। তার কারণ দুটি কাজের মূল উদ্দেশ্য‌ কিন্তু একই। সরকারি বিশেষজ্ঞরা একটিই কমিটি গঠন করার উপর জোর দেন।

জেলা স্তরের কমিটি

কাদের নিয়ে গঠিত

পদাধিকার

সভাধিপতি , জেলা পরিষদ

সভাপতি

জেলা শাসক

নির্বাহী সভাপতি

জেলা নিয়ামক , খাদ্য ও সরবরাহ

আহ্বায়ক - সদস্য

এস পি (ডি ই বি )

সদস্য

সাংসদের প্রতিনিধি

সদস্য

কর্মাধ্যক্ষ, খাদ্য ও সরবরাহ স্থায়ী সমিতি, জেলা পরিষদ

সদস্য

অতিরিক্ত জেলা শাসক (খাদ্য বিষয় দেখভালের যিনি ভারপ্রাপ্ত)

সদস্য

ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীর প্রতিনিধি

সদস্য

জেলার সকল বিধায়কের প্রতিনিধি

সদস্য

১০

এক জন এন জি ও (ডিডিপিএস দ্বারা মনোনীত)

সদস্য

মহকুমা স্তরের কমিটি

কাদের নিয়ে গঠিত

পদাধিকার

মহাকুমা শাসক

সভাপতি

মহকুমা নিয়ামক খাদ্য ও সরবরাহ

আহ্বায়ক - সদস্য

কর্মাধ্যক্ষ, খাদ্য ও সরবরাহ স্থায়ী সমিতি, জেলা পরিষদ

সদস্য

মহকুমার সকল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি

সদস্য

মহকুমার সকল পৌরসভার পৌরপ্রধান

সদস্য

সাংসদ প্রতিনিধি

সদস্য

এক জন এন জি ও প্রতিনিধি (ডিডিপিএস দ্বারা মনোনীত)

সদস্য

ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীর প্রতিনিধি

সদস্য

মহকুমার সকল বিধায়কের প্রতিনিধি

সদস্য

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের তদারকি ও নজরদারি কমিটি

ভূমিকা

ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে তদারকি করার ক্ষেত্রে একটি কমিটি তৈরি করা হয় সচরাচর রাজ্য‌ সরকার নিজেরাই এই কমিটি তৈরি করে দেয়। কমিটিতে সরকারি লোকজন ছাড়াও বেসরকারি লোকজনও থাকেন। কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিকেও কমিটিতে নেওয়া হয়। কমিটিতে বিশেষজ্ঞ নেওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ে নজর রাখা প্রয়োজন। সেই ব্য‌ক্তি কোনও সংস্থার সঙ্গে যুক্ত তাকলে সংস্থার কার্যপ্রণালী ও মত কমিটিতে প্রতিফলিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞর মতামত নেওয়া এবং তাঁকে কমিটিতে স্থান করে দেওয়া অনেক বেশি লাভজনক এবং সুবিবেচকের কাজ। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনগুলি ব্লক ও গ্রামপঞ্চায়েতস্তরের কমিটি গড়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আগাম পরামর্শ করে রাখছে। এর মূল কারণ হল পরে যাতে কোনওভাবেই বিতর্ক দানা বাঁধতে না পারে। তদারকি ও নজরদারির জন্য‌ আলাদা কমিটি গড়ার অবশ্য‌ কোনও প্রয়োজন নেই। তার কারণ দুটি কাজের মূল উদ্দেশ্য‌ কিন্তু একই। সরকারি বিশেষজ্ঞরা একটিই কমিটি গঠন করার উপর জোর দেন।

ব্লক স্তরের তদারকি ও নজরদারি কমিটি

বিডিও

সহ সভাপতি

মুখ্য পরিদর্শক / পরিদর্শক খাদ্য ও সরবরাহ (আহ্বায়ক)

আহ্বায়ক - সদস্য

কর্মাধ্যক্ষ , খাদ্য ও সরবরাহ স্থায়ী সমিতি , পঞ্চায়েত সমিতি

সদস্য

থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক

সদস্য

বিধায়কের প্রতিনিধি

সদস্য

একজন এন জি ও প্রতিনিধি ( এস ডি ও দ্বারা মনোনীত )

সদস্য

গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ( সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের সভার ক্ষেত্রে )

আমন্ত্রিত সদস্য

গ্রাম পঞ্চায়েত/রেশন দোকান স্তরের তদারকি ও নজরদারি কমিটি

পরিদর্শক / অবর পরিদর্শক , খাদ্য ও সরবরাহ

আহ্বায়ক - সদস্য

পঞ্চায়েতের প্রতিটি রেশন দোকানের এলাকা থেকে এক জন করে বি পি এল রেশন কার্ডধারী গ্রাহক বি পি এল শ্রেণির প্রতিনিধি রূপে ( বি ডিও দ্বারা মনোনীত )

সদস্য

পঞ্চায়েতের প্রতিটি রেশন দোকানের এলাকা থেকে এক জন করে এ পি এল রেশন কার্ডধারী গ্রাহক এ পি এল শ্রেণির প্রতিনিধিরূপে ( বি ডি ও দ্রাবা মনোনীত )

সদস্য

স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্য

সদস্য

বিধায়কের প্রতিনিধি

সদস্য

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

খাদ্যশস্য সংগ্রহ

দেশের মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখতে, কৃষকের উত্পন্ন ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পেতে, সমাজের দুর্বল শ্রেণির ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে, মজুতদারি ও কালোবাজারি বন্ধ করতে এবং গণ বণ্টন ব্যবস্থাকে সচল রাখতে সরকারকে খাদ্যশস্য সংগ্রহ করতে হয়। আমাদের দেশের খাদ্য নিগম এবং সেই সঙ্গে রাজ্যের কিছু সংস্থা যেমন পশ্চিমবঙ্গ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহ নিগম ধান, গম, ডাল ইত্যাদি শস্য ইত্যাদি ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে (এম এস পি বা মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইস) সংগ্রহের পাশাপাশি লেভিতে চাল সংগ্রহের দায়িত্ব থাকেন।

চাষের খরচ, অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ এবং কৃষকের যুক্তিগ্রাহ্য লাভ ইত্যাদি বিবেচনা করে এগ্রিকালচারাল কষ্ট অ্যান্ড প্রাইসেস কমিশনের দেওয়া সুপারিশ অনুযায়ী রবি ও খরিফ শস্য কাটার সময় সরকার এই সহায়ক মূল্য ঘোষণা করেন। রাজ্য সরকারের সঙ্গে এফ সি আই এবং অন্যান্য সংস্থা সরাসরি নগদ মূল্যে শস্য সংগ্রহ করে থাকেন। কোথায় এই শিবির হবে এবং কত সংখ্যায় হবে তা স্থানীয় স্তরে প্রয়োজনের নিরিখে রাজ্য সরকার স্থির করেন।

খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগের খাদ্য সচিব – অধিকর্তা – ডিডিপিএস (ডিসট্রিক্ট ডিস্ট্রিবিউশন প্রকিওরমেন্ট অ্যান্ড সাপ্লাই) অধিকার – আঞ্চলিক উপ অধিকর্তা- জেলা বণ্টন, সংগ্রহ ও সরবরাহ – এই দায়িত্বে থাকেন। ডিডিপিএস অধিকারের নিয়ন্ত্রণে জেলা নিয়ামক প্রতিটি জেলার খাদ্যশস্য সংগ্রহের কাজ করেন।

এম এস পি-তে পণ্য কেনার জন্য রাজ্য সরকারের অনুমোদিত সংস্থাগুলি হল —

  • ই সি এস সি, বেনফেড, এন সি সি এফ ইত্যাদি।

জেলা, মহকুমা ও ব্লক পর্যায়ের কোন আধিকারিকরা এর তদারকি ও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থাকেন?

জেলা খাদ্য নিয়ামক ( ডি সি এফ এস), মহকুমা খাদ্য নিয়ামক (এস সি এফ এস) এবং ব্লক স্তরে খাদ্য পরিদর্শ এই দায়িত্বে থাকবেন।

রাইস মিলগুলো চাষিদের থেকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান কিনতে কতখানি দায়বদ্ধ ?

সম্পূর্ণরূপে দায়বদ্ধ। এম এস পি তে কোনও মিল ধান না কিনলে সরকার তার থেকে লেভি নেবে না।

‘ফেয়ার অ্যাভারেজ কোয়ালিটি’র ধান বলতে কী বোঝা যাবে?

‘ফেয়ার অ্যাভারেজ কোয়ালিটি’ বলতে কতকগুলি সূচকের ভিত্তিতে ধানের গুণগত মানের একটা সীমা ঠিক করা হয়। যে সীমার নীচে থাকা ধান এম এস পি তে কেনা যায় না। সাধারণ ভাবে নতুন ঝাড়াই বাছাই করা সব ধানই ‘ফেয়ার অ্যাভারেজ কোয়ালিটি’র উপরে থাকে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা ভেজাল না দিলে কোনও ধানের মান ‘ফেয়ার অ্যাভারেজ কোয়ালিটি’র নীচে নামে না।

রাইস মিলগুলোকে নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারি কোনও ব্যবস্থা বা আইন আছে কি?

হ্যাঁ আছে। ১৯৫৫-এর পশ্চিমবঙ্গ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনের ৩ নং ধারা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। ওই ধারা অনুযায়ী আমাদের রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গ চালকল ও পাইকারি বিক্রেতা (নিয়ন্ত্রণ ও লেভি) আদেশ অনুযায়ী রাইস মিল ও পাইকারি চাল ব্যবসায়ীর ব্যবসা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রতি বছর কে এম এস (খরিফ মার্কেটিং সিজন) অনুযায়ী লেভির পরিমাণ আলাদা করে প্রকাশ করা হয়।

শস্য সংগ্রহের কাজে জেলা শাসক, এসডিও বা বিডিও-দের ভূমিকা কী ?

আধিকারিকগণ তাঁদের স্তরে মনিটরিং বা তদারকি করবেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।

জেলা পরিষদের ভূমিকা কী ?

জেলা পরিষদ জেলা স্তরের মনিটরিং কমিটির মাধ্যমে রাইস মিল, এফ সি আই, রাজ্য সরকারের অনুমোদিত সংস্থার মাধ্যমে সমন্বয় সাধন করবে যাতে এই খাদ্য সংগ্রহ কর্মসূচি সফল ভাবে পরিচালিত হতে পারে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

ক্রেতা সুরক্ষা আইন

ক্রেতা সুরক্ষা আইন কি?

উচিত দামে সঠিক পণ্য বা জিনিস পাওয়া হল ক্রেতাদের মৌলিক অধিকার। এই অধিকার রক্ষার্থে ১৯৮৬ সালে একটি আইন প্রণয়ন করা হয়। এই আইনটির পরিধি আরও বিস্তৃত করার জন্য ১৯৯৩ সালে এটি সংশোধিত হয়। বর্তমানে এই আইনটি শুধু ক্রেতাদের (buyers) মধ্যেই সীমিত নয়, এটি উপভোক্তাদের (consumers) অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়।

ক্রেতা বা উপভোক্তা কারা?

যিনি বা যাঁরা নিজেদের ব্যবহারের জন্য দাম দিয়ে জিনিস কেনেন, অথবা কোনও কিছু ভাড়া নেন, কিংবা কোনও পরিষেবা গ্রহণ করেন - তাঁরা সকলেই হলেন ক্রেতা বা উপভোক্তা। এখানে উল্লেখযোগ্য যে, পুরো দাম নগদ না দিলেও চলবে। পরে দাম দেবেন কথা দিয়ে আংশিক অগ্রিম দিলেও তাঁরা ক্রেতা বা উপভোক্তা হিসেবে গণ্য হবেন। কিন্তু ব্যবসার উদ্দেশ্যে জিনিস কিনলে বা পরিষেবা গ্রহণ করলে এই আইনের সংজ্ঞা অনুসারে তাঁরা ক্রেতা বা উপভোক্তা হিসেবে গণ্য হবেন না।

ক্রেতা সুরক্ষার আইনের সুযোগ কারা পেতে পারেন?

জম্মু ও কাশ্মীর বাদ দিয়ে অন্য যে-কোনও রাজ্যের ক্রেতা/ উপভোক্তা এই আইনের সুযোগ নিতে পারেন।

ক্রেতা হিসেবে আপনি কোন কোন ক্ষেত্রে এই আইনের সুযোগ নিতে পারেন?

আপনি নিম্নলিখিত পরিস্থিতিগুলির ক্ষেত্রে এই আইনের সুযোগ নিতে পারেন।

  • আপনি যে জিনিস কিনেছেন বা কিনতে সন্মত হয়েছেন, তাতে যদি এক বা একাধিক দোষ বা ত্রুটি থাকে।
  • আপনি যে পরিষেবা ভাড়া করেছেন বা ভাড়া করার জন্য চুক্তি করেছেন, তাতে যদি কোন অপরিপূর্ণতা বা ঘাটতি থাকে।
  • যদি কোনও ব্যবসায়ী জিনিসের জন্য নির্ধারিত দামের অতিরিক্ত দাম আপনার কাছ থেকে নিয়ে থাকেন। (নির্ধারিত দাম বলতে এখানে বোঝাচ্ছে - জিনিসটির ওপর বা যে প্যাকেজের মধ্যে জিনিসটি আছে তার ওপর লিখিত দাম কিংবা আইনের দ্বারা স্বীকৃত দাম)।
  • ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে-সব জিনিস জীবনের পক্ষে বিপদ্জনক - নিরাপত্তা হানিকর সেই সমস্ত জিনিস যখন নির্দেশিত বিধি না মেনে বিক্রি করা হয় বা বিক্রির উদ্দেশ্যে তার তথ্যাদি প্রদর্শন করা হয়।
  • যদি কোনও ব্যবসায়ী অবৈধ ব্যবসা বা নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবসা চালায় বা অনুশীলন করে।

কোন ধারার ওপর ভিত্তি করে আপনি আপনার অভিযোগপত্র জমা দেবেন?

ক্রেতা সুরক্ষা আইনের 12 নং ধারায় আপনার আবেদনপত্র বা অভিযোগপত্র জমা দিন।

অভিযোগপত্র কার কাছে জমা দেবেন?

  • আপনার ক্ষতিপূরণের মূল্য যদি পাঁচ লক্ষ টাকার মধ্যে হয়, তাহলে আপনার অভিযোগপত্র জমা দেবেন জেলা কন্সিউমার ফোরামে।
  • আপনার ক্ষতিপূরণের মূল্য যদি পাঁচ লক্ষ থেকে কুড়ি লক্ষ টাকার মধ্যে হয়, তাহলে আপনার অভিযোগপত্র জমা দেবেন রাজ্য কমিশনে।
  • আপনার ক্ষতিপূরণের মূল্য যদি কুড়ি লক্ষ টাকার অধিক হয়, তাহলে আপনার অভিযোগপত্র জমা দেবেন জাতীয় কমিশনে।

অভিযোগপত্র কিভাবে জমা দেবেন?

আপনার অভিযোগপত্র সাদা পাতায় লিখিত ভাবে জমা দিলেই চলবে।

অভিযোগপত্র জমা দেবার ফি কত?

অভিযোগপত্র জমা দিতে কোনও কোর্ট ফি লাগে না।

অভিযোগপত্র কত দিনের মধ্যে জমা দেবেন?

ঘটনার সময় থেকে দু বছরের মধ্যে আপনার অভিযোগ পত্র দাখিল করতে পারেন। তবে বিচারক ইচ্ছে করলে এই সময়ের পরেও আপনার অভিযোগ পত্র গ্রহণ করতে পারেন।

অভিযোগপত্র জমা দেবার জন্য কি কোনও উকিলের প্রায়োজন আছে?

অভিযোগ দাখিলের জন্য (কিংবা তারপরেও) কোনও উকিল লাগে না।

অভিযোগ পত্র জমা দেবার কত দিনের মধ্যে আপনি প্রতিবিধান পাবেন?

সাধারণতঃ বিবাদীপক্ষ ফোরামের বিজ্ঞপ্তি পাবার পর থেকে ৯০ দিনের মধ্যে আপনি আপনার প্রতিবিধান পেতে পারেন।

কারা উপভোক্তা বা ক্রেতা নন?

ব্যবসার উদ্দেশ্যে কেউ কিছু ক্রয় করলে বা কোনও পরিষেবা গ্রহণ করলে - এই আইন অনুসারে তাকে ক্রেতা বা উপভোক্তা বলে গণ্য করা হয় না।

কোন কোন সংস্থার ক্ষেত্রে আপনি এই আইনের সাহায্য পেতে পারেন?

সাধারণ দোকান বা বিক্রয়কারী সংস্থাগুলি অবশ্যই এর আওতায় পড়ে। তবে এই আইনের বিস্তৃতি খুবই ব্যাপক। যেমন, ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, টেলিফোন, বিদ্যুত্, রান্নার গ্যাস, চিকিত্সক, ফ্রিজ, রেল, কেব্ল টিভি, ক্যুরিয়ার সার্ভিস, ইত্যাদির বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগ থাকলে আপনি এদের বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগ পত্র দাখিল করতে পারেন। প্রভিডেণ্ট ফাণ্ড, গ্র্যাচুইটি, পেনসন অথবা অবসরকালীন সুবিধে না পাওয়ার জন্য মালিকের বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগ পত্র দাখিল করার অধিকার আছে। বেসরকারী হাসপাতাল, নার্সিংহোম, বেসরকারী চিকিত্সক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (কিছু ক্ষেত্রে) ইত্যাদির বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগও এই আইনের আওতায় পরে।

হেরে গেলে বা ক্ষতিপূরণ না পেলে আপনি কি করতে পারেন?

আপনার অভিযোগের সুরাহা না হলে আপনি অবশ্যই আপীল করতে পারেন।

আপীল করলে কোথায় তা করবেন?

  • জেলা ফোরামের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করতে হলে আপনাকে তা ৩০ দিনের মধ্যে করতে হবে রাজ্য কমিশনে।
  • রাজ্য কমিশনের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করতে হলে আপনাকে তা ৩০ দিনের মধ্যে করতে হবে জাতীয় কমিশনে।

কেসের রায় কার্যকরী না করলে কোন শাস্তিমূলক বিধান এই আইনে আছে কি?

কেসের সিদ্ধান্ত অভিযুক্ত না মানলে অভিযুক্তকে নিম্নোক্ত যে কোন একটি বা সব কটি শাস্তিই দেওয়া হতে পারে:

  • কম পক্ষে একমাস, সর্বাধিক তিন বছরের কারাবাস।
  • কম পক্ষে 2,000 (দু হাজার) টাকা, সর্বাধিক 10,000 (দশ হাজার) টাকা জরিমানা।

অভিযোগ পত্রে কি কি লিখবেন?

  • আপনার নাম ও সম্পূর্ণ ঠিকানা।
  • যার বা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন, তার বা তাদের নাম ও সম্পূর্ণ ঠিকানা।
  • জিনিস কেনা/ভাড়া নেওয়া/পরিষেবা গ্রহণের তারিখ।
  • দাম হিসেবে দেওয়া টাকার পরিমান।
  • কেনা বা ভাড়া নেওয়া জিনিসটির বর্ণনা ও তার পরিমাণ/পরিমাপ বা পরিষেবার প্রকৃতি।
  • অভিযোগ কি ধরণের; অসাধু ব্যবসা সম্পর্কে/ত্রুটিপূর্ণ দ্রব্য সম্পর্কে/পরিষেবা ক্ষেত্রে ঘাটতির বিষয়/বেশী দাম নেওয়া সম্পর্কে।
  • মূল্যপত্র বা বিল/ভাউচার/রসিদ আর এই ব্যাপারে চিঠিপত্র যদি কিছু থাকে।
  • আপনি কি ধরণের প্রতিবিধান চাইছেন।

মনে রাখবেন: তুচ্ছ কারণে বা হয়রাণি করার উদ্দেশ্যে অভিযোগ দায়ের করলে অভিযোগকারীরই জরিমানা হতে পারে।

কয়েকটি ক্রেতা-সুরক্ষা জেলা ফোরামের (কনসিউমার ডিসপিউট্স রিড্রেসাল ফোরাম) ঠিকানা:

উত্তর 24 পরগনা: 7 কে.বি. বোস রোড, বারাসত।

দক্ষিণ 24 পরগনা: 18 জজেস কোর্ট রোড, আলিপুর, কলকাতা 700027, ফোন 2479-4335।

হাওড়া: রেড কোর্ট বিল্ডিং, হাওড়া, 711001, ফোন 2660-0892।

কলকাতা (ইউনিট 1): ভবানী ভবন (এক তলা), কলকাতা 700027, ফোন 2479-4862।

কলকাতা (ইউনিট 2): 8বি নেলী সেনগুপ্ত সরণী (সাত তলা), কলকাতা 700087।

পশ্চিমবঙ্গের ক্রেতা-সুরক্ষা রাজ্য কমিশনের ঠিকানা:

স্টেট কনসিউমার ডিস্প্যুটস রিড্রেসাল কমিশন: ভবানী ভবন (এক তলা), কলকাতা 700027, ফোন 2479-4916।

অন্যান্য জেলা ফোরামের ঠিকানার জন্য ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরে যোগাযোগ করুন:

ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের ঠিকানা:
11এ মির্জা গালিব স্ট্রিট
কলকাতা 700087
ইমেইল sec.cons@wb.nic.in
ওয়েবসাইট: http:kolkata.wb.nic.in/consumer

সামাজিক সহায়তামূলক প্রকল্পসমূহ

জাতীয় সামাজিক সহায়তা প্রকল্প

এর আওতায় ৪ ধরনের প্রকল্প আছে।

আবশ্যিক শর্ত : বিপিএল তালিকা ভুক্ত হতে হবে। সরকারি অন্য কোন পেনশন বা সহায়তা প্রাপক হলে এই সহায়তা পাওয়া যাবে না।

সহায়তা দেন : সরকারের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগের পক্ষে পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাহী আধিকারিক এই পেনশন ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাঠান।

ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় বার্ধক্য ভাতা

শর্ত

৬০ বা তার বেশি বয়স্ক বি পি এল তালিকা ভুক্ত পরিবারের সদস্য।

উপভোক্তা সনাক্ত

গ্রাম পঞ্চায়েতের সংসদ সভায় RHS তালিকা অনুযায়ী নামগুলি সনাক্ত করা হয় ও উপযুক্ততা বিচার করা হয়। অনুপযুক্ত নাম বাদ দেওয়া হয়।

কী সুবিধা দেওয়া হয়

মাসিক ভাতা দেওয়া হয়। ৬০ থেকে ৭৯ পর্যন্ত বৃদ্ধ বা বৃদ্ধাদের জন্য ৪০০ টাকা। ৮০ বছরের ঊর্ধ্বদের জন্য ১০০০ টাকা।

ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় বিধবা ভাতা

উপভোক্তা কে

৪০ থেকে ৫৯ বছর বয়সি দারিদ্রসীমার নীচে এলাকায় বসবাসকারী বিধবা মহিলা নাগরিক।

উপভোক্তা সনাক্ত কী ভাবে হবে

গ্রামীণ পরিবার তালিকায় বি পি এল রূপে নথিভুক্ত পরিবারের সদস্যা হবেন প্রাথমিক ভাবে। গ্রাম পঞ্চায়েতের সংসদ সভায় অনুপযুক্তদের নাম বাদ দেওয়া যেতে পারে।

কী সুবিধা দেওয়া হয়

মাসিক ৬০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়।

ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় প্রতিবন্ধী ভাতা

উপভোক্তা কে

১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সি দারিদ্রসীমার নীচে এলাকায় বসবাসকারী ৮০ শতাংশ বা তার বেশি প্রতিবন্ধকতা যুক্ত নাগরিক।

উপভোক্তা

গ্রামীণ পরিবার তালিকায় বি পি এল রূপে নথিভুক্ত পরিবারের সদস্য হবেন প্রাথমিক ভাবে। গ্রাম পঞ্চায়েত সংসদ সভায় অনুপযুক্তদের নাম বাদ দেওয়া যেতে পারে।

সুবিধা

মাসিক ৬০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়।

ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় পরিবার সহায়তা প্রকল্প

উপভোক্তা কে

পরিবারের মুখ্য উপার্জনশীল ১৮ বছর বয়সের ঊর্ধ্ব কিন্তু ৬০ বছরের কম কোনও সদস্যের মৃত্যু হলে পরিবারটিকে আর্থিক বিপর্যয়ের হাত থেকে উদ্ধারের জন্য এককালীন ৪০০০ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়।

উপভোক্তা সনাক্ত কী ভাবে হবে

মৃত্যু শংসাপত্র , অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট , বয়সের প্রমাণপত্র ইত্যাদি দিয়ে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাহী আধিকারিকের কাছে দরখাস্ত করতে হবে।

