ফিকির উচ্চ শিক্ষা সম্মেলন, ২০১৪-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘ফিকি-ইওয়াই’-এর তৈরি ‘ভারতে উচ্চ শিক্ষা: বিশ্বজনীন প্রাসঙ্গিকতা ও প্রতিযোগিতা’ শীর্ষক একটি নলেজ পেপার প্রকাশ করেন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি জুবিন ইরানি।
একবিংশ শতকে দেশের আদর্শ উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি কী হওয়া উচিত সে কথাই নলেজ পেপারটিতে প্রকাশ করা হয়েছে। স্বপ্নের সেই উচ্চশিক্ষার মান হবে উঁচু, ন্যায্য এবং সকলের সাধ্যের মধ্যে। এই শিক্ষা শুধু যে বিশ্বের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হবে তা-ই নয়, তা সেরা হবে গোটা পৃথিবীর জন্যই।
এই নলেজ পেপারে যে লক্ষ্যগুলির কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে, আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রভাবসম্পন্ন উচ্চমানের প্রতিষ্ঠান তৈরি; বিশ্বমানের শিক্ষণ, গবেষণা ও পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশের ব্যবস্থা করা; জটিল নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা শিথিল করা; ট্র্যান্স–ন্যাশনাল শিক্ষাকে উৎসাহ দেওয়া; দক্ষ, কাজের-উপযুক্ত ও উৎপাদনশীল স্নাতক প্রস্তুত করা; স্নাতকদের বিশ্বমানের দক্ষতায় সমৃদ্ধ করা তাঁরা যাতে যে সব দেশে কর্মীর সংখ্যা কম রয়েছে সে সব দেশে পরিষেবা দিতে পারেন; গবেষণা-কেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা যেখানে উঁচু মানের গবেষণা হবে এবং গবেষণামুখী স্নাতক তৈরি করা হবে; গবেষণা ও বিকাশের ক্ষেত্রে সরকারের বিনিয়োগ বাড়ানো হবে; গবেষণা ও উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে শিল্প সংস্থাগুলির অংশগ্রহণ বাড়ানো হবে এবং শিক্ষা, অর্থ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এমন করা হবে যাতে ব্যবসায়িক মনোবৃত্তির বিকাশ ঘটে।
এই নলেজ পেপারে বলা হয়েছে, বিশ্ব অর্থনীতি এই মুহূর্তে কাঠামোগত রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ২০২০ সালে এর জন্য ৩৩৩ কোটি কর্মী লাগবে, এই চাহিদা তৈরি হবে পরিষেবা এবং পুঁজি নির্ভর উৎপাদন ক্ষেত্রে। ভারতেও এই পরিস্থিতি তৈরি হবে শুধু ভারতে নয়, ২০২০ সালে ভারতের জিডিপি-র ৯০ শতাংশ ও নিয়োগের ৭৫ শতাংশ আসবে পরিষেবা ও উৎপাদন ক্ষেত্র থেকে। প্রযুক্তির উন্নতি যেমন অনেক কাজ বাতিল করে দেবে, তেমনই অনেক নতুন নতুন কাজের ক্ষেত্রেরও জন্ম দেবে।
নিয়োগের ক্ষেত্রে এই রূপান্তর অত্যন্ত দক্ষ ও উঁচু মানের কর্মীর প্রয়োজন বাড়াবে। এই রূপান্তরের সুফল নেওয়ার জন্য দক্ষ কর্মী তৈরির নীতি তৈরি করা দরকার। ‘বিশ্বজনীন প্রাসঙ্গিকতা ও প্রতিযোগিতা’ উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করতে না পারলে নানা রকম জনগোষ্ঠীতে বিভাজিত এই দেশে শিক্ষা ক্ষেত্রে যাবতীয় বিনিয়োগই অপব্যয়ে পরিণত হবে। অন্য দিকে এই উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থার সার্থক রূপায়ণ শুধু দেশ নয় বিদেশের অর্থনীতিকেও সাহায্য করবে।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/29/2020