ভারতীয় সংস্কৃতিতে শিক্ষা এক সময় নির্ভরশীল ছিল শ্রুতির ওপর। শুনে শুনে মনে রাখার পদ্ধতি যতই প্রাচীন হোক না কেন, লেখার নিয়ম সৃষ্টি হয়ে যাওয়ার পর থেকেই প্রকাশনার প্রয়োজন অনুভূত হতে শুরু করল। গুটেনবার্গ ছাপাখানা আবিষ্কার করার পর, ইউরোপে তো বটেই পরবর্তীকালে সারা পৃথিবীতে পড়াশোনার হাতিয়ার হয়ে উঠল এই প্রকাশনা। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা প্রকাশনাব্যবস্থার কাঠামোয় এখন বিরাট বদল এসেছে। একটা সময় ছিল প্রকাশনা শুধু বই ও সংবাদপত্র প্রকাশের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো। এখন কিন্তু এটি ব্যাপক ভাবে বিস্তৃত হয়েছে ইন্টারনেটে ও বৈদ্যুতিন মাধমেও। বই যেমন প্রকাশিত হচ্ছে, তেমনই এর পাশাপাশি এখন বিপুল হারে প্রকাশ করা হচ্ছে ই-বুক। টানা কাগজের মূল্যবৃদ্ধি তো বটেই, ছাপার খরচ কমানোর জন্য এই মাধ্যমকে গুরুত্ব দিচ্ছে বহু প্রকাশনা সংস্থাই। এবং পাঠকদের মধ্যেও এই ই-বুক, ই-সংবাদপত্র, ই-জার্নালের চাহিদা বাড়ছে। কারণ বহু মানুষই এখন স্মার্টফোন, ট্যাব কিংবা ল্যাপটপেই পড়াশোনার যাবতীয় কাজ সেরে ফেলতে চান। এই কারণেই ই-বুক বা ভার্চুয়াল বুকের চাহিদা বাড়ছে দ্রুত হারে। ছাপা বই প্রকাশের জন্য যেমন পাবলিকেশন-এর কাজে দক্ষ কর্মীদের দরকার পড়ত, এই ই-বুকের বাজারেও কিন্তু তাঁদের চাহিদা কমছে না। বরং বলা ভালো, এঁদের চাহিদা বাড়ছে দ্রুত হারে। প্রকাশনার ক্ষেত্রে কেরিয়ার গড়ার জন্য ছাপার বিভিন্ন প্রক্রিয়া ও প্রযুক্তির বিষয় জানতে হবে। তা সে ছাপা বই-ই হোক, কিংবা ই-বুকই হোক। এর জন্য কপি এডিটিং, গ্রাফিক ডিজাইনিং, প্রোডাকশন, প্রিন্টিং, মার্কেটিং এবং লিখিত বিষয়গুলির যথার্থ উপস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান লাভের পরেই এই ক্ষেত্রে নিজের কেরিয়ার বানাতে সুবিধা হয়। যে হেতু এখন এই ক্ষেত্রটি দেশীয় সীমায় আটকানো নয়, তাই পর্যাপ্ত জ্ঞান নিয়েই এই ক্ষেত্রে কাজ করতে আসা উচিত। আন্তর্জাতিক মানের পাবলিকেশন ইন্ডাস্ট্রিতে কী ভাবে কাজ হয়, সেটা জানাটাও মোটেই কঠিন নয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে খুব সহজেই জানা যায় তা।
সূত্র : এই সময়, ১৯ মার্চ, ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/20/2020