পাসপোর্ট পাওয়ার স্বচ্ছ ও ঝামেলাহীন রাস্তা তৈরির লক্ষ্য নিয়ে পাসপোর্ট সেবা প্রকল্প চালু করে বিদেশ মন্ত্রক। এই প্রকল্পে সারা দেশে ৭৭ পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ ছাড়া, এই প্রকল্পের আওতায় একটি ডেটা কেন্দ্র, বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্র, কল সেন্টার যা মোট ১৭ ভাষায় কাজ করবে এবং কেন্দ্রীয় ভাবে দেশব্যাপী কম্পিউটার-নিয়ন্ত্রিত পাসপোর্ট প্রদান পদ্ধতি গড়ে তোলা হয়।
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের বর্ধিত অংশ হিসাবে এই ৭৭ পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র কাজ করছে। তাই পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার আগে আবেদনকারীকে দেখে নিতে হবে তিনি কোন আঞ্চলিক পাস পোর্ট অফিস এবং পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রের আওতায় পড়ছেন।
নতুন পাসপোর্টের জন্য অথবা পাসপোর্ট পুনরায় বার করার জন্য আপনাকে অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। এ ছাড়া আপনি সরাসরি আপনার আবেদন সংশ্লিষ্ট সিপিও/পাসপোর্ট অফিস/পাসপোর্টে সেবা কেন্দ্র/ জেলা পাসপোর্ট সেল/স্পিড পোস্ট সেন্টারে জমা দিতে পারেন।
পাসপোর্ট অফিসের প্রশাসনিক দক্ষতা বাড়িয়ে তোলার জন্য পাসপোর্ট সেবার অধীনে বেশ কিছু নতুন পদ্ধতি এবং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এই নতুন পদ্ধতি এবং ব্যবস্থার লক্ষ্য হল দেশের নাগরিককে ঝামেলাহীন, স্বচ্ছ, সুবিধাজনক পদ্ধতিতে পাসপোর্ট প্রদান এবং নিরাপত্তা সুনিশ্চত করা। এ কারণে আবেদনকারীকে সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে। আবদেনকারীর উপস্থিতিতেই তাঁর ছবি, বায়োমেট্রিক গ্রহণ করে পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষ যাতে তাঁকে পাসপোর্ট দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে তার জন্য এই ব্যবস্থা।
সুত্রঃ passportindia.gov.in
পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রের ভিড় এড়াতে এবং আবেদনকারীর সময় বাঁচাতে অনলাইনে আবেদনের পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে যে রকম সুযোগ মিলবে সেই অনুযায়ী ওই কেন্দ্র থেকেই স্বয়ংক্রিয় ভাবে সাক্ষাৎকারের সময় ও তারিখ জানিয়ে দেওয়া হয়।
পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে সাক্ষাৎকারের সময় ‘বুক’ করার আগে অনলাইনে পাসপোর্টের ফি অগ্রিম জমা দিতে হবে। এই জন্যই পাসপোর্ট সেবা অনলাইন পোর্টালে অনলাইনে টাকা জমা দেওয়ার সুবিধা চালু করা হয়েছে। নিম্নলিখিত প্রক্রিয়ায় টাকা জমা দেওয়া যায় :
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
পার্সপোর্টের পেমেন্ট ডেবিট বা ক্রেডিক কার্ডের মাধ্যমে করা যায়। পেমেন্ট করার সময় ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডটি এবং মোবাইল হাতের কাছে নিয়ে বসুন। পেমেন্ট করার সময় এগুলি কাজে লাগবে। পেমেন্টের ক্ষেত্রে অনেক সময় ‘ওয়ানটাইম পাসওয়ার্ড’ চায় (এই পাসওয়ার্ড একবার ব্যবহার করলে এক কার্যকারীতা নষ্ট হয়ে যায়)। এই পাসওয়ার্ডটি মোবাইলে পাঠায় ব্যাঙ্ক। তাই অনলাইনে পেমেন্ট করার সময় মোবাইল হাতের কাছে নিয়ে বসতে হয়। ক্রেডিট/ডেবিট বা ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং-এর মাধ্যমে টাকা দিতে হলে নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করতে হবে:
মনে রাখার বিষয়
বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন : passportindia.gov.in
পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদনের পেমেন্ট চালানের মাধ্যমেও করা যায়। সাধারণ পাসপোর্টের পাশপাশি তৎকালের ক্ষেত্রেও অনলাইনে চালানের মাধ্যমে পেমেন্ট করা যায়।
