অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

শিং চাষ

মাছপ্রিয় মানুষমাত্রই জিওল মাছের ভক্ত। জিওল মাছের চাহিদা অন্যান্য মাছের চেয়ে বেশি। দামও বেশি। কিন্তু বর্তমানে দেশে জিওল মাছের আকাল চলছে। ক্রমে বিদেশি মাছের বা নতুন নতুন আমদানিকৃত প্রজাতির ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে সব জিওল মাছ। জিওল মাছের মধ্যে শিং-মাগুর অম। তবে আশার কথা, এসব মূল্যবান শিং-মাগুর চাষ করে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব এবং তা ইতিবাচক বার্তা বয়ে আনতে পারে।

পুকুর প্রস্তুতি

২০ থেকে ৩০ শতাংশের পুকুরে শিং-মাগুর চাষ অধিক উপযোগী। প্রথমে পুকুরের জল সেচ দিয়ে শুকিয়ে পুকুরের তলদেশে রোদ লাগাতে পারলে ভালো হয়। এ সময় পাড় মেরামত এবং ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা আবশ্যক। তবে নতুন কাটা পুকুরের ক্ষেত্রে নিজেদের মনের মতো করে পুকুর প্রস্তুত করা যায়। কিন্তু জলপূর্ণ পুকুর হলে প্রথমে রোটেনন/টিসিড কেক প্রয়োগে রাক্ষসী মাছ অপসারণ করতে হবে।
প্রতি শতাংশে প্রথমে এক কেজি চুন প্রয়োগের মাধ্যমে পুকুর প্রস্তুতির মূল কাজ শুরু করতে হয়। তবে চুন ছাড়াও জিওলাইট (প্রতি শতকে ১-২ কেজি) পুকুর প্রস্তুতির সময় প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এরপর প্রতি শতাংশে ৫-৭ কেজি গোবর, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৫০ গ্রাম টিএসপি প্রয়োগ করা আবশ্যক। এর ৫-৬ দিন পর পুকুরে ২-৩ ইঞ্চি সাইজের শিং-মাগুর পোনা ছাড়া হয়।

কত পোনা ছাড়তে হবে?

শিং এবং মাগুর একক বা মিশ্র চাষ করা যায়। একক চাষে মাগুর প্রতি শতাংশে ২৫০ এবং শিং ৪০০টি দেওয়া যায়। তবে মিশ্র চাষে মাগুর ১৫০ এবং শিং ২০০টি (প্রতি শতাংশে) ছাড়তে হবে। অবশ্যই ছাড়ার সময় পোনা ২ -৩ ইঞ্চি হওয়া আবশ্যক।

খাবার

শিং-মাগুর প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার পছন্দ করে। যদিও পুকুরের তলদেশের জলজ কীট এবং বর্জ্যও খেয়ে থাকে, তথাপি লাভজনক চাষে মানসম্মত খাবার প্রয়োগ করা আবশ্যক। প্রথমদিকে ৩৫ শতাংশ প্রোটিন এবং শেষদিকে ২৮ থেকে ৩০ শতাংশ প্রোটিনযুক্ত খাবার প্রয়োগ করা উচিত। শিং-মাগুরের জন্য কারখানায় প্রস্তুত রেডি ফিড অধিক কার্যকর। মানসম্মত পোনা, মানসম্মত প্রয়োজনীয় সুষম খাবার ও আদর্শ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে ৬-৭ মাসে প্রতিটি শিং ৬০ থেকে ৭০ গ্রাম এবং মাগুর ১০০ থেকে ১২০ গ্রাম হয়ে থেকে।

চাষের আদর্শ সময়

এপ্রিল-মে মাস থেকে এ মাছ চাষ শুরু করা যায়। যারা শিং-মাগুর চাষে আগ্রহী তাঁরা জুন-জুলাই মাসেও চাষ শুরু করতে পারেন।

চাষ পরিচর্যা

  • শিং-মাগুর চাষে বেশি জল দরকার হয় না। পোনা নার্সিংয়ের সময় দুই ফুট জলই যথেষ্ট। পরবর্তী সময়ে ৩-৩.৫ ফুট জলতেই চাষ হয়।
  • পোনা ছাড়ার পর নিয়মিত পরিমিত খাবার দিতে হবে। প্রয়োজনীয় খাবার দিনে ২-৩ বারে ভাগ করে দেওয়া আবশ্যক।
  • পুকুরের জলর গুণাগুণের সঙ্গেও মাছের বৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে জলর গুণাগুণ রক্ষা করা আবশ্যক। প্রতি মাসে একবার 'জিওলাইট' এবং একবার 'প্রোবায়োটিকস' প্রয়োগে চাষের ফল ভালো হয়।
  • রোগাক্রান্ত পোনা মজুদ করলে প্রত্যাশিত ফল আসবে না। এ ছাড়াও মাঝেমধ্যে মাছের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করা উচিত।
  • কখনো পোনার ত্বকের ওপর সাদা তুলার মতো দাগ দেখা যেতে পারে। সেপ্রোলেগনিয়া নামক ছত্রাকের জন্য এমনটি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ম্যালাকাইট গ্রিন/ফরমালিনের মাধ্যমে চিকিৎসা করলে সুফল পাওয়া যায়।
  • প্রোটোজোয়া বা অন্যান্য পরজীবী কর্তৃক মাছ রোগাক্রান্ত হতে পারে। এ অবস্থায় ফরমালিন এবং ম্যালাকাইট গ্রিন ছাড়াও কৃমিজাতীয় পরজীবী নিয়ন্ত্রণে ডিপটারেক্স ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • অধিক খাবার প্রয়োগ বা জৈব পদার্থের পচনের মাধ্যমে জলে অ্যামোনিয়ার মাত্রা বাড়তে পারে। এ অবস্থায় মাছের বৃদ্ধি স্থবির হয়ে যায়। এ সমস্যা দূর করতে জল পরিবর্তন করা যেতে পারে। তা ছাড়া জলতে বায়ো একোয়া প্রয়োগে ভালো ফল পাওয়া যায়।
  • অপুষ্টিজনিত কারণে মাছের মাথা বড়, শরীর সরু হয়ে যায়। কখনো মাছের মাথায় ফাটা দেখা যায়। এ অবস্থায় পুষ্টিসম্পন্ন খাবার প্রয়োগ করা বাঞ্ছনীয়।
  • শিং-মাগুর চাষে নানা সমস্যায় পরামর্শের জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

সুত্র: বিকাসপিডিয়া টিম, পশ্চিমবঙ্গ

সর্বশেষ সংশোধন করা : 12/3/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate