এই রাজ্যের প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরের স্কুলে প্রশিক্ষণহীনদের শিক্ষক হিসাবে নিয়োগের ক্ষেত্রে অবশেষে শর্তসাপেক্ষ ছাড় ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। গত বছর লোকসভা ভোটের আগে ৩০ ও ৩১ মার্চ এই দুই ধরনের স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রাথমিক বোর্ড ও রাজ্য স্কুল সার্ভিস কমিশনের দু’টি নিয়োগ পরীক্ষা পিছিয়ে যায় আলাদা আলাদা কারণে। ভোটের জন্য পুলিশ দেওয়া সম্ভব নয় বলে প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডকে জানিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি। অন্য দিকে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা পিছিয়ে যায় আদালতে মামলার কারণে। সেই থেকে ওই দু’টি স্থগিত পরীক্ষা আর নেওয়া যাচ্ছিল না শিক্ষার অধিকার আইনজনিত বাধায়। ওই আইন অনুযায়ী, ২০১৪-র ৩১ মার্চের পর স্কুলশিক্ষার কোনও স্তরেই শিক্ষণের প্রশিক্ষণ ছাড়া শিক্ষকতার চাকরিতে কাউকে নিয়োগ করার কথা নয়। এ দিকে রাজ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আবেদনকারীর সংখ্যা অনেক কম, আর বিপুলসংখ্যক শিক্ষকপদ শূন্য পড়ে রয়েছে। আপাতত প্রশিক্ষণহীনদেরও নিয়োগ পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হোক, এই মর্মে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দরবার করতে শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। রাজ্য জানতে পারে, অন্য পাঁচটি রাজ্যের ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে কেন্দ্রের তরফে আইনের বিধান শিথিল করা হয়েছে। তবে যাঁরা চাকরি পাবেন, তাঁদের দু’ বছরের মধ্যে বি এড-এর প্রশিক্ষণ নিয়ে নিতে হবে।
সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করেই গত মাসে মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে চিঠি দেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। তার জবাবেই কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সম্মতিসূচক চিঠি পাঠিয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকে ২৮ হাজার এবং উচ্চ প্রাথমিকে ১২ হাজার পদ খালি পড়ে রয়েছে। গত বছর দু’টি পরীক্ষায় আবেদনকারী ছিলেন প্রায় ২১ লক্ষ তরুণ–তরুণী। প্রশাসনের একটি মহলের খবর, নতুন করে আর কাউকে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া যাবে না। আগের আবেদনকারীদেরই পরীক্ষায় ডাকতে হবে। তবে ভবিষ্যতে আর প্রশিক্ষণহীনরা শিক্ষকতার চাকরিতে সুযোগ পাবেন না।
সূত্র: এই সময়, ৯ এপ্রিল, ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020