কী সুবিধা আছে

পরিবারটিকে এককালীন ৪০০০ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

পেনশন প্রকল্প

ভূমিকা

মানুষের অবসর জীবনে যখন খাআর ক্ষমতা চলে যায় বা মানসিক ভাবেও সে শ্রম প্রদান করতে সক্ষম হয় না তখন পেনশনের মতো সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প তাঁকে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা প্রদান করে। আগে শুধু সরকারি কর্মচারীরাই পেনশন প্রকল্পের সুযোগ গ্রহণ করতে পারতেন। কিন্তু ইদানীং পেনশনের সুবিধা বিস্তৃত হয়েছে। বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মরতরাও ব্য‌াঙ্কের মাধ্য‌মে বা প্রভিডেন্ট ফান্ডের মাধ্য‌মে অবসর নেওয়ার পর পেনশন পেতে পারেন। পেনশনের জন্য‌ সর্বমিম্ন বয়স সীমা প্রভিডেন্ট ফান্ডের ক্ষেত্রে ৫৮ বছর ধরা হয়েছে। এ চাড়া বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্য‌াঙ্কও আকর্ষণীয় হারে জমা পড়া রাশির উপর পেনশন দিয়ে থাকে। লাইপ ইন্সিওরেন্স করপোরেশনের মতো কোম্পানি বিমার প্রিমিয়ামের ভিত্তিতে পেনশন দিয়ে থাকে। ইদানীং অবশ্য‌ সরকার নিজের টাকা থেকে পেনশন দেওআ বন্ধ করেছে। এখন কোনও সরকারি কর্মচারী নিজেরা যা সঞ্চয় করতে পারবেন তার থেকেই ভবিষ্য‌তে পেনশন পাবেন। এর জন্য‌ বিভিন্ন ব্য‌াঙ্ক ও অন্য‌ান্য‌ নানা ধরনের সঞ্চয় প্রকল্পের ব্য‌বস্থা রাখা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমাজ কল্যাণ বিভাগ এই পেনশন দেয়। ৩ রকমের পেনশন দেওয়া হয়।

শর্ত :

  • উপভোক্তাকে প্রকৃত দরিদ্র হতে হবে (বিপিএল তালিকায় নাম না থাকলেও চলবে)।
  • কোটাভিত্তিক, পঞ্চায়েত সমিতি উপভোক্তা ঠিক করে।
  • মাসিক ৭৫০ টাকা করে পেনশন পাওয়া যাবে।
  • বিডিও ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের উপভোক্তার অ্যাকাউনেটের মাধ্যমে টাকা পাঠাবেন।
  • অন্য কোনও সরকারি পেনশন প্রকল্পের আওতাভুক্ত হওয়া চলবে না।

যোগাযোগ : পঞ্চায়েত সমিতির কার্য্য‌ালয়। ব্লক সমাজ কল্যাণ আধিকারিক।

বার্ধক্য ভাতা

উপভোক্তা কে

বয়স ৬০ ঊর্ধ্ব নাগরিক হতে হবে।

বিধবা ভাতা

উপভোক্তা কে

বয়স ১৮ ঊর্ধ্ব নাগরিক হতে হবে। বিধবা হতে হবে।

প্রতিবন্ধী ভাতা

উপভোক্তা কে

বয়স ১৮ ঊর্ধ্ব নাগরিক হতে হবে। ন্যূনতম ৪০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা থাকতে হবে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সহায়তা

বিভিন্ন ধরনের সহায়তা এই বিভাগ থেকে পাওয়া যায়।

সহায়তা দেন : সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের পক্ষে বিডিও।

যোগাযোগ : ব্লকের বিপর্যয় মোকাবিলা আধিকারিক। পঞ্চায়েত সমিতির নারী ও শিশু উন্নয়ন, জনকল্যাণ ও ত্রাণ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ।

খয়রাতি দান ( স্পেশাল জি আর )

অনুদানের পরিমাণ চাল / গম ১২ কিলো এক ইউনিট বা ১২০ টাকা। ব্লক এলাকার যে কোন দরিদ্র মানুষের অনাহার অবস্থা তৈরি হলে তাকে এই রিলিফ দেওয়া হয়। বিডিও অফিস থেকে এই জি আর পাওয়া যাবে।

রিলিফ বা ত্রাণ

বন্যা বা প্রাকৃতিক বির্পযয়ের বা আগুনে ঘর বাড়ি নষ্ট হয়ে গেলে ত্রিপল , জামা , কাপড় , কম্বল ইত্যাদি তদন্ত সাপেক্ষে দেওয়া হয় বিডিও অফিস থেকে। ত্রাণ শিবির করা হলে সেখানে রান্না খাবার ব্যবস্থা করা হয়। পরিস্থিতি অনুযায়ী বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

গৃহ নির্মাণে অনুদান

বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বসবাস গৃহ পুন : নির্মাণে অনুদান দেওয়া হয়। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির ক্ষেত্রে ৩২০০ টাকা এবং পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির ক্ষেত্রে ১৫০০০ টাকা অনুদান দেওয়া হয়। ( উপভোক্তাকে বি পি এল তালিকাভুক্ত হতে হবে ) ।

এককালীন অনুদান

এ ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যু ঘটলে এককালীন পরিবারটিকে ২০০০০০ টাকা , সর্পাঘাতে মৃত্যু হলে ১০০০০০ টাকা দেওয়া হয়।

এই গ্রান্ট পেতে গেলে ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে বি ডি ও অফিসের বির্পযয় মোকাবিলা দফতরের নজরে আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে মৃতদেহের ময়না তদন্ত করা বাধ্যতামূলক। ( পরিবারকে দু : স্থ হতে হবে ) ।

ইয়ার গ্রান্ট

অতি দু : স্থদের ( যারা জি আর পাওয়ার উপযুক্ত ) তাদের ১০০০০ টাকা পর্যন্ত ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য দেওয়া হয়।

শিশু, কিশোর ও নারী সুরক্ষায় প্রকল্প

উদ্দেশ্য

অনাথ শিশু , কিশোরী সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা।

উপভোক্তা

অনাথ এবং বিপদগ্রস্ত শিশু , কিশোরী ও মহিলা

সুবিধা

আই সি ডি এস সহ সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্বল্পকালীন আবাস এবং হোমের ব্যবস্থা আছে।

যোগাযোগ

ব্লকের সি ডি পি ও , বি ডব্লু ও এবং জেলার সমাজ কল্যাণ আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

ভবিষ্যনিধি প্রকল্প

ভূমিহীন কৃষিশ্রমিকদের জন্য‌ ভবিষ্য‌নিধি প্রকল্প

এটি একটি ভবিষ্য‌তের সুরক্ষার জন্য‌ প্রভিডেন্ট ফান্ড প্রকল্প

  • ১) এই প্রকল্পে উপভোক্তাকে মাসিক ২০ টাকা করে জমা দিতে হবে।
  • ২) রাজ্য‌ সরকারও সমপরিমাণ অর্থ অর্থাৎ ২০ টাকা করে ওই ব্য‌ক্তির অনুকূলে জমা রাখবেন। এই জমা দেওয়া চলবে উপভোক্তার বয়স ৫৯ বছর হওয়া পর্যন্ত।
  • ৩) ৫৯ বছর বয়স পূর্ণ হলে তাঁর এবং রাজ্য‌ সরকারের দেওয়া মোট টাকা সুদ সহ ফেরতযোগ্য‌ হবে।
  • ৪) রাজ্য‌ সরকারের কর্মচারীরা তাঁদের ভবিষ্য‌নিধি প্রকল্পে জমা টাকার উপরে যে বছরে যে হারে সুদ পেয়ে থাকেন, এ ক্ষেত্রেও সেই একই হারে সুদ দেওয়া হবে।

প্রশ্নঃ এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হতে গেলে কী কী শর্ত পূরণ করতে হবে?

উঃ

  • (ক) ভূমিহীন কৃষিশ্রমিক হতে হবে।
  • (খ) বয়স ১৮ থেকে ৫৯-এর মধ্য‌ে হতে হবে।
  • (গ) তাঁর নামে বাস্তু-সহ মোট জমি ০.৫০ একর অর্থাৎ ৫০ শতকের কম থাকতে হবে।
  • (ঘ) যাঁর কোনও রকম কৃষি বা অন্য‌ প্রকারের জমিতে উত্তরাধিকার স্বত্ব নেই যা তাঁর জমির সঙ্গে যোগ করলে ০.৫০ একর অর্থাৎ ৫০ শতকের বেশি হতে পারে।
  • (ঙ) তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সম্মিলিত আয়ের প্রধান উৎস হবে কৃষিশ্রম বা খেতমজুরি থেকে।

এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য‌ যে কোনও সময় সরাসরি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে অথবা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য‌ মারফত নির্দিষ্ট ফর্মে (ফর্ম নং ১) প্রধানের কাছে আবেদন করতে হবে।

শহরাঞ্চলে বহুদিন যাবৎ অপ্রথাগত ক্ষেত্রে কর্মরত শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড বা ভবিষ্য‌নিধি প্রকল্প চালু আছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে একমাত্র বিড়ি শ্রমিক ছাড়া অপ্রথাগত ক্ষেত্রে ভবিষ্য‌নিধি প্রকল্পের আওতায় অন্য‌ কোনও শ্রমিক পড়েন না। সে ক্ষেত্রে ভূমিহীন কৃষিশ্রমিকদের ভবিষ্য‌নিধি প্রকল্প চালু করাটা অভূতপূর্ব কাজ। এর ফলে শহরাঞ্চলের অপ্রথাগত শ্রমিকদের গ্রামাঞ্চলের শ্রমিকরাও অবসর নেওয়ার পর একটু অন্তত স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবেন।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

শ্রম দফতরের অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য‌ ভবিষ্য‌নিধি প্রকল্প

এটি একটি প্রভিডেন্ট ফান্ড প্রকল্প, বৃদ্ধ ও অক্ষম হয়ে গেলে বাকি জীবনের সুরক্ষা বা ভবিষ্য‌তের সুরক্ষা।

এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হতে হলে কী কী শর্ত পূরণ করতে হয়?

উঃ পশ্চিমবঙ্গে কর্মরত তালিকাভুক্ত শিল্পে এবং স্বনিযুক্তি পেশায় নিযুক্ত শ্রমিক-

  • যাঁর বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্য‌ে
  • যাঁর পারিবারিক মাসিক গড় আয় ৬৫০০ টাকার বেশি নয়।
  • পারিবারিক আয়ের উৎস শুধুমাত্র তালিকাভুক্ত শিল্প বা স্বনিযুক্তি পেশার আয় থেকে হয়
  • তিনি যেন কর্মচারী ভবিষ্য‌নিধি এবং বিবিধ আইন ১৯৫২-র আওতাভুক্ত না হন

এই প্রকল্পে আবেদন করার পদ্ধতি কী?

উঃ এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করতে হলে আবেদনকারীকে নির্ধারিত ফর্মে (ফর্ম নম্বর ১) স্থানীয় ব্লক অফিসে ন্যূনতম মজুরি পরিদর্শকের কাছে আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে তার তিন কপি প্রত্য‌য়িত ছবি যুক্ত করতে হবে।

উপভোক্তার যোগ্য‌তা সংক্রান্ত শংসাপত্র কে কে দিতে পারেন ?

উঃ পঞ্চায়েত এলাকার জন্য‌ :

পঞ্চায়েত সমিতির স্থানীয় সদস্য‌/স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য‌

এই প্রকল্পে ‘পরিবার’ বলতে কী বোঝায়?

উঃ উপকৃত শ্রমিকের পরিবারের সদস্য‌ হিসাবে শ্রমিক, তাঁর স্ত্রী/স্বামী, সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভরশীল কন্য‌া, নাবালক পুত্র, সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভরশীল বাবা/মা বিবেচিত হবেন।

এই প্রকল্পে টাকা জমা দেওয়ার পদ্ধতি কী?

উঃ উপভোক্তা মাসিক ২৫ টাকা করে জমা দিলে, সরকার ৩০ টাকা ওই উপভোক্তার অনুকূলে জমা দেবে। চলবে উপভোক্তার ৫০ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত। সুদ সহ এই টাকা উপভোক্তা ৬০ বছর বয়সে এক সাথে পাবেন। আদায়কারী গ্রাহকের কাছ থেকে মাসিক ২৫ টাকা হিসাবে টাকা আদায় করে নির্ধারিত ফর্মে (ফর্ম ৩) একটি প্রাপ্তি রসিদ দেবেন এবং গ্রাহকের কাছ থেকে পরিচয়পত্র তথা পাসবই (ফর্ম ২)-তে আদায়ীকৃত টাকার অঙ্ক লিখে গ্রাহককে ফেরত দেবেন।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা

উদ্দেশ্য‌

দরিদ্র পরিবারের কন্য‌াসন্তানের বেড়ে ওঠার প্রতিটি স্তরে যত্নবান হওয়া এবং বাল্য‌বিবাহ প্রথা রোধ করার ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়াই এই যোজনার লক্ষ্য।

কী পাবেন

  • (ক) জন্ম নিবন্ধীকৃত দু’টি কন্য‌াসন্তানের জন্ম পর্যন্ত প্রত্য‌েক কন্য‌াসন্তানের জন্মের সময় এককালীন অনুদান ৫০০ টাকা।
  • (খ) এ ছাড়াও পড়াশোনা শুরু করলে ওই কন্য‌াসন্তানের দশম শ্রেণি পর্যন্ত নিম্নহারে বৃত্তির ব্য‌বস্থা আছে :

শ্রেণি

বার্ষিক বৃত্তির পরিমাণ

প্রথম থেকে তৃতীয়

৩০০টাকা ( প্রতি শ্রেণির জন্য‌ )

চতুর্থ

৫০০ টাকা

পঞ্চম

৬০০ টাকা

ষষ্ঠ ও সপ্তম

৭০০ টাকা ( প্রতি শ্রেণির জন্য‌ )

অষ্টম

৮০০ টাকা

নবম ও দশম

১০০০ টাকা ( প্রতি শ্রেণির জন্য‌ )

উপভোক্তা

দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী পিতা/মাতা তাঁদের দু’টি কন্য‌াসন্তানের জন্ম পর্যন্ত এই সহায়তা পাবেন যদি সেই কন্য‌াসন্তানের জন্ম নিবন্ধিকরণ করিয়ে থাকেন। এবং ১৫।০৮।১৯৯৭-এর পরে জন্ম হয়।

আবেদন ও অনুমোদন

গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে আবেদন করতে হবে। গ্রাম পঞ্চায়েত সেগুলি শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিকের নিকট পাঠিয়ে দেবেন, যিনি উপযুক্ত ক্ষেত্রে অনুমোদন দেবেন।

সহায়তা পাওয়ার নিয়ম ও শর্ত

  • (ক) বৃত্তি ও অনুদানের সব টাকা কন্য‌াটির ও শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিকের যুগ্ম নামে জাতীয় ব্য‌াঙ্কে বা পোস্ট অফিসে জমা থাকবে। কন্য‌াটি যদি ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত অবিবাহিত থাকে তবেই সুদ সহ সব টাকা ফেরত পাবে।
  • (খ) ১৮ বৎসরের আগেই কন্য‌াটির বিবাহ হলে তার জন্মের জন্য‌ কেবলমাত্র এককালীন ৫০০ টাকাই পাবে সে পাবে। বিস্তারিত তথ্য‌ রাজ্য‌ সরকারের নারী ও শিশু উন্নয়ন ও সমাজ কল্য‌াণ দফতর বা ব্লকের সমাজ কল্য‌াণ আধিকারিকের কাছ থেকে জানা যাবে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

আম আদমি বিমা যোজনা

আম আদমি বিমা যোজনা কী?

উঃ কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য‌ সরকার এলআইসির মাধ্য‌মে গ্রামীণ এলাকার ভূমিহীন কৃষিশ্রমিকদের জন্য‌ আম আদমি বিমা যোজনা নামে একটি বিমা প্রকল্প চালু করেছেন। এই প্রকল্পের গ্রাহকরা কিছু ব্য‌ক্তিগত সুবিধা পাবেন। তা ছাড়া কিছু পারিবারিক সুবিধারও ব্য‌বস্থা রয়েছে।

আম আদমি বিমা যোজনার গ্রাহক কারা?

উঃ ভূমিহীন কৃষিশ্রমিকদের জন্য‌ ভবিষ্য‌নিধি প্রকল্পে যাঁরা ইতিমধ্য‌ে নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন সেই সব গ্রাহক পরিবারের কর্তা বা পরিবারের উপার্জনক্ষম এক জন সদস্য‌কে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর এই প্রকল্পটির আওতাভুক্ত করবেন।

এই বিমার জন্য‌ উপভোক্তাকে কি কোনও বাড়তি টাকা দিতে হবে?

উঃ না। গ্রাহককে এই বিমায় সুবিধা পাওয়ার জন্য‌ বাড়তি কোনও টাকা দিতে হবে না। তিনি যে কুড়ি টাকা করে প্রতি মাসে জমা দিচ্ছেন সেটাই শুধু দেবেন। বিমার কিস্তির টাকা কেন্দ্র (১০০ টাকা) ও রাজ্য‌ (১০০ টাকা) সমহারে বহন করছে।

এই বিমা যোজনা থেকে গ্রাহকরা কী আর্থিক সুবিধা পাবেন?

উঃ এই প্রকল্পে নথিভুক্ত ব্য‌ক্তির মৃত্য‌ু হলে বা চিরস্থায়ী ভাবে অক্ষম হলে এই প্রকল্পের গ্রাহক পরিবার আম আদমি বিমা যোজনার অধীনে নিম্নলিখিত সুবিধা পাবেন-

স্বাভাবিক মৃত্য‌ুর ক্ষেত্রে

৩০ হাজার টাকা

দুর্ঘটনায় মৃত্য‌ুর ক্ষেত্রে

৭৫ হাজার টাকা

দুর্ঘটনায় স্থায়ী প্রতিবন্ধী হলে

৭৫ হাজার টাকা

দুর্ঘটনায় আংশিক প্রতিবন্ধী হলে

৩৭ , ৫০০ টাকা

তা ছাড়া আম আদমি বিমা যোজনার অন্তর্ভুক্ত পরিবারের নবম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠরত অনধিক দু’টি সন্তান বিগত শিক্ষাবর্ষে অনুত্তীর্ণ না হয়ে থাকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্য‌মে প্রতি মাসে ১০০ টাকা হিসাবে শিক্ষার্থী বৃত্তি পাবে। এটি ষান্মাসিক অর্থাৎ প্রতি বছর ১ জুলাই থেকে এবং ১ জানুয়ারি থেকে এই বৃত্তি পাওয়া যাবে।

সকল ভূমিহীন খেতমজুরের এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

গৃহ সুরক্ষা

তিন আবাস প্রকল্প

সকল মানুষের সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার জন্য অন্ন, বস্ত্র এবং বাসস্থান প্রয়োজন। সেই কারণে দারিদ্র দূরীকরণ ও সামাজিক ন্যায় বিচারের সঙ্গে গ্রামীণ আবাসের উন্নয়ন অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। আবার পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য হল নিজেদের এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা।

পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চলে এখনও অনেক পরিবার গৃহহীন বা জীর্ণ গৃহে বসবাস করেন। অনেকেরই বসত জমি নেই। এ ছাড়াও একটি মাত্র দুর্বল পরিকাঠামোযুক্ত ঘরে বাস করেন যা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় (যেমন বন্যা, সাইক্লোন ইত্যাদি) উপযুক্ত নয় এমন পরিবারও এ রাজ্যে অনেক।

বাসগৃহের উন্নয়ন পঞ্চায়েতগুলির একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। নব নির্বাচিত পঞ্চায়েতগুলি তাদের নিজস্ব এলাকায় উপযুক্ত বাসগৃহ নির্মাণের লক্ষ্যে এখন থেকে আগামী পাঁচ বছর ধারাবাহিক উন্নতির জন্য বিশেষ ভাবে কাজ করে যাবেন।

গ্রামীণ এলাকায় দরিদ্র মানুষের আবাস গৃহের জন্য কী কী প্রকল্প আছে তা নীচে দেওয়া হল :

  • ইন্দিরা আবাস যোজনা
  • আমার ঠিকানা
  • আমার বাড়ি

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

ইন্দিরা আবাস যোজনা (আইএওয়াই)

স্থায়ী অপেক্ষমাণ তালিকা

গ্রামীণ এলাকার দরিদ্র মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পটি গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্পে উপভোক্তা বাছাই করার জন্য নীচের পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। ইন্দিরা আবাস যোজনার মূল লক্ষ্য হল গ্রামীণ পরিবার সমীক্ষার ওপর ভিত্তি করে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী পরিবারগুলি যাঁরা তাঁদের বাসগৃহের অবস্থা বা পি-২ সূচকে ১ বা ২ পেয়েছেন, তাঁদেরকে নিয়ে স্থায়ী অপেক্ষামান তালিকা প্রস্তুত করা হয় যা থেকে সাহায্য পাওয়ার যোগ্য পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করা যায়। বর্তমানে এই অপেক্ষামান তালিকা প্রত্যেক গ্রাম পঞ্চায়েতে পাওয়া যাবে। যে পরিবারের নাম স্থায়ী অপেক্ষামান তালিকায় নেই, এমন কোনও পরিবারকে আইএওয়াই-এর সাহায্য দেওয়া যাবে না। এ ছাড়া ভুল ক্রমে যদি কোনও পরিবারের নাম গ্রামীণ পরিবার সমীক্ষায় বি পি এল রূপে চিহ্নিত হয়ে থাকে এবং পি-২ সূচকে ১ বা ২ পেয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে গ্রাম সংসদ বা গ্রাম পঞ্চায়েতে আইএওয়াই-এর স্থায়ী অপেক্ষামান তালিকা থেকে বাদ দিতে পারে, কিন্তু কোনও নতুন পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে না।

বাস্তুজমির প্রয়োজন খতিয়ে দেখা

স্থায়ী অপেক্ষামান তালিকায় এমন অনেক পরিবার আছে যাদের গৃহ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় বাস্তু জমি নেই এবং ন্যূনতম বাস্তুজমি না থাকার দরুণ তাদের আইএওয়াই দেওয়া যাচ্ছে না। অগ্রাধিকারের মাপকাঠিতে এমন পরিবারই আগে বিবেচ্য। প্রতিটি গ্রামপঞ্চায়েতকে অবিলম্বে স্থায়ী অপেক্ষামানদের তালিকা ধরে বাস্তুহীন পরিবারগুলি চিহ্নিত করে ফেলতে হবে। রাজ্য সরকারের ‘নিজে গৃহ নিজ ভূমি প্রকল্পে’ আড়াই বা তিন কাঠা জমি দেওয়া যাবে। এমন সবক’টি পরিবারের জন্য মোট কতটা জমি লাগবে তার পরিমাণ বুঝে গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি উপযুক্ত জমি চিহ্নিত করবে এবং বাস্তুহীন পরিবারগুলিকে ‘নিজ গৃহ নিজ ভূমি প্রকল্প’-এর মাধ্যমে জমির ব্যবস্থা করে দেবে। পঞ্চায়েতগুলিকে নিজস্ব তহবিল, নি:শর্ত তহবিল, পশ্চাদপদ এলাকা উন্নয়ন তহবিল (বিআরজিএফ) ইত্যাদি থেকেও জমি কিনে বসতি উন্নয়ন প্রকল্পে কাজে লাগানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক কোটা

প্রতি জেলার জন্য ইন্দিরা আবাস যোজনার বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা যা নির্ধারিত হয়েছে, তা জেলা পরিষদ গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির মধ্যে ভাগ করে দেবে। জেলার এই লক্ষ্যমাত্রা থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হবে যা স্থায়ী অপেক্ষমানদের তালিকার পরিবারগুলির অনুপাতে হবে। বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হওয়ার পর জেলা পরিষদ গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক স্থায়ী অপেক্ষামানদের তালিকায় তফশিলি জাতি, উপজাতি ও সংখ্যালঘু পরিবারগুলির সংখ্যা ধরে উপভোক্তা পরিবারের সামাজিক বিন্যাসটি ঠিক করে দেবেন।

গ্রাম পঞ্চায়েতে জাতিভিত্তিক কোটা

জাতি

সংখ্যালঘু

তফশিলি জাতি ও উপজাতি

অন্যান্য

শতকরা

ন্যূনতম ১৫

ন্যুনতম ৬০

২৫

ইন্দিরা আবাস যোজনার উপভোক্তা নির্ধারণের পদ্ধতি

উপভোক্তা নির্ধারণের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত তার স্থায়ী অপেক্ষমান তালিকা ধরে লক্ষ্যমাত্রা (তফশিলি জাতি, উপজাতি ও সংখ্যালঘু পরিবার) অনুযায়ী একেবারে কম নম্বর পাওয়া পরিবার গুলিকে যারা পি-২ সূচকে ১ নং পেয়েছেন, সেই সব পরিবারগুলিকে অগ্রাধিকার দেবে। যদি দেখা যায় যে কোনও বিশেষ শ্রেণির পরিবার যথেষ্ট সংখ্যক নেই, তা হলে গ্রাম পঞ্চায়েতে ওই তালিকার ভিতর অন্যান্য শ্রেণির পরিবারকে জেলা পরিষদের অনুমতিক্রমে সাহায্য দেওয়া যেতে পারে। অপেক্ষমান তালিকার পি-২=১ ভুক্ত পরিবারগুলি শেষ হলে পরেই পি-২=২ ভুক্ত পরিবারগুলিকে সাহায্য দেওয়া যাবে।

প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতেই ইন্দিরা আবাস যোজনায় কোটা বরাদ্দ করা থাকে।ইদানীং কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে কোটা বরাদ্দের ক্ষেত্রে সেই পঞ্চায়েতের রাজনৈতিক অবস্থানকে গুরূত্ব দেওয়া হচ্ছে। এটি একেবারেই বাঞ্ছনীয় নয়। অনেক সময় রাজ্য‌ সরকারগুইল কোটার টাকা বরাদ্দ করার ব্য‌াপারে নানা রকম গড়িমসি করছে। এর ফলে নির্দিষ্ট সময়ে টাকা খরচ করা যাচ্ছে না। সরকারি বাজেটের বইপত্রে এ ধরনের বহু উদাহরণ দেওয়া আছে। এই কারণে গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক কোটা নির্দারণের সময় নজর রাখতে হবে সেই টাকা ঠিকমতো খরচ করার মতো পরিকাঠামো এবং ৭মতা যেন সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের থাকে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

টাকা ছাড়ার পদ্ধতি ও নির্মাণ সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা

ইন্দিরা আবাস যোজনার মোট টাকা তিনটি কিস্তিতে উপভোক্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দিতে হবে। সুতারং এই প্রকল্পে উপভোক্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা জরুরি। গ্রাম পঞ্চায়েত জেলা পরিষদ থেকে তার কোটা পাওয়ার পরেই উপভোক্তা চিহ্নিত করবে এবং তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দিতে সাহায্য করবে। চিহ্নিত উপভোক্তাদের নাম ও অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য না পেলে জেলা পরিষদ পঞ্চায়েত সমিতিকে টাকা ছাড়তে পারবে না। পঞ্চায়েত সমিতি উপভোক্তাদের তিনটি কিস্তিতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দেবেন। স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বজায় রাখতে পঞ্চায়েত সমিতি একটি বিশেষ দিনে সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে বিশেষ সভা করে সকল অনুমোদনের কাগজ দিতে পারে। ইন্দিরা আবাস যোজনার অন্যান্য নির্দেশিকা যেমন — বাড়ির মেঝের মাপ (২১৫ বর্গ ফুট), গঠনের মজবুতি, ধোঁয়াহীন চুলা ও শৌচাগারের ব্যবস্থা, পরিবারের একজন মহিলা (উপভোক্তার) এবং কর্তার নাম যুগ্ম ভাবে নথিভুক্ত করণ, সাহায্যের পরিমাণ ইত্যাদি উপভোক্তাকে অবশ্যই বুঝিয়ে বলতে হবে। বাড়িটি যাতে স্থায়ী হয় এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ রোধ করতে সম্ভব হয় তা নিশ্চিত করতে হবে অর্থাৎ বাড়ির দেওয়াল ও ছাদ অবশ্যই পাকা হওয়া দরকার।

বাড়ি তৈরি সম্পূর্ণ হলে বাড়ির দেওয়ালে ইন্দিরা আবাস যোজনার লোগো আঁকতে হবে এবং উপভোক্তার নাম, ঠিকানা, অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ, বরাদ্দের ও সমাপ্তির বত্সর, এগুলি লিখতে হবে। সর্ব শেষে ওই বাড়ির সামনে উপভোক্তাকে রেখে বাড়িটির ছবি তুলে এবং সদ্বব্যবহার সহ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে জমা করতে হবে।

বর্তমানে আই এ ওয়াই–এর অনুদানের পরিমাণ

এলাকা

অনুদানের

পরিমাণ

এলাকা

অনুদানের

পরিমাণ

সমতল

৭০০০০ টাকা

পার্বত্য , জঙ্গল মহল ও সুন্দর বন এলাকা

৭৫০০০ টাকা

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

এক নজরে ইন্দিরা আবাস যোজনা

  • ১) বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবার যাঁদের সমীক্ষায় পি-২ (বাড়িঘরের অবস্থা) ঘরের মান ১ বা ২ (ভীষণ খারাপ, বেশ খারাপ) তাঁরাই পাবেন। যাঁরা পাবেন তাঁদের একটি তালিকা গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লকে আছে।
  • ২) উপভোক্তা হবেন পরিবারের মহিলা সদস্য‌া অথবা স্বামী ও স্ত্রী যুগ্মভাবে।
  • ৩) নতুন গৃহ নির্মাণের জন্য‌ সমতল এলাকায় সংস্থান বর্তমানে ৭০ হাজার টাকা এবং পার্বত্য, জঙ্গল মহল ও সুন্দরবন এলাকায় ৭৫ হাজার টাকা।
  • ৪) নতুন বাসগৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রে সংখ্য‌ালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত উপভোক্তাদের জন্য মোট বরাদ্দের ১৫ সতাংশ টাকা খরচ করা বাধ্য‌তামূলক।
  • ৫) ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে প্রতিটি গৃহে ধোঁয়াহীন চুল্লি ও স্বাস্থ্য‌সম্মত শৌচাগার তৈরি বাধ্য‌তামূলক।
  • ৬) গৃহ নির্মাণ বা সংস্কারের টাকা দেওয়া হয় দু’টি কিস্তিতে। প্রথম কিস্তিতে অনুমোদিত টাকার অর্ধেক দেওয়া হবে অ্যাকাউন্ট পেয়ি চেকের মাধ্য‌মে।
  • ৭) প্রথম কিস্তির টাকা যথাযথ খরচ করার পর অর্ধেক কাজ সম্পন্ন হয়েছে এটি যাচাই করে বাকি অর্ধেক টাকা দ্বিতীয় কিস্তিতে একই ভাবে দেওয়া হবে।
  • ৮) এ ছাড়াও সুবিধাভোগীদের নামের তালিকা গ্রাম পঞ্চায়েতের নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে রাখতে হবে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

আমার ঠিকানা

বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয়

উদ্দেশ্য :

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবাসন বিভাগের প্রকল্প যা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগ রূপায়ণ করে থাকে। গ্রামীণ এলাকার দরিদ্র বা অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল পরিবার যাদের মাথা গোঁজার ঠাই নেই তাদেরকে আর্থিক সাহায্য দিয়ে বাসগৃহ বানিয়ে দেওয়ার জন্য এই আবাসন প্রকল্প।

অর্থ সংস্থান :

এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার ১০০ শতাংশ ব্যয়ভার বহন করে থাকেন।

উপভোক্তা করা হতে পারেন :

দু : স্থ ও অসহায় মহিলা বা পুরুষ

বিধবা যার কোন প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে নেই

নির্যাতিতা মহিলা

শারীরিক ও মানসিক ভাবে অক্ষম ব্যক্তি

অশক্ত এবং অক্ষম ব্যক্তি

পরিবারটির মাসিক আয় ৬০০০ টাকা বা তার কম

যাদের বাড়ি করার জন্য নিজস্ব জমি আছে।

উক্ত পরিবারগুলি বর্তমানে চালু বি পি এল তালিকাভুক্ত না হতে পারেন কিন্তু বি পি এল তালিকাভুক্ত হওয়ার যোগ্য।

  • রূপায়ণকারী সংস্থা : পঞ্চায়েতিরাজ প্রতিষ্ঠান এই প্রকল্পটির রূপায়ণকারী সংস্থা হিসাবে কাজ করবে। উপভোক্তা নিজে বাড়িটি তৈরি করবেন।
  • উপভোক্তা চিহ্নিতকরণ : নীচে দেওয়া শর্তগুলির কথা মাথায় রেখে গ্রাম পঞ্চায়েত পিছু ৫ জন করে উপভোক্তা চিহ্নিত করা হয়।
  • কোনও উন্নয়ন মূলক কাজের জন্য (যেমন পিএমজিএসওয়াই) গৃহহারা হয়েছেন এমন পরিবার।
  • প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে (যেমন বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি) গৃহহারা হয়েছেন এমন পরিবার

ইউনিট পিছু বরাদ্দের পরিমাণ :

এলাকা

অনুদানের

পরিমাণ

এলাকা

অনুদানের

পরিমাণ

সমতল

৪৫০০০ টাকা

পার্বত্য , জঙ্গল মহল উপকুল

৪৮৫০০ টাকা

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

টাকা ছাড়ার পদ্ধতি ও নির্মাণ সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা

মোট টাকা দু’টি কিস্তিতে উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দিতে হবে। তবে ইন্দিরা আবাস যোজনার পরিবর্তিত সহায়তার পরিপ্রেক্ষিতে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগ রূপায়িত অন্যান্য গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের ক্ষেত্রেও (আমার ঠিকানা সহ) অনুমোদনের পরিমাণ পরিবর্তনের প্রস্তাব আছে। সুতরাং এই প্রকল্পে উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকা জরুরি। গ্রাম পঞ্চায়েত জেলা পরিষদ থেকে তার কোটা পাওয়ার পরেই উপভোক্তা চিহ্নিত করবে এবং তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে দিতে সাহায্য করবে। চিহ্নিত উপভোক্তাদের নাম ও অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য না পেলে জেলা পরিষদ পঞ্চায়েত সমিতিকে টাকা ছাড়তে পারেব না। পঞ্চায়েত সমিতি উপভোক্তাদের দু’টি কিস্তিতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বা অ্যাকাউন্ট পেয়ি চেকের মাধ্যমে সাহায্য দেবেন। স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বজায় রাখতে পঞ্চায়েত সমিতি একটি বিশেষ দিনে সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে চেক দেওয়ার সভা করতে পারেন। নির্মাণ সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা ইন্দিরা আবাস যোজনার অনুরূপ।

দ্বিতীয় কিস্তির টাকা কী ভাবে পাওয়া যাবে — প্রথম কিস্তির টাকা দ্রুত খরচ করে গ্রাম পঞ্চায়েতের মাদ্যমে সদ্বব্যবহার-পত্র সহ পঞ্চায়েত সমিতির কাছে আবেদন করতে হবে। আবেদন পাওয়ার পরে ব্লক থেকে অনুসন্ধান করে (ব্লক লেভেল মনিটর বা গ্রাম পঞ্চায়েত স্টাফ বা ডি অর পি) দ্বিতীয় কিস্তির টাকা প্রদান করা হয়।

বাড়ি তৈরি সম্পূর্ণ হলে বাড়ির দেওয়ালে কোন যোজনার বাড়ি হয়েছে এবং উপভোক্তার নাম, ঠিকানা, উপভোক্তাকে অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ, বরাদ্দের ও সমাপ্তির বত্সর, এগুলি লিখতে হবে। সর্বশেষে ওই বাড়ির সামনে উপভোক্তাকে রেখে বাড়িটির ছবি তুলে এবং সদ্বব্যহার-পত্র সহ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে জমা করতে হবে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

আমার বাড়ি/ গীতাঞ্জলী

সারা রাজ্যে অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল শ্রেণির মানুষের জন্য যাঁদের নিজস্ব কোনও পাকা বাড়ি নেই তাঁদের নতুন বাড়ি করার বা সংস্কারের জন্য রাজ্য সরকারের তহবিলে সাহায্য প্রাপ্ত আবাসন প্রকল্পের নাম ‘আমার বাড়ি’। প্রকল্পটি আবাসন বিভাগ অন্যান্য বিভিন্ন বিভাগের সহযোগিতায় ও মাধ্যমে রূপায়ণ করে থাকে।

কারা কারা এই সাহায্য পেতে পারেন

  • গ্রামাঞ্চলের গরিব পরিবার
  • গ্রামাঞ্চলের গরিব পরিবার যারা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত
  • সরকারি প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত (পুর্নবাসন হিসাবে) গরিব পরিবার
  • উল্লেখ্য, পরিবারটি বি পি এল তালিকাভুক্ত হলে অগ্রাধিকার পাবেন
  • পরিবারটির মাসিক আয় ৬০০০ টাকা পর্যন্ত হলে সাহায্য পাবেন। যাদের বাড়ি করার জন্য নিজস্ব জমি আছে বা যাদের নিজস্ব কোনও জমি নেই রূপায়ণকারী সংস্থা তাদের জন্য গুচ্ছ বাড়ি তৈরি করে দেবেন।
  • বাড়ির আয়তন

    বাড়ির মেঝের মাপ ২৭০ বর্গফুট এবং অবশ্যই পাকা হতে হবে। অন্যান্য সরকারি প্রকল্পের সমন্বয়ে শৌচাগারের ব্যবস্থা করতে হবে।

    ইউনিট প্রতি বরাদ্দ

    এলাকা

    শ্রেণি

    অনুমোদিত বরাদ্দ

    সমতল

    সাধারণ উপভোক্তা

    ১,৬৭,০০০ টাকা

    উপকূল অঞ্চল নয় এমন

    মত্স্যজীবী

    ১,৬৩,০০০ টাকা

    সুন্দরবনের জঙ্গল এলাকা

    সকল উপভোক্তা

    ১,৯৪,০০০ টাকা

    পাহাড়ি এলাকা

    দার্জিলিং জেলার উপোভাক্তা

    ২,৫১,০০০ টাকা

    জঙ্গল এলাকা

    জলপাইগুড়ি জেলার জঙ্গলে অবস্থিত গ্রাম

    ৩,০০,০০০ টাকা

    মিউনিসিপ্যালিটির অন্তর্গত নয় এমন আংশিক শহর এলাকা

    সাধারণ উপভোক্তা

    ১,৬৭,০০০ টাকা (একতলা)

    ৩,৩০,০০০ টাকা (বহুতল)

    টাকা ছাড়ার পদ্ধতি

    উপভোক্তাকে কোনও টাকা দেওয়া হবে না। আবার এই প্রকল্পের জন্য উপভোক্তাকে কোনও টাকাও দিতে হবে না। এই প্রকল্পটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি অনুদান মূলক কর্মসূচি। উপভোক্তা ১০ বছরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের গৃহ মন্ত্রণালয়ের পারমিশন ছাড়া বাড়িটি হস্তান্তর করতে পারবেন না।

    রূপায়নকারী সংস্থা

    প্রাথমিক ভাবে নিম্নলিখিত সংস্থাগুলি রূপায়ণকারী সংস্থা হিসাবে কাজ করে থাকে

    বন দফতর.

    সংখ্যালঘু বিষয়ক এবং মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর

    অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর

    মৎস্য দফতর

    পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিষয়ক দফতর

    সুন্দরবন বিষয়ক দফতর

    উপভোক্তা চিহ্নিত করণ

    মহকুমা শাসক সংশ্লিষ্ট বি ডি ও-র সঙ্গে আলোচনা করে ‘আমার বাড়ি’র উপভোক্তার তালিকাটি চূড়ান্ত করবেন। যথাযথ চিহ্নিতকরণের জন্য উপভোক্তার স্থায়ী বাসিন্দা, আয়ের শংসাপত্র এবং সচিত্র পরিচয়পত্রগুলি যাচাই করবেন। আরও উল্লেখ্য যে উপভোক্তা যেন অন্য কোনও আবাস প্রকল্পে সাহায্য পেয়ে না থাকেন।

    অর্থের সংস্থান

    ধাপে ধাপে রূপায়ণকারী সংস্থাগুলিকে চাহিদা অনুসারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের গৃহ বিভাগ অর্থ দেবেন। সঙ্গে উপভোক্তার তালিকা, বাড়ি তৈরি সম্পূর্ণ হয়েছে তার শংসাপত্র দিতে হবে। এছাড়া পশ্চাত্পদ এলাকা উন্নয়ন তহবিল (১১ টি জেলা) এবং মাল্টি সেক্টোরাল ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান (সংখ্যালঘু সম্প্রদায়দের জন্য) কোটাভিত্তিক ইন্দিরা আবাস যোজনার অনুরূপ ভাবে গ্রামীণ এলাকার বি পি এল ভুক্ত পরিবারের জন্য বাড়ি করে দেওয়ার ব্যবস্থাপনা আছে। বিড়ি শ্রমিকদের জন্য গৃহ নির্মাণ প্রকল্প – ৫০,০০০ টাকা।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    জনস্বাস্থ্য

    স্বাস্থ্যের অর্থ

    স্বাস্থ্য‌ বলতে কেবলমাত্র অসুখ হওয়াকে বোঝায় না। স্বাস্থ্য‌ বলতে ব্য‌ক্তির শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, এই তিন ধরনের সুস্থতাকেই এক সঙ্গে বোঝায়।

    শারীরিক স্বাস্থ্য‌ বলতে সুষম খাবার খাওয়া, নিরাপদ পানীয় জলের ব্য‌বহার, স্বাস্থ্য‌সম্মত পরিবেশ বজায় রাখা, ময়লা আবর্জনা এবং মল নিষ্কাশনের সঠিক ব্য‌বস্থা, রোগ প্রতিরোধের ব্য‌বস্থা ইত্য‌াদি বোঝায়। আবার মানসিক ও সামাজিক স্বাস্থ্য‌রক্ষার জন্য‌ সমষ্টিগত এবং পরিবারের সকল সদস্য‌ের ব্য‌ক্তিগত উদ্য‌োগ প্রয়োজন।

    স্বাস্থ্য‌ের অধিকার বলতে সাধারণ মানুষের ধারণা সরকারি হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া। কিন্তু সরকারি হাসপাতালগুলি পরিচালনার বাইরেও স্বাস্থ্য‌ক্ষেত্রে সরকারের বৃহত্তর ভূমিকা রয়েছে। রোগের উপশম করার চেয়ে বড় কাজ হল রোগ প্রতিরোধের ব্য‌বস্থা করা। সে দিকে সরকার ঠিকমতো কাজ করছে কিনা সেটিও নজরে রাখা প্রয়োজন। শিশুরোগের ক্ষেত্রে প্রতিরোধ ব্য‌বস্থা করার দায়িত্ব মূলত স্থানীয় প্রশাসনের। অর্থাৎ পঞ্চায়েত বা পুরসভা এই কাজ পরিচালনা করে। কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও এই কাজের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু নির্বাচিত স্থানীয় প্রশাসন বা রাজ্য‌ সরকার যদি অগ্রণী ভূমিকা নিতে না পারে তা হলে সমস্ত উদ্য‌োগের কাজই ঢিমেতালে হবে। আবার সরকার বা স্থানীয় প্রশাসন যদি এ ব্য‌াপারে উদ্য‌োগী হয় তা হলে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির কাজের গতিও অনেকটা বেড়ে যায়। নিজেদের অধিকার সম্পর্কে মানুষ সচেতন হলে রোগ প্রতিরোধমূলক ব্য‌বস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে তারা সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে সরকারি পদক্ষেপের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সক্রিয় নজরদারিও প্রয়োজন। অনেক সময় কিছু জরুরি কাজ সাধারণ মানুষের উদ্য‌োগেও করা সম্ভব। যেমন টিকাগ্রহণ কর্মসূচি -- সাধারণ মানুষের উদ্য‌োগেই এই কর্মসূচির সফল রূপায়ণ সম্ভব।

    স্বাস্থ্য‌ শব্দটির সঙ্গে নানাধরনের অনুষঙ্গ জড়িয়ে আছে। পঞ্চায়েত স্তরে যখন স্বাস্থ্য‌ ব্য‌বস্থার উপর নজরদারি চালানোর কথা বলা হয় তখন মূলত জনস্বাস্থ্য‌ের বিষয়টির উপরই জোর দেওয়া হয়।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    জনস্বাস্থ্য‌ সংক্রান্ত তথ্য‌

    মা ও শিশু সংক্রান্ত তথ্য‌

    সাধারণ অসুখ সংক্রান্ত তথ্য‌

    • কত জন গর্ভবতী মা ও শিশু টিকা নেননি।
    • কত জন শিশু ও গর্ভবতী মা অপুষ্টিতে ভুগছেন।
    • মহিলারা নিরাপদে প্রসবের সুযোগ পান কিনা ও কত জন প্রসবের সময় হাসপাতালে যান ?
    • শূন্য‌ থেকে এক বছরের মধ্য‌ে কত জন শিশু মারা যায়।
    • কত জন গর্ভবতী / প্রসূতি মা মারা যান।
    • মেয়েদের বিয়ের গড় বয়স কত ?
    • দম্পতিরা জন্ম নিয়ন্ত্রণের ব্য‌বস্থা গ্রহণ করেন কিনা।

    - এলাকায় কোন কোন ধরনের অসুখের প্রাদুর্ভাব ঘটে এবং অসুখগুলি কোন সময়ে কাদের হয় ?

    - টিবি রোগীর সংখ্য‌া কত ?

    - কুষ্ঠরোগীর সংখ্য‌া কত ?

    - এলাকায় কোনও এইডস রোগী আছে কিনা।

    - কোন কোন পরিবার বাইরে কাজ করতে যান।

    স্বাস্থ্য‌বিধান সংক্রান্ত তথ্য‌

    পরিকাঠামো সংক্রান্ত তথ্য‌

    • পানীয় জলের উৎস কী ?
    • নিরাপদ পানীয় জলের ব্য‌বস্থা রয়েছে কি?
    • কয়টি বাড়িতে স্বাস্থ্য‌সম্মত শৌচাগার রয়েছে? এবং কয়টিতে নেই?
    • বিদ্য‌ালয় ও সাধারণের ব্যবহারযোগ্য স্থানে স্বাস্থ্য‌সম্মত শৌচাগার ও জলের ব্য‌বস্থা রয়েছে কিনা?
    • পরিবেশের পরিচ্ছন্নতা ও আবর্জনা ফেলার সুষ্ঠু ব্য‌বস্থা আছে কিনা?
    • স্বাস্থ্য‌ উপকেন্দ্র ও অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রগুলির উপযুক্ত পরিকাঠামো রয়েছে কিনা ?
    • স্বাস্থ্য‌ সম্পর্কিত যে সব পরিষেবা রয়েছে তা সকলে পাচ্ছেন কিনা ?
    • সরকারি হাসপাতালগুলির পরিষেবা সকলে পাচ্ছেন কিনা ?
    • যে সব পঞ্চায়েতে বর্তমানে কোনও প্রাথমিক স্বাস্থ্য‌কেন্দ্র বা ব্লক স্বাস্থ্য‌কেন্দ্র নেই সেই সব পঞ্চায়েতে স্বাস্থ্য‌ পরিষেবা পৌঁছনোর উদ্দেশ্য‌ে আংশিক সময়ের জন্য‌ হোমিওপ্য‌াথিক চিকিৎসক নিযোগের ব্য‌বস্থা করা হয়েছে কিনা ?

    এ ছাড়াও গ্রাম পঞ্চায়েতে চুক্তি ভিত্তিক অ্য‌ালোপ্য‌াথিক ডাক্তার নিযোগের ব্য‌বস্থা হয়েছে কিনা ?

    প্রশ্নঃ জনস্বাস্থ্য‌ের ব্য‌াপারে পঞ্চায়েত একক সিদ্ধান্ত নিতে পারে কি?

    উত্তরঃ একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনও অদিকার পঞ্চায়েতের নেই। এ ব্য‌াপারে সরকারের বক্তব্য‌ প্রণিধান করে তারপর ব্য‌বস্থা নিতে হয়। তার কারণ কী নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে তা একমাত্র রাজ্য‌ বা কেন্দ্রীয় সরকারই জানে। কেন সেই নীতি গ্রহণ করা হল তার বিস্তৃত বিবরণ অনেক সময় পঞ্চায়েতর কাছে নাও থাকতে পারে।এই কারণে সাবধানতা।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    গ্রামস্তরের স্বাস্থ্যব্য‌বস্থা

    উপস্বাস্থ্য‌কেন্দ্রগুলির কাজ

    • গর্ভবতী মায়েদের নথিভুক্তকরণ
    • গর্ভবতী মায়েদের পরীক্ষা করা ও টিটেনাস টক্সাইড ইঞ্জেকশন দেওয়া
    • আয়রন-ফলিক অ্য‌াসিড ট্য‌াবলেট দেওয়া
    • টিকাকরণ কর্মসূচির রূপায়ণ
    • ম্য‌ালেরিয়ার জন্য‌ নমুনা সংগ্রহ
    • যক্ষ্মারোগীদের ‘ডটস’ প্রকল্পে নিয়মিত ওষুধ খাওয়ানো।
    • জন্ম-মৃত্য‌ু পঞ্জীকরণে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে সাহায্য‌ করা
    • সাধারণ অসুখ বিসুখের চিকিৎসা ইত্য‌াদি।

    গর্ভবতী মায়েদের নথিভুক্তকরণ একটি বড় ধরনের কাজ। অনেকে বাড়িতে দাই ডেকে প্রজননের কাজ সেরে ফেলেন। খরচের ভয়ে সরকারি স্বাস্থ্য‌কেন্দ্রে নাম নথিভুক্ত করান না। তাঁরা জানেনই না যে সরকার প্রসূতির জন্ম সম্পূর্ণ নিখরচায় করার ব্য‌বস্থা করেছে। এবং সরকারি ব্য‌বস্থায় নিরাপদে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে এই কাজ করা হয়। অনেকের ধারণা, সরকারি স্বাস্থ্য‌কেন্দ্রে প্রসব করালে মায়েদের বন্ধ্য‌া করে দেওয়া হয়। এই ধারণা যে ভুল তা প্রতিপন্ন করার জন্য‌ সরকারি ও বেসরকারি উদ্য‌োগকে আরও সক্রিয় হওয়া দরকার। টিকাকরণের ব্য‌াপারেও অনেক ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। বিশেষ কোনও কোনও সম্প্রদায়ের মানুষ মনে করেন, টিকারণের মাধ্য‌মে সরকার তাঁদের শুচিতায় বিঘ্ন ঘটাচ্ছেন। তাঁদের শরীরের উপর সরকারি নিয়ন্রণ কায়েম করছেন। শুধু তা-ই নয়, পালস পোলিওর টিকার মাধ্য‌মে নির্বীজকরণের ব্য‌বস্থা করা হচ্ছে বলেও একটা সময় প্রচার চলেছিল। পশ্চিমবঙ্গের অন্তত দু’টি জেলায় যে কারণে পোলিও টিকাকরণ কর্মসূচি খানিকটা শ্লথ গতিতে এগিয়েছে। পরে অবশ্য‌ সরকারি-বেসরকারি উদ্য‌োগে নিরন্তর প্রচার অভিযান চালানোর ফলে এই অপপ্রচার স্তিমিত হয়।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    বহুমুখী স্বাস্থ্য কর্মসূচি

    বহুমুখী স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে কী কী পরিষেবা আমরা পেতে পারি

    আমাদের দেশে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা এই তিনটি বিষয় নিয়ে কাজ করে থাকে। এই পরিষেবাগুলির কথা মাথায় রেখেই স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে যেখানে পঞ্চায়েত ও স্বাস্থ্য দফতরের যৌথ সহযোগিতায় স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলি দেওয়া হয়।

    শুধুমাত্র স্বাস্থ্য পরিষেবা ও স্বাস্থ্যের পরিকাঠামো সম্পর্কে ধারণা থাকলেই হবে না তার সঙ্গে এলাকার স্বাস্থ্যের অবস্থা ও অবস্থান এবং স্বাস্থ্য বিষয়ের বিভিন্ন কর্মসূচি ঠিকমতো রূপায়িত হচ্ছে কি না তা বিশদ ভাবে জানা দরকার। জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের যে সকল কর্মসূচি রয়েছে তার মাধ্যমে নিম্নলিখিত পরিষেবাগুলি পাওয়া যায় যেমন —

    • মা ও শিশু স্বাস্থ্য
    • পরিবার কল্যাণ
    • স্বাস্থ্যবিধান ও সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখা
    • বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা
    • সংক্রমক রোগ নিয়ন্ত্রণ
    • পুষ্টি

    বহুমুখী স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পরিকাঠামো

    একজন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী (সমাজ কল্যাণ দফতরের অধীন) কেবলমাত্র অঙ্গনওয়াড়ি ব্লক গুলিতে

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    প্রজনন ও শিশু স্বাস্থ্য‌ কর্মসূচি

    কর্মসূচির উদ্দেশ্য

    • জন্ম নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিগুলি সহজে পাওয়ার ব্যবস্থা।

    • গর্ভবতী মায়ের যত্ন ও নিরাপদ গর্ভধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব।

    • প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগ ও বিভিন্ন যৌন রোগের প্রতিরোধ ও চিকিত্সা ব্যবস্থা।

    • গর্ভবতী মা ও শিশুদের নিয়মিত টিকাকরণ।

    মায়েদের জন্য‌ পরিষেবা

    • প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের নাম স্বাস্থ্য‌কেন্দ্রে নথিভুক্ত করা।
    • গর্ভবতী মায়ের অন্তত তিন থেকে চার বার নিয়মিত স্বাস্থ্য‌পরীক্ষা করা।
    • গর্ভবতী মাকে দু’ মাত্রার টিটেনাস টিকা ও আয়রন-ফলিক অ্য‌াসিড ট্য‌াবলেট দেওয়া।
    • প্রশিক্ষিত ব্য‌ক্তির সাহায্য‌ে প্রসব করানো।
    • গর্ভাবস্থায় কোনও জটিলতা থাকলে স্বাস্থ্য‌কেন্দ্র বা হাসপাতালে প্রসব করানোর ব্য‌াপারে প্রভাবিত করা।
    • গর্ভাবস্থায় বা প্রসবের সময় জটিল অবস্থা বা সঙ্কটের সৃষ্টি হলে তার ব্য‌বস্থাপনা।
    • প্রসবের পর প্রসূতি মাকে অন্তত তিন বার পরীক্ষা করা।
    • দুই সন্তানের মধ্য‌ে জন্মের ব্য‌বধান অন্তত তিন বছর করার জন্য‌ উৎসাহ দেওয়া।

    শিশুর জন্য‌ পরিষেবা

    • নবজাতক শিশুর পরিচর্যা, যেমন শিশুকে গরম রাখা, শিশুর ওজন নেওয়া, যে সব শিশু নির্দিষ্ট সময়ের আগে জন্মায় অথবা কম ওজনের শিশু জন্মায় তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ পরিচর্যা। শিশু যদি কোনও জটিলতা নিয়ে জন্মায় তা হলে তাকে স্বাস্থ্য‌কেন্দ্রে পাঠানোর ব্য‌বস্থা নিতে হবে।
    • ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে শুধুই বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। তার পর অন্য‌ খাদ্য‌ে অভ্য‌স্ত করানো। বিসিজি, ডিপিটি, পোলিও এবং হাম প্রতিরোধ টিকাকরণ
    • অন্ধত্ব প্রতিরোধে ভিটামিন এ প্রদান
    • ডায়েরিয়া প্রতিরোধে ব্য‌বস্থা গ্রহণ
    • শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগ ও নিউমোনিয়া প্রতিরোধে উপযুক্ত ব্য‌বস্থাপনা
    • রক্তাল্পতার প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
    • পালস পোলিও কর্মসূচিতে ৫ বছর পর্যন্ত সকল শিশুকে প্রতি বছর পোলিও টিকা বাড়তি মাত্রা হিসাবে খাওয়াতে হবে।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    জাতীয় টিকাকরণ কর্মসূচি

    কর্মসূচির উদ্দেশ্য

    • মা ও শিশুর মৃত্যুহার কমানো।

    • গর্ভবতী মা ও শিশুদের নিয়মিত টিকাকরণ।

    কী কী পরিষেবা পাওয়া যাবে

    • প্রতিটি গর্ভবতী মাকে টিটেনাসের টিকা দেওয়া।

    • প্রতিটি শিশুকে যক্ষ্মা , ডিপথেরিয়া , হুপিং কাশি , পোলিও , টিটেনাস ও হাম প্রতিরোধে টিকা দেওয়া।

    • ৫ বছর পর্যন্ত সকল শিশুকে প্রতি বছর পোলিও টিকা বাড়তি মাত্রা হিসাবে খাওয়ানো।

    সংক্রামক রোগগুলির হাত থেকে শিশুকে রক্ষা করার জন্য‌ শিশুর জন্মের পর পরই যে যে রুটিন মাফিক টীকাগুলি নিতে হবে তা একবার দেখে নেওয়া যাকঃ

    শিশুর জন্য‌ প্রতিষেধক টিকার তালিকা

    কখন

    টিকার নাম

    কী ভাবে

    কোন রোগের জন্য‌

    জন্মের পর সত্বর

    বিসিজি

    পোলিও

    ইঞ্জেকশনে এক মাত্রা

    মুখে খাইয়ে শূন্য‌ মাত্রা

    যক্ষ্মা

    পোলিও

    ৬ সপ্তাহ বা দেড় মাস বয়সে

    ডিপিটি

    পোলিও

    ইঞ্জেকশনে প্রথম মাত্রা

    মুখে খাইয়ে প্রথম মাত্রা

    ডিপথেরিয়া , হুপিং কাশি , টিটেনাস

    পোলিও

    ১০ সপ্তাহ বা আড়াই মাস বয়সে

    ডিপিটি

    পোলিও

    ইঞ্জেকশনে দ্বিতীয় মাত্রা

    মুখে খাইয়ে দ্বিতীয় মাত্রা

    ডিপথেরিয়া , হুপিং কাশি , টিটেনাস

    পোলিও

    ১৪ সপ্তাহ বা সাড়ে তিন মাস বয়সে

    ডিপিটি

    পোলিও

    ইঞ্জেকশনে তৃতীয় মাত্রা

    মুখে তৃতীয় মাত্রা

    ডিপথেরিয়া , হুপিং কাশি , টিটেনাস

    পোলিও

    ৯ মাস বয়স পূর্ণ হওয়ার পর

    হামের ভ্য‌াকসিন

    ইঞ্জেকশনে এক মাত্রা

    হাম

    ১৬ - ২৪ মাস বয়সে

    ডিপিটি

    পোলিও

    ইঞ্জেকশনে বুস্টার মাত্রা

    মুখে বুস্টার মাত্রা

    ডিপথেরিয়া , হুপিং কাশি , টিটেনাস

    পোলিও

    ৫ বছর বয়সে

    ডিটি

    ইঞ্জেকশনে বুস্টার প্রথম মাত্রা

    ডিপথেরিয়া , টিটেনাস

    ১০ বছর বয়সে

    টিটি

    ইঞ্জেকশন

    টিটেনাস

    ১৬ বছর বয়সে

    টিটি

    ইঞ্জেকশন

    টিটেনাস

    ৫ বছর বয়স পর্যন্ত যখনই কর্মসূচি হবে

    পোলিও

    মুখে খাইয়ে

    পালস পোলিও কর্মসূচি

    জাতীয় রক্তাল্পতা দূরীকরণ কর্মসূচি

    কর্মসূচির উদ্দেশ্য

    মা ও শিশুদের বিনামূল্যে আয়রন ও ফলিফার ট্যাবলেট দেওয়ার মাধ্যমে রক্তাল্পতা দূরীকরণ।

    কী কী পরিষেবা পাওয়া যাবে

    • স্কুলের মাধ্যমে শিশু ও বিশেষত কিশোরীদের আয়রন ও ফলিফার ট্যাবলেট দেওয়ার ব্যবস্থা।

    • প্রতিটি গর্ভবতী মাকে ১০০টি আয়রন ও ফলিফার ট্যাবলেট দেওয়ার ব্যবস্থা।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    জননী ও শিশু সুরক্ষা যোজনা

    এই কর্মসূচির লক্ষ্য‌ হল

    মা ও শিশুর মৃত্য‌ুহার কমানো ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবে উৎসাহিত করা

    কারা পাবেন

    • দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী এবং তফশিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত মহিলা। প্রত্য‌েকের সার্টিফিকেট অবশ্য‌ই থাকতে হবে।
    • তফশিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত মহিলা হলে বিপিএল বা এপিএল দেখার প্রয়োজন নেই।

    পাওয়ার শর্তগুলি কী কী

    • কমপক্ষে ১৯ বছর বা তার বেশি বয়সি গর্ভবতী মহিলা
    • গর্ভাবস্থায় কমপক্ষে তিন বার স্বাস্থ্য‌কেন্দ্রে বা হাসপাতালে স্বাস্থ্য‌ পরীক্ষা হলে।
    • দু’টি জীবিত শিশুর জন্ম অবধি এই সুবিধা পাওয়া যাবে।
    • গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসের মধ্যেই টাকাটা পাওয়া যাবে।

    কত টাকা পাওয়া যাবে

    • গর্ভবতী মহিলারা প্রথমে ৫০০ টাকা পাবেন। স্বাস্থ্য‌কেন্দ্রে , হাসপাতালে বা সরকার অনুমোদিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রসব হলে আরও ৫০০ টাকা পাওয়া যাবে।

    কোথায় এই পরিষেবা পাওয়া যাবে

    • গর্ভবতী মহিলারা স্বাস্থ্য‌ পরীক্ষার সময় স্বাস্থ্য‌কর্মী দু’ রকম কার্ড (জননী সুরক্ষা যোজনা কার্ড এবং মা ও শিশু স্বাস্থ্য‌ সংক্রান্ত এমসিএইচ কার্ড) তৈরি করে মহিলাকে দেবেন।
    • জননী সুরক্ষা যোজনা কার্ড পঞ্চায়েত প্রধান অনুমোদন করে টাকাটা (৫০০ টাকা) মহিলা স্বাস্থ্য‌কর্মীর মাধ্য‌মে গর্ভবতী মহিলাকে পাঠিয়ে দেবেন।

    স্বাস্থ্য‌কেন্দ্রে , হাসপাতালে বা সরকার অনুমোদিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রসব হলে সেখান থেকে ছাড়া পাওয়ার আগেই ৫০০ টাকা পাওয়া যাবে।

    জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্যমিশন কর্মসূচির উদ্দেশ্য

    • মা ও শিশুর মৃত্যুহার প্রতিরোধ করার জন্য কারণগুলি খতিয়ে দেখা ও ব্যবস্থা গ্রহণ।

    • এলাকার সকল গর্ভবতী / প্রসূতি মা এবং শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা , টিকাকরণ , অপুষ্টি ও রক্তাল্পতা দূরীকরণ ইত্যাদি বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ।

    • নিরাপদ ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবকে সুনিশ্চিত করা।

    • কম্পিউটারের তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে মা ও নবজাতক শিশুর জন্ম ওজন , টিকাকরণ , সঠিক যত্ন সম্পর্কে নজরদারি।

    • কোন ধরনের রোগ এলাকায় বেশি হচ্ছে তা চিহ্নিত করা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়তা নিয়ে রোগ মোকাবিলার পরিকল্পনা করা।

    • লিঙ্গ বৈষম্য রোধে উদ্যোগ গ্রহণ।

    • সঠিক পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে আংশিক সময়ের জন্য অ্যালোপ্যাথিক / হোমিওপ্যথিক / আয়র্বেদিক চিকিত্সক নিয়োগ ও ওষুধপত্রের ব্যবস্থা গ্রহণ।

    • এলাকায় স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়ন।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য‌বিমা যোজনা

    রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য‌ বিকাশ যোজনার মাধ্য‌মে গরিব মানুষের স্বাস্থ্য‌ রক্ষার জন্য‌ রাষ্ট্র কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

    এই কর্মসূচির লক্ষ্য‌

    আর্থিক ভাবে দুর্বল ব্য‌ক্তি যাতে সুলভে চিকিৎসার সুযোগ পান

    কারা পাবেন

    দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী ব্য‌ক্তি ও তার পরিবারের সর্বাধিক পাঁচ জন

    পাওয়ার শর্তগুলি কী

    • নাম নথিভুক্ত করতে হবে।
    • নাম নথিভুক্ত করার জন্য‌ পূর্ব ঘোষিত দিনে এলাকার নির্দিষ্ট স্থানে ছবি তোলা , নথিভুক্তকরণ এবং স্মার্ট কার্ড দেওয়ার জন্য‌ প্রকল্পের প্রতিনিধি যাবেন।
    • পরিবারের সকলকে ভোটার পরিচয়পত্র বা অন্য‌ ছবিসহ পরিচয়পত্র , লাল বা হলুদ রেশন কার্ড নিয়ে আসতে হবে।
    • নাম নথিভুক্ত করার জন্য‌ পরিবার পিছু ৩০ টাকা জমা নেওয়া হবে।

    পরিকল্পনার সুযোগ সুবিধা

    • নথিভুক্ত পরিবারের পাঁচ জন বছরে ৩০ হাজার টাকা অবধি বিনামূল্য‌ে চিকিৎসার খরচ পাবেন।
    • এই প্রকল্পে সুবিধা পাওয়ার জন্য‌ নথিভুক্ত হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে অবশ্য‌ই ভর্তি হতে হবে।
    • নথিভুক্ত হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসার জন্য‌ আগে থেকেই খরচের পরিমাণ নির্ধারিত করে দেওয়া আছে।
    • হাসপাতালে ভর্তির এক দিন আগে থেকে ছাড়া পাওয়ার ৫ দিন পর পর্যন্ত চিকিৎসার সমস্ত খরচ পাওয়া যাবে।
    • প্রতি বার ভর্তির জন্য‌ যাতায়াত বাবদ ১০০ টাকা। (বার্ষিক সর্বাধিক ১ হাজার টাকা) পাওয়া যাবে।
    • এই সুবিধা পাওয়ার জন্য‌ কোনও নগদ টাকা খরচ করতে হবে না।
    • নথিভুক্ত হাসপাতাল বা নার্সিং হোমের তালিকা স্মার্ট কার্ড দেওয়ার সময় বা নথিভুক্তকরণের সময় জানিয়ে দেওয়া হবে।
    • নির্দিষ্ট সারণি অনুসারে যে কোনও ব্য‌ধি , অসুস্থতা , দুর্ঘটনা ও প্রসূতি সংক্রান্ত খরচ পাওয়া যাবে। দুর্ঘটনাজনিত মৃত্য‌ুর ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে।

    কোথায় এই পরিষেবা পাওয়া যাবে

    • ন্য‌াশনাল ইন্সিওরেন্স কোম্পানির পলিসি পরিষেবা টিপিএ - র মাধ্য‌মে দেবে
    • ইন্সিওরেন্স কোম্পানি ২৪ ঘণ্টা কল সেন্টারের মাধ্য‌মে টোল ফ্রি টেলিফোনের ব্য‌বস্থা করবে।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    ডায়েরিয়া ও যক্ষ্মা সংক্রান্ত কর্মসূচি

    স্বাস্থ্য‌ বিধান অভিযানের অর্থ সমস্ত স্তরের মানুষকে স্বাস্থ্য‌ সংক্রান্ত সরকারি কর্মসূচির আওতায় আনা। শুধু চিকিৎসার সুযোগ করে দেওয়াই এর লক্ষ্য‌ নয়। স্বাস্থ্য‌ নাগরিকের অধিকার এই বোধ গড়ে তোলার জন্য‌ও উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার ব্য‌বস্থা করা হয়েছে।

    ডায়েরিয়া দূরীকরণ কর্মসূচি

    কর্মসূচির

    উদ্দেশ্য

    • আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমিয়ে আনা।

    • রোগটি চিহ্নিত করার সঙ্গে সঙ্গে রোগের নজরদারি করা।

    • মানুষকে রোগ সম্পর্কে সচেতন করা।

    • স্বাস্থ্য বিধান কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হয়ে রোগ প্রতিরোধ করা।

    রোগের লক্ষণ

    • এটি জলবাহিত রোগ।

    • এই ধরনের রোগে দিন তিন বারের বেশি পায়খানা , পেটে ব্যথা , বমি বমি ভাব , জল তেষ্টা।

    কী কী পরিষেবা পাওয়া যাবে

    • রোগীকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে যেখানে বিনামূল্যে ও আর এস দেওয়া হয় ও চিকিত্সা করা হয়।

    • ডায়েরিয়া হলে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি , পরিবেশের পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি মেনে চললেই রোগ ছড়ানো বা রোগের প্রতিরোধ সম্ভব।

    সংশোধিত জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি

    কর্মসূচির উদ্দেশ্য

    • প্রত্যেক চিকিত্সার (ডট – ডায়রেক্টলি অবজারভড ট্রিটমেন্ট) দ্বারা স্বল্প সময়ের মধ্যে রোগীকে সম্পূর্ণ সারিয়ে তোলা।

    • রোগ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা যাতে রোগের লক্ষণ দেখা দিলেই তারা নিজেরাই চিকিত্সার জন্য এগিয়ে আসে এবং চিকিত্সা চালিয়ে যায়।

    রোগের লক্ষণ

    • তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঘুসঘুসে জ্বর , কাশি , বুকে ব্যথা , কাশির সাথে রক্ত পড়া।

    • এলাকার সকল স্তরের আক্রান্ত মানুষ এই রোগের পরিষেবা থেকে চিকিত্সার সুযোগ পাবেন।

    কী কী পরিষেবা পাওয়া যাবে

    • যাদের থুতুতে যক্ষ্মার জীবাণু পাওয়া যাবে তাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে নিয়মিত বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হবে। রোগী ওষুধ খাচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সামনে তা খেতে হবে। তা ছাড়াও রোগীর কফ , থুতু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে , হাসপাতালে বিনামূল্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে।

    • শিশুদের বি সি জি টিকা দেওয়ার ব্যাপারে পরিবার ও এলাকার সকলকে উত্সাহিত করা।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    এইডস ও কুষ্ঠ সংক্রান্ত কর্মসূচি

    সংশোধিত এইডস নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি

    কর্মসূচির উদ্দেশ্য

    • এইচ . আই . ভি - র সংক্রমণের প্রসার রোধ করার মাধ্যমে রোগের নিয়ন্ত্রণ ও রোগ এবং রোগীর নজরদারি।

    • আক্রান্তের / রোগে মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনা।

    • রোগীর প্রতি মানুষের মনোভাব ও আচরণ পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ।

    • সরকার ও বেসরকারি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে রোগের নিয়ন্ত্রণ।

    • রোগ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা যাতে তারা নিজেরাই চিকিত্সার জন্য এগিয়ে আসে।

    রোগের লক্ষণ

    • শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। সেই সঙ্গে কিছু অসুস্থতার লক্ষণ শরীরে ফুটে ওঠে।

    কী কী পরিষেবা পাওয়া যাবে

    • এই ধরনের রোগ চিহ্নিত হলে রোগী সরাসরি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করবে কারণ

    • জেলার অন্তর্গত বিভিন্ন হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজগুলিতে কমিউনিটি কেয়ার সেন্টার ও বিভিন্ন সেন্টার রয়েছে যা রাজ্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে চালু হয়েছে।

    • এই সেন্টারগুলি ওষুধ বিতরণ , চিকিত্সা , যত্ন ও সহায়তা প্রদান করে থাকে। এই সেন্টারগুলির ঠিকানা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাওয়া যাবে।

    • জেলা স্তরে এইচ আই ভি আক্রান্ত মানুষদের সংগঠিত নেটওয়ার্কগুলো একটি ড্রপ ইন সেন্টার তৈরি করে এইচ আই ভি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য ও সহায়তা দিয়ে থাকেন। এই সেন্টার সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান , পুষ্টিগত সহায়তা , অর্থ উপার্জনের স্বার্থে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন , প্রশিক্ষণ ইত্যাদি করে থাকে।

    জাতীয় কুষ্ঠ নিবারণ কর্মসূচি

    কর্মসূচির

    উদ্দেশ্য

    • রোগ চিহ্নিত করার সঙ্গে সঙ্গে রোগের চিকিত্সা করা।

    • রোগ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা যাতে রোগের লক্ষণ দেখা দিলেই তারা নিজেরাই চিকিত্সার জন্য এগিয়ে আসে।

    রোগের লক্ষণ

    • শরীরের যে কোনও অংশে সাদা দাগ হলে তাতে যদি কোনও অনুভূতি না থাকে তবে কুষ্ঠ সন্দেহ করা যেতে পারে।

    • সাধারণত শরীরে ফ্যাকাসে বা লালচে দাগ দেখা যায়।

    • অনেক সময় পুরানো রোগীদের ক্ষেত্রে আঙুলের অসারতাসহ বিকৃতি বা ঘা দেখা দিতে পারে।

    কী কী পরিষেবা পাওয়া যাবে

    • রোগ প্রমাণিত হলে চিকিত্সা চালিয়ে যেতে হবে এবং মানুষকে বোঝাতে হবে যে এম ডি টি ( মাল্টি ড্রাগ থেরাপি ) চিকিত্সা করার ফলে রোগ ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে সেরে যায়।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি

    জাতীয় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি

    কর্মসূচির উদ্দেশ্য

    • মৃত্যু ও অসুস্থতার সংখ্যা কমিয়ে আনা।

    • রোগী খুঁজে বের করে সঙ্গে সঙ্গে চিকিত্সা করা।

    • মশা নিয়ন্ত্রণ ও মশারি ব্যবহারের মাধ্যমে মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করা।

    • পরিবেশ পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সকলকে সচেতন করা।

    রোগের লক্ষণ

    • এটি বাহক বা কীটবাহিত রোগ।

    • রোজ / দুই - এক দিন অন্তর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে এবং ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে যায়

    কী কী পরিষেবা পাওয়া যাবে

    • ম্যালেরিয়া হয়েছে সন্দেহ হলেই সঙ্গে সঙ্গে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে।

    • স্বাস্থ্যকেন্দ্র , পুরসভা ও সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে রক্ত পরীক্ষা করে ম্যালেরিয়ার ওষুধ দেওয়া হয়।

    জাতীয় কালাজ্বর নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি

    কর্মসূচির

    উদ্দেশ্য

    • আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমিয়ে আনা।

    • রোগী খুঁজে বের করে সঙ্গে সঙ্গে চিকিত্সা করা।

    • রোগের নিয়মিত নজরদারি করা।

    • রোগ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা।

    রোগের লক্ষণ

    • এটি বাহক বা কীটবাহিত রোগ।

    • বেলে মাছির ( স্যান্ড ফ্লাই ) কামড়ে এই রোগ হয়

    • অনেক দিন ধরে জ্বর , পিলে বড় হওয়া ( পেট বড় হওয়া ), দুর্বলতা , খিদে থাকা সত্ত্বেও শরীর শুকিয়ে যাওয়া।

    কী কী পরিষেবা পাওয়া যাবে

    • অনেক দিন ধরে জ্বর থাকলে রোগীকে রক্ত পরীক্ষা করার জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।

    • রোগ প্রমাণিত হলে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে নিয়মিত ইঞ্জেকশন নেওয়া বা ওষুধ খেতে হবে।

    • স্বাস্থ্যকেন্দ্র , পুরসভা ও সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিত্সার সুযোগ পাওয়া যায়।

    ডেঙ্গু বা ডেঙ্গু হোমোরেজিক ফিভার নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি

    কর্মসূচির উদ্দেশ্য

    • রোগের প্রকোপকে আয়ত্তে রাখা।

    • রোগ চিহ্নিত করার সঙ্গে সঙ্গে রোগের চিকিত্সা করা।

    • রোগ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা ও রোগের নিয়ন্ত্রণ করা।

    • পরিবেশের যাতে উন্নতি ঘটানো যায় তার জন্য সচেষ্ট থাকা।

    রোগের লক্ষণ

    • এটি বাহক বা কীটবাহিত রোগ। এই রোগ ঈডিশ মশার মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়। কোনও রোগী এলাকায় রোগ বয়ে নিয়ে এলে এলাকায় রোগ ছড়িয়ে পড়ার ভয় থাকে।

    • এই রোগে খুব জ্বর , মাথা ব্যথা , রক্তবমি , পায়খানার সঙ্গে রক্ত পড়া।

    কী কী পরিষেবা পাওয়া যাবে

    • এই রোগের কোনও ওষুধ নেই। শুধুমাত্র মশার ( ঈডিশ মশা ) কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করা এবং মশা যাতে জন্মাতে না পারে তা দেখতে হবে।

    • রোগ যাতে না ছড়ায় তার জন্য রোগীকে সত্বর হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা।

    • রোগীর রক্ত পরীক্ষা করতে হবে।

    • স্বাস্থ্যকেন্দ্র , পুরসভা ও সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে রক্ত পরীক্ষা ও ডেঙ্গুর চিকিত্সা করা হয়।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    অন্ধত্ব নিবারণ ও আয়োডিনের অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ কর্মসূচি

    জাতীয় অন্ধত্ব নিবারণ কর্মসূচি

    কর্মসূচির উদ্দেশ্য

    • এলাকায় দৃষ্টিহীনদের সংখ্যা চিহ্নিত করে এবং উপযুক্ত চিকিত্সার মাধ্যমে দৃষ্টিহীনতার নিয়ন্ত্রণ।

    রোগের লক্ষণ

    • চোখের সমস্যাজনিত কারণে দেখেত না পাওয়া ( ছানি , আঘাত , অপুষ্টি ইত্যাদি )

    কী কী পরিষেবা পাওয়া যাবে

    • দৃষ্টিহীনদের সংখ্যা চিহ্নিত করা এবং উপযুক্ত চিকিত্সার দায়িত্ব ডিস্ট্রিক্ট ব্লাইন্ডনেস সোসাইটির। তা ছাড়া বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে।

    • স্বাস্থ্যকর্মীদের রোগের লক্ষণ নির্ণয় করা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

    • ছানিজনিত দৃষ্টিহীনদের সংখ্যা চিহ্নিত করে হাসপাতালে বা শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয় ও বিনামূল্যে অস্ত্রোপচার করা হয়।

    আয়োডিনের অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ কর্মসূচি

    কর্মসূচির উদ্দেশ্য

    • আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমিয়ে আনা।

    • সমষ্টি স্তরে নজরদারির ব্যবস্থা করা।

    রোগের লক্ষণ

    • এর ফলে গর্ভপাত , মৃত সন্তান প্রসব , বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশ না ঘটা , শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতা , হাঁটাচলার অসুবিধা ও গলগন্ড ইত্যাদি রোগ দেখা যায়।

    কী কী পরিষেবা পাওয়া যাবে

    • আয়োডিনযুক্ত লবণের ব্যবহার , কয়েক ধরনের সামুদ্রিক মাছ খাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে নিরন্তর প্রচার।

    • পঞ্চায়েত , স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মাধ্যমে পরিষেবা পাওয়া যায়।

    সম্পর্কিত

    অন্যান্য

    পরিষেবা

    আধিকারিক / উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।

    • জেলা পরিষদ

    • জেলা সংযোজক ( জন উদ্যোগে জনস্বাস্থ্য

    প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বি এম ও এইচ বা সহকারী চিকিত্সক

    • স্বাস্থ্য – উপকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মী

    • সদর স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রের সুপারভাইজার।

    পরিবেশের স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য বিধান

    • জেলা পরিষদ ,

    • জেলা সংযোজক স্বাস্থ্য বিধান

    • পঞ্চায়েত সমিতি / বি ডি ও অফিস

    • গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস

    বিশুদ্ধ পানীয় জল

    • জেলা পরিষদ

    • জেলার পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের জেলা আধিকারিক

    • পঞ্চায়েত সমিতি / বি ডি ও অফিস

    • গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস

    তা ছাড়াও চিকিত্সার জন্য গ্রাম স্তর থেকে জেলা স্তর পর্যন্ত রয়েছে গ্রামীণ হাসপাতাল , মহকুমা হাসপাতাল ও জেলা হাসপাতাল। এই হাসপাতালে বিভিন্ন রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক রয়েছেন। প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

    প্রত্যেক ক্ষেত্রেই রোগ চিহ্নিত করা ও রোগের চিকিত্সা বিনা মূল্যেই হয়ে থাকে।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    স্বাস্থ্যবিধান ও নির্মল ভারত অভিযান

    স্বাস্থ্যবিধান কর্মসূচিতে পঞ্চায়েতের ভূমিকা

    স্যানিটেশন বা স্বাস্থ্যবিধান কতগুলি অভ্যাস বা আচরণবিধি – সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে যা মেনে চলা প্রয়োজন। স্বাস্থ্যবিধান বলতে এখন বোঝায় —

    • পানীয় জলের নিরাপদ সংরক্ষণ ও ব্যবহার।
    • ব্যবহৃত জলের নিরাপদ নিকাশি ব্যবস্থা।
    • আবর্জনার নিরাপদ নিকাশি ব্যবস্থা।
    • মানুষের মলমূত্রের নিরাপদ নিকাশি ব্যবস্থা।
    • বাসস্থানের পরিচ্ছন্নতা ও খাদ্যদ্রব্যের নিরাপদ সংরক্ষণ ও ব্যবহার।
    • কিছু প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত আচরণবিধি মানা।
    • গ্রামের সামগ্রিক পরিবেশ রক্ষা।

    জল পরীক্ষা, রক্ষণাবেক্ষণ, নজরদারি ও উন্নতিসাধন কর্মসূচিতে পঞ্চায়েতর ভূমিকা

    বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ, পানীয় জলের ব্যবহার ও সংরক্ষণের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এই উদ্দেশ্যে পানীয় জল সরবরাহ দফতর একটি জাতীয় গ্রামীণ পানীয় জলের গুণগত মানের রক্ষণাবেক্ষণ ও নজরদারি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এই কর্মসূচি অনুযায়ী বত্সরে অন্তত এক বার সমগ্র পানীয় জলের উত্সগুলির বিভিন্ন রাসায়নিক এবং জীবাণুঘটিত দিকগুলির পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

    পশ্চিমবঙ্গে এই কর্মসূচির রূপায়ণে পঞ্চায়েতের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়ে জল সংগ্রহ, জল পরীক্ষা, পরীক্ষার ফল অনুযায়ী জনসাধারণের পানীয় জল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনমতো পানীয় জলের গুণমানের উন্নতিসাধন করার বিষয়গুলি এই কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই পদ্ধতিকে বাস্তবায়িত করার জন্য প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতভিত্তিক এক জন করে সহায়ক নিয়োজিত করা হবে।

    পঞ্চায়েত সমিতির ভূমিকা

    • গ্রাম – পঞ্চায়েত ও পরীক্ষাগারের সঙ্গে কাজ করা এবং অসুবিধাগুলি দূর করা।

    • মাসিক সভায় জল পরীক্ষার ফলাফলগুলি এবং গুণগতমান সম্পর্কিত আলোচনা করা।

    • ব্লক স্তরে পরীক্ষাগারে জল পরীক্ষার পরিমাণ অনুযায়ী প্রতি মাসের শেষে নমুনা পিছু ৭৫ টাকা হারে অর্থ প্রদান করা।

    এ ছাড়া কলকাতার অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ প্রতিষ্ঠানকে সফল কর্মসূচি প্রণয়নের জন্য রাজ্যের বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান হিসাবে ধরা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন জল পরীক্ষাগারে পরীক্ষিত জলের ফলাফলগুলি পুন:পরীক্ষা করবেন এবং যদি প্রয়োজন হয় প্রতিকারের বিষয়ে মতামত দেবেন।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    জলে আর্সেনিক দূষণ রোধে পঞ্চায়েতের ভূমিকা

    গত দু’ দশক ধরে পশ্চিমবঙ্গের ব্যাপক এলাকা জুড়ে পানীয় জলের গভীর সংকট দেখা দিয়েছে। আর্সেনিক দূষণ এর কারণ। পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও হুগলি নদীর দ্বারা সীমাবদ্ধ বিশাল ভূখণ্ড জুড়ে আর্সেনিক সমস্যা বিস্তৃত।

    পঞ্চায়েতের ভূমিকা

    • আর্সেনিক দূষণ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে। পানীয় জলের উত্সগুলির নিয়মিত পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। দরকার হলে টাকা দিয়েও পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে ও তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে।

    • সংক্রামিত পানীয় জলের উত্সগুলির ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

    • আর্সেনিক বিষক্রিয়ায় যাঁরা ভুগছেন তাঁদের পরীক্ষা করে চিহ্নিত করতে হবে এবং তথ্যগুলি রাখতে হবে।

    • বিকল্প উত্স হিসাবে পাতকুয়া বা পুকুরের জল সুরক্ষিত ও শোধন করে পান করার পরামর্শ দিতে হবে।

    • নলকূপের জল কম খরচের ফিল্টারের সাহায্যে শোধন করে পান করার পরামর্শ দিতে হবে।

    • রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেলেই রোগীকে ডাক্তারের কাছে পাঠানোর পরামর্শ দিতে হবে।

    • জল সংরক্ষণ ও জলের সামগ্রিক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।

    জাতীয় গ্রামীণ পানীয় জল কর্মসূচি

    কর্মসূচির উদ্দেশ্য

    • গ্রামীণ এলাকায় পরিবারের সকলের জন্য সব সময় রান্না , খাওয়া অথবা অন্যান্য কাজের জন্য বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা।

    • প্রত্যেকটি বিদ্যালয় ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা।

    কী কী পরিষেবা পাওয়া যাবে

    • প্রত্যেকটি পরিবারের জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা।

    • যে সকল এলাকায় ( পাহাড়ি / কম বৃষ্টিপাত ) পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে সেই সব এলাকায় পানীয় জলের ব্যবস্থা।

    • বৃষ্টির জল সংরক্ষণ ব্যবস্থাকে কার্যকর করা।

    • এলাকায় জলাধার নির্মাণ , নলকূপ তৈরি করার মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা।

    • বিপর্যয়ের সময় পরিশোধিত পানীয় জলের ব্যবস্থা।

    • প্রত্যেকটি বিদ্যালয় ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা।

    • পানীয় জলের গুণগত মানের রক্ষণাবেক্ষণ ও নজরদারি।

    • বছরে অন্তত এক বার পানীয় জলের উত্সগুলির পরীক্ষানিরীক্ষার ব্যবস্থা।

    • গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক এক জন করে সহায়ক নিযুক্ত করা হবে যার কাজ হবে উত্স থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পৌছে দেওয়া ও জল পরীক্ষার ফলাফল মানুষকে জানানো।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    স্বাস্থ্য‌বিধান অভিযান

    ভারত সরকারের নবম পঞ্চবর্ষিকী পরিকল্পনার মধ্য‌ে গ্রামীণ প্রতিটি পরিবারকে স্বাস্থ্য‌বিধান কর্মসূচির দ্রুত আওতাভুক্ত করার লক্ষ্য‌ে সার্বিক স্বাস্থ্য‌বিধান অভিযান শুরু করা হয়েছিল। আমাদের রাজ্য‌ের সবক’টি জেলায় ২০০০-১ সাল থেকে এই অভিযানের কাজ শুরু হয়েছে। এই অভিযানের উদ্দেশ্য‌ঃ-

    • গ্রামীণ এলাকায় মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন
    • ২০১২ সালের মধ্য‌ে গ্রামীণ সকল পরিবারকে শৌচাগারের আওতাভুক্ত করা।
    • গ্রামীণ এলাকায় সকল প্রাথমিক বিদ্য‌ালয়ে স্বাস্থ্য‌সম্মত শৌচাগারের ব্য‌বস্থা করা।
    • জলবাহিত ও মলবাহিত রোগ সংক্রমণের মাধ্য‌মে শিশুমৃত্য‌ু ও অকাল মৃত্য‌ুর হার কমানো।
    • তরল ও কঠিন আবর্জনা নিষ্কাশনের মাধ্য‌মে নির্মল পরিবেশ তৈরি করা।
    • নারীর সম্মান ও আব্রুর অধিকার সুনিশ্চিত করা।

    স্বাস্থ্য‌বিধান অনুযায়ী গ্রামে কাজ শুরু হলেও এখনও তার প্রভাব সে ভাবে অনুভূত হয়নি। তবে টাকার অঙ্কে গ্রামীণ স্বাস্থ্য‌ প্রকল্পের বরাদ্দ বরাবরই বেড়েছে। শুধু শতাংশের হিসাবেই নয়, প্রকৃত খরচের হিসাবেও রাজ্য‌ সরকারগুলি গ্রামীণ স্বাস্থ্য‌ের ব্য‌াপারে আগের চেয়ে অনেক বেশি হারে খরচ করছে। যদিও কাঙ্খিত মানের কাছাকাছি আসতে বেশ কিছুটা দেরি আছে তবুও সচেতনতা বাড়ার ফলে গ্রামে মৃত্য‌ুর হার অনেকটা কমানো সম্ভব হয়েছে। বিশেষত মহামারি জাতীয় অসুখের ক্ষেত্রে সরকারি হস্তক্ষেপ দ্রুত হওয়ায় প্রায় প্রতিটি রাজ্য‌েই উল্লেখযোগ্য‌ ভাবে বেঁচে থাকার বয়সসীমা বেড়েছে। সরকার এখন বিদ্য‌ালয়গুলিতে একেবারে নিচু শ্রেণি থেকেই স্বাস্থ্য‌পরীক্ষা ব্য‌বস্থা চালু করতে চাইছে। এর ফলে বহু রোগ এক দম গোড়াতেই চিহ্নিত করে তার চিকিৎসা ব্য‌বস্থা করা সম্ভব হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্য‌ পরীক্ষার কাজ যাতে শিক্ষকরা করতে পারেন সেই জন্য‌ তাঁদের প্রশিক্ষিত করার প্রয়াস গ্রহণ করা হয়েছে।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    নির্মল ভারত অভিযানের উদ্দেশ্য ও বৈশিষ্ট্য

    অভিযানের উদ্দেশ্য

    • নির্মল ভারত অভিযানের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্যবিধানের কাজ আরও তরান্বিত করা।
    • গ্রামীণ এলাকায় সমস্ত বিদ্যালয়ে জল এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধানের সুবিধাগুলি পৌঁছে দেওয়া।
    • মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ও ব্যয় সাশ্রয়ী প্রযুক্তির সম্প্রসারণে উত্সাহিত করা।
    • গ্রামীণ এলাকায় পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য মানুষকে সংগঠিত করে স্বাস্থ্যবিধানের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
    • কঠিন তরল বর্জ্য নিষ্কাশন পদ্ধতির উপর জোর দেওয়া।

    অভিযানের মূল বৈশিষ্ট্য

    • নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে প্রতি বছর নির্মল গ্রামগুলিকে চিহ্নিত করা।
    • প্রতিটি পরিবারে পানীয় জলের সুবিধাযুক্ত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে প্রাধান্য দেওয়া।
    • অধিক স্বাস্থ্যবিধানের সুবিধাযুক্ত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে ‘জাতীয় গ্রামীণ পানীয় জল সরবরাহ কর্মসূচি’ রূপায়ণে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রাধান্য দেওয়া।
    • পুষ্টির উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এমন জেলা, আদর্শ গ্রাম এবং সংখ্যালঘুদের ঘন বসতিযুক্ত জেলাগুলিকে প্রাধান্য দেওয়া।
    • স্বাস্থ্যবিধানের উপকরণগুলির চাহিদা তৈরির জন্য ‘আশা’ কর্মীদের উত্সাহ দেওয়া।
    • অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের উত্সাহ দেওয়া।
    • গ্রামীণ এলাকায় কঠিন ও তরল বর্জ্য পদার্থের নিরাপদ নিষ্কাশনের ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নির্মল পরিবেশ গড়ে তোলা।
    • মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিযুক্তি প্রকল্প (এমজিএনরেগা) ও নির্মল ভারত অভিযানের সঙ্গে যথাযথ মেলবন্ধন ঘটিয়ে স্বাস্থ্যবিধান কর্মসূচিকে আরও ভালো ভাবে রূপায়ণ করা।
    • স্বাস্থ্যবিধান কর্মসূচির জন্য পঞ্চায়েতিরাজ প্রতিষ্ঠান এবং গ্রামীণ জল ও স্বাস্থ্যবিধান কমিটি ইত্যাদি গড়ে তোলার জন্য নির্দিষ্ট অর্থের ব্যবস্থা।
    • বেসরকারি সংস্থা / সুশীল নাগরিকদের এই কাজে যুক্ত করা।
    • সার্বিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রচার প্রসার অভিযানের (আইইসি) উপর জোর দেওয়া।

    নির্মল ভারত অভিযানের প্রয়োজনীয় দিকটি প্রথম তুলে ধরেন অর্থনীতিবিদরা। তাঁদের মতে, অপরিচ্ছন্নতার জন্য‌ দেশের মোট জিডিপি নষ্টের পরিমাণ অনেকটাই। এর জন্য‌ নবপ্রজন্মকে মাশুল দিতে হবে। দেশের আয় থেকে একটা বড় টাকা স্বাস্থ্য‌বিধানের জন্য‌ খরচ হচ্ছে। সেদিকে নজর রেখে স্বচ্ছা ও নির্মল ভারত অভিযানের গুরূত্ব বুঝতে হবে।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    নির্মল ভারত অভিযানের অধীন ব্যবস্থা

    • চিহ্নিত এ পি এল ভুক্ত পরিবার অর্থাৎ তফশিলি জাতি/উপজাতি, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক, ভূমিহীন পরিবার, দৈহিক প্রতিবন্ধী, মহিলা পরিচালিত পরিবার এবং সকল বি পি এল ভুক্ত পরিবার শৌচাগার নির্মাণের জন্য আর্থিক সুযোগ সুবিধা পাবেন।
    • প্রত্যেক গ্রাম পঞ্চায়েতে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কঠিন ও তরল বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা চালু করা।
    • যে সব গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৫০, ৩০০, ৫০০ অথবা ৫০০-র বেশি পরিবার রয়েছে সেই সব গ্রাম পঞ্চায়েতকে যথাক্রমে ৭ লক্ষ, ১২ লক্ষ, ১৫ লক্ষ এবং ২০ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা। কেন্দ্র ও রাজ্যের অর্থের অনুপাত ৭০ : ৩০।
    • যে সব গ্রাম পঞ্চায়েত নির্মল পুরষ্কার পেয়েছে তাদের ‘নির্মল’ বলে চিহ্নিত করা ও তাদের প্রকল্পকে প্রাধান্য দেওয়া।
    • নির্দিষ্ট অর্থের বাইরে অতিরিক্ত অর্থের সংস্থান রাজ্য সরকারকে করতে হবে।
    • নির্দিষ্ট অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শৌচাগার নির্মাণ ৩১ শে মার্চের মধ্যে শেষ করতে হবে।
    • এমজিএনরেগা থেকে এসএলডবলুএম/এসটিবি/অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য অর্থের সংস্থান করা যেতে পারে।
    • আই ই সি-র একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হল মানব সম্পদ উন্নয়ন। মোট বরাদ্দের ১৫ শতাংশ আই ই সি-র খাতে এবং তার মধ্যে ২ শতাংষ মানব সম্পদ উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে।
    • প্রশাসনিক খাতে ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ করা হয়েছে।
    • ২০০টি নির্দিষ্ট জেলায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সরকারি বিল্ডিংগুলিতে শৌচাগার নির্মাণে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
    • সরকারি বিল্ডিংগুলিকে সরকারের অর্থানুকুল্যে স্বাস্থ্যবিধান ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করা এই অভিযানের অবিচ্ছেদ্দ্য অংশ।
    • ১০,০০০ টাকা করে পারিবারিক শৌচাগার নির্মাণের জন্য নির্দিষ্ট উত্সাহবর্ধক ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা।
    • নির্মল ভারত অভিযানের উত্সাহবর্ধক ভাতা ৩,৫০০ টাকা থেকে ৪,৫০০ টাকা করা হয়েছে। ভারত সরকার ৩,২০০ টাকা, রাজ্য সরকার ১,৪০০ টাকা এবং উপভোক্তারা ৯০০ টাকা করে দেবে।
    • পাহাড়ি এবং দুর্গম এলাকার জন্য অতিরিক্ত ৫০০ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা।
    • এমজিএনরেগা থেকে ৪,৫০০ টাকা অবধি দেওয়ার ব্যবস্থা।
    • বিদ্যালয় শৌচাগার নির্মাণের জন্য খরচ ৩৫,০০০ টাকা।
    • দুর্গম এলাকায় শৌচাগার নির্মাণের জন্য খরচ ৩৮,০০০ টাকা।
    • অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শৌচাগার নির্মাণের জন্য খরচ ৮,০০০ টাকা। দুর্গম এলাকার জন্য খরচ ১০,০০০ টাকা (কেন্দ্র ও রাজ্যের অর্থের অনুপাত ৭০ : ৩০ )।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    শিক্ষা সুরক্ষা

    শিশুসন্তানের জন্য শিক্ষা কর্মসূচি

    সর্বশিক্ষা অভিযান

    এর মূল লক্ষ্য‌ ৫-১৪ বছর বয়সি শিশুর শিক্ষাকে সুনিশ্চিত করা। এর জন্য‌ গঠিত হয়েছে সর্বশিক্ষা অভিযান মিশন। ভারত সরকার ও রাজ্য‌ সরকারগুলির যৌথ উদ্য‌োগে সারা দেশে এই শিক্ষা অভিযান চলছে। এর জন্য‌ যে টাকা বরাদ্দ হবে তার ৬১ শতাংশ শিক্ষার মানোন্নয়ন, ৩৩শতাংশ পরিকাঠামো ও ৬ শতাংশ প্রকল্প পরিচালনার খাতে ব্য‌য় হবে।

    • সব শিশুকে বিদ্য‌ালয়ের আওতায় আনা।
    • সব শিশুকে বিদ্য‌ালয়ে ধরে রাখা, জীবনের উপযোগী ও ভালো মানের শিক্ষা দেওয়া।
    • সব শিশুর শিক্ষা সম্পূর্ণ করা।
    • বিনামূল্য‌ে শিশুদের পাঠ্য‌ পুস্তক দেওয়া।
    • শিশুদের মধ্য‌াহ্নকালীন খাবার দেওয়া।
    • শিশুদের স্বাস্থ্য‌ পরীক্ষা।
    • বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সহায়ক সরঞ্জাম দেওয়া।
    • মাতা শিক্ষা সমিতি গঠন।
    • বিদ্য‌ালয়ের পোশাক দেওয়া।
    • শিশু শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন।
    • শিশু শ্রমিক বিদ্য‌ালয় স্থাপন।
    • সেতু পাঠক্রম কেন্দ্র স্থাপন।

    এই প্রকল্পটি চালায় বিদ্য‌ালয় শিক্ষা দফতর

    শিশু শিক্ষা কর্মসূচি

    এই প্রকল্পটি রাজ্য‌ের নিজস্ব। এই প্রকল্পে যে সব শিশু বিদ্য‌ালয়ের সুযোগ পায় না তাদের সুবিধামাফিক স্থানে স্থানীয় মানুষের উদ্য‌োগে বিদ্য‌ালয় গড়ে তোলা হয়। এক কিলোমিটারের মধ্য‌ে বিদ্য‌ালয় নেই এমন গ্রামে ২০ জন অভিভাবক চাইলে একটি শিশু শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করা সম্ভব। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর এটি চালায়।

    মাধ্য‌মিক কর্মসূচি

    এটি শিশু শিক্ষার পরবর্তী ধাপ গড়ে। এই কর্মসূচির আওতায় পঞ্চম থেকে অষ্টম মান পর্যন্ত ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করতে পারে। যে কোনও গ্রামের তিন কিলোমিটারের মধ্য‌ে স্কুল না থাকলে সেখানে এটি খোলা যায়। তবে বর্তমানে গ্রাম পঞ্চায়েত পিছু অনধিক একটি বিদ্য‌ালয়খোলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর এটি চালায়।

    রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্য‌ালয়

    অষ্টম মানের পর মাধ্য‌মিকে বসার জন্য‌ রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্য‌ালয়ের মারফত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বিদ্য‌ালয় শিক্ষা দফতর এটি চালায়।

    সেতু পাঠক্রম

    যে শিশুরা কোনও দিনই বিদ্য‌ালয়ে যায়নি অথবা অল্প দিন বিদ্য‌ালয়ে পড়ার পরেই স্কুলছুট হয়ে গিয়েছে এ রকম কুড়ি জনকে একত্র করে তাদের বয়সের উপযোগী শিক্ষার সুযোগের জন্য‌ই সেতু পাঠক্রম। বিদ্য‌ালয় শিক্ষা দফতর এটি চালায়

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    গ্রাম শিক্ষা কমিটি (ভিলেজ এডুকেশন কমিটি)

    গ্রাম সংসদের সভাপতির সভাপতিত্বে, প্রাথমিক বিদ্য‌ালয়ের প্রধান শিক্ষক, সচিব ও অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগীদের নিয়ে গঠিত এই কমিটি।

    • ১) এই কমিটি প্রাথমিক শিক্ষার যাবতীয় বিষয় দেখভাল করবে।
    • ২) কমিটির অ্য‌াকাউন্ট থাকবে ও সরকার যে অর্থ সর্বশিক্ষা অভিযান প্রকল্প থেকে খরচ করবে তা এই কমিটির মাধ্য‌মে করবে।
    • ৩) অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্য‌ে কে কোন বিষয়ে পিছিয়ে পড়েছ সে বিষয়ে আলোচনা করবে।
    • ৪) বিদ্য‌ালয়ের প্রত্য‌েক শিক্ষকপিছু শিক্ষা-উপকরণ তৈরির যে বরাদ্দ প্রতি বছর হয় তা কী ভাবে ব্য‌বহার করা যায় আলোচনা করবে।
    • ৫) মিড ডে মিলের খাবার কী ভাবে উন্নত করা যায় গ্রামবাসীর সহযোগিতায় সেটি ঠিক করবে। এর গুরুত্ব বর্তমানে সর্বাধিক।

    এস এস কে পরিচালন সমিতি

    এস এস কে বস্তুত গোষ্ঠী পরিচালিত শিক্ষাব্য‌বস্থা। এই সমিতিই বিদ্য‌ালয় খোলার সুপারিশ করেছে ও সহায়িকা নিয়োগ করেছে। তাদেরই দায়িত্ব সহায়িকা ও লেখাপড়ার মান দেখভাল করা। সহায়িকাদের নিয়োগ পুনর্নবীকরণ করা বা না করা, বেতন দেওয়ার ব্য‌বস্থা করা, বিদ্য‌ালয় গৃহ গড়ে তোলার ব্য‌বস্থা করা, সরকার যদি কোনও অর্থ দেয় তার সর্বোচ্চ সদ্ব্য‌বহার করা ইত্যাদিই এই সমিতির কাজ।

    মাতা শিক্ষা কমিটি

    প্রাথমিক বিদ্য‌ালয় স্তরে মায়েদের নিয়ে এই কমিটি তৈরি হয়েছে ছেলেমেয়েদের শিক্ষার গুণগত মান পর্যালোচনার জন্য‌ ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করার জন্য‌।

    কমিটির নৈতিক দায়িত্ব

    এই ধরনের কমিটিগুলির বেশ কিছু বাড়তি কাজ ও দায়িত্বও থাকে। তারা নৈতিক বোধ জনিত বিষয়গুলি গ্রামবাসীদের মনে তুলে ধরতে সাহায্য‌ করে। যেমন কম বয়েসে মেয়েদের বিবাহ দেওয়া উচিত কিনা সে বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার ব্য‌াপারে এই ধরনের কমিটি গুরূত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। গ্রামের বিদ্য‌ালয়গুলিতে ঠিকমতো পড়াশোনা হচ্ছে কি না সে ব্য‌াপারেও কমিটিগুলি দেখভাল করে থাকে।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    মিড ডে মিল

    মিড ডে মিল কর্মসূচির লক্ষ্য‌

    • ১) সকল শিশুকে বিদ্য‌ালয়মুখী করে তোলা
    • ২) তাদের প্রতি দিন হাজিরা সুনিশ্চিত করা
    • ৩) শিশুদের পুষ্টি জোগানো

    ছাত্র-ছাত্রী পিছু বরাদ্দ

    মাথাপিছু বরাদ্দ

    প্রাথমিক

    উচ্চ প্রাথমিক

    খাদ্য‌শস্য

    ১০০ গ্রাম

    ১৫০ গ্রাম

    ডাল

    ২০ গ্রাম

    ৩০ গ্রাম

    সবজি ( পাতা সহ )

    ৫০ গ্রাম

    ৭৫ গ্রাম

    তেল

    ৫ গ্রাম

    ৭ . ৫ গ্রাম

    নুন মশলা

    প্রয়োজন মতো

    প্রয়োজন মতো

    মাথাপিছু টাকার বরাদ্দ

    প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ২.৮৮ টাকা ও উচ্চ প্রাথমিকে ৩.৮১ টাকা

    মিড ডে মিল কারা তৈরি করেন

     

    সাধারণত স্কুল কর্তৃপক্ষকেই মিড ডে মিল তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।আবার অনেক ক্ষেত্রে মিড ডে মিল তৈরি করার দায়িত্ব স্বনিযুক্তি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত গ্রুপগুলিকেও দেওয়া হয়ে থাকে। তারা একটি বা একাধিক স্কুলে মিড ডে মিল পরিবেশনের দায়িত্ব নেন। কখনও স্কুলের চৌহদ্দির মধ্য‌েই রান্না করার ব্য‌বস্থা করা হয় আবার কখনও বা কোনও কিউনিটি কিচেনে রান্না করে স্বনিযুক্তি প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত মহিলারা স্কুলে স্কুলে তা পৌঁছে দিয়ে আসেন। মিড ডে মিল প্রকল্পে সামাজিক ব্য‌বধান দূর করারও অনেক ব্য‌বস্থা রয়েছে। যেমন এমন কোনও রন্ধনকারীকে বা পাচককে কাজে লাগানো হল যে হয়তো তথাকথিত নীচু জাতির প্রতিনিধ। কিন্তু সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকরা জাতের বিচার না করেই সেই খাবার গ্রহণে অনুপ্রাণিত হলেন। তবে ব্য‌তিক্রম যে নেই তা নয়। সে ক্ষেত্রে সামাজিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। মিড ডে মিল সংক্রান্ত আগে নানা ধরনের অভিযোগও আসত। কখনও বলা হত সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ যা চাল বা গম পান তা কালোবাজারিতে বাজারে বিক্রি করেন। কয়েকটি অভিযোগের সত্য‌তাও পাওয়া যায়। কিন্তু এ ব্য‌াপারে প্রবল জনসচেতনা তৈরি হওয়া এখন আর এই ্ভিযোগ তেমন ওঠে না।

     

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা

    তফশিলি জাতি ও উপজাতি ও অনগ্রসর ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার উন্নয়নে বৃত্তির সুযোগ

    রক্ষণাবেক্ষণের জন্য‌

    তফঃ ও তফঃ উপঃ -৪০ টাকা করে ১২ মাসে মোট ৪৮০ টাকা (ব্লকে কোটা আছে)

    অনগ্রসর শ্রেণির জন্য‌-৪০ টাকা করে ১০ মাস ৪০০ টাকা (ব্লকের কোটা আছে)

    বইয়ের জন্য‌ অনুদান

    পঞ্চম শ্রেণি বছরে ১২০ টাকা, ষষ্ঠ শ্রেণি বছরে ১৫০ টাকা, সপ্তম শ্রেণি বছরে ২০০ টাকা, অষ্টম শ্রেণি বছরে ২৮০ টাকা, নবম শ্রেণি ৫০০ টাকা বছরে, দশম শ্রেণি ৭৫ টাকা ও পরীক্ষার

    ফি

    বিড়ি শ্রমিকদের জন্য‌ আর্থিক সহায়তা যোজনা

    পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি --- মেয়েদের ৯৪০ টাকা, ছেলেদের ৫০০ টাকা বছরে। স্নাতক স্তর অবধি সুবিধা আছে।

    প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের জন্য‌

    ১৬ বছরের নীচে বয়স এবং পারিবারিক আয় মাসে ৭৫০ টাকার নীচে ও ৪০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা থাকলে বছরে ১২০০ টাকা করে ভাতা পাবে।

    সর্বশিক্ষা মিশন থেকে বছরে ১২০০ টাকার সহায়ক যন্ত্র কেনা যেতে পারে।

    সংখ্য‌ালঘুদের জন্য‌

    বছরে পারিবারিক আয় এক লক্ষ টাকার কম হলে, বিগত পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ নম্বর থাকলে ---

    ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি অবধি --

    • হোস্টেলে থাকলে বছরে ৭২০০ টাকা ভাতা
    • না-থাকলে বছরে ১০০০ টাকা ভাতা

    পারিবারিক আয় বছরে ৮০ হাজার টাকা বা কম হলে এবং বিগত পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ নম্বর থাকলে ---

    • উচ্চমাধ্য‌মিক স্তর পর্যন্ত বছরে ৬ হাজার টাকা
    • স্নাতক স্তরে বছরে ৯ হাজার টাকা
    • স্নাতকোত্তর স্তরে বছরে ১৪ হাজার টাকা বৃত্তি
    • উচ্চশিক্ষার জন্য‌ ৫৯টি ছাত্র-ছাত্রী আবাস আছে ও মোট ৪৩৯০টি আসন আছে। মাসিক ৬০০টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়।

    ছাত্রীদের মেধাবৃত্তি

    অভিভাবকদের বাৎসরিক আয় ৬০৯২০ টাকার নীচে হলে ৫ম থেকে ১০ম অবধি ৩ হাজার জনকে মেধ্য‌বৃত্তি দেওয়া হয়।

    পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি মাসিক ১০০ টাকা, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি মাসে ১২৫টাকা, নবম ও দশম শ্রেণি মাসে ১৫০টাকা।

    মাধ্য‌মিক ও উচ্চমাধ্য‌মিক স্তরে মেধাবৃত্তি

    অভিভাবকদের বাৎসরিক আয় ৩৬ হাজার টাকার নীচে হলে ---

    • নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মাসিক ৪০০টাকা করে। জেলার কোটা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মোট প্রাপক ১২০০জন।
    • মেধা উন্নয়ন প্রকল্পে তফশিলি জাতির ২৪৮ জনকে ও উপজাতির ৭২ জনকে বার্ষিক প্য‌াকেজে ১৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।
    • অপরিচ্ছন্ন পেশায় নিযুক্ত পরিবারের ছাত্রদের বিশেষ বৃত্তি

    মলমূত্র পরিষ্কার করা ও মৃত জীবজন্তু সরানোর কাজ যাঁরা করেন, তাঁদের পরিবারের ছাত্রছাত্রীরা ছাত্রাবাসে থেকে পড়াশোনা করলে মাসে ৩০০-৩৭৫ টাকা ও অনাবাসিকরা মাসে ৪০-৭৫ টাকা ও এককালীন ৫৫০/৬০০টাকা পাবে। ২০০৬-৭ সালে মাত্র ৩৫৬১ জনকে এই টাকা দেওয়া গিয়েছে। এই প্রকল্পের প্রচার হয়নি বলে অনেকে জানেন না।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    জীবিকা সুরক্ষা

    গ্রামীণ জীবিকার সমস্যা

    মানুষের জীবিকার ব্যবস্থা করা উন্নয়ন প্রক্রিয়ার একটা প্রধান অঙ্গ। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি ছাড়া জীবিকা দু’প্রকারের হতে পারে। শারীরিক শ্রম করে কিংবা অর্থ বিনিয়োগ করে।

    গ্রামে শ্রমনির্ভর জীবিকা হতে পারে মজুর খাটা বা শ্রমিকের কাজ করা।

    গ্রামে অর্থ বিনিয়োগ করে জীবিকার উপায় হল

    • কৃষি
    • পশুপালন
    • মৎস্য‌চাষ
    • কুটিরশিল্প/হাতের কাজ
    • ব্য‌বসা।

    দ্বিতীয়টি অর্থাৎ অর্থ বিনিয়োগ করে জীবিকার ব্যবস্থা যত বেশি হয়, ততই সুযোগ বাড়ে প্রথমটির অর্থাৎ শ্রম দিয়ে জীবিকা সংস্থানের।

    অর্থ বিনিয়োগের সমস্য‌া জীবিকার প্রধান সমস্য‌া। গ্রামের মানুষের হাতে পুঁজি থাকে না। সে ঋণ নেয়। সমবায়, ব্য‌াঙ্ক, মহাজন বা স্বনির্ভর দলের কাছ থেকে সে ঋণ গ্রহণ করে। সরকার অবশ্য‌ বিভিন্ন প্রকল্পে কিছু কিছু অনুদান দিয়ে থাকে।

    জীবিকার দ্বিতীয় সমস্য‌া, জল, বীজ, ওষুধ, মালপত্রের সমস্য‌া। অর্থ থাকলেও এগুলি সরবরাহ না থাকলে উন্নতি হয় না।

    তৃতীয় সমস্য‌া জ্ঞানের ও দক্ষতার অভাব। এর জন্য‌ প্রশিক্ষণ নিতে হয়। এই প্রশিক্ষণের অভাবও জীবিকার অন্তরায়।

    চতুর্থ সমস্য‌া বাজারের সমস্য‌া, দামের সমস্য‌া, বিক্রয়ের সমস্য‌া।

    প্রশাসনিক স্তরে জীবিকার সমস্য‌া নিরসনের উদ্য‌োগের অন্তরায় হল, বিভিন্ন দফতর ও প্রকল্পের মধ্য‌ে সমন্বয়ের অভাব। এই সমন্বয় করতে পারে জীবিকা বিষয়ক পরিকল্পনা যেখানে সকল দফতর ও প্রকল্প সুসমন্বিত ভাবে, অসহায়তম ব্য‌ক্তি থেকে জীবিকার ব্য‌বস্থার উন্নতি ঘটানোর সিদ্ধান্ত হবে। সেই সিদ্ধান্তে ঋণ ও অনুদান, পরিকাঠামো ও মালপত্র সরবরাহ, প্রশিক্ষণ ও বাজারের সমন্বয়ের প্রয়োজন। কে কে এই সাহায্য‌ পাবে ও কী ভাবে সেটি অন্য‌দেরও উপকার পৌছে দেবে সেই সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।

    গ্রামীণ জীবিকার সমস্য‌া আমাদের দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত। এই সমস্য‌া সমাধানের জন্য‌ সর্বাগ্রে গ্রামীণ অর্থনীতির আমূল সংস্কার করা প্রয়োজন। এই লক্ষ্য‌ে সরকারকে দৃঢ় ও সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    উপভোক্তাদের দায়িত্ব

    গ্রামীণ জীবিকার নানা সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে গ্রাম সংসদ, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ সিদ্ধান্ত নেয়।

    সেই কারণে এই বিষয়ে সরকারি প্রকল্প ও উদ্য‌োগ কী কী রয়েছে সেগুলি মানুষের জানা প্রয়োজন। সরকারি প্রকল্পের উপভোক্তা বা উপকৃতরা যদি প্রকল্প সম্পর্কে কিছু না জানেন, সেটিকে কাজে লাগিয়ে নিজের/নিজেদের উন্নয়ন ঘটানোর দাবি পেশ করতে না পারেন, তা হলে সেই প্রকল্প স্থায়ী হয় না, প্রকল্প ব্য‌র্থতায় পর্যবসিত হয়।

    প্রকল্পের সুযোগ কতটা বেশি তার উপর নির্ভর করে দাবির পরিমাণ। অর্থাৎ কোনও প্রকল্পে সর্বোচ্চ যত সংখ্য‌ক মানুষকে উপকার দেওয়া যায় সেই অনুপাতে সুবিধা নেওয়ার জন্য‌ মানুষ ক্রমশ সরকারের দ্বারস্থ হয়। সে ক্ষেত্রে কে প্রকল্পের সুযোগ পাবে তা স্থির করে গ্রাম সংসদ। যার সব থেকে অসহায় অবস্থা তা এপিএল বা বিপিএল কার্ড যাই থাকুক না কেন, সেই সবার আগে সুবিধা পাবে। এই সহজ নীতির উপর নির্ভর করে কেন্দ্রীয় সরকার বেশ কয়েকটি নীতি গ্রহণ করেছে। একই নীতিকে ভিত্তি করে বিভিন্ন রাজ্য‌ সরকারও সরকারি প্রকল্পের পদ্ধতি প্রকরণ সুনির্দিষ্ট করেছে। কার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ গ্রামের মানুষ তা জানেন। কে কোন কাজ করতে সক্ষম বা অক্ষম তার সব চেয়ে বেশি ধারণা গ্রামের মানুষেরই আছে। ফলে কোন প্রকল্পে কাকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে তার বিচার গ্রাম সংসদের চেয়ে ভালো আর কেউ করতে পারবে না।

    আবার শুধু উপভোক্তা জেনে বুঝে দাবি করলেই হয় না। জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মী যদি তাঁদের দায়িত্ব আন্তরিক ভাবে পালন না করেন তা হলেও প্রকল্পের উপকার পাওয়া যায় না বা সেটি স্থায়ী হয় না।

    কিন্তু প্রথমে মানুষের জানা প্রয়োজন কী কী সুবিধা সে পেতে পারে।

    উপভোক্তারা এগিয়ে এসে তাঁদের অভিযোগ দায়ের করবেন এটাই কাম্য‌। এই জন্য‌ই চাই জনসচেতনতা মূলক কর্মসূচির প্রসার।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    তাঁত বিষয়ক প্রকল্প

    তাঁত বিষয়ক প্রকল্প

    পশ্চিমবঙ্গে হাতে বোনা তাঁত ব্য‌বহার করেন অসংখ্য‌ তাঁতি। এঁরা কেবলমাত্র কয়েকটি জেলায় সীমাবদ্ধ নন। বহু জেলাতেই এঁদের উপস্থিতি রয়েছে। ক্রমবর্ধমান যন্ত্রচালিত তাঁতের বিস্তারের যুগে তাঁতিদের অবস্থা ক্রমশ সঙ্গিন হয়ে উঠছে। তাঁতিদের জন্য‌ কিছু অসরকারি প্রতিষ্ঠান কাজ করলেও সরকারকে এই শিল্প বাঁচিয়ে রাখার জন্য‌ এগিয়ে এসে কিছু উদ্য‌োগ গ্রহণ করতে হয়েছে। নচেৎ এই পেশার সঙ্গে জড়িত বড় সংখ্য‌ক মানুষ সঙ্কটে পড়তেন। সরকার এগিয়ে আসায় সঙ্কট যে পুরোপুরি দূর হয়েছে তা বলা যায় না, কিন্তু সমস্য‌া থেকে উত্তরণের একটি পথ অন্তত খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।

    • ক) সঙ্ঘ উন্নয়ন (অন্তত ৩০০-৫০০ তাঁত থাকবে সঙ্ঘ পিছু)
    • কী কী কাজ করা হয় :

      • ১.সমীক্ষা
      • ২. ব্য‌বসায়িক সঙ্ঘ প্রস্তুত করা
      • ৩.কাঁচা মালের সহায়তা
      • ৪. নকশা উন্নয়ন ও উপাদানের বৈচিত্রকরণ
      • ৫. পরিকাঠামো
      • ৬. প্রচার ও বাজারীকরণ
      • ৭. প্রকল্প পরিচালনা ব্য‌য়
      • ৮. দক্ষতাবৃদ্ধি
      • ৯. ওয়ার্কশেড তৈরি

      কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য‌ সরকার ও উপভোক্তাদের সম্মিলিত পুঁজির সাহায্য‌ে কাজ করা হয়।

    • খ) দলভিত্তিক উন্নয়ন (১০০টি অবধি তাঁত আছে এমন দল)
    • কী কী কাজ করা হয় :

      প্রাথমিক ইনপুট, দক্ষতার উন্নতি, ওয়ার্কশেড তৈরি করা।

      কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার ও উপভোক্তাদের সম্মিলিত পুঁজির সাহায্য‌ে কাজ করা হয়।

      তাঁত সংগঠনকে সহায়তা প্রদান :

      বাজারীকরণের জন্য‌ উৎসাহভাতা, সংগঠনকে শক্তিশালী করা। কেন্দ্র ও রাজ্য‌ সরকার উভয়েই এই কাজ করে থাকে।

      অন্য‌ান্য‌ সহায়তা :

      নুতন ধারণা দেওয়া, প্রচার, তদারকি/প্রশিক্ষণ ও মূল্য‌ায়ন প্রকল্প তৈরি করা। এ ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় ও রাজ্য‌ সরকার যৌথ ভাবে কাজ করে থাকে।

      তাঁতিদের অর্থনৈতিক স্বার্থই এই প্রকল্পে একমাত্র বিবেচ্য‌।

      সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    তাঁতিদের সাহায্য‌ প্রকল্প

    তাঁতিদের বার্ধক্য‌ ভাতা

    • ১) ৬০ বছর বয়স হতে হবে।
    • ২)সমবায় সমিতির সদস্য‌ এবং দশ বছর কাজ করা হতে হবে।
    • ৩) আয়ের কোনও উৎস নেই এবং কোনও জীবিকাই নেই এমন হতে হবে।
    • ৪) শারীরিক বা মানসিক অস্থিরতার কারণে কাজ করতে পারে না।
    • ৫) পরিবারে কেউ নেই যে দেখবে।
    • ৬) অন্য‌ কোনও পেনশন পায় না।

    এই শর্তগুলি পূরণ করলে মাসে ৭৫০ টাকা করে পাওয়া যাবে।

    মহাত্মা গান্ধী বুনকর যোজনা : (বিমা যোজনা)

    বাৎসরিক আয়ের অন্তত পঞ্চাশ শতাংশ তাঁত থেকে হতে হবে। ১৮ থেকে ৫৯ বছরের মধ্য‌ে বয়স হতে হবে। তাঁতিকে দিতে হবে ৮০ টাকা, কেন্দ্রীয় সরকার ১৫০ টাকা এবং এলআইসি ১০০ টাকা বিমার জন্য‌ দেবে।

    সাধারণ মৃত্য‌ুর জন্য‌ ৬০ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। দুর্ঘটনায় মৃত্য‌ু হলে দেড় লক্ষ টাকা পাবে। স্থায়ী ভাবে অক্ষম হলেও দেড় লক্ষ টাকা পাবে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে পাঠরত অন্তত দু’টি সন্তানের জন্য‌ মাসে ১০০ টাকা করে বৃত্তি পাবে।

    তাঁতশিল্পীদের জন্য‌ স্বাস্থ্য‌বিমা

    সকল নারী ও পুরুষ তাঁতশিল্পী এই বিমার অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। স্বামী-স্ত্রী ও দু’টি সন্তান ১ থেকে ৮০ বছর অবধি বিমায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। এই চার জনের জন্য‌ একটিই কার্ড দেওয়া হবে। কোনও ভাবেই অবিবাহিত সন্তানদের জন্য‌ আলাদা কার্ড দেওয়া হবে না। তাঁতের যে কোনও কাজের সঙ্গে যুক্তরাও সুযোগ পাবেন। সেন্সাস তালিকায় থাকতে হবে বা ২০০৯-১০ সালে তাঁত বিষয়ক সমীক্ষায় যাঁদের নাম আছে তাঁরাই কেবল সুযোগ পাবে। অবশ্য‌ই বিমা কোম্পানির সমীক্ষার সময় যাঁরা তাঁতের কাজে যুক্ত আছেন বলে প্রমাণ হবে তাঁরাই সুযোগ পাবেন।

    বিনা ব্য‌য়ে বাৎসরিক ১৫০০০ টাকা অবধি চিকিৎসার সুযোগ।

    মাতৃত্বকালীন ২৫০০ টাকা প্রথম দু’টি সন্তানের জন্য‌।

    দাঁতের চিকিৎসায় ২৫০ টাকা।

    চোখের চিকিৎসায় ৭৫ টাকা, চশমার জন্য‌ ২৫০ টাকা।

    বাড়িতে চিকিৎসা করলে ৪ হাজার টাকা।

    হোমিওপ্য‌াথি, ইউনানি, আয়ুবের্দিক চিকিৎসার জন্য‌ ৪ হাজার টাকা।

    হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য‌ ১৫ হাজার টাকা।

    অপারেশন থিয়েটারের জন্য‌ ৭৫০০ টাকা।

    অসুখপিছু সীমা ৭৫০০ টাকা।

    কেন্দ্রীয় সরকার দেয় ৬৩১.১৯ টাকা। রাজ্য‌ সরকার দেয় ১৩৯.৮০ টাকা। মোট ৭৭০.৯৯ টাকা।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান গ্য‌ারান্টি আইন ২০০৫

    এমজিএনরেগা আইনের বিভিন্ন সংস্থান

    ভূমিকা

    দেশের গ্রামীণ এলাকার প্রত্য‌েকটি পরিবারের জীবিকা সুনিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় কর্মসংস্থান গ্য‌ারান্টি আইন (মহাত্মা গান্ধী জাতীয় কর্মসংস্থান গ্য‌ারান্টি আইন) ২০০৫ পাশ করে। এই আইনে গ্রামের প্রতিটি পরিবারের অদক্ষ শ্রমিকের কাজ করতে ইচ্ছুক এমন প্রাপ্তবয়স্ক সদস্য‌দের জন্য‌ প্রত্য‌েক আর্থিক বছরে পরিবারপিছু কমপক্ষে ১০০ দিনের কাজ সুনিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

    উদ্দেশ্য‌

    • ১) গ্রামীণ পরিবারের অদক্ষ কায়িক শ্রম করতে ইচ্ছুক প্রাপ্তবয়স্ক সদস্য‌দের পরিবারপিছু বছরে অন্তত ১০০ দিনের কাজ দেওয়া।
    • ২) গ্রামীণ এলাকায় স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টি করা এবং
    • ৩) গ্রামীণ এলাকার দরিদ্র জনসাধারণের জীবিকা অর্জনের জন্য‌ প্রয়োজনীয় সুযোগের ভিত্তিগুলিকে আরও শক্তিশালী করা।

    এই কর্মসূচির উপকার কে, কী ভাবে পেতে পারেন?

    এই কর্মসূচিতে কাজ পেতে হলে তাঁকে-

    • ১) প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে (বয়স ১৮ বা তার বেশি হতে হবে)
    • ২) গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দা হতে হবে
    • ৩) জব কার্ড পেতে হবে।
    • ৪) অদক্ষ শ্রমিকের কাজ করতে ইচ্ছুক হতে হবে এবং
    • ৫) কাজ পাওয়ার জন্য‌ গ্রাম পঞ্চায়েতে আবেদন (৪ক ফর্ম) পূরণ করতে হবে।

    মজুরি

    অদক্ষ শ্রমিককে ওই আইন অনুযায়ী নির্ধারিত হারে মজুরি দিতে হবে। বর্তমান তফশিল অনুযায়ী যতটা কাজ করার কথা তার চেয়ে বেশি কাজ করলে সমানুপাতিক হারে বেশি মজুরি এবং কম কাজ করলে সমানুপাতিক হারে কম মজুরি দিতে হবে। নারী ও পুরুষকে একই হারে মজুরি দিতে হবে। শ্রমিকদের সাপ্তাহিক ভিত্তিতে মজুরি প্রদান করতে হবে এবং কখনওই ১৪ দিনের বেশি দেরি করা যাবে না। এই সময়ের মধ্য‌ে মজুরি না দিলে ওই সমস্ত শ্রমিক ‘মজুরি প্রদান আইন ১৯৩৬’ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী হবেন। মজুরি শ্রমিকদের ব্য‌াঙ্ক বা পোস্ট অফিস অ্য‌াকাউন্টে দিতে হবে।

    কাজের জায়গায় মজুরদের জন্য‌ বিশেষ সুবিধা

    • ১) বিশুদ্ধ পানীয় জল, শ্রমিকদের বিশ্রামের জন্য‌ আচ্ছাদন দেওয়া জায়গা।
    • ২) শিশুদের জন্য‌ আচ্ছাদন দেওয়া ছায়া ঢাকা জায়গা। পাঁচ জনের বেশি (যাদের বয়স ছয়ের কম) শিশুর ক্ষেত্রে ক্রেশ চালু করা যেতে পারে। এটি দেখাশোনার জন্য‌ ন্যূনতম মজুরি প্রদান করে এক জন শ্রমিক নিয়োগ করতে হবে।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    এমজিএনরেগা আইনের আওতায় কাজ

    ১) জল সংরক্ষণ ও জল সঞ্চয়
    ২) পুকুর খনন ও সংস্কার
    ৩) চেক বাঁধ তৈরি করে জল সংরক্ষণ
    ৪) ভূগর্ভস্থ বাঁধ নির্মাণ
    ৫) তফশিলি জাতি/উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত ব্য‌ক্তিদের জমিতে, ভূমি সংস্কারের মাধ্য‌মে পাওয়া জমিতে, বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারের জমিতে, ইন্দিরা আবাস যোজনার উপভোক্তাদের জমিতে এবং ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের জমিতে বৃষ্টির জল সঞ্চয়ের ব্য‌বস্থা করা ইত্য‌াদি।
    ৬) খরা প্রতিরোধ
    ৭) বন সৃজন ও বৃক্ষরোপণ
    ৮) তফশিলি জাতি/উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত ব্য‌ক্তিদের জমিতে, ভূমি সংস্কারের মাধ্য‌মে পাওয়া জমিতে, বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারের জমিতে, নথিভুক্ত বর্গাদারদের জমিতে, ইন্দিরা আবাস যোজনার উপভোক্তাদের জমিতে এবং ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের জমিতে ফলের গাছ রোপণ।
    ৯) নার্সারি তৈরি ও সংরক্ষণের সমস্ত ব্য‌বস্থা
    ১০) ক্ষুদ্র ও ছোটখাটো সেচের কাজ সহ সেচের খাল
    ১১) কৃষিজমিতে সেচের জল পৌঁছনোর জন্য‌ শাখা খাল ও মাঠের খাল খনন,
    ১২) সেচ সেবিত এলাকা বাড়ানো, সেচের জন্য‌ প্রয়োজনীয় অন্য‌ান্য‌ স্থায়ী সম্পদ তৈরি করা
    ১৩) তফশিলি জাতি/উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত ব্য‌ক্তিদের জমিতে, ভূমি সংস্কারের মাধ্য‌মে পাওয়া জমিতে, বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারের জমিতে, নথিভুক্ত বর্গাদারের জমিতে, ইন্দিরা আবাস যোজনার উপভোক্তাদের জমিতে এবং ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের জমিতে সেচের ব্য‌বস্থা
    ১৪) পানীয় জলের উৎস সংস্কার
    ১৫) জনসাধারণের জন্য‌ পানীয় জলের উৎস যথা পাতকুয়া ও অন্য‌ান্য‌ চিরাচরিত জলাধারগুলির সংস্কার
    ১৬) ব্য‌ক্তি মালিকানাধীন পুকুরের জলধারণ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য‌ সংস্কার (যদি মালিকপক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে চুক্তির মাধ্য‌মে বাড়তি জল জনসাধারণকে ব্য‌বহার করতে দিতে রাজি থাকেন।)
    ১৭) ভূমি উন্নয়ন
    ১৮) তফশিলি জাতি/উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত ব্য‌ক্তিদের জমি, ভূমি সংস্কারের মাধ্য‌মে পাওয়া জমি, বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারের জমিতে, নথিভুক্ত বর্গাদের জমি, ইন্দিরা আবাস যোজনার উপভোক্তাদের জমি এবং ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের জমি উন্নয়ন, যাতে তা চাষের বেশি উপযুক্ত হয়।
    ১৯) অন্য‌ান্য‌ গ্রামীণ আবাস প্রকল্পের উপভোক্তাদের জমির উন্নয়ন
    ২০) গ্রামীণ হাটেবাজারের জন্য‌ জমি উন্নয়ন
    ২১) খেলার মাঠ উন্নয়ন ও অন্য‌ান্য‌ স্থায়ী সম্পদ
    ২২) জলমগ্ন এলাকার নিকাশি ব্য‌বস্থা সহ বন্য‌া নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধমূলক কাজ
    ২৩) সব ঋতুর উপযোগী গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্য‌বস্থা, পিএমজিএসওয়াই প্রকল্পের রাস্তার মাটির কাজ-সহ।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    গ্রাম সংসদ ও গ্রামোন্নয়ন সমিতির দায়িত্ব

    কী কী কাজ গ্রাম সংসদ এলাকায় হতে পারে এবং কখন তা দরকার তার তালিকা তৈরি করে আগের বছরে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের মধ্য‌ে গ্রাম পঞ্চায়েতকে দিতে হবে। তার পর গ্রাম পঞ্চায়েতকে তাগাদা দিতে হবে ওই কাজ শুরু করার জন্য‌। এমন কাজ নিতে হবে যাতে এলাকার উন্নয়ন হয়।

    কাজের জন্য‌ দরখাস্ত

    জব কার্ড যাঁর আছে তিনি কাজ পাওয়ার জন্য‌ নির্ধারিত ফর্মে (৪ক) গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে দরখাস্ত করবেন। যদি ৪(ক) ফর্ম গ্রাম পঞ্চায়েত দিতে না পারে তা হলে আবেদনকারী সাদা কাগজে সমস্ত বিবরণ দিয়ে কাজ পাওয়ার জন্য‌ আবেদন করতে পারবেন। দরখাস্তে রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও কোন তারিখ থেকে কাজ করতে চাইছেন তা উল্লেখ করতে হবে। বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ে তিনি কোন তারিখ থেকে কোন তারিখ পর্যন্ত কাজ চাইছেন তা-ও ওই একই দরখাস্তে উল্লেখ করা যেতে পারে। একাধিক আবেদনকারী এক সঙ্গে যৌথ দরখাস্তও করতে পারেন। গ্রাম পঞ্চায়েতে কাজের জন্য‌ আবেদনগুলি আগাম সংগ্রহের ব্য‌বস্থা করবেন। এর জন্য‌ গ্রামোন্নয়ন সমিতির সাহায্য‌ বা স্বনির্ভর দলের সাহায্য‌ চাওয়া যেতে পারে।

    কাজের বরাদ্দ

    দরখাস্ত করার অথবা যে তারিখ থেকে কাজ চাওয়া হচ্ছে তার ১৫ দিনের মধ্য‌ে গ্রাম পঞ্চায়েতকে কাজের ব্য‌বস্থা করতে হবে। যে কাজ চলছে তাতে কাজ দেওয়ার সুযোগ না থাকলে নতুন কাজ শুরু করতে হবে। কম পক্ষে ১০ জন শ্রমিক পেলে তবেই নতুন কাজ শুরু করা যাবে। অবশ্য‌ বনসৃজন/বৃক্ষরোপণের কাজে এই শর্ত কার্যকর হবে না। গ্রাম পঞ্চায়েতকে লিখিত ভাবে দরখাস্তকারী কোথায় কখন কাজের জন্য‌ উপস্থিত হতে হবে তা জানাবেন। যৌথ দরখাস্তের ক্ষেত্রে যে কোনও একজন আবেদনকারীর মাধ্য‌মে সকলকে জানানো যাবে।

    দরখাস্তকারী যে গ্রামে বাস করেন তার ৫ কিলোমিটারের মধ্য‌ে তাঁকে কাজ দিতে হবে এবং ৫ কিলোমিটারের বাইরে কাজের জন্য‌ যাতায়াত খরচ হিসাবে দশ শতাংশ অতিরিক্ত মজুরি দিতে হবে। ৫ কিলোমিটারের বাইরে কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে বয়স্ক ও মহিলাদের ক্ষেত্রে এমন ভাবে অগ্রাধিকার দিতে হবে যাতে তাঁরা তাঁদের বসবাসস্থলের নিকটবর্তী অঞ্চলে কাজ পান। আবেদনকারীকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্য‌ে কাজ দিতে না পারলে বেকার ভাতা দিতে হবে।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    কৃষি উন্নয়নমূলক কর্মসূচি

    রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনা (আরকেভিওয়াই)

    কৃষি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে কৃষিভিত্তিক পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য‌ জেলাভিত্তিক কৃষি পরিকল্পনা প্রণয়ন সুনিশ্চিত করতে এই প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে।

    এই প্রকল্পের মাধ্য‌মে সহায়তার বিষয়-

    • ক) প্রধান ফসল যেমন-- ডাল, গম, ধান, তৈলবীজ, আখ, তুলো এই সব ফসলের উন্নত মানের বীজ উৎপন্ন করে চাষিদের কাছে সহজলভ্য‌ করা।
    • খ) বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতির ব্য‌বহার বাড়িয়ে কৃষিকাজে মহিলা শ্রমিকদের কায়িক শ্রম কমানোর ব্য‌বস্থা করা।
    • গ) মাটির স্বাস্থ্য‌ রক্ষা ও উন্নয়নের জন্য‌ মাটির স্বাস্থ্য‌ কার্ড দেওয়া।
    • ঘ) সুসংহত উপায়ে রোগ ও পোকা দমনের জন্য‌ প্রশিক্ষণ, সম্প্রচারের ব্য‌বস্থা ও সচেতনতা শিবির করা।
    • ঙ) কৃষি শিল্পোদ্য‌োগের প্রসার, হিমঘর, কৃষকদের স্বনির্ভর দল তৈরি, শস্য‌ সংগ্রহ কেন্দ্র, কৃষি পণ্য‌ বিপণন করার সহায়তা।
    • চ) ফল, ফুল, সবজি চাষে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে ড্রিপ ও স্প্রিঙ্কলার সেচ পদ্ধতির প্রসারের জন্য‌ সহযোগিতা।
    • ছ) যে সমস্ত পরিবার ভূমি সংস্কারের ফলে সহায়তা পেয়েছে তাদের ন্যূনতম উপার্জনের লক্ষ্য‌ে ভূমি উন্নয়ন, সেচ ব্য‌বস্থার উন্নয়ন, উন্নত প্রযুক্তির ব্য‌বহার, বীজ এবং গোষ্ঠীগত সাধারণ পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রকল্পভিত্তিক সহায়তা প্রদান।

    এই সমস্ত কর্মসূচির মাধ্য‌মে জেলা ভিত্তিক কৃষি পরিকল্পনা করে কৃষির উন্নতির মানচিত্র তৈরি করা সম্ভব। এই কাজগুলি সম্পন্ন করা শুধুমাত্র সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। সেই জন্য‌ পঞ্চায়েত ব্য‌বস্থা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সক্রিয় সহযোগিতা দরকার। বিশেষ করে কৃষি মহাবিদ্য‌ালয় বা বিশ্ববিদ্য‌ালয়গুলি এই কাজে উল্লেখযোগ্য‌ ভূমিকা নিতে পারে। বিশেষ করে কারিগরি বিদ্য‌া প্রয়োগের ব্য‌াপারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ভূমিকা অপরিসীম। কোন বীজ ব্য‌বহার করা সম্ভব, কোন সার ব্য‌বহার করলে সব চেয়ে বিশ পরিমাণ ফসল পাওয়া যায় এই বিচার যেমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির চেয়ে ভালো আর কেউ করতে পারে না তেমনই উচ্চ প্রযুক্তির ব্য‌বহারের ক্ষেত্রেও উদভাবনশীলতার জন্য‌ কৃষি বিদ্য‌ালয়গুলি মুখ্য‌ ভূমিকা নিয়েছে। গবেষণা ও পরীক্ষার মাধ্য‌মে এই উচ্চ প্রযুক্তির ব্য‌বহারকে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সচেতনতা শিবির করার প্রশ্নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উল্লেখযোগ্য‌ ভূমিকা নেয়।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    সুসংহত শস্য‌ বৈচিত্র্যকরণ কর্মসূচি

    • ১) সুসংহত ডালশস্য‌, তৈলবীজ, পাম অয়েল, ভুট্টা উন্নয়ন প্রকল্প (আইএসওপিওএম)
    • উদ্দেশ্য‌

      ভোজ্য‌তেল, ডালশস্য‌ ও ভুট্টার ঘাটতি পূরণ।

      এই প্রকল্পের মুখ্য‌ বৈশিষ্ট্য‌ হল

      • ক) প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষিদের উন্নত জাতের ডাল শস্য‌, তৈলবীজ ও ভুট্টার বীজের মিনিকিট বিতরণ করা হয়।
      • খ) শস্য‌ক্ষেত্রে প্রদর্শনীর মাধ্য‌মে উৎপাদন প্রযুক্তি সরাসরি কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এর জন্য‌ প্রয়োজনীয় সার, বীজ, কীটনাশকের ৫০ শতাংশ খরচ সরকার বহন করে।
    • ২) শস্য‌ বৈচিত্র্যকরণ প্রকল্প (সিডি)
    • উদ্দেশ্য

      পশ্চিমবঙ্গে ঘাটতি ফসল যেমন, গম, ডালশস্য‌, তৈলবীজ ইত্য‌াদির নতুন পদ্ধতিগত চাষের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। সমস্ত বীজ ও সার ১০০ শতাংশ ভর্তুকি হিসাবে প্রগতিশীল চাষিদের মধ্য‌ে সরবরাহ করা হয়। শস্য‌ বৈচিত্র্যকরণ কর্মসূচিতে প্রদশর্নীক্ষেত্র করা হয় যাতে অন্য‌ান্য‌ চাষি নতুন পদ্ধতিতে চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হতে পারে ও পরবর্তী সময়ে তাদের মধ্য‌ে নতুন ফসল চাষে উৎসাহ দেখা দেয়।

    • ৩) সুসংহত তন্ডুল জাতীয় শস্য‌ উন্নয়ন (আইসিডিপি)
    • উদ্দেশ্য‌

      এই প্রকল্পে তন্ডুল জাতীয় শস্য‌ যেমন, ধান, গম, জোয়ার, বাজরা ইত্য‌াদি নতুন নতুন উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজের ব্য‌বহার এবং উৎপাদন পদ্ধতির মাধ্য‌মে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য‌শস্য উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

      ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের মধ্য‌ে বিনামূল্য‌ে কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা হয়। তা ছাড়াও ৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্রপাতি যেমন, স্প্রেয়ার, থ্রেশার, ডাস্টার ইত্য‌াদি দেওয়ার ব্য‌বস্থা আছে।

    • ৪) নিবিড় পাট উন্নয়ন প্রকল্প (এসজেডিপি)
    • এই প্রকল্পের বৈশিষ্ট্য‌গুলি :

      • ক) ভর্তুকিতে উন্নত জাতের পাট বীজ সরবরাহ।
      • খ) পাতায় ইউরিয়া স্প্রে করার জন্য‌ ভর্তুকিতে ইউরিয়া সরবরাহ।
      • গ) ৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্রপাতি যথা বীজবপন যন্ত্র, স্প্রেয়ার, ডাস্টার এবং পাটের আঁশ ছাড়ানোর যন্ত্র প্রভৃতি সরবরাহ করার ব্য‌বস্থা আছে।
      • ঘ) পরিষ্কার ও কম জলে পাট পচানোর জন্য‌ পাট জাগ দেওয়ার পুকুর তৈরি করার ব্য‌বস্থা এই প্রকল্পে রাখা হয়েছে। (১০০ দিনের কাজের অঙ্গ হিসাবেও এই কাজ করা যায়)
      • ঙ) এ ছাড়াও ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক ব্য‌বহার করার কথা বলা হয়েছে।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    রোগ-পোকা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ কর্মসূচি

    সুসংহত উপায়ে রোগ ও পোকা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প (আইপিএম)

    এই পদ্ধতিতে কৃষিক্ষেত্রে বন্ধু পোকার সঙ্গে কৃষকদের পরিচয় করানো হয়। বন্ধু পোকার সংখ্য‌া কী ভাবে বাড়ানো যেতে পারে তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

    বিভিন্ন কৃষি ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ দ্বারা এই শিবিরে ৩০-৩৫ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

    উন্নত কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ কর্মসূচি

    এই কর্মসূচিতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিকে পাওয়ার টিলার, থ্রেশার, স্প্রেয়ার, ডাস্টার প্রভৃতি কিনে ব্য‌বহার করার জন্য উৎসাহ দেওয়া হয় এবং আর্থিক সাহায্য‌ দেওয়া হয়।

    তফশিলি জাতি ও উপজাতির জন্য‌ কোটা থাকে। তারা উপরোক্ত যন্ত্রগুলি কেনার জন্য‌ অনুদান পায়। এই অনুদান ভারত সরকার ও রাজ্য সরকার বহন করে।

    সুসংহত উপায়ে রোগ ও পোকা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের মাধ্য‌মে জৈব বৈচিত্র্য রক্ষা করার ব্য‌াপক পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কোন কোন রোগ পোকা ভারতে কৃষি বিস্তারের কাজে অন্তরায় সেগুলিকে দ্রুত চিহ্নিত করে রোধ করা ও নির্মূল করার উপর জোর দিয়ে প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। এর জন্য‌ গবেষণাগারের পাশাপাশি জন সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্য‌োগের উপরও বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। রোগ পোকাকে ওষুধ দিয়ে নির্মূল করার পদ্ধতি প্রযোগে কিছু বিশেষ দিকও রয়েছে। দেখতে হবে যে পদ্ধতিতে এই কাজ করা হচ্ছে তাতে সার্বিক ভাবে পরিবেশের উপর কোনও প্রতিক্রিয়া পড়ছে কিনা। শুধু তা-ই নয়, স্বাস্থ্য‌ের উপর আদৌ এর কোনও প্রভাব আছে কিনা সে দিকে নজর রেখে ওষুধ তৈরির উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। উন্নত কৃষি যন্ত্রপাতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে দেখা হচ্ছে এর সুবিধা যেন প্রত্য‌েকে প্রাপ্ত হয়। গরিব মানুষও যাতে সস্তায় এবং সহজ শর্তে এই সব যন্ত্র কিনতে পারেন তার ব্য‌বস্থা করা হয়েছে। এ ব্য‌াপারে ব্য‌াঙ্কগুলির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগে ব্য‌াঙ্কগুলি ট্রাক্টর কেনার ক্ষেত্রে অন্তত ৪ একর জমি বন্ধক রাখত। এখন বন্ধকি জমির পরিমাণ কমিয়ে মাত্র ১ একর করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে এরও কম পরিমাণ জমি থাকলে ঋণ দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে অন্য‌ কয়েকটি শর্ত পূরণ করার বিষয় রয়েছে।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    রাষ্ট্রীয় কৃষি বিমা ও কিষাণ ক্রেডিট কার্ড প্রকল্প

    রাষ্ট্রীয় কৃষি বিমা প্রকল্প (এনএ আইএস)

    • ক) প্রাকৃতিক বিপর্যয়, কীটপতঙ্গ এবং রোগের কারণে বিজ্ঞাপিত ফসলের ক্ষতির হাত থেকে কৃষকদের বিমার নিরাপত্তা এবং আর্থিক সহায়তা দেওয়া।
    • খ) কৃষি আয়কে স্থিতিশীল রাখা। খরিফ মরশুমে আমন ও আউশ ধান, রবি মরশুমে বোরোধান, গম, সরিষা, তিল, তিসি, ছোলা, মুসুর, মুগ, কলাই, অড়হর ও আলু চাষকে বিমার আওতায় নিয়ে আসা।

    সমস্ত কৃষক তৎসহ ভাগচাষি, প্রজাসত্ত্বভোগী চাষি যাঁরা এই প্রকল্পটির বিজ্ঞাপিত অঞ্চলে বিঞ্জাপিত ফসল চাষ করবেন তাঁরাই এই বিমার আওতায় আসতে পারবেন। ঋণ গ্রহণকারী চাষিরা আবশ্য‌িক ভিত্তিতে ও ঋণ গ্রহণকারী নয় এমন চাষিরা ঐচ্ছিক ভিত্তিতে এই বিমার আওতায় আসতে পারবেন। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের বিমার প্রিমিয়ামে দশ শতাংশ ভর্তুকি হিসাবে রাজ্য‌ ও কেন্দ্রীয় সরকার দিয়ে থাকে।

    কিষান ক্রেডিট কার্ড (কেসিসি)

    রাষ্ট্রীয় কৃষি ও গ্রামীণ বিকাশ ব্য‌াঙ্কের সক্রিয় ভূমিকায় কিষান ক্রেডিট কার্ডের (কেসিসি)-র সাহায্য‌ে কৃষকদের পক্ষে এখন ব্য‌াঙ্ক ঋণ পাওয়া ও তার ব্য‌বহার এখন অনেক সহজ সরল হয়েছে। কিষান ক্রেডিট কার্ড যোজনার মূল লক্ষ্য‌ ব্য‌াঙ্কের মাধ্য‌মে কৃষকদের যথেষ্ট পরিমাণ ও সময়মতো ঋণ দান করা।

    ব্য‌াঙ্কের যে সব শাখা থেকে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড প্রদান করা হয়েছে সেখান থেকে, প্রাথমিক সমবায়গুলি ও ব্য‌াঙ্কের ইচ্ছানুসারে অন্য‌ শাখা থেকে কৃষি ঋণ পাওয়া যেতে পারে।

    কিষান ক্রেডিট কার্ডের অধিকারী গণ বাৎসরিক ১৫ টাকা প্রিমিয়ামের বদলে মৃত্য‌ুজনিত কারণে ৫০ হাজার টাকা ও স্থায়ী পঙ্গুত্বের জন্য‌ ২৫ হাজার টাকার দুর্ঘটনা বিমার আওতায় আসবেন। কিষান ক্রেডিট কার্ড প্রকল্প রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্য‌াঙ্কগুলি অত্য‌ন্ত সাফল্য‌ের সঙ্গে রূপায়ণ করছে। সরকার এই প্রকল্পের ব্য‌াপারে অত্য‌ন্ত সক্রিয় হওয়ায় স্থানীয় স্তরের সমস্য‌াগুলি দ্রুত মিটিয়ে ফেলা সম্ভব হচ্ছে।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    বীজ গ্রাম প্রকল্প ও জাতীয় খাদ্য‌ নিরাপত্তা মিশন

    বীজ গ্রাম প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নত বীজ উৎপাদন

    বীজ গ্রাম প্রকল্প রূপায়ণ করে দলগত ভাবে কৃষকরা উন্নত/স্বাস্থ্য‌বান বীজ অথবা শংসিত বীজ অথবা সঠিক নামাঙ্কিত বীজ উৎপাদন করতে পারবেন। এতে এক দিকে যেমন এলাকার কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সহায়তা করতে পারবেন অন্য‌ দিকে অধিক দামে সাধারণ দানাশস্য‌ের পরিবর্তে উন্নত বীজ বিক্রয় করে নিজেদের জীবিকার ক্ষেত্রটিকে বাড়িয়ে নিতে পারবেন। এ ছাড়া বীজ উৎপাদনের জন্য‌ চাষিরা বীজ সংগ্রহ করা, বীজ প্রক্রিয়াকরণ, বীজ আধার তৈরি, সংরক্ষণ ইত্য‌াদি ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের জন্য‌ সরকারি সহায়তা পেতে পারেন।

