হলুদ মোজাইক (Yellow mosaic) রোগ
রোগের কারণ
হলুদ মোজাইক ভাইরাস (Yellow mosaic Virus) দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে।
রোগের বিস্তার
এ রোগ সাধারণত মাঠে কর্মরত কৃষক এবং জাব পোকার মাধ্যমে আক্রান্ত গাছ হতে সুস্থ গাছে ছড়িয়ে পড়ে।
রোগের লক্ষণ
- সয়াবিনের সবুজ পত্রফলকের উপরিভাগে উজ্জ্বল সোনালী বা হলুদ রঙের চক্রাকার দাগের উপস্থিতি এ রোগের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।
- হলদে পাতাযুক্ত আক্রান্ত গাছ সাধারণত খাটো এবং বামনাকৃতি হয়ে থাকে।
- আক্রান্ত বীজের অংশ বিশেষ খয়েরী বা কালো কালো রংগের হয়ে খাকে ।
|
|
|
|
|
|
চিত্র: সয়াবিনের হলুদ মোজাইক রোগের লক্ষণ |
রোগের প্রতিকার
- রোগ প্রতিরোধী জাত চাষ করতে হবে, যেমন- বাংলাদেশ সয়াবিন-৪, বারি সয়াবিন-৫ ও বারি সয়াবিন-৬।
- সুস্থ ও জীবানুমুক্ত বীজ বপনের মাধ্যমে এ রোগের আক্রমন কমানো যায়।
- জমিতে এ রোগে আক্রান্ত গাছ দেখামাত্র তুলে পুড়ে ফেলতে হবে।
- লেডিবার্ড বিটল এফিডকে খেয়ে থাকে, তাই জমিতে লেডিবার্ড বিটল ছেড়ে দিতে পারলে এ রোগের প্রকোপ কমে যাবে।
- বাহক জাব পোকা দমনের জন্য ইমিডাক্লোপ্রিড (যেমন-অ্যাডমায়ার/ইমিটাফ) প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি অথবা ম্যালাথিয়ন ৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ১.৫ মিলি হারে পানিতে মিশিয়ে জমিতে স্প্রে করতে হবে।
|
চিত্র: লেডিবার্ড বিটল এফিড খাচ্ছে |
গোড়া ও মূল পঁচা (Foot and root rot) রোগ
রোগের কারণ
স্কেলেরোশিয়াম রফসি (Sclerotium rolfsii) / ফিউজারিয়াম (Fusarium) / রাইজোকটনিয়া (Rhizoctonia) নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে।
রোগের বিস্তার
গাছের চারা অবস্থা থেকে পূর্ণতাপ্রাপ্ত পর্যন্ত এ রোগের আক্রমন দেখা যায়। সাধারণত খরিফ মৌসুমে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশী হয়।
রোগের লক্ষণ
- চারা বা বড় গাছের পাতা হলুদ হওয়া দেখেই মাঠে এ রোগের আক্রমণ সনাক্ত করা যায়।
- আক্রান্ত গাছের গোড়া ও মূলে খয়েরী বা কালো দাগ দেখা যায়।
- আক্রান্ত গাছের গোড়ায় সাদা মাইসেলিয়াম এবং গোলাকার সরিষার দানার মত স্ক্লেরোশিয়াম দেখা যায়।
- আক্রান্ত চারা বা গাছ ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায় এবং অবশেষে মারা যায়।
|
|
|
|
চিত্র: সয়াবিনের গোড়া ও মূল পঁচা রোগের লক্ষণ |
রোগের প্রতিকার
- জমিতে শস্য পর্যায় অবলম্বন করতে হবে।
- কার্বেন্ডাজিম (যেমন-অটোস্টিন) অথবা কার্বোক্সিন + থিরাম (যেমন-প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি) প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে শোধন করতে হবে।
- এই ছত্রাকটি সাধারণত মাটির উপরিভাগে সুপ্ত অবস্থায় থাকে। সুতরাং গভীর চাষের মাধ্যমে মাটি আলগা করে ৩-৪ দিন রোদে শুকিয়ে রোগের উৎস নষ্ট করে আক্রমণ কমানো যায়।
- জমিতে ফসলের পরিত্যক্ত অংশ, আগাছা, আবর্জনা পরিস্কার করা হলে এ রোগের উৎস নষ্ট হবে।
- অর্ধকাচা মুরগির বিষ্ঠা হেক্টর প্রতি ৫ টন হারে বীজ বপনের ২-৩ সপ্তাহ আগে জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।
- কার্বেন্ডাজিম (যেমন-অটোস্টিন) প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর গাছের গোড়ায় মাটিতে ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
সূত্র ও লেখকঃ বিজ্ঞানী ড. কে. এম. খালেকুজ্জামান
সর্বশেষ সংশোধন করা : 10/30/2023
0 রেটিং / মূল্যাঙ্কন এবং 0 মন্তব্য
তারকাগুলির ওপর ঘোরান এবং তারপর মূল্যাঙ্কন করতে ক্লিক করুন.
© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.