কলকাতায় অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করছে পরিবহণ দফতর। বেহালা ফ্লাইং ক্লাবের কাছে ড্রাইভিং পরীক্ষা ও গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য অত্যাধুনিক কেন্দ্রও তৈরি করা হচ্ছে। পুনের সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ রোড ট্রান্সপোর্ট এই কেন্দ্রটি তৈরি করবে। কেন্দ্রটি তৈরিতে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। নয়া ব্যবস্থায় গাড়ি চালানোর লার্নার লাইসেন্সের জন্য অনলাইনে আবেদন করলেই পরীক্ষার সময়সূচি পাবেন আবেদনকারীরা। নির্দিষ্ট দিনে আবেদনকারীকে আসতে হবে ভবানীপুরের মোটর ভেহিক্যালসের দফতরে। ওই দফতরে অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়া যাবে। পরীক্ষার ফলও মিলবে সঙ্গে সঙ্গেই। এই ফল দেখালেই পাওয়া যাবে লার্নার লাইসেন্স। জানুয়ারি মাসেই প্রথম দফায় এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। লার্নার লাইসেন্স নেওয়ার এক মাস পর থেকে ছ’মাসের মধ্যে লাইসেন্স পাওয়ার জন্য পরীক্ষা দেওয়া যাবে। সম্প্রতি পুনের সেন্ট্রাল ইনস্টিটিটিউট অফ রোড ট্রান্সপোর্টের আধিকারিকরা এই প্রকল্পের খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করতে কলকাতায় এসেছিলেন। রাজ্যের পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করার পাশাপাশি তাঁরা বেহালায় গিয়ে প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত জায়গাটিও ঘুরে দেখেন। জানা গিয়েছে , কলকাতায় প্রতি দিন মোটর ভেহিক্যালসে গড়ে ২০০ গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করা হয়। এ ছাড়াও অন্তত ১০০ ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন জমা পড়ে। বাস , ট্রাক -সহ বড় গাড়ির লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার নামে ভবানীপুরের মোটর ভেহিক্যালস দফতরে একটি দালালচক্র সক্রিয় বলে অভিযোগ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভুয়ো ঠিকানা দিয়ে লাইসেন্সের জন্য আবেদন জমা পড়ে। এই অব্যবস্থায় লাগাম টানতেই রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, আর হাতে হাতে নয়, স্পিড পোস্টে আবেদনকারীর বাড়িতে লাইসেন্স পাঠানো হবে। তাতেও দেখা যায়, ঠিকানা খুঁজে না পেয়ে কয়েক হাজার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফিরে আসে পরিবহণ দফতরে। এ নিয়ে ট্যাক্সি ইউনিয়ন ও মোটর ট্রেনিং ইনস্টিটিউটগুলি সরব হয়। শেষে মদন মিত্র পরিবহণ দফতরের দায়িত্ব নিয়ে এই ব্যবস্থা তুলে দেন। চালু হয় পুরোনো পদ্ধতি। এখন হাতে -হাতেই মেলে লাইসেন্স। নয়া ব্যবস্থা লাগু হলে ড্রাইভিং পরীক্ষা থেকে গাড়ি পরীক্ষা, সবটাই হবে যন্ত্রের মাধ্যমে। গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষার জন্য তৈরি করা হচ্ছে ইনস্পেকশন অ্যান্ড সার্টিফিকেট সেন্টার। এর জন্য এক কিলোমিটার লম্বা একটি ট্র্যাক তৈরি করা হবে। সেখান দিয়ে ধীর গতিতে গাড়ি চালালে যন্ত্র বলে দেবে গাড়ির কোথায় কী ত্রুটি রয়েছে। আর ড্রাইভিং পরীক্ষার জন্য গ্রিড ইন টেস্টের ব্যবস্থা থাকছে।
সূত্র : এই সময়, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019