যথেষ্ট বৃষ্টিপাত হয় এমন আর্দ্র ও উঁচু পাহাড়ি অঞ্চলে কমলার চাষ ভালো হয়। উঁচু, উর্বর, গভীর সুনিষ্কাশিত এবং মৃদু অম্লভাবাপন্ন বেলে দোআঁশ মাটিতে ভালো হয়। প্রখর সূর্যকিরণ ও উচ্চ তাপমাত্রায় গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। বছরে দেড়শ থেকে আড়াইশ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস গড় তাপমাত্রা এবং আংশিক ছায়াযুক্ত স্থান এর জন্য উপযোগী। মাটির অম্ল-ক্ষারত্বের মান ৫.৫ থেকে ৬.০।
বীজ থেকে জাইগোটিক চারা দুর্বল, মাতৃগাছের গুণাগুণ বজায় থাকে না, ফল ধরতে ৪-৫ বছর লাগে। বহু ভ্রƒণিতা (বীজ) নিউসেলার কোষ থেকে এক বা একাধিক চারা হয়। চারাগুলো সবল ও মাতৃগাছের গুণাগুণ বজায় থাকে। ভাইরাস মুক্ত হয়। ফল ধরতে ৪-৫ বছর লাগে।
অঙ্গাজ: ভিনিয়ার/ক্লেফট গ্রাফটিং এবং টি-বাডিং চারা থেকে ২-৩ বছরের মধ্যেই ফল আসে।
বর্ষার শুরুতে অর্থাৎ মে-জুন মাসে চারা রোপণ করতে হয়। তবে সেচের সুবিধা থাকলে যে কোনো সময় চারা রোপণ করা যায়।
সমতল জমিতে বর্গাকার, আয়তকার এবং পাহাড়ি জমিতে কন্টুর পদ্ধতিতে মাদা তৈরি করে চারা রোপণ করতে হবে। ৪ মিটার × ৪ মিটার দূরত্বে রোপণ করা যায়। মাদার গর্তের আকার ৬০×৬০×৬০ সেন্টিমিটার। প্রতি মাদায় ১০ কেজি গোবর, ২০০ গ্রাম করে ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপি এবং ৫০০ গ্রাম চুন দিতে হবে। চারা রোপণের ১৫ থেকে ২০ দিন আগে সার প্রয়োগ করতে হবে।
খরা মৌসুমে বয়স্ক গাছে ২ থেকে ৩টি সেচ দিতে হবে। ফল পরিপক্ব হওয়ার সময় সেচ দিলে আকারে বড় ও রসযুক্ত হয়। গাছের গোড়ায় পানি জমলে মাটিবাহিত রোগ হতে পারে।
আগাছা গাছের বেশ ক্ষতি করে। এছাড়া গাছের শিকড়গুলো মাটির উপরিস্তরে থাকে সেজন্য গভীরভাবে নিড়ানি না দেয়া ভালো। গাছ লাগানোর পর ফল ধরার আগ পর্যন্ত ধীরে ধীরে ডাল ছেঁটে গাছকে নির্দিষ্ট আকারে রাখতে হবে। ডাল ছাঁটাইয়ের পর কাটা অংশে বর্দোপেস্ট দিতে হবে। দুটি পাত্রে ৭০ গ্রাম তুঁতে ও ১৪০ গ্রাম চুন আলাদাভাবে মিশ্রণ করে এক লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে বর্দোপেস্ট তৈরি করতে হবে।
কমলা পরিপক্ব হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রঙ বদলাতে শুরু করে। ভালোভাবে পাকার পর ফল সংগ্রহ করলে মিষ্টি হয়। পূর্ণ বয়স্ক কমলাগাছ প্রতি বছর গড়ে ৩০০ থেকে ৪০০টি ফল দেয়। বেশি বয়স্ক গাছ এক হাজার থেকে দেড় হাজার ফল দিতে পারে। একটি গাছ সাধারণত ৫০ থেকে ৭০ বছর পর্যন্ত ফল দিয়ে থাকে।
সূত্র: পোর্টাল কনটেন্ট টীম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 3/9/2020