অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

ছায়াঘর

ছায়াঘর হচ্ছে কৃষিজাত জাল বা অন্য কোনও ধরনের জালের আবরণ দেওয়া একটা কাঠামো যার মধ্যে দিয়ে প্রয়োজনমত রোদ, জলীয় বাষ্প এবং হাওয়া যেতে পারে। এটি ছোট জায়গায় চারা বাড়ানোর উপযুক্ত আবহাওয়া তৈরি করে। এটাকে ছায়া জালঘর বা জালঘরও বলা হয়।

উপযোগিতা

  • ফুলের চারা, পল্লবগুচ্ছের চারা, ওষধি গুল্মের চারা, শাকসবজি এবং মশলাপত্র ইত্যাদির চাষে সাহায্য করে।
  • ফল এবং শাকসবজির নার্সারি হিসেবে ছায়াঘর কাজ করে, পাশাপাশি বনজ গুল্মের নমুনা বৃদ্ধির জন্যও ব্যবহার করা হয়।
  • বিভিন্ন কৃষিজাত দ্রব্য ঠিকমতো শুকোনোর জন্য ব্যবহার করা হয়।
  • কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে বাঁচানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • প্রাকৃতিক আবহাওয়ার বিপত্তি, যেমন ঝড়, বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি এবং তুষারপাত থেকে রক্ষা করে।
  • কলমের চারা তৈরি এবং সেগুলোকে গরমকালে রক্ষা করার জন্য ব্যবহার হয়।
  • টিস্যুকালচার করা ছোট্ট চারাকে শক্ত করার জন্য ব্যবহার হয়।

পরিকল্পনা

কোন ফসল উৎপাদন করা হবে, ওই অঞ্চলে কী উপকরণ পাওয়া যায় এবং আঞ্চলিক আবহাওয়ার অবস্থা ইত্যাদি বিবেচনা করে ছায়াঘরের কাঠামো পরিকল্পনা করতে হবে। ভবিষ্যতে বাড়ানোর ব্যবস্থা থাকতে হবে।

জায়গা নির্বাচন

ছায়াঘর বাজারের কাছাকাছি হওয়া উচিত যাতে প্রয়োজনীয় উপকরণ পাওয়ার এবং উত্পন্ন দ্রব্য বিক্রির সুবিধা থাকে। ছায়াঘরটি গাছপালা, বাড়িঘর এবং শিল্প ও যানবাহনের দূষণ থেকে দূরে বানানো উচিত। জায়গাটিতে যাতে জল না জমে, তা লক্ষ রাখা দরকার। বিদ্যুৎ এবং বিশুদ্ধ জলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। যাই হোক বাতাসের জোর কমানোর ব্যবস্থা ছায়াঘর থেকে ৩০ মিটার দূরে থাকা উচিত।

অভিমুখ নির্ধারণ

ছায়াঘরের দিক নিরূপণের জন্য প্রধানত দু’টি শর্ত আছে। সেগুলি হল ছায়াঘরে সমান ভাবে আলোর তীব্রতা থাকবে এবং বাতাসের দিক ঠিক রাখতে হবে। এক চালার কাঠামো পূর্ব-পশ্চিম বা উত্তর-দক্ষিণ অভিমুখী করা যায়। কিন্তু আলোর সম তীব্রতা রক্ষার জন্য বহু চালার কাঠামো উত্তর-দক্ষিণ অভিমুখীই করতে হবে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ

ছায়াঘর তৈরির জন্য মূলত দু’টি জিনিস লাগে, কাঠামো এবং আবরণের উপকরণ। ছায়াঘরের কাঠামো আবরণের বস্তুকে ধরে রাখা এবং বাতাস, বৃষ্টি এবং ফসলের ভার বহনের উপযোগী করে নির্মিত হয়। নিয়মিত ব্যবধানে মরচে প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া হলে ছায়াঘরের মাইল্ড স্টিলের (এমএস) কাঠামো ২০ থেকে ২৫ বছর টেঁকে। অন্য দিকে বাঁশের কাঠামো ৩ বছর পর্যন্ত টেঁকে। কৃষিজাত ছায়াজাল আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে ৩ থেকে ৫ বছর টেঁকে। ছায়াজাল বিভিন্ন রঙে, অনেক ধরনের ছায়ার তারতম্যে পাওয়া যায় যেমন ২৫%,৩০%, ৩৫%, ৫০%, ৬০%, ৭৫% এবং ৯০%।

ছায়াঘর কাঠামোর নকশা, প্রয়োজন এবং কারিগরি দক্ষতার উপর নির্ভর করে। কুয়োন্সেট, গেবল এবং গথিক আর্চ আকারের কাঠামো তৈরি হয় অথবা উড়িষ্যার মতো অধিক বৃষ্টিপাত সম্পন্ন এলাকায় আঞ্চলিক পরিস্থিতির সঙ্গে মানানসই করে অল্পসল্প পরিবর্তন করা কাঠামোর পরামর্শ দেওয়া হয় ।

নকশা ও নির্মাণ

ভুবনেশ্বরের উড়িষ্যা কৃষি ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিসিশন ফ্রেমিং ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে দু’ ধরনের ছায়াঘর কাঠামোর নকশা তৈরি করা হয়েছে। এই ছায়াঘরগুলির মুখ্য সুবিধা এই যে এর কাঠামোগুলিতে কাজের জায়গায় কোনও ওয়েল্ডিং এর দরকার হয় না। আরেকটি সুবিধা হল, এর ভিত্তিদণ্ডগুলি এমন ভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে যাতে কাঠামো উইপোকা থেকে সুরক্ষা পায়। এই ছায়াঘরগুলির বিশদ বিবরণ দেওয়া হল।

ছায়াঘর ১

 

এমএস অ্যাঙ্গেল (৩৫ মিমি x ৩৫ মিমি x ৬ মিমি) এবং বাঁশের কাঠামো ব্যবহার করে এই নকশা তৈরি (ছবি ১)। ভিত্তিদণ্ডের জন্য এমএস অ্যাঙ্গেল ব্যবহার করা হয়, যাতে নীচে ধরে রাখার ব্যবস্থা থাকে এবং উপরের বাঁশ ধরবার জন্য ইউ ক্লিপ। ছাদের কাঠামো এবং পারলিন উভয়ের জন্যই বাঁশ ব্যবহার করা হয়। ছায়াঘরের পরিকল্পনার ছবি আঁকার পর জমি সমান করা হয়। ভিত্তিদণ্ডের জন্য গর্ত খোঁড়া হয়। গর্তগুলির এক অংশে বালি ভরে ঠাসা হয়। তার পর দণ্ডগুলিকে তিনটি সমান্তরাল লাইনে সম ভাবে সিমেন্ট দিয়ে কংক্রিট করে লাগানো হয় । ব্যবহারের উপযোগী করার পর ঠিক মাপে কাটা বাঁশ পারলিন, ছাদের আর্চ কাঠামো (হুপস) হিসাবে ব্যবহার করা হয় এবং ঠিক মতো বাঁধা হয়। আগে থেকে বানানো দরজার কাঠামো এবং প্রান্তিক কাঠামো নাট বল্টু দিয়ে লাগানো হয়। তার পর ৫০% এবং ৭৫% কৃষি ছায়াজাল দিয়ে ছাদ ঢাকা হয় এবং ৩০%-এর জাল পার্শ্বফ্রেমে লাগানো হয়। ভিতরে ঢোকার এবং দরজার ফ্রেমও জাল দিয়ে ঢাকা হয়। সব শেষে মাঝের হাঁটাপথ এবং ধারগুলো ইঁট দিয়ে প্রস্তুত করা হয়।

এই ধরনের একটি ছায়াঘর তৈরির খরচ পড়ে প্রায় ২২৫ টাকা/বর্গ মিটারে। ১নং ছকে এই ধরনের ছায়াঘর বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় বস্তুর তালিকা দেওয়া হল।

বস্তুতালিকা (ছায়াঘর-১)

নম্বর

বিষয়

বস্তু

নির্দিষ্টকরণ

পরিমাণ

ইউ সহ ভিত্তিদণ্ড

এমএস অ্যাঙ্গেল লোহা এবং

৩৫ মিমি x ৩৫ মিমি x ৬ মিমি

২০৯ কেজি

 

 

এমএস ফ্ল্যাট

২৫ মিমি x ৬ মিমি

৭ কেজি

দরজা ব্যবস্থা এবং প্রান্তিক কাঠামো

এমএস অ্যাঙ্গেল আয়রন

৩৫ মিমি x ৩৫ মিমি x ৬ মিমি

৭১ কেজি

ছাদের কাঠামো

বাঁশ

৭৫ মিমি ১০০ মিমি ব্যাস

২০ নং

ছাদ এবং পার্শ্ব আচ্ছাদন ১’’

কৃষি ছায়াজাল

৫০% - ৭০% এবং ৩০%

৩২৮ বর্গমিটার

ফাউন্ডেশনের গ্রাউটিং

সিমেন্ট কংক্রিট

১২ মিমি চিপসের সঙ্গে ১::

.৩ ঘনমিটার

মরিচা বিরোধী ট্রিটমেন্ট

এনামেল পেইন্ট এবং থিনার

-

৪ লিটার

কাঠামো স্থাপন

() নাট ও বল্টু

/x

১ কেজি

 

 

() জিআই তার

৪ মিমি

২ কেজি

হাঁটা পথ

ইট ও অন্যান্য

সিমেন্ট মর্টার (:)

.৪ ঘনমিটার

ছায়াঘর ২

shade_01

এই নকশা (ছবি২) ছায়াঘরের কাঠামোর ভিত্তিদণ্ড, পারলিন, প্রান্তিক কাঠামো এবং দরজার ফ্রেমের জন্য এম এস অ্যাঙ্গেল (৪০ মিমি x ৪০ মিমি x ৬ মিমি) ব্যবহার করে। আবরণের বস্তুকে ধারণ করতে হুপ্‌স-এর জন্য এমএস ফ্ল্যাট ব্যবহার করা হয়। পারলিনের সাথে নাট এবং বল্টু দিয়ে লাগানোর জন্য ভিত্তিদণ্ডে ব্যবস্থা থাকে। সে ভাবে হুপস্‌ হিসেবে ব্যবহৃত এমএস ফ্ল্যাটেও পারলিনের সঙ্গে লাগানোর ব্যবস্থা থাকে। জমি সমান করা এবং পরিকল্পনার ছবি আগেরটার মতোই হয়। ভিত্তিদণ্ড গর্তে লাগানো হয় সিমেন্ট দিয়ে এবং সাত দিন পরিচর্যা করা হয়। পারলিন, হুপ, প্রান্তিক ফ্রেম এবং দরজার ফ্রেম লাগানো হয় নাট এবং বল্টু দিয়ে।

তার পর কাঠামোতে জাল লাগানো হয়। সব শেষে মাঝের রাস্তা এবং ধার গঠন করা হয় ইট দিয়ে। এই ধরনের ছায়াঘর গঠনে প্রতি একক বর্গ মিটারে খরচ পড়ে ৫০০ টাকা । ২ নং ছকে এই ধরনের ছায়াঘর বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় বস্তুর তালিকা দেওয়া হল।

বস্তু তালিকা (ছায়াঘর-২)

নম্বর

বিশদ

বস্তু

নির্দিষ্টকরণ

পরিমাণ

১।

ভিত্তিদণ্ড

এমএস অ্যাঙ্গেল

৪০ মিমি x ৪০ মিমি x ৬ মিমি

৩৩৬ কেজি

২।

পার্‌লিন এবং প্রান্তিক কাঠামো

এমএস অ্যাঙ্গেল

৪০ মিমি x ৪০ মিমি x ৬ মিমি

৩০৫ কেজি

৩।

দরজার কাঠামো

এমএস অ্যাঙ্গেল

৪০ মিমি x ৪০ মি x ৬ মিমি

৪১ কেজি

৪।

হুপস্

এমএস ফ্ল্যাট

৩০মিমি x ৬মিমি

১৫৯ কেজি

ছাদ এবং পার্শ্বিক আচ্ছাদন

কৃষিছায়াজাল

৫০% - ৭০% এবং ৩০%

৩২৮ বর্গ মিটার

৬।

ফাউন্ডেশনের গ্রাউটিং

সিমেন্ট

১২ মিমি চিপসের সঙ্গে ১::

.৮ ঘনমিটার

৭।

হাটা পথ

ইঁট ও অন্যান্য

সিমেন্ট মরটার (:)

.৪ ঘনমিটার

৮।

কাঠামো স্থাপন

() নাট এবং বল্টু

/৮ইঞ্চি X ১ ইঞ্চি

৪ কেজি

 

 

() জিআই তার

৪ মিমি

৪ কেজি

৯।

মরচে রক্ষায় পরিচর্যা

এনামেল পেইন্ট এবং থিনার

-

৮ লিটার

সূত্র: http://www.ncpahindia.com

সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate