ভাতের পরই পশিমবঙ্গে যে খাদ্যটির চাহিদা বেশি সেটি হলো আটা ও ময়দা। আর আটা-ময়দা আসে গম থেকে। দেশের মানুষের বিশেষ করে শহরাঞ্চলে সকালের নাস্তার একটা বিরাট অংশজুড়ে থাকে গমের আটা বা ময়দার রুটি-পরোটা। যদিও পশিমবঙ্গে গমের চাষ যতটা প্রসার লাভ করার কথা ছিল ততটা হয়নি, তবুও যে পরিমাণ জমিতে গমের চাষ হয় সেই জমিতে আধুনিক পদ্ধতি মেনে চাষ করলে গমের ফলন বেশি পাওয়া যেতে পারে।
গম বীজ বোনার উপযুক্ত সময় হলো কার্তিক মাসের শেষ থেকে অগ্রহায়ণের তৃতীয় সপ্তাহ বা নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত। কিন্তু কিছু কিছু জাত আছে যেগুলো কিছুটা তাপ সহনশীল, সেগুলো ডিসেম্বর মাসের ১৫-২০ তারিখ পর্যন্ত বোনা যেতে পারে। যে সব এলাকায় ধান কাটতে ও জমি তৈরি করতে বিলম্ব হয় যেসব এলাকায় বপন করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়৷
গ্রীষ্ম ও অবগ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ু হতে শুরু করে নাতিশীতোষ্ঞ ও তুন্দ্রাঞ্চলীয় জলবায়ুতেও গম জন্মে৷ বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১৫-৪৫ ইঞ্চি অর্থাত্ ৩৮০-১১৪৩ মিলিমিটার গম চাষের জন্য খুব উপযোগী, তবে ১০-৭০ ইঞ্চি অর্থাত্ ২৫৪-১৭৭৮ মিলিমিটার পর্যন্ত বার্ষিক গড়পড়তা বৃষ্টিতেও গম ভালো জণ্মে৷ একদিকে সাইবেরিয়া ও মেরু অঞ্চলের প্রবল শৈত্যেও গম গাছ টিকে থাকতে পারে, অন্যদিকে ২১-২৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায়ও গম চাষ করা যায়৷ তবে গরম আবহাওয়ায় ফুল ফুটার সময় ঠান্ডা পরিবেশ বর্তমান থাকা প্রয়োজনীয়, অন্যথায় গম গাছে দানার উত্পত্তি হয় না৷ ভূমির উচ্চতার দিক হতেও গম অদ্ভুত রকমে খাপ খাওয়াতে পারে৷ সমুদ্র সমতল হতে ১০,০০০ ফুট অর্থাত্ ৩১০০ মিটার উচ্চতায়ও গম জন্মাতে দেখা যায়৷
উঁচু ও মাঝারি দো-আঁশ মাটি গম চাষের জন্য বেশি উপযোগী৷ লোনা মাটিতে গমের ফলন কম হয়৷ সাধারণত উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি গম চাষের জন্য উপযুক্ত৷ তবে মাঝারি নিচু জমিতেও গম চাষ চলে৷ দোঁআশ ও বেলে-দোঁআশ মাটি গম চাষের জন্য সর্বোত্তম৷ সহজে পানি নিষ্কাশিত হয় এমন ভারী অর্থাত্ এঁটেল ও এঁটেল-দোঁআশ মাটিতেও গমের চাষ করা চলে৷
পশিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতেই গমের চাষ বেশি হয়ে থাকে। ব গম চাষের জন্য উঁচু ও মাঝারি জমি বেশি উপযোগী। তবে মাঝারি নিচু জমিতেও গম চাষ করা যায়। দোআঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটি গম চাষের জন্য সর্বোত্তম। আবার সহজে পানি নিষ্কাশিত হয়, এমন এঁটেল ও এঁটেল দোআঁশ মাটিতেও গমের চাষ করা যায়। লবণাক্ত মাটিতে গমের ফলন কম হয়। বোনার জন্য একর প্রতি গম বীজের প্রয়োজন হয় ৪৮ কেজি বা বিঘা প্রতি ১৬ কেজি। বীজ গজানোর ক্ষমতা ৮৫% বা তার বেশি হলে ভালো হয়। ৮০% এর নিচে হলে প্রতি ১ ভাগ কমের জন্য একরপ্রতি ৪০০ গ্রাম গম বীজ বেশি বুনতে হয়। তবে ৬০% এর নিচে হলে সেই গম বীজ বোনা উচিত নয়। বোনার আগে গম বীজ প্রোভেক্স-২০০ (প্রতি কেজি বীজে ৩ গ্রাম হারে) বা কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (প্রতি কেজি বীজে ২ গ্রাম হারে) দিয়ে শোধন করে নিতে হয়। বীজ শোধন করলে বীজবাহিত রোগের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এবং নতুন গজানো চারা সুস্থ ও সবল থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, এতে গমের ফলন শতকরা ১০-১২ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। সারিতে অথবা ছিটিয়ে গম বীজ বপন করা যায়। তবে সারিতে বুনলে জমি তৈরির পর লাঙ্গল দিয়ে বা বীজ বপন যন্ত্রের সাহায্যে সরু নালা করে ২০ সেমি. দূরত্বের সারিতে ৪-৫ সেমি. গভীরতায় বীজ বুনতে হয়। ধান কাটার পরপরই পাওয়ার টিলারচালিত বীজ বোনার যন্ত্রের সাহায্যে স্বল্পতম সময়ে গম বোনা যায়। এই যন্ত্র দিয়ে একসঙ্গে জমি চাষ, সারিতে বীজ বপন ও মইয়ের কাজ করা যায়।
গমের ভালো ফলন পাওয়ার জন্য জমি চাষ করার সময়ই প্রতি শতকে ৩০-৪০ কেজি জৈব সার প্রয়োগ করা ভালো। সেচসহ শেষ চাষের সময় প্রতি শতাংশে ৬০০-৭০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৬০০-৭০০ গ্রাম টিএসপি, ৩০০-৪০০ গ্রাম এমওপি এবং ৪৫০-৫০০ গ্রাম জিপসাম সার প্রয়োগ করতে হয়। সেচসহ চাষের বেলায় চারার ৩ পাতা হলে প্রথম সেচের পর দুপুরে মাটি ভেজা থাকা অবস্থায় প্রতি শতাংশে ৩০০-৩৫০ গ্রাম ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করতে হয়। অন্যদিকে সেচ ছাড়া চাষের বেলায় সব ইউরিয়া (শেষ চাষের সময়+উপরি প্রয়োগের সময় দেয়) সার একত্রে শেষ চাষের সময় অন্যান্য রাসায়নিক সারের সঙ্গে প্রয়োগ করতে হয়। জমিতে বোরনের ঘাটতি দেখা দিলে বা বোরন ঘাটতি থাকলে প্রতি শতাংশে ২৫ গ্রাম করে বোরিক এসিড শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হয়। যেসব জমিতে দস্তা সারের ঘাটতি থাকে এবং আগের ফসলে দস্তা সার ব্যবহার করা হয়নি সেসব জমিতে শতকপ্রতি ৫০ গ্রাম করে দস্তা সার প্রয়োগ করতে হয়। দস্তা সার শেষ চাষের সময় দেয়া ভালো।
জমির মাটি পরীক্ষার ভিত্তিতে অম্লমান বা মাটির পিএইচ মান জানার পর অম্লমান ৪.০-৫.০ হলে শতকপ্রতি ৮ কেজি এবং অম্লমান ৫.০-৬.০ এর মধ্যে থাকলে শতকপ্রতি ৪ কেজি ডলোচুন গম বীজ বপনের কমপক্ষে ১৫-২০ দিন আগে প্রয়োগ করতে হয়। এক্ষেত্রে গমের আগের ফসল সংগ্রহ করার পরপরই ফাঁকা জমিতে ডলোচুন ছিটিয়ে আড়াআড়িভাবে চাষ ও মই দিতে হয়। এরপর সেচে দিতে হয়। ডলোচুন প্রয়োগের ১৫-২০ দিন পর আবার চাষ ও মই দিয়ে গম বীজ বুনতে হয়। অনুমোদিত মাত্রায় ডলোচুন ব্যবহার করলে গমের ফলন ১৫-২০ ভাগ পর্যন্ত বেশি পাওয়া যেতে পারে। ডলোচুন একবার ব্যবহার করলে পরবর্তী তিন বছর আর চুন ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, গম চারার পাতা যখন ৩ পাতা হয় (বীজ বোনার ১৭-২১ দিন পর) তখন প্রথমবার হালকা সেচ দিতে হয়। দ্বিতীয় সেচ বীজ বোনার ৫০-৫৫ দিন পর যখন গমের শীষ বের হয় এবং তৃতীয় সেচ দানা গঠনের সময় অর্থাৎ বীজ বোনার ৭৫-৮০ দিন পর দিতে হয়। তবে মাটির প্রকার ভেদে বা শুষ্ক আবহাওয়ায় ভালো ফলনের জন্য আরো অতিরিক্ত এক বা একাধিকবার সেচের প্রয়োজন হলে তা দিতে হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, ধানের চেয়ে গমে অনেক কম প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মাত্র সেচের পানির প্রয়োজন হয়।
গম ক্ষেতে মুথা, দূর্বা, বথুয়া প্রভৃতি আগাছা জন্মাতে পারে। আগাছা সময়মতো নিয়ন্ত্রণ না করলে গম গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। ছিটিয়ে বোনা গমের জমিতে বীজ বোনার ১৫/১৬ দিন পর আড়াআড়িভাবে দুবার আঁচড়া দিয়ে অনেক আগাছা তুলে ফেলা যায়। আঁচড়া দেয়ার ফলে মাটি আলগা হওয়ায় চারা গাছের বৃদ্ধিও দ্রুত হয়। আঁচড়া দেয়ার কয়েকদিন পর নিড়ানির সাহায্যে বাকি আগাছা পরিষ্কার করতে হয়। অন্যদিকে সারিতে বোনা গমের বেলায় প্রথম সেচ দেয়ার আগে আগে নিড়ানির সাহায্যে আগাছা পরিষ্কার করতে হয়।
গমে সাধারণত পোকার আক্রমণ কম হয়। তবে কখনো কখনো কাটুই পোকা, জাব পোকা ও মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। জমির শেষ চাষের সময় কার্বোফুরান জাতীয় কীটনাশক প্রয়োগ করে কাটুই পোকা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। জাব পোকার আক্রমণ দেখা দিলে ইমিডাক্লোরপিড (এডমায়ার/ইমিটাফ/টিডো ইত্যাদি) জাতীয় কীটনাশক স্প্রে করতে হয় ৭ দিন পরপর ২ বার। মাজরা পোকা নিয়ন্ত্রণের জন্য ডায়াজিনন-৫০ ইসি ২ মিলিলিটার প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হয়।
গমে রোগের সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। গমের পাতার মরিচা রোগ, গোড়াপচা রোগ, আলগা ঝুল রোগ, গম বীজে কালো দাগ রোগ অন্যতম। পাতার মরিচা, গোড়া পচা ও আলগা ঝুল রোগ নিয়ন্ত্রণে রোগ প্রতিরোধী কাঞ্চন, আকবর, অগ্রাণী, প্রতিভা, সৌরভ ও গৌরব জাতের চাষ করা যেতে পারে। এছাড়া রোগমুক্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করা, প্রোভেক্স-২০০ (প্রতি কেজিতে ৩ গ্রাম) দিয়ে বীজ শোধন করে বা কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (প্রতি কেজিতে ২ গ্রাম) দিয়ে বীজ শোধন করে সংরক্ষণ করা ও বীজ বোনা, ফসলের পরিত্যক্ত অংশ নষ্ট করা, সুষম সার ব্যবহার করা, মাটির পরিমিত আর্দ্রতা বা জো অবস্থা সব সময় বজায় রাখা, আক্রান্ত ক্ষেতের সেচ বা পানি সুস্থ ক্ষেতে প্রবেশ করতে না দেয়া এবং আগাছা পরিষ্কার করার মাধ্যমে ক্ষেতের সার্বিক পরিচর্যা ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করলে গমে রোগ কম হয়। পাতার মরিচা রোগ নিয়ন্ত্রণে শীষ বের হওয়ার আগে, ফুল ফোটার সময় ও দানা বাঁধার সময় ৫ শতক জমিতে ২ লিটার পানিতে প্রপিকোনাজল (টিল্ট /প্রাউড/ একোনাজল ইত্যাদি) ২৫০ ইসি নামক ছত্রাকনাশক ২ মিলি. মিশিয়ে স্প্রে করলে রোগ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ফলনও বাড়ে ১৫-২০ ভাগ।
গম বীজ বোনা থেকে পাকা পর্যন্ত বিভিন্ন জাত ভেদে ১০০-১১২ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। উপযুক্ত পরিবেশ ও ভালো পরিচর্যা ব্যবস্থা গ্রহণ করলে একর প্রতি ১.৪৫ টন থেকে ১.৯৫ টন ফলন পাওয়া যায়।
ধানের পরই গম আমাদের দেশে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ দানাজাতীয় ফসল। গম আবাদে পানির প্রয়োজন কম। হেক্টরপ্রতি বোরো ধানে পানি লাগে ৫৫ থেকে ৬০ একর ইঞ্চি, গম আবাদে লাগে ১৫ একর ইঞ্চি। গমে রোগ-বালাই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ খুবই কম। ফলে বালাইনাশকের ব্যবহার প্রয়োজন নেই বললেই চলে। গমের ফলন বৃদ্ধিতে যা করতে হবে-
উঁচু ও মাঝারি দো-আঁশ মাটি গম চাষের জন্য বেশি উপযোগী।
গম উচ্চ ফলনশীল জাতসমূহের বপনের উপযুক্ত সময় ১ থেকে ১৫ অগ্রহায়ণ তারিখ (নভেম্বর মাসের ১৫ থেকে ৩০ তারিখ) পর্যন্ত। এ সময়ের পর গম বুনলে প্রতিদিন দেরীর জন্য ১.৩% হারে ফলন কমে যায়।
বীজ গজানোর হার ৮০ ভাগ বা তার অধিক হলে প্রতি শতকে আধা কেজি বীজ বপন করতে হবে। গজানোর হার ৮০ ভাগের কম হলে প্রতি ১ ভাগ কম গজানোর জন্য বিঘা (৩৩ শতক) প্রতি ১৩০ গ্রাম করে অতিরিক্ত বীজ বপন করতে হবে। গজানোর হার ৭০ ভাগের কম হলে ওই বীজ বপন করা ঠিক নয়।
বপনের আগে প্রতি কেজি বীজের সাথে ৩ গ্রাম হারে প্রোভেক্স-২০০ ডব্লিউ পি মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
লাইনে বা ছিটিয়ে গম বীজ বপন করা যায়। লাইনে বপনের জন্য জমি তৈরির পর ছোট লাঙল দিয়ে ৮ ইঞ্চি দূরে দূরে সারি তৈরি করে এবং ২ ইঞ্চি গভীরে বীজ বপন করতে হয়।
প্রতি বিঘায় ইউরিয়া ২৪ থেকে ২৫ কেজি, টিএসপি ১৮ থেকে ১৯ কেজি, এমওপি ৫ থেকে ৬ কেজি, জিপসাম ১৪ থেকে ১৫ কেজি, ১ কেজি ৩০০ গ্রাম বোরাক্স, গোবর/কম্পোস্ট ১০০০ থেকে ১২০০ কেজি। ইউরিয়া সারের তিন ভাগের দুই ভাগ এবং সম্পূর্ণ টিএসপি, এমওপি ও জিপসাম শেষ চাষের সময় এবং বাকি তিন ভাগের এক ভাগ ইউরিয়া প্রথম সেচের সময় উপরি প্রয়োগ করতে হবে। জমিতে দস্তা সারের ঘাটতি থাকলে এবং পূর্ববর্তী ফসলে দস্তা সার প্রয়োগ করা না হলে বিঘা প্রতি ১.৫ কেজি দস্তা সার (জিংক সালফেট) শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করুন। অম্লত্ব বৃদ্ধির সাথে সাথে মাটিতে ফসফরাস সারের কার্যকারিতা কমে যায় এবং এর ফলে গমের ফলন কম হয়। অম্ল মাটিতে বিঘায় ১৩০ কেজি হারে ডলোচুন ছিটিয়ে দিলে ফলন ১৫ থেকে ২০ ভাগ বৃদ্ধি পায়। জমি তৈরির প্রায় দুই সপ্তাহ আগে ডলোচুন প্রয়োগ করতে হবে।
পাখি তাড়ানো: বীজ বপনের পর ১০ থেকে ১২ দিন পর্যন্ত পাখি তাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রথম সেচ চারার তিন পাতার সময় (বপনের ১৭ থেকে ২১ দিন পরে), দ্বিতীয় সেচ গমের শীষ বের হওয়ার সময় (বপনের ৫৫ থেকে ৬০ দিন পর) এবং তৃতীয় সেচ দানা গঠনের সময় (বপনের ৭৫ থেকে ৮০ দিন পর) দিতে হবে। গম ক্ষেতে ধানের মত ঢালাও সেচ দেয়া যাবে না। নালা অথবা ফিতা পাইপের মাধ্যমে সেচের পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। সঠিক সেচ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফলন ৫৮% পর্যন্তু বৃদ্ধি করা সম্ভব। বপনের ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ১ম সেচের পর একটি নিড়ানী দিলে ফলন প্রায় ১০ থেকে ১২ ভাগ বৃদ্ধি পায়।
সতর্কতা: গম ক্ষেতে কখনোই কলা গাছ অথবা বরইয়ের কাঁটা টানবেন না, মই দিবেন না এত গমের ক্ষতি হবে।
অন্য ফসলের তুলনায় গমে রোগ-বালাই অনেক কম। গমের প্রধান দু’টি রোগ হচ্ছে পাতার মরিচা রোগ ও পাতার দাগ রোগ। ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। মরিচা রোগে আক্রান্ত পাতা ঘষা দিলে লালচে মরিচার মত গুঁড়ো হাতে লাগে। আর গমের পাতার দাগ রোগের আক্রমণে পাতায় দাগ পড়ে ও পাতা ঝলসে যায়। এ সব রোগ দমনে শীষ বের হওয়ার সময় এবং ১৫ দিন পর আরো একবার টিল্ট ২৫০ ইসি ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার পানিতে আধা (০.৫) মি.লি. হিসেবে পানিতে মিশিয়ে সেপ্র করলে প্রায় ১৫ থেকে ২০ ভাগ ফলন বাড়ে এবং বীজের মান বৃদ্ধি পায়। গম ক্ষেতে মাজরা পোকার আক্রমণ বেশি দেখা দিলে ডায়াজিনন ৬০-ইসি প্রতি লিটার পানিতে ২ মি.লি. হারে মিশিয়ে প্রয়োগ করে এ পোকা দমন করা যায়।
ইঁদুর দমন: ক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণ শুরু হলে ফাঁদ পেতে, গর্তে পানি ঢেলে বা বিষটোপ (জিংক ফসপাইড/লানির্যাট) দিয়ে ইঁদুর দমন করতে হবে।
ফসল সংগ্রহ: গম পেকে গেলে বা হলুদ বর্ণ হলে কাটতে হবে। রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে সকালের দিকে গম কেটে দুপুরে মাড়াই করাই উত্তম।
সুত্রঃ পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/4/2020