বিঃদ্রঃ:তৎকাল আবেদনের ক্ষেত্রে সাধারণ পাসপোর্টের ক্ষেত্রে যে ফি দিতে হয় অনলাইনে সেটাই দিতে হবে। তবে যদি পাসপোর্টের আবেদনটি গ্রাহ্য হয় তবে তৎকালের জন্য প্রযোজ্য বাকি ফি পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র বা পাসপোর্ট অফিসে নগদে দিতে হবে। অনলাইনে জমা দেওয়া টাকা বৈধ থাকে প্রথম সাক্ষাৎকারের দিন থেকে এক বছর পর্যন্ত। যদি এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদনকারী পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে আবদেন জমা না দেন তবে তাঁর টাকা বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে।
পাসপোর্ট সংক্রান্ত পরিষেবার ফি হিসাবে জমা দেওয়া টাকা ফেরত বা বিনিময় হবে না। যদি সহায়ক পরিষেবা সহ পাসপোর্ট পরিষেবার ক্ষেত্রে একটি এআরএনের জন্য একাধিক পেমেন্ট করা হয়ে থাকে, তবে সংশ্লিষ্ট বিভাগের পরিচালন নীতি অনুসারে টাকা ফেরতের দাবিটি বিবেচনা হবে।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার বাতিল এবং সাক্ষাৎকারের জন্য ফের সময় চাওয়া যেতে পারে। প্রথম সাক্ষাৎকারের তারিখ থেকে এক বছরের মধ্যে কেবল মাত্র দু’বার সাক্ষাৎকার বাতিল/সাক্ষাৎকারের জন্য ফের সময় চাইতে পারেন। দু’বার সাক্ষাৎকারের সময় নেওয়া হয়ে গেলে অথবা প্রথম আবেদনের পর এক বছর কেটে গেলে আগের এআরএন-এর জন্য অনলাইন বুকিং হবে না।
অ্যাপলিকেশন রেফারেন্স নম্বরের (এআরএন) প্রিন্ট আউট নিন এবং নির্দিষ্ট দিনে ও সময়ে সাক্ষাৎকারে ওই এআরএন-এর কপি পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে নিয়ে যান।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে অনলাইন নিবন্ধনের সঙ্গে ওয়াক-ইন-অ্যাপয়েন্টমেন্টেরও সুবিধা রয়েছে। পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রগুলিতে পাসপোর্টের আবেদন জমা সহজতর করার জন্য কয়েকটি পরিষেবার ক্ষেত্রে যেমন, তৎকাল, পুলিশের ছাড়পত্র দেওয়া ক্ষেত্রে ওয়াক-ইন-অ্যাপায়েন্টমেন্টের সুবিধা দেওয়া হয়। এছাড়া কিছু ধরনের বিভাগের ক্ষেত্রে যেমন, প্রবীণ নাগরিক, ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তি ও নাবালক-নাবালিকাকে ‘ওয়াক-ইন-অ্যাপ্লিকেন্ট’ হিসাবে এআরএন নম্বর সহ অনলাইন আবেদন জমা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। এই ধরনের আবদেনকারীরা অনলাইনে আবেদনের পর এআরএন নম্বর নিয়ে নিকটবর্তী পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে যাবেন (এর জন্য পূর্ববর্তী কোনও অ্যাপয়েন্টমেন্টের প্রয়োজন নেই)। উপরন্ত, আবেদনকারী সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসের জারি করা নির্দেশেরও উল্লেখ করতে পারবেন। বর্তমানে নিম্নলিখিত শহরগুলিতে পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে অনলাইন আবেদনের সুবিধা পাওয়া যায়। তাই পাসপোর্টের জন্য আবেদনের আগে আপনার নির্দিষ্ট সেবা কেন্দ্রটি খুঁজে নিন। এই তালিকা থেকে আপনার শহরের পাসপোর্ট কেন্দ্রের নামে ক্লিক করুন। নামের সঙ্গে দেওয়া লিঙ্কের সাহায্যে আপনি সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট কেন্দ্রের ওয়েবসাইটে যাতে পারবেন। ওই পাসপোর্ট কেন্দ্রের দেওয়া লিঙ্ক থেকে আপনি আপনার নিকটবর্তী পাসপোর্টে সেবা কেন্দ্রের সাইটে গিয়ে সাক্ষাৎকারের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
|
বিঃদ্রঃ নতুন নিয়ম অনুযায়ী নাবালক-নাবালিকা সহ প্রত্যেক আবেদনকারীকে পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে তাদের বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ) এবং ছবি দেওয়ার জন্য।
পাসপোর্ট অফিস সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যের জন্য Passportindia.gov.in দেখুন।
সুত্রঃ Passportindia.gov.in
পাসপোর্টে তৈরির জন্য ফি অনলাইনে জমা দিতে হবে। তৎকাল হিসাবে যাঁরা আবেদন করছেন তাঁদেরও সাধারণ পরিষেবার মতোই অনলাইনে টাকা জমা দিতে হবে। তবে এই পরিষেবার ফি সাধারণ পরিষেবার চেয়ে কিছুটা বেশি। তৎকালের জন্য নির্ধারিত বাকি টাকা পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র/ পাসপোর্ট অফিসে দিতে হবে। এক বার তৎকাল আবেদন গ্রাহ্য হয়ে গেলে অনলাইন পেমেন্ট আগামী এক বছর পর্যন্ত বৈধ থাকবে। আবেদনপত্র পূরণ করার সময় যে ফি লাগবে তার বিস্তারিত নীচে সংশ্লিষ্ট বক্সে দেওয়া হল। তবে টেবিলে দেওয়া ফি-এর পরিমাণ সাধারণ বিভাগের জন্য। তৎকাল স্কিমে যদি নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হয় তবে আবেদন ফি-র বাইরে আলাদা তৎকাল ফি দিতে হবে। পাসপোর্ট হারিয়ে বা চুরি হয়ে গেলে, নাম ঠিকানা পরিবর্তন হলে তার কী ফি দিতে হয় তার তালিকাও নিচে দেওয়া হল। তৎকালের জন্য পিএসকে-তে গিয়ে ফি-র বাকি টাকা দিতে হয়। সেক্ষেত্রে, সমস্ত ব্যাঙ্ক কার্ডের জন্য পিএসকে-তে এটিএমের সুবিধা আছে।
ক্রমিক নং |
বিবরণ |
ফি |
১ |
নতুন পাসপোর্ট (৩৬পাতা) দশ বছর পর্যন্ত বৈধ (নাবালক-নাবালিকা ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়স, যারা ১০ বছর পর্যন্ত মেয়াদে পাসপোর্ট চায়)। |
১,৫০০ টাকা |
২ |
নতুন পাসপোর্ট (৬০পাতা) দশ বছর পর্যন্ত বৈধ |
২০০০ টাকা |
৩ |
নতুন পাসপোর্ট ১৫ বছরের নীচে বয়সীদের
|
১০০০ টাকা |
৪ |
হারিয়ে বা চুরি গেলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে পাসপোর্টের প্রতিলিপি (৩৬ পাতা)
|
৩০০০টাকা |
৫ |
হারিয়ে বা চুরি গেলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে পাসপোর্টের প্রতিলিপি (৬০ পাতা)
|
৩,৫০০টাকা |
৬ |
পুলিশের ছাড়পত্র/ইসিএনআর/অতিরিক্ত পৃষ্ঠাঙ্কন
|
৫০০টাকা |
৭ |
কোনও কারণে ঠিকানা, নাম, জন্ম তারিখ, জন্মস্থান, চেহারা, স্বামী বা স্ত্রীর নাম, বাবা-মা, অভিভাবক/ আইনত অভিভাবক, ব্যক্তিগত তথ্য পরিবর্তন হলে।
|
১,৫০০ টাকা (নতুন পাসপোর্ট বুকলেট ইস্যু হবে)
|
আরও তথ্যের জন্য দেখুন Fee Calculator for Passport Seva
সাধারণ ভাবে অনলাইনেই পাসপোর্টের আবেদন জমা দেওয়ার জন্য জোর দেওয়া হয়। কারণ এটি ঝামেলা হীন পদ্ধতি। তবে মাঝে মাঝে পাসপোর্টের জন্য অতিরিক্ত চাহিদার চাপ তৈরি হয়। অনলাইনে আবেদনের ভিত্তিতে সেই চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এই অতিরিক্ত চাহিদা পূরণ করতে অন্তর্বতীকালীন ব্যবস্থা হিসাবে পাসপোর্ট অফিস উপস্থিত হয়ে আবেদন জমা দেওয়ার ছাড়পত্র দেয়। এ জন্য সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিস থেকে বিভিন্ন সময়ে যে নির্দেশ এবং বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। আবেদনকারীকে আবেদনের সময়ে সেই বিজ্ঞপ্তির উল্লেখ করতে হবে। একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি পাসপোর্টের আবেদন জমা দিতে হবে।
এই জন্য পাসপোর্টের আবদেন জমা দেওয়ার পদ্ধতি নিম্নলিখিত:
পাসপোর্টের আবেদন ফর্ম নির্দিষ্ট নির্দেশ মেনেই পূরণ করতে হবে। নাহলে ফর্মটি বাতিল হয়ে যাবে। সে কারণে পাসপোর্ট আবেদন ফর্মের প্রতিটি ক্ষেত্রের উপর নির্দেশাবলীর জন্য, ফর্মের সঙ্গে যুক্ত পুস্তিকা পড়ুন বা http://passportindia.gov.in/AppOnlineProject/pdf/ApplicationformInstructionBooklet-V3.0.pdf এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।
সূত্র : পাসপোর্ট সেবা ওয়েব সাইট http://www.passportindia.gov.in/AppOnlineProject/welcomeLink
সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/11/2020