    জাতীয় খাদ্য‌ নিরাপত্তা মিশন (এনএফএসএম)

    ধান, গম ও ডালশস্য‌ের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য‌ যথেষ্ট পরিমাণ প্রদর্শ ক্ষেত্র গড়ে তোলার সহায়তা এই প্রকল্পের মাধ্য‌মে দেওয়া হয়। সংকর জাতের ধান চাষের জন্য‌ (শ্রী পদ্ধতি), বীজ উৎপাদনের জন্য‌ও এই প্রকল্পের মাধ্য‌মে বিশেষ সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়াও কৃষি যন্ত্রপাতি (কোনও উইডার, জিরো টিলেজ মেশিন, ড্রিপ সেচের বা স্প্রিঙ্কলার সেচের বা জল সেচের মেশিন) সংগ্রহ করার ব্য‌বস্থা রয়েছে। মাটির ভৌত অবস্থার উন্নতির জন্য‌ চুণ প্রয়োগ করা এবং গাছের রোগ-পোকা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য‌ সহায়তার ব্য‌বস্থা রয়েছে। জাতীয় খাদ্য‌ নিরাপত্তা মিশনের কাজ সচরাচর সরকার দ্বারাই পরিচালিত হয়। পঞ্চায়েত এই কাজে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে। উপভোক্তা কারা হবেন তা খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতের ভূমিকাই মুখ্য‌। গ্রাম সংসদের সভায় স্থির হয় কৃষি প্রকল্পের জন্য‌ কারা উপযুক্ত উপভোক্তা হতে পারেন। গ্রাম সংসদের বৈঠকে এই নামের তালিকা পাশ করিয়ে নেওয়া হয়। তার পর তা গ্রাম পঞ্চায়েতের অনুমোদন লাভ করে। পঞ্চায়েতের অনুমোদিত নামের তালিকা স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের বাইরে টাঙিয়ে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। নামের তালিকা সবাই দেখতে পাবেন। শুধু তা-ই নয়, গ্রাম সংসদ এবং পঞ্চায়েতের নির্ধারিত তালিকা নিয়ে কারও আপত্তি থাকলে তা তৎক্ষণাৎ জানাতে পারবেন। এই ধরনের প্রকল্পগুলি রূপায়ণের ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতের সার্বিক সহযোগিতা দরকার। এলাকার ভিত্তিতে কোথায় কী প্রয়োজন তা নির্ধারণ করার দায়িত্ব মূলত পঞ্চায়েতের। অন্য‌ান্য‌ সরকারি দফতরের বিশেষজ্ঞরা তাদের সে কাজে সাহায্য‌ করতে পারেন, কিন্তু মূল সিদ্ধান্ত পঞ্চায়েতকেই নিতে হবে।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    মৎস্য‌চাষ বিষয়ক প্রকল্প

    মাছচাষ ও মাছচাষিদের জন্য প্রকল্প

     

    শর্ত

    সর্বোচ্চ অনুদান - ঋণ

    ব্লকের কোটা

    অন্তর্দেশীয় মাছ চাষ কর্মসূচি :

    এ এফ ডি এ মাধ্য‌মে মাছ চাষ

    যাদের নিজস্ব জলাশয় রয়েছে বা দীর্ঘমেয়াদী ইজারা নিয়েছেন এমন ব্য‌ক্তি বা সমবায় সমিতি বা স্বনির্ভর দল হতে হবে।

    যে কেনও জলাশয় যার আয়তন ২৫ শতক থেকে ১২ . ৫০ একর

    এক বার সাহায্য‌ পেলে দ্বিতীয় বার পাবেন।

    ২ . ৫০ একর পিছু ২৫ হাজার টাকা অনুদান

    ২ . ৫০ একরে ২ - ৩ লক্ষ টাকা ঋণ

    ১২ . ৫০ একর

    স্বল্পমেয়াদী ঋণ প্রকল্প

    তরুণ , বেকার , যুবক , প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতা

    অনুদান নেই

    ঋণ ২৫ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা

     

    মৎস্য‌জীবীদের প্রশিক্ষণ

    নিজস্ব জলাশয় রয়েছে , মাছ চাষ করতে চান বা মাছ চাষ করে এমন মানুষ ৫ দিন প্রশিক্ষণ পেতে পারেন

     

    ২০টা

    মৎস্য‌জীবীদের পরিচয়পত্র প্রদান

    যে ব্য‌ক্তি মৎস্য‌ শিকার করে এবং বিক্রি করে আয় করেন তিনি এই পরিচয়পত্র পেতে পারেন।

    এ ছাড়াও এই পরিচয়পত্র দুর্ঘটনা জনিত বিমার অর্থ পেতে সাহায্য‌ করে।

     

    ব্লকে এফ . ই . ও - র সঙ্গে যোগাযোগ করলে পাবেন।

    মৎস্য‌জীবীদের দুর্ঘটনা জনিত বিমা প্রকল্প

    কর্মরত অবস্থায় কোনও মৎস্য‌জীবীর প্রাণহানি ঘটলে অথবা স্থায়ী প্রতিবন্ধকতা ঘটলে অর্থ সাহায্য‌ পাওয়া যায়। ৬৫ বছর পর্যন্ত মৎস্য‌জীবীরা এই সুযোগ পাবেন। সাধারণত সমবায় সমিতির সদস্য‌রা এই সুযোগ পান তবে এর জন্য‌ পরিচয়পত্র থাকা দরকার

     

    ব্লকে এফ . ই . ও - র সঙ্গে যোগাযোগ করলে পাবেন।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    অন্তর্দেশীয় মাছচাষ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত প্রকল্প

    • নতুন জলাশয় খনন সহ মাছ চাষ - যদি কেউ জলাশয় তৈরি করে মাছ চাষ করতে চান তাহলে তিনি সহায়তা পাবেন।
    • মিঠে জলে একাধিক প্রজাতির (৬ ধরনের) মাছ চাষ (যেখানে মাটি কাটার প্রয়েজন নেই)। এই ধরনের মাছ চাষে অভিজ্ঞতার বিষয়টি বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া হয়। এর আগেও সহায়তা পেয়েছেন এমন মৎস্য‌ চাষি প্রকল্পের আওতাভুক্তই থাকবেন।
    • মিঠে জলে গলদা চিংড়ি সহ একাধিক দেশি বিদেশি প্রজাতির (৬ ধরনের) মাছচাষ। এই ধরনের মাছ চাষের ক্ষেত্রে গবেষণা লব্ধ সাহায্য‌ মৎস্য‌ দফতর সূত্রে পাওয়া যায়। মৎস্য‌ দফতরের কর্পোরেশন রফতানির ক্ষেত্রে মৎস্য‌চাষিদের যাবতীয় সহায়তা করে থাকে।
    • ০.৩/০.৬/১.০ মিটার পর্যন্ত মাটি কাটা সহ ৬ ধরনের মাছ চাষ।
    • কেবলমাত্র জৈবসার প্রয়োগ সহ একাধিক প্রজাতির মাছ চাষ/গলদা চিংড়ি সহ একাধিক দেশি বিদেশি প্রজাতির মাছ চাষের মাটি কাটা ও মাছ চাষ। জৈব সার প্রয়োগ ব্য‌াপারেও মৎস্য‌ দফতর বিশেষ সহায়তা করে থাকে। এ ব্য‌াপারে মাছচাষিদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্য‌বস্থা করা হয়।
    • এককালীন অত্য‌ধিক মাছের চারা মজুত ও বারবার মাছ আহরণ। এ ক্ষেত্রে সংরক্ষণের জন্য‌ সরকারি আর্থিক সহায়তার একান্ত প্রয়োজন। মাছ সংরক্ষণের জন্য‌ ইতিমধ্য‌েই দেশে বেশ কয়েকটি আধুনিক কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। সকল শ্রেণির মাছচাষিরা তার সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন।
    • জল জমে থাকা নিচু জমিতে মাছ চাষ। এ ক্ষেত্রে জলা জমির মালিকানা সত্ত্ব দেখে নেওয়া হয়। মৎস্য‌ দফতরের অধিগৃহীত জলা জমিতে এ ধরনের মাছ চাষে উৎসাহ দান করা হয়।
    • কেবলমাত্র জৈব সার প্রয়োগ সহ এককালীন অত্য‌ধিক মাছের চারা মজুত ও বারবার মাছ আহরণ/জল জমে থাকা নিচু জমিতে মাছ চাষ।
    • রঙিন মাছের চাষ।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    পশুপালন বিষয়ক প্রকল্প

     

    শর্ত

    ঋণ - অনুদান - নিজস্ব পুঁজি

    সর্বো্চ্চ ঋণ

    ব্লকের কোটা

    গো - মহিষের কৃত্রিম প্রজনন

    প্রজনন সময় আসা

    ব্লক পশুপালন অফিসে যে কোনও কাজের দিনে অথবা গ্রাম পঞ্চায়েতে এলডিএ - র কাছে অথবা অথবা প্রাণীবন্ধু সহায়ককে বাড়িতে ডেকে করানো যায়। প্রাণীবন্ধু সহায়ক এর জন্য‌ ফি নেয় ২০ টাকা। এ ছাড়া তার পারিশ্রমিক নেয়।

     

    যে ইচ্ছা করাতে পারেন।

    আত্মা প্রকল্প

     

     

     

     

     

    দরিদ্র চাষি

    কৃত্রিম প্রজনের গরু থাকলে বিনামূল্য‌ে ওষুধ

     

    ১০০ জন

    প্রশিক্ষণ

    যে কোনও ইচ্ছুক চাষি

     

     

    ১০০ জন

    প্রদর্শনক্ষেত্র

    গোখাদ্য‌ চাষের জমি থাকতে হবে

    বিনামূল্য‌ে

     

    ২০ জন

    পঞ্চায়েতরাজ প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প

    ১) প্রাণী স্বাস্থ্য‌ শিবির , প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতে ন্যূনতম দু’টি বছরে

    ওষুধ দানের ক্য‌াম্প

    পিআরপি / এফএমডি / ডি ওয়ার্মিং (কৃমি নাশ)

    ১০গ্রা . প x ২ = ২০টা

    ২) মিনি কীট বীজ সরবরাহ

    গোখাদ্য‌ের বীজ সরবরাহ করা হয়।

    ২০টা প্লট

    ৩) প্রদর্শক্ষেত্র

    গোখাদ্য‌ের চাষ করে দেখানো ও শেখানো হয়

    ১টা

    ৪) খড়ের খাদ্য‌গুণ বৃদ্ধিকরণ

    খড়ে ইউরিয়া ও গুড়ের জল মিশিয়ে খাদ্য‌গুণ বৃদ্ধি করে দেখানো ও শেখানো হয়

    ৩ জন

    ৫) মহিলা ও যুবকদের প্রশিক্ষণ

    গরু , ছাগল , মুরগি , হাঁস , শূকর ইত্য‌াদি বাণিজ্য‌িক ভাবে পালন বিষয়ক প্রশিক্ষণ

    ২০ জন

    স্বনির্ভর প্রকল্প

    ক) ছাগল পালন (বড় প্রকল্প)

    দরিদ্র হতে হবে।

    প্রশিক্ষণ থাকতে হবে।

    নিজস্ব জমি ও পশুর ঘর থাকতে হবে

    প্রকল্প ব্য‌য় ১ লক্ষ টাকা

    অনুদান ২৫ হাজার টাকা

    ঋণ ৭৫ হাজার টাকা

    ব্লকের কোটা ২টা

    ছাগল পালন (ছোট প্রকল্প)

    দরিদ্র হতে হবে

    শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য‌

    প্রকল্প ব্য‌য় ৬ হাজার টাকা

    ভর্তুকি দেড় হাজার টাকা

    ঋণ ৩৫ হাজার টাকা

    ২০টা ব্লকের কোটা

    প্রাণী বিমা করণ কর্মসূচি

    সংকর জাতীয় গরু হতে হবে

    মারা গেলে পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে যাবে এমন পরিবার পাবে

    উপভোক্তাকে ১০০ টাকা দিতে হবে। বাকি টাকা পিবিজিএস নামক সংস্থা দেবে

     

    ১০০০ জন পেতে পারে।

    বকনা বাছুর প্রতিপালন প্রকল্প

    পিবিজিএস বিএস

    দরিদ্র পরিবার হতে হবে।গরু দুধ দিচ্ছে অথচ বাছুর প্রতিপালন করার ক্ষমতা নেই এমনটা হলে

    মোট প্রকল্প মূল্য ১২ হাজার টাকা , হাতে কোনও অর্থ দেওয়া হয় না ; গোখাদ্য , ওষুধ আর ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয় ৩ মাসের জন্য

     

    ৯ টি গরু

    বন্ধ্য‌াত্ব দূরীকরণ শিবির

    মা হতে পারছে না এমন গরু থাকলে

    এমন গরু থাকলে ক্য‌াম্পে নিয়ে আসার জন্য‌ প্রচার চালানো হয়।তারপর ডাক্তার নি।মিত দেখেন ও ওষুধ দেন।

     

    ২০০টি গরু

    রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনা

    হাঁস ও মুরগি বিতরণ কর্মসূচি

    এই প্রকল্প মহিলাদের জন্য‌। প্রতি দলে ১২০টি বাচ্চা (১ - ২১ দিন বয়স) বা ১০০টি বাচ্চা (২২ - ২৮দিনের) পাবে।

    বাচ্চা ও তার ২৫ দিনের খাদ্য‌ দেওয়া হয়।

    ৬০টি দল

    কৃত্রিম প্রজনন দ্বারা উৎপন্ন গরুর দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি

    স্বনির্ভর গোষ্ঠী দ্বারা

    ১০ জন সদস্য‌েরই একটি করে সংকর জাতীয় গরু থাকতে হবে

    প্রকল্প মূল্য‌ ৮০ হাজার টাকা

    ১টা ব্লকের কোটা

    শুকর পালন প্রকল্প

    স্বনির্ভর গোষ্ঠী দ্বারা জমি থাকতে হবে অন্তত ৫ কাটা। প্রশিক্ষণ থাকতে হবে।

    প্রকল্প মূল্য‌ ৪ . ৫ লক্ষ টাকা

    ব্লকের কোটা ১টা

    নাবার্ডের কেন্দ্রীয় ভাবে স্পন্সরড স্কিম

    যে কোনও ব্য‌ক্তি পেতে পারেন ,

    তার প্রশিক্ষণ থাকতে হবে এবং নিজের জমি থাকতে হবে

    এসসি বা এসটি হলে ৩৩ . ৩৩ শতাংশ অনুদান। সাধারণ জাতি হলে ২৫ শতাংশ অনুদান

    প্রকল্প ব্য‌য়ঃ

    ছাগল - ১লক্ষ

    গরু - ১ লক্ষ

    শুকর - ৮০ হাজার থেকে ৬ লক্ষ

    মুরগি - ১ থেকে ৫ লক্ষ।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    ক্ষুদ্র শিল্প সুরক্ষা

    ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য‌ ব্য‌াঙ্কের ঋণ প্রকল্প (সাধারণের জন্য‌)

    ভূমিকা

    ক্ষুদ্র শিল্প কর্মসংস্থানের জন্য‌ আগামী দিনে অত্য‌ন্ত গুরূত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে। বিশেষ করে স্বনিযুক্তির জন্য‌ এই ধরনের প্রকল্পের ভূমিকা অনস্বীকার্য। দেশের অর্থনীতির সামগ্রিক বিকাশের স্বার্থে ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশ একান্ত প্রয়োজন।

     

    শর্ত

    ঋণ - অনুদান - নিজস্ব পুঁজি

    সর্বোচ্চ ঋণ

    ব্লকের কোটা

    পিএমইজিপি (খাদি ও গ্রামোন্নয়ন)

    নতুন উদ্য‌োগ

    জেনারেল কাস্ট - অনুদান প্রকল্প ব্য‌য়ের ২৫ শতাংশ

    নিজস্ব পুঁজি - ১০ শতাংশ

    এসসি / এসটি / ওবিসি / প্রতিবন্ধী / এক্স সার্ভিস ম্য‌ান

    অনুদান :

    প্রকল্প ব্য‌য়ের ৩৫ শতাংশ ,

    নিজস্ব পুঁজি :

    ৫ শতাংশ

    জেনারেল কাস্ট ৬৫শতাংশ

    এসসি / এসটি / ওবিসি / প্রতিবন্ধী / এক্স সার্ভিসম্য‌ান :

    ৬০ শতাংশ

    উৎপাদন হলে ২৫ লক্ষ।

    পরিষেবা হলে দশ লক্ষ

    বাস্তবে ২ - ৫ লক্ষের স্কিমই বেশি হয়। জেলা থেকে ঠিক করা হয়। আইডিও - র মাধ্য‌মে পাঠাতে হবে

    বাংলা স্বনির্ভর কর্মসংস্থান প্রকল্প

    ১৮ - ৪৫ বছর বয়স ,

    এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জের কার্ড থাকতে হবে।

    অনুদান ২০ শতাংশ

    নিজস্ব পুঁজি

    ১০ শতাংশ

    ঋণ ৭০ শতাংশ

    একক ভাবে ১০ লক্ষ

    যৌথভাবে ২৫ লক্ষ

    বাস্তবে ২ - ৫ লক্ষ

    জেলা থেকে ঠিক হয়। ব্লকের কোটা নেই

    পিএমইজিপি

    ১৮ - ৪৫ বছর বয়স

    অনুদান ২০ শতাংশ , নিজস্ব পুঁজি - ১০ শতাংশ , ঋণ ৭০ শতাংশ

    জেনারেল কাস্ট : অনুদান প্রকল্প ব্য‌য়ের ২৫ শতাংশ , নিজস্ব পুঁজি ১০ শতাংশ , এসসি / এসটি / ওবিসি / প্রতিবন্ধী / এক্স সার্ভিসম্য‌ান : প্রকল্প ব্য‌য়ের ৩৫ শতাংশ , নিজস্ব পুঁজি ৫ শতাংশ।

    জেলা থেকে ঠিক হয়। যে বছর যেমন টাকা আসে তেমন পাওয়া যায়।

    পশ্চিমবঙ্গ উৎসাহ প্রকল্প ২০০৭

    বৈধভাবে তৈরি কোনও চালু শিল্প। যদি ২০ লক্ষ থেকে ১ কোটি অবধি মেশিনারি হয় তবে স্মল স্কেল বলা হয়।

    মাইক্রো হলে মোট মেশিন খরচের ১৫ শতাংশ অনুদান পাওয়া যাবে। স্মল স্কেল হলে ২৫ শতাংশ অনুদান। উভয় ক্ষেত্রে সুদের ৩০ শতাংশ ফেরত অনুদান ও বিদ্য‌ুৎ খরচের উপর ৩০ শতাংশ অনুদান পাওয়া যাবে

     

    জেলা থেকে ঠিক হয়।

    ইন্টিগ্রেটেড হ্য‌ান্ডলুম ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম

     

     

     

     

    আম্বেদকর হস্তশিল্প যোজনা

     

     

     

     

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    ক্ষুদ্র শিল্পে অন্যান্য প্রকল্প

    তফশিলি জাতি/উপজাতির জন্য‌ ক্ষুদ্র শিল্পে ব্য‌াঙ্কের ঋণ প্রকল্প

     

    শর্ত

    ঋণ , অনুদান - নিজস্ব পুঁজি

    সর্বোচ্চ ঋণ

    ব্লকের কোটা

    বিপিএল আদিবাসীদের জন্য‌ টিএসপি

     

     

     

     

    বিপিএল তফশিলি জাতির জন্য‌ এসসিপি

    ১৯৬৫৪এর মধ্য‌ে আয়

    প্রকল্প ব্য‌য় সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার টাকা , অনুদান সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা।

    ২৫ হাজার টাকা।

    ২০ হাজার টাকা অবধি সুদ ৪ শতাংশ

     

    এনএসসিএফডিসি (জাতীয় তপশিলি জাতি ও উপজাতি বিত্ত উন্নয়ন প্রকল্প)

    আয়ের ঊর্ধ্বসীমা জামিনদার লাগবে , নিজস্ব বিনিয়োগ আছে।

    ত . জা ৪০ হাজার টাকা

    আদিবাসী ৩৯৫০০ টাকা

    অনুদান ( সর্বোচ্চ )

    ১০ হাজার টাকা ত . জা

    আদিবাসী ১০ হাজার টাকা

    প্রান্তিক ঋণ ( কম সুদ )

    প্রকল্প ব্য‌য়ের ২ শতাংশ , সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা , ৪ শতাংশ সুদের হার

    প্রকল্প ব্য‌ায়ের ৫ শতাংশ , সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা , ৪ শতাংশ সুদের হার

    সংখ্য‌ালঘুদের জন্য‌ ক্ষুদ্রশিল্প, তাঁত ব্য‌বসার জন্য‌ ব্য‌াঙ্কের ঋণপ্রকল্প

     

    শর্ত

    ঋণ অনুদান নিজস্ব পুঁজি

    সর্বোচ্চ ঋণ

    ব্লকের কোটা

    সংখ্য‌ালঘু দফতরের মেয়াদী ঋণ প্রকল্প

    সংখ্য‌ালঘু সম্প্রদায়ের হতে হবে।

    অনুদান নেই

    ৪০হাজার টাকা। সুদের হার ৬ শতাংশ

     

    সংখ্য‌ালঘু দফতরের গুচ্ছ ঋণ প্রকল্প

    ৫ জনের বেশি মানুষের স্বনির্ভর দল বা পার্টনারশিপ ডিডে কোম্পানি তৈরি

    অনুদান নেই

    ৫ লক্ষ টাকা ঋণ। অনুদান নেই

     

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    ক্ষুদ্র শিল্প দফতরের অন্য‌ কিছু সুবিধা

    • হস্তশিল্পীদের জন্য‌ রাজীব গান্ধী শিল্পী বিমার প্রকল্প আছে। এটি স্বাস্থ্য‌বিমা। মাসে ৩০ টাকা করে বিমা করলে কেন্দ্রীয় সরকারের এই নতুন প্রকল্পে ৩০ হাজার টাকা অবধি চিকিৎসা বা ওষুধ বিনামূল্য‌ে পাওয়া যায়। এই প্রকল্পে হঠাৎ চিকিৎসার অর্থব্য‌য় থেকে সুরক্ষা পাওয়া যাবে।
    • প্রস্তাবিত উৎপাদন বা পরিষেবা শিল্পের জন্য‌ ইএম-১ রেজিস্ট্রেশন সকল ধরনের শিল্পকর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্য‌ক্তির অবশ্য‌ই করা উচিত। ভবিষ্য‌তে সরকারের কোনও সহযোগিতা পেতে গেলে এই নথিবদ্ধকরণ খুবই জরুরি। এর জন্য‌ ব্লকের আইডিও-র সঙ্গে যোগাযোগ করলেই হবে। কোনও খরচ নেই।
    • একই ধরনের রেজিস্ট্রেশন চালু শিল্পের জন্য‌ হলে সেটি হবে ইএম-২ রেজিস্ট্রেশন।
    • সমস্ত উদ্য‌োগী ইডিপিএ প্রশিক্ষণ পেতে পারেন। জেলায় এই প্রশিক্ষণ হয়। জেলায় বহু প্রচলিত নয় এমন কোনও বিষয়ে প্রশিক্ষণ চাইলে হয়তো কিছু মাস অপেক্ষা করতে হয়। আবেদন আইডিও-র কাছে করে রাখতে হয়। জেলায় যখন একই বিষয়ের ট্রেনিং চেয়ে অনেক জনের আবেদনপত্র জমা হয় তখন প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। সাধারণত, পাটশিল্প, টেলারিং, পুঁথির কাজ, জরির কাজ, এমব্রয়ডারির কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
    • কোনও প্রকল্প ব্য‌াঙ্কে জমা দেওয়ার আগে ভেটিং বা যাচাই করে দেন আইডিও। যোগাযোগ করে ভেটিং করিয়ে নিলে গ্রহণযোগ্য‌তা বৃদ্ধি পায়।
    • হস্তশিল্পীদের সচিত্র পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়। এই পরিচয়পত্র যে হেতু বিভিন্ন কাজে লাগে তাই এটি করিয়ে নেওয়া ভাল।
    • সমস্ত হস্তশিল্পীর উৎপাদিত উন্নতমানের বস্তু সামগ্রী সরকারি মেলায় নিয়ে যাওয়া হয় সরকারি খরচ ও উদ্য‌োগে। এই রকম প্রদর্শনযোগ্য‌ ও বিক্রয়যোগ্য‌ সামগ্রী উৎপাদন যাঁরা করেন তাঁরা আইডিও-র সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
    • সমস্ত হস্তশিল্পীর উৎপাদিত উন্নতমানের প্রদর্শনযোগ্য‌ সামগ্রীর জেলা, রাজ্য‌ ও জাতীয় স্তরে প্রতিযোগিতা হয় ও পুরস্কার দেওয়া হয়। এ ব্য‌াপারে আইডিও-র সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

    সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

    সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020



    © C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
    English to Hindi Transliterate