উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর জেলার পুরিকাতরা গ্রামের লালদেগি মহল্লায় ১০ বছরের এই বালক বাড়িতে শিশু শ্রমিকের মতো কাজ করত। তার গ্রামে সাধারণ পরিকাঠামোর অভাব ছিল। পুরিকাতরা গ্রামটি একটি নোংরা বস্তির মতো, চার দিকে খেলা নর্দমা, জঞ্জাল যত্রতত্র ছড়িয়ে রয়েছে। কিনশুর মতো শিশুদের ক্ষেত্রে এই পরিবেশ অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। কিনশুর বাবার চাষযোগ্য কোনও জমি ছিল না। নিজস্ব একটি জিপ চালিয়ে রোজগার করতেন তিনি। অবসর সময় বন্ধু-বান্ধবকে সঙ্গে নিয়ে জিপে ঘুরে বেড়াতেন। কিনশুর মা নেহাৎই গৃহবধূ। তার আরও দু’টি ভাইবোন রয়েছে। সে বাড়ির কাছে একটি সরকারি স্কুলে নাম নথিভুক্ত করে চতুর্থ শ্রেণি অবধি পড়াশোনা করেছিল। হঠাৎই এক দিন তাঁর স্কুলটি হাসপাতালে পরিণত হল। ঠিক সেই সময় কিনশুর বাবার জিপটিতে কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিল। জিপ সারাতে তিনি কিছু ঋণ নিতে বাধ্য হলেন। তাদের পারিবারিক রোজগার এতটাই কমে গেল যে কিনশু অন্য কোনও স্কুলে ভর্তি হওয়ার কথা ভাবতেই পারল না। সে বাড়িতে থেকে ভাইবোনেদের দেখাশোনা এবং সংসারের কাজে মাকে সাহায্য করে সময় কাটাতে লাগল। এই ভাবে সে তার শৈশব খোয়াতে শুরু করল।
এই সময় এক দিন কিনশুর বাবার সঙ্গে এক জন বচপন বাঁচাও আন্দোলনের কর্মীর দেখা হয়। দু’জনের মোলাকাতের ফলে তার বাবার চোখ খুলে গেল। তিনি বুঝতে পারলেন ছেলেকে শিক্ষা দেওয়াটা তাঁর কর্তব্য। তিনি সংস্থার দিল্লি অফিসে কিনশুকে পাঠাতে মনস্থ করলেন। দিল্লি পৌঁছতেই তাকে উদ্ধার হওয়া শিশু শ্রমিকদের জন্য নির্মিত বাল আশ্রমে রাখা হল। পরে তাকে আশ্রমের নিকটবর্তী সাথুয়ানা গ্রামের একটি স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হয়। বাল আশ্রমে কিনশু তার শৈশব ফিরে পেল। সে আর শিশুশ্রমিক হিসাবে শোষিত নয়। বরং নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী পড়াশোনার সুযোগ পেয়ে সে ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠছে। এই ঘটনা নিঃসন্দেহে উদাহরণ হওয়ার মতো।
সূত্র: ইংরাজি বিকাশপিডিয়া
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/26/2020