ভারতের মতো বিশাল জনসংখ্যার দেশে রোগেরও কোনও শেষ নেই। শেষ নেই ওষুধের চাহিদারও। পরিসংখ্যান বলছে ওষুধের ব্যবসার ভারতবর্ষ সব সময়েই উজ্জ্বল ক্ষেত্র হিসাবে বিবেচিত হয়।
ফার্মাকো ভিজিলেন্স বিষয়ের মাধ্যমে আসলে ওষুধের চিহ্নিতকরণ, তার মান বিচার, এবং পরিমাণ সম্পর্কে খেয়াল রাখা ও তার উন্নতি সাধনের চেষ্টা চালানোর ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
জনস্বাস্থ্য সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতার হার ভারতে একেবারেই ভালো না। এক দিকে ভারতে চাহিদা অনুসারে ওষুধের সরবরাহ কম, ফলে অনেক ক্ষেত্রেই তা দুর্লভ এবং অনেকেরই আওতার বাইরে। অন্য দিকে ওষুধের অপব্যবহারজনিত কারণে নানা সময়ে অকারণ প্রাণহানি ও স্বাস্থ্যে অবনতির ঘটনা শোনা গিয়েছে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ওষুধের ব্যবহারের দায় ক্রেতার উপর বর্তালেও পরিবেশক কিংবা বিক্রেতার উপরেও তার দায় কিন্তু সমান ভাবে বর্তায়। তাই সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ওষুধের গুণমান ও সঠিক ব্যবহারের উদ্দেশ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়াস দরকার। এই কাজটি করতে হলে, বাজারে যে সমস্ত ওষুধের বাহুল্য রয়েছে, সেগুলির সঠিক গুণমান রক্ষা করার জন্য ফার্মাকো ভিজিলেন্স পড়া ছাত্রছাত্রীদের একান্ত দরকার। এই পেশা শুধু ভারতবর্ষেই নয়, বিদেশেও অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণ একটি পেশা হিসেবে বিবেচিত হয় ৷
স্বাস্থ্যবিষয়ক পেশায় কেবল মাত্র এক জন ডাক্তার নন, নার্স, প্যারামেডিক্যাল অফিসার থেকে শুরু করে যে কোনও ওষুধ ব্যবসায়ীরও অসুস্থ ব্যাক্তির আরোগ্যলাভের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা থাকে। ওষুধের গুণমান সম্পর্কে খেয়াল রাখা প্রত্যেকেরই দায়িত্ব। ফার্মাকো ভিজিলেন্স-এর ছাত্রছাত্রীরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হন এই বিষয়েই বিশেষ ভাবে নজর রাখার জন্য। ফলে, ওষুধের গুণমান নিয়ে কোনও রকম জটিলতার সৃষ্টি হলে, তাঁরা সাহায্য করতে পারেন। তাঁদের ওপর অনেকটাই দায়িত্ব থাকে। যাঁরা এই পেশায় আসতে চান, তাঁদের এ কথা মাথায় রাখা জরুরি, যে কোনও পেশায় কেবলমাত্র অর্থটাই শেষ নয়। তার উপরে থাকে সামাজিক স্বীকৃতি ও সম্মান। এ ক্ষেত্রে তাঁর কাজ তাঁর সম্মান আরও বাড়িয়ে তোলে।
সূত্র : মানব চৌধুরী, এই সময়, ২ এপ্রিল ২০১৫,
সর্বশেষ সংশোধন করা : 3/5/2020