অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

সরকারি নির্দেশে আকাল শিক্ষকের, পঠনপাঠন লাটে

সরকারি নির্দেশে আকাল শিক্ষকের, পঠনপাঠন লাটে

ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণের খেসারত দিচ্ছে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা। একে তো কেন্দ্রের সঙ্গে টানাপোড়েনে নতুন শিক্ষক নিয়োগ থমকে। আন্তঃসার্কেল, জেলা বা রাজ্যস্তরে শিক্ষক বদলির প্রচলিত পদ্ধতিও আটকে গিয়েছে সরকারি নয়া ফরমানে। ফলে খাস কলকাতা-সহ জেলায় জেলায় বহু প্রাথমিক স্কুলে পঠনপাঠন লাটে ওঠার জোগাড়। অনেক স্কুলেই শিক্ষকের সংখ্যা কমতে কমতে দাঁড়িয়েছে এক জনে। কোথাও আবার শিক্ষকশূন্য স্কুলে পাশের স্কুল থেকে অস্থায়ী ভাবে শিক্ষক এনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে। দমদম আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৪৩ জন পড়ুয়া। শিক্ষক মাত্র এক জন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তথা সেই একমাত্র শিক্ষক ভগবান রামের কথায়, ‘একা চারটে ক্লাসের বাচ্চা সামলাতে খুব অসুবিধা হয়।’ দমদমেরই ভারতীয় বিদ্যামন্দির ও আরতি বালিকা বিদ্যাপীঠেও ছবিটা একই রকম। দক্ষিণ শহরতলির অর্জুনচন্দ্র ফ্রি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক শ্রীকান্ত কর্মকার বলেন, ‘বেশ কয়েক মাস ধরেই স্কুলে আমি একমাত্র শিক্ষক। আমাকেই চারটে ক্লাস দেখতে হয়। পঠনপাঠনের পাশাপাশি মিড-ডে মিলের দায়িত্বও আছে।’ মহানগরের নামী এক প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কথায়, ‘আমাদের স্কুলের তিন জন অন্যত্র প্রধানের দায়িত্ব নিয়ে চলে গিয়েছেন। তাঁদের জায়গায় এখনও কাউকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। কোনও রকমে কাজ চলছে।’ ব্যারাকপুর মহকুমার বহু স্কুলেও শিক্ষকের তীব্র সংকট। উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার এক শিক্ষাকর্তার স্বীকারোক্তি, ‘শুধু এক শিক্ষকের স্কুলই নয়, জেলায় বহু স্কুল কার্যত শিক্ষকশূন্য।’ উত্তর শহরতলির লক্ষ্মী ও মাঙ্গলি বালিকা বিদ্যালয় এবং শিবাশ্রম প্রাথমিক স্কুলে শতাধিক পড়ুয়া থাকলেও কোনও স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা নেই। কিন্তু কেন এই নিদারুণ পরিস্থিতি? রাজ্যে শিক্ষামন্ত্রী বদলের পর ২০১৪ সালের ৩১ জুলাই স্কুলশিক্ষা দফতর এক বিজ্ঞপ্তিতে (৮৩৩ (২০)-এসই (ইই)/১০ এম-১৩৭/২০১২) জানায়, প্রাথমিক স্তরে শিক্ষকদের যে কোনও বদলি ও পোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের (ডিপিএসসি) চেয়ারম্যানদের অবশ্যই বিকাশ ভবনের আগাম অনুমতি নিতে হবে। ডিপিএসসি চেয়ারম্যানদের প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক বদলির প্রস্তাব নয়া নিয়মে স্কুলশিক্ষা দফতরে জমা দিতে হবে। তার পর বিভাগীয় নো-অবজেকশন পেলে তবেই শিক্ষকদের বদলির ছাড়পত্র দিতে পারবেন চেয়ারম্যানেরা। প্রশাসনিক এই দীর্ঘসূত্রতার জেরেই স্কুলে স্কুলে শিক্ষকের আকাল বলে বিকাশ ভবন সূত্রেই জানা গিয়েছে। কারণ, ইতিমধ্যে প্রাথমিকে কর্মরত শিক্ষকদের একাংশ বয়স হয়ে যাওয়ায় অবসর নিচ্ছেন। অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা অন্যত্র প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে চলে যাচ্ছেন। কেউ আবার ভালো চাকরি পেয়ে প্রাথমিক শিক্ষকতার চাকরি ছাড়ছেন। নতুন নিয়োগও বন্ধ। ফলে রাজ্যের প্রচুর প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা কমতে কমতে এক বা দুইয়ে গিয়ে ঠেকেছে। অথচ, ওই সব স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কোথাও একশো, কোথাও বা দুশোরও বেশি। দুই চব্বিশ পরগনা, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, নদিয়া-সহ রাজ্যের সর্বত্রই সমস্যা প্রকট।

এক শিক্ষকের স্কুল

দক্ষিণ ২৪ পরগনা

২১৫টি

উত্তর ২৪ পরগনা

২৮৪টি

হুগলি

৭৭টি

নদিয়া

৫৬টি

পূর্ব মেদিনীপুর

৩০টি

বিকাশ ভবনের কর্তাদের মতে, গত বছর অগস্টের আগে পরিস্থিতিটা এ রকম ছিল না। তখন আইন মেনে একই চক্রের অধীন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলির বিষয়টি দেখতেন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকেরাই (এসআই)। জেলার মধ্যে শিক্ষকদের বদলি তদারকি করতেন ডিপিএসসি চেয়ারম্যানেরা। আর এক জেলা থেকে অন্য জেলায় শিক্ষক বদলির আবেদন বিবেচনা করত রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু সরকারি নয়া ফরমানে এখন জেলা স্তরে যে কোনও বদলির ক্ষেত্রে স্কুল থেকে আবেদন যায় প্রথমে এসআই-এর কাছে। তিনি তা পাঠান বিদ্যালয় পরিদর্শক (ডিআই) বা ডিপিএসসি চেয়ারম্যানের কাছে। তার পর সেখান থেকে ফাইল যায় বিকাশ ভবনে। আর এক জেলা থেকে অন্য জেলায় বদলির বিষয় হলে তা এসআই এবং ডিআই-এর অফিস ঘুরে যায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যানের কাছে। তিনিও সেই আবেদন মঞ্জুরের জন্য পাঠান স্কুলশিক্ষা দফতরে। একই ভাবে বদলির অনুমোদনও নানা স্তর ঘুরে পৌঁছয় নিচু তলায়। শিক্ষক নেতা ভীমসেন বিশওয়ালের মতে, ‘স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তারা প্রচণ্ড ব্যস্ত। তাই সার্কেল ও জেলা স্তরে বদলির বিষয়টি পুরোনো পদ্ধতিতে ফেরালেই সব চেয়ে সুবিধা হয়।’ রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের অবশ্য বক্তব্য, ‘এটা আমার দেখার বিষয় নয়। তবে নয়া নির্দেশিকায় অসুবিধা হওয়ারও কথা নয়। তবু যদি কোনও জেলায় সমস্যা হয় সেখানকার চেয়ারম্যানেরা বদলির বিষয়টি স্কুল শিক্ষা দফতরে পাঠিয়ে দিলেই সমাধান হয়ে যাবে।’

সূত্র: এই সময়, ১১ মার্চ ২০১৫

সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/30/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate