অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

ভারতে রেশম চাষ

বুনে তৈরি হয় এমন বস্ত্রের মধ্যে সিল্ক সব চেয়ে সুন্দর। এর প্রাকৃতিক ঔজ্জ্বল্য অতুলনীয়, রঙ করাও অত্যন্ত সহজ। পাশাপাশি এর শোষণ ক্ষমতা বেশি। হাল্কা, কোমল স্পর্শ এবং টেকসই হওয়ার জন্য গোটা পৃথিবীতে সিল্ক ‘বয়নশিল্পের রানি’ হিসেবে পরিচিত। অন্য দিকে এই শিল্পে বহু মানুষের প্রয়োজন হয়, বিনিয়োগ কম করতে হয় আর উপার্জনের সুযোগও বেশি থাকে। তাই জীবিকা হিসেবেও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামে খামারের মধ্যে এবং খামারের বাইরে এই শিল্পের কাজকর্ম গুলি চলে, এতে প্রচুর নিয়োগ হয়। এ জন্য ভারতের মতো কৃষি অর্থনীতির দেশে সামাজিক অর্থনৈতিক বিকাশের স্বার্থে এই শিল্পকে অন্যান্য শিল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন পরিকল্পনা ও নীতি প্রস্তুতকারকরা।

ভারতে রেশম উৎপাদনের হাল

ভারতবাসীর জীবন ও সংস্কৃতির সঙ্গে সিল্ক মিলেমিশে আছে। সিল্ক উৎপাদেনে ভারতের অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও জটিল ইতিহাস আছে। ভারতে সিল্ক বাণিজ্য শুরু হয় সেই পঞ্চদশ শতকে। ভারতের গ্রাম ও আধা শহরগুলোয় রেশম শিল্পে নিযুক্ত মানুষের সংখ্যা ৭৫ লক্ষেরও বেশি। এদের বেশির ভাগই অর্থনৈতিক ভাবে সমাজের দুর্বল অংশের মানুষ, যার মধ্যে মহিলারাও রয়েছেন। ভারতের চিরাচরিত ও সংস্কৃতি অনুসারী পোশাকের অভ্যন্তরীণ বাজার এবং ভৌগোলিক ভিন্নতা অনুযায়ী নানা ধরনের সিল্কের পোশাক, রেশম শিল্পে ভারতকে প্রথম সারিতে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।

ভারতই একমাত্র দেশ যেখানে তুঁত, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় তসর, ওক তসর, এরি এবং মুগা পাঁচ রকমের বাণিজ্যিক রেশমই উৎপাদিত হয়। এগুলির মধ্যে সোনালি হলুদ উজ্জ্বলতার জন্য মুগার চাহিদা বেশি।

কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাডু ও জম্মু ও কাশ্মীর-এই পাঁচটি রাজ্যে দেশের মোট তুঁত উৎপাদনের ৯৭% শতাংশ উৎপাদিত হয়।

ভারত পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম রেশম উৎপাদনকারী দেশ। ২০১৩-১৪ অর্থ বর্ষে রেশম উৎপাদনে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। ২০১২-১৩ অর্থ বর্ষের তুলনায় ২০১৩-১৪ অর্থ বর্ষে রেশম উৎপাদনে ১১.৮% বৃদ্ধি হয়েছে, যা সর্বকালীন রেকর্ড। ২০১৩-১৪ অর্থ বর্ষে ভারতে মোট কাঁচা রেশম উৎপাদন হয় ২৬৪৮০ মেট্রিক টন, এর মধ্যে ১৯৪৭৬ মেট্রিক টন তুঁত সিল্ক, ২৬১৯ মেট্রিক টন তসর সিল্ক, ৪২৩৭ মেট্রিক টন এরি সিল্ক এবং ১৪৮ মেট্রিক টন মুগা সিল্ক।

বর্তমান অর্থ বর্ষে (২০১৪-১৫) ২৮৫০০ মেট্রিক টন রেশম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। এর মধ্যে উন্নত মানের বিভলটিন সিল্ক ৩৫০০ মেট্রিক টন, ২৭৮৫ মেট্রিক টন তসর সিল্ক, ৪৭৬০ মেট্রিক টন এরি সিল্ক এবং ১৫০ মেট্রিক টন মুগা সিল্ক। তাঁত শিল্পের চাহিদা মেটানোর জন্য বিভলটিন সিল্ক উৎপাদনে মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। অভ্যন্তরীণ বাজার এবং মূল্যযুক্ত সিল্ক-পণ্যের বিদেশে চাহিদার জন্য উন্নত মানের বিভলটিন সিল্ক উৎপাদন বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। ভারত সরকারের বস্ত্র মন্ত্রক এবং বিভিন্ন রাজ্যের রেশম চাষ দফতর বিভলটিন সিল্ক চাষের জন্য প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে।

রেশম শিল্পের উন্নতিতে গৃহীত নীতিগত উদ্যোগ

রেশম চাষ বস্ত্র মন্ত্রকের আওতায় পড়ে। রেশম চাষের উন্নতির লক্ষ্যে সাম্প্রতিক কালে মন্ত্রক যে পদক্ষেপগুলি করেছে, সেগুলি এ রকম-

  • রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনার (আরকেভিওয়াই) অধীনে রেশম চাষ কৃষিজাতীয় কাজ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এর ফলে রেশম চাষিরা চাষের শুরু থেকে সুতো তৈরি পর্যন্ত এই প্রকল্পের সুবিধাগুলি পেয়ে থাকেন।
  • উন্নত মানের গুটিপোকা উৎপাদনের জন্য ভারত সরকার সেন্ট্রাল সিল্ক বোর্ড (সংশোধিত) আইনের নিয়ম নীতি প্রয়োগ করেছে।
  • অরণ্যবাসীরা যাতে প্রাকৃতিক ভাবে বন্য গুটিপোকার চাষ করতে পারে, তার জন্য অরণ্য সংরক্ষণ আইনকে সংশোধন করা হয়েছে।
  • রেশমের ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। ২০১৩-১৪ সালের বাজেট পেশের সময়, ভারত সরকার রেশম শিল্পকে উৎসাহ দিতে সিল্কের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার কথা ঘোষণা করে। এর আগে ২০১১ সালে সরকার রেশমের আমদানি শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করেছিল, এর ফলে গুটি পোকা এবং কাঁচা রেশমের দাম অনেকটা কমে গিয়েছিল। এখন দামটা বেড়েছে এবং একে রেশম চাষিদের পক্ষে একটি সদর্থক পদক্ষেপ হিসেবে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
  • সিডিপি-এমজিএনআরইজিএ একমুখীকরণ নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে এবং বস্ত্র মন্ত্রক ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক তা যৌথ ভাবে প্রচার করেছে। এই নির্দেশিকা রেশম চাষিদের এমজিএনআরইজিএ প্রকল্পের অধীনে সহায়তা দেবে।

সূত্র: বস্ত্র মন্ত্রক, ভারত সরকার

সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/18/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate