দেশে ই-গভর্ন্যান্সের দীর্ঘমেদায়ী বিকাশের ভিত্তি তৈরি করা এবং তাতে গতিবেগ সঞ্চার করাই ভারত সরকারের জাতীয় ই- গভর্ন্যান্স পরিকল্পনার লক্ষ্য। একে অবিচ্ছিন্ন ভাবে চালিয়ে নিয়ে যেতে কেন্দ্র ও রাজ্যস্তরে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কেন্দ্র-রাজ্যের পারস্পরিক সমন্বয়ে এই উদ্যোগগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
১৯৮৭ সালে স্যাটেলাইট-নির্ভর জাতীয় কমপিউটার নেটওয়ার্ক (নিকনেট) চালু হওয়ার পর ই-গভর্ন্যান্সের ব্যাপারে আগ্রহ জন্মায়। পরবর্তীকালে এরই ধারাবাহিকতায় দ্য ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টারের ডিস্ট্রিক ইনফরমেশন সিস্টেমের (ডিসনিক) মাধ্যমে দেশের সমস্ত জেলা অফিসগুলি কমপিউটার-নির্ভর করে তোলা হয়। এর জন্য রাজ্যগুলিকে বিনামূল্যে কমপিউটার হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার সরবরাহ করা হয়। ১৯৯০ সালে নিকনেট প্রকল্পকে আরও বিস্তৃত করে রাজ্যের রাজধানীগুলির মাধ্যমে জেলার সদর দফতরগুলির সঙ্গে সংযোগসাধন করা হয়। পরবর্তীকালে কমপিউটার ব্যবস্থা, টেলি- যোগাযোগ এবং ইন্টারনেট-সংযোগ দিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরে ই-গভর্ন্যান্স উদ্যোগকে আরও ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
ইলেট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ (ডিইআইটি) প্রণীত জাতীয় ই-গভর্ন্যান্স পরিকল্পনা এবং প্রশাসনিক সংস্কার এবং গণ অভিযোগ দফতরের প্রতিষ্ঠা দেশে ই-গভর্ন্যান্স প্রক্রিয়াকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।
মিশন মোড প্রকল্প (এমএমপি) জাতীয় ই-গভর্ন্যান্স পরিকল্পনার মধ্যে একটি একক প্রকল্প। এক একটি প্রকল্পের লক্ষ্য হল এক একটি বিষয় সংক্রান্ত ই-গভর্ন্যান্স যেমন ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা, জমি সংক্রান্ত তথ্য, বাণিজিক কর ইত্যাদি।
জাতীয় ই-গভর্ন্যান্স পরিকল্পনায় ৩১টি মিশন মোড প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১১টি কেন্দ্রীয় এমএমপি, ১৩টি রাজ্য এমএমপি এবং ৭টি সুসংহত এমএমপি। এমএমপিগুলি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের অধীনে থাকে। রাজ্য স্তরের এমএমপিগুলি রূপায়ণের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির উপর। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী রাজ্য নিদির্ষ্ট মন্ত্রকের সহায়তা নিতে পারে। ডিইআইটি সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিতে অনুঘটকের ভূমিকা নেয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক এবং রাজ্য সরকারকে এ ব্যাপারে প্রযুক্তিগত সহায়তা করে তারা।
১১ কেন্দ্রীয় এমএমপি-র মধ্যে ৯ বাস্তবায়নের পরবর্তী ধাপে (পেনশন, পাসপোর্ট, বিমা, আয়কর, কেন্দ্রীয় উৎপাদন ও বাণিজ্যিক শুল্ক, ব্যাকিং ইত্যাদি) রয়েছে। দু’টি (ই-পোস্টস, ই-অফিস) বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে। সাতটি সুসংহত এমএমপি-র মধ্যে চারটি (ইন্ডিয়া পোর্টাল, এনএসডিজি, সিএসসি এবং ইডিআই) বাস্তবায়নের পরবর্তী ধাপে রয়েছে। তিনটি (ই-কোর্ট, ই-প্রোকিওরমেন্ট এবং ই-বিজ) বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে। ১৩টি রাজ্য এমএমপি-র মধ্যে ১টি (এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ) পরিকল্পনা এবং উন্নয়নের পর্যায়ে রয়েছে, ১১টি এমএমপি (ট্রেজারি, গণবণ্টন ব্যবস্থা, এনআরএলএমপি, পুরসভা, ই-পঞ্চায়েত, ই-জেলা, সিসিটিএনএস, বাণিজ্যিক কর, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং কৃষি) বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে। একটি (সড়ক পরিবহণ) বাস্তবায়নের পরবর্তী পর্যায়ে রয়েছে।
দক্ষতা সৃষ্টির প্রকল্প--- এই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে
সচেতনতা এবং যোগাযোগ---এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল ই-গভর্ন্যান্সকে এক ছাতার তলায় প্রাপ্ত একটি সুবিধা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
প্রকল্পের মূল্যায়ন ছাড়াও ডিইআইটি একে রূপায়ণের ব্যাপারে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি কতটা প্রস্তত তার মূল্যায়ন তথা ই- অ্যাসেসমেন্ট করবে। মান এবং নীতি গুণগত মান বজায় রাখা ই-গভর্ন্যান্সের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
কেন্দ্রীয় এমএমপি |
রাজ্য এমএমপি |
সুসংহত এমএমপি |
---|---|---|
ব্যাকিং |
কৃষি |
সিএসসি |
কেন্দ্রীয় উৎপাদন ও বাণিজ্য শুল্ক |
বাণিজ্যিক কর |
ই-বিজ |
আয়কর |
ই-জেলা |
ই-আদালত |
বিমা |
এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ |
ই-প্রোকিওরমেন্ট |
এমসিএ-২১ |
জমির রেকর্ড |
ই-ট্রেডের জন্য ইডিআই |
পাসপোর্ট |
ই-পঞ্চায়েত |
জাতীয় ই-গভর্ন্যান্স পরিষেবা প্রদান কেন্দ্র |
ভিসা, অভিবাসন, বিদেশি রেজিস্ট্রেশন |
পুলিশ |
ইন্ডিয়া পোর্টাল |
পেনশন |
টেজ্রারি কমপিউটেশন |
|
ই-অফিস |
গণবণ্টন ব্যবস্থা |
|
পোস্টস |
শিক্ষা |
|
ইউআইডি |
স্বাস্থ্য |
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020
এই বিভাগে জাতীয় ই-গভর্ন্যান্স পরিকল্পনা ও তার দৃষ্...
ই-গভর্ন্যান্স নিয়ে কর্মরত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও তার...